নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"চিত্ত যেথা ভয়শূণ্য উচ্চ সেথা শির\"...

রুদ্র সৌরভ

বাস্তববাদী মানুষ।বাস্তবতার সাথে মানিয়ে চলার চেষ্টায় ব্যাস্ত।এই নগরীর রাস্তায় হেটে চলি একাকী...

রুদ্র সৌরভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন ফুটবল জাদুকরের কথা (জাদুকর সামাদ)

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৬



পৃথিবীর সেরা ফুটবলার কে? কেউ বলবেন
পেলে/ ম্যারাডোনা অথবা কেউ হয়তো বলবেন
মেসি/রোনালদোর কথা। কিন্তু আজ আপনাদের
শোনাবো এমন এক জাদুকরের কথা যিনি পায়ের
ছন্দে মাতিয়ে রাখতেন ফুটবল জগতকে।
১৮৯৫ সালের ৬ ডিসেম্বরে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান
শহরের কাছাকাছি ভুরী গ্রামে এই জাদুকরের জন্ম
নেন। নাম তার সৈয়দ আবদুস সামাদ হলেও মানুষজনের
কাছে যাদুকর সামাদ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি।
১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে যখন
‘পাকিস্তান’ ও ‘ভারত’ নামক দু’টি দেশ জন্ম নিল, তখন
জাদুকর সামাদ চলে আসেন তৎকালীন পূর্ব
পাকিস্তানের দিনাজপুরের পার্বতীপুরে।
পেশায় রেল কর্মচারী সামাদ তার অপূর্ব
ক্রীড়াশৈলীর কারণে যাদুকর উপাধি
পেয়েছিলেন। ১৯১২ সালে কলকাতা মেইন টাউন
ক্লাবে যোগদানের মাধ্যমে তার খেলোয়াড়ি
জীবন শুরু হয়। পরে ১৯৩৩ সালে তিনি
মোহামেডানে যোগ দেন। তার সময়ে
মোহামেডান পর পর পাঁচবার আই এফ এ শীল্ড ও
লীগ জয় করে। এছাড়া তৎকালীন সর্বভারতীয়
দলের হয়ে নেতৃত্ব দেওয়া সামাদ ১৯৩৩ সালে
গ্রেট ব্রিটেনকে ৪-১ গোলে এবং শক্তিশালী
ইউরোপীয় টিমকে ২-১ গোলে পরাজিত করে।
সেসময় সামাদের অসাধারণ ক্রীড়ানৈপুণ্য দেখে
ইংল্যান্ডের তৎকালীন সেরা লেফট্ আউট কম্পটন
চমকে উঠে বলেছিলেন, ‘‘ধারণা ছিল না এমন
খেলোয়াড় এ দেশে দেখতে পাবো!’’
খেলার মাঠে প্রতিনিয়ত অবিশ্বাস্য ঘটনার জন্ম
দিতেন সামাদ। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছিল একবার
ইন্দোনেশিয়ায়। তহন সর্বভারতীয় ফুটবল দল
গিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার জাভায়। খেলা চলাকালে
ইন্দোনেশিয়ার বেশ ক’জন খেলোয়াড়কে
কাটিয়ে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে তীব্র শট
নিলেন সামাদ। কিন্তু বল গোলপোস্টের
ক্রসবারে লেগে ফিরে এলো মাঠে। বিস্মিত
হলেন তিনি। গোল হলো না কেন? কিছুক্ষণ পর
আবার চেস্টা করলেও বল আবারও
গোলপোস্টের ক্রসবারে লেগে ফিরে এল।
এবার সামাদ রেফারিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন,
'গোলপোস্টের উচ্চতা কম আছে। তা না-হলে,
আমার দুট শটেই গোল হতো'। পরে রেফারি
ফিতে দিয়ে মাপ নিয়ে দেখলেন আসলেই
গোলপোস্টের উচ্চতা স্ট্যান্ডার্ড মাপের
চেয়ে চার ইঞ্চি কম রয়েছে। এই ঘটনাটি আজো
কিংবদন্তী হয়ে রয়ে আছে ইতিহাসের পাতায়।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর খেলা ছেড়ে দিয়ে
সামাদ চলে আসেন দিনাজপুরের পার্বতীপুরে।
এরপর ১৯৫৭ সালে পাকিস্তান জাতীয় ক্রীড়া
পরিষদের বেতনভুক্ত ফুটবল কোচ হিসেবে
চাকরি শুরু করেন। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকার
তাঁকে সম্মানিত করে রাষ্ট্রপতি পদক দিয়ে।
এই ফুটবল কিংবদন্তী অসুস্থতায় ও চরম অর্থকষ্টে ভুগে
মৃত্যুবরণ করেন ১৯৬৪ সালে।
জীবদ্দশায় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পাননি
তিনি। যদি স্বাধীন দেশের ফুটবল যদি সামাদের
হাতে পড়ত, তাহলে হয়তোবা দেশের ফুটবল
ইতিহাসের চিত্রটা অন্যরকম হত। কালের পরিক্রমায়
সামাদকে আমরা হয়তো সেভাবে মনে রাখিনি। কিন্তু
তাঁর কীর্তিগুলো সামনে নিয়ে এলে হয়ত এই
প্রজন্ম তাঁর স্মৃতি বুকে নিয়েই এগিয়ে যেতে
পারত অনেকটা পথ।
সূত্র :ইন্টারনেট

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.