নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আফসোস হয়

১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:০৬



সৌদি আরব গিয়েছিলাম।
দেশে কোনো চাকরি পাচ্ছিলাম না। পেলেও সেই চাকরি আমার পছন্দ হয় না। আমি এমন চাকরি চাই- সকালে অফিসের গাড়ি এসে আমাকে নিয়ে যাবে। আবার সন্ধ্যার আগে আগে অফিসের গাড়ি আমাকে বাসায় দিয়ে যাবে। অফিসে আমার ব্যাক্তিগত পিয়ন থাকবে। বেল টিপলেই সে স্যার বলে দৌড়ে আসবে। তখন আমি বলব- চা দাও। চিনি কম। অফিসে আমার রুমে এসি অবশ্যই থাকবে। আমি কিছু ফাইল চেক করে সাইন করে দিব। মাস শেষে আমার একাউন্টে সেলারি ঢুকে যাবে। ছিমছাম ঝামেলা বিহীন চাকরি। সন্ধ্যার পর আমি পরিবারকে সময় দিবো। মাঝে মাঝে বেড়াতে যাবো।

চাকরি না পেয়ে গেলাম সৌদি।
আব্বা বলল যা ঘুরে আয়। সমস্ত টাকা আব্বা দিলো। পরে জেনেছি এই টাকা আব্বা জমি বিক্রি করে দিয়েছে। যাইহোক, সৌদি গেলাম। আমাকে কাজ দেওয়ার কথা ছিলো মক্কার থ্রি স্টার হোটেলের ম্যানেজার। কিন্তু তারা আমাকে পাঠিয়ে দেয় 'হাফার আল বাতেন' নামক এলাকায়। চারিদিকে শুধু মরুভূমি। প্রচন্ড গরম। তবে একটু পরপর ঝড় আসে। বাতাসের ঝড়। পুরো শরীর তখন ধুলো দিয়ে মাখামাখি অবস্থা। আমার কাজ হচ্ছে বড় বড় কাঠ কাধে করে নিয়ে আসা। এমন কাঠ যা আমার একার পক্ষে কাধে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। এক হুজুর লোক, তাকে সবাই মোতা বলে ডাকে। মোতা আমাদের বস। এই মোতা আমার উপর রেগে গেলো। বলল, পাকিস্তানের ছেলেরা পারছে, ফিলিপাইনের ছেলেরা পারছে তুই কেন পারবি না শালার ব্যাটা।

মাত্র সাত শ রিয়াল বেতন।
এই টাকা তো আমার থাকা খাওয়াতেই লেগে যাবে। আব্বাকে কি পাঠাবো? অবশ্য আব্বা বলেছে টাকা পাঠানোর দরকার নাই। একদিন মোতার সাথে ঝগড়া বেধে গেলো। মোতা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি দিলো। আমি কারখানা থেকে বের হয়ে এলাম। মোতা আমার পাসপোর্ট রেখে দিলো। এবং বলল 'আকামা' কখনও পাবে না। আমার সাথে কোনো টাকা নেই। এমন কি থাকার জায়গা নেই। আমার ভাগ্য ভালো সেখানে এক ছেলের সাথে পরিচয় হলো। আবু হাসান নাম। বাড়ি খুলনা। খুব ভালো ছেলে। আন্তরিক। সে আমাকে থাকার জায়গা দিলো। তার সাথেই খেতে বলল। এবং আমাকে বলল মোতার কাছ থেকে পাসপোর্ট এনে দিবে। হাফার আল বাতেন এলাকায় পানির খুব অভাব। সপ্তাহে একদিন পানি দিয়ে যায়। সেই পানি দু'দিনেই শেষ হয়ে যায়। এদিকে একদিন আব্বা ফোন দিলো। বললাম, খুব ভালো আছি। সেলারি ভালো। থাকা খাওয়ার কোথায় সমস্যা নেই।

একদিন আমি রাস্তায় হাটছিলাম।
হঠাৎ দুই পুলিশ এসে আমাকে মারতে শুরু করলো। বলল, এই ফকিন্নীর বাচ্চা মিসকিন। নামাজের সময় তুই রাস্তায় কেন? যাইহোক, সারাদিন আবু হাসানের গ্যারেজে বসে থাকি। আবু হাসান গাড়ি রঙ করে। যাকে ডেন্টিং পেন্টিং বলে। আবু হাসান মোতার কাছে গিয়েছিলো আমার পাসপোর্ট আনতে। মোতা দুই হাজার রিয়েল দাবী করেছে। আবু হাসান বলেছে সে এই টাকা দিয়ে আমার পাসপোর্ট উদ্ধার করে দিবে। আমার সারাদিন কোনো কাজ নাই। আবু হাসানের গ্যারেজে বসে থাকি। একদিন এক মহিলা এলো। সে তার গাড়ি ডেন্টিং পেন্টিং করতে দিয়েছিলো। মহিলা আবু হাসানকে বলল, এখন আমার সাথে টাকা নেই। কেউ একজন আমার সাথে আমার বাসায় গেলে আমি টাকা দিয়ে দিব। আবু হাসান মহিলার সাথে আমাকে পাঠালো। মহিলা গাড়ি চালিয়ে আমাকে তার বাসায় নিয়ে গেলেন। সুন্দর বাড়ি। অনেক বড় বাড়ি। বাড়িতে বেশ কয়েকটা খেজুর গাছ আছে।

