নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের বিপরীতে না, সময়ের সাথে...

মোহাম্মেদ মুহসীন

বানিয়ে বানিয়ে আমি গল্প লিখতে পারিনা, আমি গল্পকার নই!!!

মোহাম্মেদ মুহসীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এসো হে বৈশাখ, এসো এসো...

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৮



এসো হে বৈশাখ, এসো এসো...

কতিপয় মূর্খ বাঙ্গালীরা এই ভাবেই প্রতি চৈত্রের শেষ দিকে বৈশাখকে আহ্বান জানায়, যদিও সবাই জানে যে কেউ না ডাকলেও বৈশাখ তার সময় মত হাজির হবে! তাহলে কেন ডাকে এই প্রশ্নকি কার মনে এসেছে কখনো?

নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যে...!

অবাক হয়েছেন ? আচ্ছা আমার সাধারণ বুদ্ধিতে বুঝিয়ে বলি, বাংলা সিনেমায় অবশ্যই দেখেছেন সবাই, নায়ক রাজ-রাজ্জাক এর অনেক টাকা পয়সা, স্ত্রী – সন্তান এবং নাতি - নাতনী নিয়ে সুখি পরিবার, সবাই পরিবারের কর্তাকে খুব ভালবাসে, দরকারে অদরকারে এটা সেটা উপহার দেয় ঠিক ততদিন; যতদিন কর্তার কাছে অনেক টাকা থাকে, সংসারের হাল ধরে থাকে। কোন এক দুর্ঘটনায় কর্তার টাকা শেষ হয়ে যায় তখন সবার ভালবাসাও শেষ!

এখানেও ঠিক তেমনি, প্রকৃতি চৈত্রকে ডাকে শীতের হাত থেকে বাঁচতে আর বৈশাখকে ডাকে চৈত্রের দাবদাহতা থেকে বাঁচতে, কিন্তু কাল-বৈশাখী যে কৃষকের ক্ষতি করে যাচ্ছে, গরিবের চালা উড়িয়ে নিচ্ছে তার সেদিকে খেয়াল নেই। মানুষও ডাকে শুধুই তার স্বার্থের জন্যে, ছোট বেলায় আমাদের কাছে এইদিনটা অনেক পছন্দের ছিল, কেননা এই দিনে মেলা হত, গ্রামে বসবাস করতাম বলে দুই ঈদ, ডিসেম্বর এর বিজয় মেলার পরে এই দিনটা ছিল আনন্দের, বাড়ি থেকে অনেক দূরে মেলা বসতো, বাড়ির বড় কারো হাতে-পায়ে ধরে যেতাম, খৈ – মুড়ি আর বাতাশা কিনে দিত, সেই সাথে একটা বেলুন লাগানো বাঁশী কিনে দিলে ঈদ এর মত আনন্দ হত।

তখনো এসো হে বৈশাখ, এসো এসো বলে আহ্বান করাটা ঠিক ছিল, কিন্তু আজ-কাল কি একটা ডং চালু হয়েছে বইশাখের সকালে ইলিশ-পান্তা খেতে হবে! বলে বেড়ায় হাজার বছরের বাঙ্গালির ঐতিহ্য, যদিও আমাদের সবচেয়ে পুরনো শহর ঢাকার বয়স সবে ৪০০ পেরিয়েছে, যদি মেনেও নেই যে ইলিশ – পান্তা একসময় আপামর বাঙ্গালীর গরমের কালের সকালের নাস্তা ছিল বলেই এই ডং, তাহলে বলব হ্যাঁ একটা সময় হয়তো ছিল, সেসময় অনেক ইলিশ ছিল আমাদের নদীতে, খুব সহজে পাওয়া যেতো, কারো ঘরে খাবার সংরক্ষনের জন্যে ফ্রিজ ছিল না, রাতে খাবার পরে থেকে যাওয়া ভাতে পানি ঢেলে রাখতো খারাপ হওার ভয়ে, তাই গরিব বাঙ্গালি পানি পান্তার সাথে এক টুকরা ইলিশ দিয়ে দিন শুরু করত।

আজকে যুগ বদলেছে, মানুষের অভ্যাস বদলেছে, ঘরে ঘরে খাবার সংরক্ষণের জন্যে ফ্রিজ আছে, মধ্যবিত্ত বাঙ্গালি সকালে রুটি খায়, উচ্চবিত্তরা সেই অনেক আগে থেকেই বিদেশি কায়দায় নাস্তা করত, বাংলাদেশের কৃষকও এখন আর পান্তা খায় না, শুধু এই একটা দিনের পান্তার সাথে ইলিশের আয়োজন করতে গিয়ে, শত শত পাতিল গরম ভাতে পানি ঢালতে হচ্ছে, যেখানে আমাদের বিশুদ্ধ্য পানির অভাব, নদী থেকে ছোট বড় সব ইলিশ ধরতে হচ্ছে, যদিও অনেকেরই সেই ইলিশ বাজার থেকে কেনার সামর্থ্য নাই, আর সেই জন্যে অনেকের সংসারে অশান্তি, ছোট ছোট ছেলে-মেয়ের কাছে বাবার নতজানু। অনেক সময় খবরে আসে ইলিশ প্রাপ্তির জন্যে ছাগল বিক্রির ঘটনা !

