নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Freelance Blogger | Photographer | Contributor to @GettyImages | @HuffingtonPost | BG: O+(ve) Mail: [email protected]

রাজু রহমান

ভালোবাসি কবিতা লিখতে, অবসরে নিজের মনের কথা গুলো ফুটিয়ে তুলি বিভিন্ন ব্লগে বা ফেবুর ওয়ালে। পত্রযোগ https://www.facebook.com/RazuRahmanBD

রাজু রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা আমাদের বাবা-মার জন্য কতটুকু করেছি বা করতে পেরেছি? একবার ভাবুন তো?

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯

মেয়ের জন্মের সাথে সাথেই একটা গাছ লাগায় আব্দুল মজিদ। মেয়ে বড় হওয়ার সাথে সাথে সেই
গাছটিও বেড়ে উঠতে থাকে।। মাজিদ তার মেয়ের মতই সেই গাছটির যত্ন নেয়। নিয়মিত গাছে পানি দেয়া, আগাছা পরিষ্কার করা, গাছে খুঁটি দেয়া ইত্যাদি সবকিছুই করে সে।

মজিদ এখন যে গাছের নিচে বসে আছে সেটি আজ একটি বিশাল বটমূল। ছোটথেকে মানুষের মত যত্ন করেই এই গাছটিকে আজ সে বড় করেছে। যখনই সময় পায় সে এই গাছের নিচে বসে গাছের সাথে কথা বলে, গাছের কথাও যেন সে শুনতে পায় “হয়ত সেটা তার একান্তই ভাবনা।”

আজ আব্দুল মজিদের খুব টাকার প্রয়োজন। বিকেল বেলা সেই গাছের ছায়ার নিচে বসে ভাবতে লাগল, কিভাবে টাকার জোগাড় হবে? সে বিড়বিড় করে বলতে লাগল কোথায় থেকে পাব টাকা?
মজিদ যেন শুনতে পেল গাছ তাকে বলছে “আমার কয়েকটা ডাল কেটে বিক্রি করলেই তো পার।”
মজিদ সেটাই করল। গাছের কয়েকটা ডাল কেটে বিক্রি করল। এভাবে যেকোন প্রয়োজনে সে গাছের ডালপালা, ফলমূল বিক্রি করে নিজের বেঁচে থাকার চাহিদা মেটাত।

আজ ২৫ বছর পর মজিদের মেয়ের বিয়ে। সে আজ খুব খুশি। গাছের নিচে বসে একান্ত মনে সে অনেক কথায় বলল। মেয়ের বিয়ের রান্নার জন্য যে খড়ির প্রয়োজন তা সে গাছ থেকেই নেয়া হল। অতঃপর ধুমধাম করে সম্পন্ন হল মজিদের মেয়ের বিয়ে।

মেয়ের বিয়ের পর মজিদ বড় একা হয়ে গেল। সারাদিন সে একা একা সেই গাছের নিচে বসে থাকত বা কখনও মাদুর বিছিয়ে শুয়ে পড়ত সেই গাছের ছায়াতলে। মজিদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে নানা রকমের অসুখবিসুখ বাসা বাঁধতে লাগল তার শরীরে। মজিদ তার চিকিৎসার জন্য সেই গাছের সবথেকে বড় ২ টা ডাল কেটে ফেলল। ডাল কাটার পর গাছটি দুর্বল হতে শুরু করল।

এরপর থেকে তার ঔষধ কেনার জন্য একটা একটা করে গাছের ডাল কাটতে লাগল। কিন্তু সুচিকিৎসা না পাওয়ায় তার রোগ আরও বাড়তে লাগল। ডাক্তার বলেছেন অপারেশন করতে হবে। অপারেশন করতে ২০,০০০ টাকার প্রয়োজন। কোথায় থেকে পাবে মজিদ এত টাকা? তার যে সহায় সম্বল কিছুই নাই। কোন উপায় না পেয়ে মজিদ গাছটি কেটে ফেলল এবং সেই টাকা দিয়ে অপারেশন করাল।

অপারেশনের পরে একদিন বিকেল বেলা সেই গাছের গুঁড়ির উপর এসে বস্ল মজিদ। আহ, এই গাছটি তাকে সারাজীবন কতই না সাহায্য করেছে, কাঠ, ফলমূল, খড়ি, টাকা সবকিছু দিয়ে। আজ তার সেই গাছটিই নাই। মজিদের দুচোখ বেয়ে অঝরে বৃষ্টি ঝরতে থাকে।

কে এই গাছ জানেন?
এই গাছ হচ্ছে আমাদের “বাবা-মা”। হ্যাঁ, জন্মের পর থেকে এই গাছের মত করেই আমাদের বাব-মা আমাদেরকে আদর দিয়ে, মমতা দিয়ে, নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে, টাকা-পয়সা দিয়ে এই পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রেখেছেন।

অথচ আমরা আমাদের বাবা-মার জন্য কতটুকু করেছি বা করতে পেরেছি?
একবার ভাবুন তো?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.