মহিলা বাসায় ঢুকেই আমাকে বসতে বসে উপরে চলে গেলো।
একটু পর খেজুর, শরবত নিয়ে নামলো। আমাকে খেতে বলল। আমি বললাম খাবো না। টাকা দিন আমি চলে যাই। মহিলা বলল টাকা দিব না। তুমি আমার সাথে থাকো কিছুক্ষন। উপভোগ করো আমাকে। মহিলা বোরকা খুলে ফেলল। সে সম্পূর্ণ উদাম গা। বেশ মোটা মহিলা। গায়ের রঙ দুধে আলতায়। দেখতে মনোরম। কিন্তু আমি বেশ ভয় পাচ্ছিলাম। আমি বললাম টাকা দেন, আমি চলে যাই। মহিলা দুই হাত বাড়িয়ে আমাকে ডাকছে। আর বলছে, আসো। তোমাকে অনেক টাকা দিব। আমি অনেক ধনী। আসো বলছি। মিথ্যা বলব না, বেশ লোভ হচ্ছিলো আমার। কিন্তু আমি চিরকালের ভীতু মানুষ। দৌড়ে আবু হাসানের গ্যারেজে চলে এলাম। আমি আবু হাসানকে কিছুই বলল না ঘটনা। শুধু বললাম টাকা দেয়নি। এদিকে একদিন সেই মহিলা গ্যারেজে এসে হাজির। সেদিন আবু হাসান ভাই গ্যারেজে ছিলেন না। মহিলা বলল, তোমাকে আমি ভালোবাসি। তুমি সারাজীবন আমার সাথেই থাকো। আমি অনেক ধনী। সম্পদ আর টাকার আমার অভাব নেই।

যাইহোক, এরপর আমি দেশে ফিরে আসি।
মাঝে মাঝে মনে হয় সেই মহিলাকে বিয়ে করলে আজ আমি সৌদির একজন 'শেখ' হয়ে যেতাম। মহিলা দেখতে সুন্দরই ছিলেন। আমাদের নবীজিও তো এক বয়স্ক ধনী মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। সেই ধনী মহিলার সম্পত্তি নবীজি খরচ করেছেন। স্ত্রীর সম্পত্তিতে স্বামীর অধিকার আছে। মাঝে মাঝে আফসোস হয় খুব। এরপর আমি মরিসাস যাই। সেখানেও একটা ঘটনা আছে। সেই ঘটনা অন্য আরেকদিন বলব। তবে সৌদি আর মরিসাস ছয় মাস করে ছিলাম। ভাগ্য বদলায়নি। তবে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। যাইহোক, বর্তমান জীবন নিয়ে আমি অনেক খুশি আছি। স্ত্রী, কন্যা মা ভাই বোন নিয়ে ভালো আছি।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:২১

অধীতি বলেছেন: লেখা না আসলে জোর করে লেখার কোন মানে হয়না। আপনি এর থেকে ভাল লেখেন।

১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: আসলে আজ এক জায়গায় গিয়েছিলাম। সেখানে অনেকক্ষন অপেক্ষা করতে হয়েছে। তখন মোবাইলে লিখেছিলাম।

২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:২৪

কামাল১৮ বলেছেন: অভিজ্ঞতাই জীবন।প্রতিদিন অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন।

১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশ সমাজের কোনো উপকার হয় না।

৩| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ ভোর ৫:৪৪

সোনাগাজী বলেছেন:



আপনি তো পরিবারের বেশ পরিমাণ টাকা নষ্ট করেছেন।

৪| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ ভোর ৬:৪৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: রাজীব নুর,



বানোয়াট হলেও ভালো লেগেছে লেখার গুনে। ;)
তবে প্রথম প্যারায় যা লিখেছেন তাতে মনে হলো, শিরোনামের ছবির সাইনবোর্ডটির লেখা আপনার জন্যেই! :((

৫| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৮:৪৩

রিদওয়ান খান বলেছেন: ভেবেছিলাম লিখবেন, পাসপোর্ট প্রদানের জন্য মোতা আপনাকে পিছ মারার অফার করেছে। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে তাতে আপনি রাজি হয়ে পিছ মারা খেয়ে পরবর্তীতে পাসপোর্ট উদ্ধার করেছেন।

পরে আবার চিন্তা করলাম, নাহ! নিজের পিছ মারার কথা কী
আর কেউ এভাবে লিখবে!

৬| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১:৩০

বাকপ্রবাস বলেছেন: হা হা হা হা আপনি বন প্লেইটকেও ডিশ বানিয়ে ছাড়েন। সওদিতে আসেন একবার, উমরাহ করে যান।

৭| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১০:১৬

মুজাহিদুর রহমান বলেছেন: সত্যি কথা বলতে কি, ছোটবেলায় আপনার প্রথম প‌্যারার মত চিন্তা-ভাবনা আমারও ছিল। বিশেষ করে বাবা-মা বলত ভালো করে লেখাপড়া করলে আর কষ্ট করে কাজ করা লাগবে না, আপনার প্রথম প‌্যারার মত জীবন যাপন করতে পারবো। ব্যাপারগুলো ভাবলে এখনও হাসি পায়। :)

৮| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:১০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আপনার টাকা আছে সৌদি যাবার কি দরকার।

৯| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৬

সাইফুলসাইফসাই বলেছেন: এরকম গল্প প্রচলিত। যা আমি ছোট কালেও অনেক শুনেছি বা এখনও পড়লাম। আমিও দুবাই গিয়েছিলাম আর এরকম ঘটনার জন্য আতঙ্কিত থাকতাম সবসময় পুরুষ ও নারী উভয়ে জন্য। আমিও বেশি দিন থাকতে পারিনি বেশিরভাগ ভয়ের জন্য। ছেলে হয়েও আমি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছি। যা আজ প্রথম প্রকাশ করলাম। স্বদেশেই হয়রানির শিকার হয়েছি প্রথম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.