এর চেয়েও বড় কথা যেটা আমার সাধারণ বুদ্ধিতে আসে, সেটা হচ্ছে এই পান্তা-ইলিশ খাওয়ার ডং হচ্ছে আমাদের জাতীয়তা বিরোধী, একটু ঠাণ্ডা ভাবে চিন্তা করলে বুঝবেন ঠিক যে সময়ে ইলিশ ধরাটা ঠিক না, সেই সময়ে আমাদের ইলিশ খাওয়ার ধুম পরে, কেন ???
ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, মানে জাতীয় সম্পদ, যখন সেই সম্পদ বৃদ্ধির সময়, ঠিক তখনি একটা ডং দেখাতে গিয়ে তার গোড়া থেকে উপড়ে ফেলার চেষ্টা করছি! এই আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে সবাই জানে, এই সময়টা ইলিশ বড় হবার সময়, আর আমাদের দেশের মিঠা পানির নদী গুলো ইলিশ মাছের কাছে খুব প্রিয় তাদের শৈশব কাটানোর জন্যে, তাই মা ইলিশরা এখানে চলে আসে ডিম দেয়ার জন্য! ঠিক যেমনটা আমাদের প্রায় সবারই জন্ম হয়েছে নানা বাড়িতে, যেখানটা ছিল সব বাঙ্গালী ছেলে-মেয়ের শৈশবের সবছেয়ে প্রিয় যায়গা ।

তাই আমি বলব, এসো না, বৈশাখ এসো না, কেননা কিছু মূর্খ বাঙ্গালী তোমার উছিলা দিয়ে নিজের জাতীয়তা ধ্বংসে লিপ্ত হয়! আর এটা তারাই বেশি করে যাদের হাতে আমাদের ভবিষ্যৎ।

আমার সাধ্য থাকলে যারা বৈশাখে এই পান্তা-ইলিশ এর আয়োজন করে, এদের বিরুদ্ধে থানায় নালিশ করে দিতাম, কারন আমার চোখে এরা দেশদ্রোহী, নিজের জাতীয়তার বিরেদ্ধে কাজ করছে, এবং সবাইকে উদ্বুদ্ধ করছে একই কাজ করতে।

অনেকে আমাকে মৌলবাদী ভাবতে পারেন, কেননা আমি বৈশাখের এই ডং এর বিরুদ্ধে বলেছি, তাদের জন্যে বলছি, আমি কোন ধর্মগুরু না, আমি ধর্মভিরুও না, আমি অতি সাধারণ এক ধর্মপ্রান বাঙ্গালি, আমি আমার সাধারণ বুদ্ধিতে যা বুঝি তাই বলেছি ।

সবাইকে নতুন বছরে শুভেচ্ছা ।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৫৭

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: হুম বুঝলাম।

পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা রইলো

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:১২

মোহাম্মেদ মুহসীন বলেছেন: আমার ১লা বৈশাখ, হা হা, শুভেচ্ছা রইল ।

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:০৬

সিনবাদ জাহাজি বলেছেন: শুভ নববর্ষ

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:১১

মোহাম্মেদ মুহসীন বলেছেন: শুভ নববর্ষ

৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:১৭

এম এ কাশেম বলেছেন: তিক্ত হলেও কিছু সত্য বলেছেন।

শুভ কামনা।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:১২

মোহাম্মেদ মুহসীন বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:১৯

সৈয়দ হাসান ওমর বলেছেন: বুঝতে পেরেছি, কিন্তু কথা হলো আমাদের এই হই-হল্লুড়ের সময় আপনার মতো করে এভাবে ভাববার সময় কি আছে। অতএব........।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:১৬

মোহাম্মেদ মুহসীন বলেছেন: আপনার সাথে একমত, আমার নিজের ঘরেই অন্যথা চলে !
আর আমি কিন্তু হই-হুল্লুড়ের বিপক্ষে না, শুধু এই পান্তা-ইলিশ খাওয়ার ডং এর বিপক্ষে, কারণ এতে সামগ্রিক ভাবে বাঙ্গালির ক্ষতি ।

৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫০

চাঁদগাজী বলেছেন:


"তাই আমি বলব, এসো না, বৈশাখ এসো না, কেননা মূর্খ বাঙ্গালি তোমার উছিলা দিয়ে নিজের জাতীয়তা ধ্বংসে লিপ্ত হয় ! আর এটা তারাই বেশি করে যাদের হাতে আমাদের ভবিষ্যৎ ।"

-"এসো হে বৈশাখ " তো কৃষক, শ্রমিক, অশিক্ষিত মানুষ লিখেননি, বলেননি; লিখেছেন এক বড় পন্ডিত; মানুষের তা পছন্দ হয়েছে, মানুষ গাইছে; আপনি আপনার গান গেয়ে যান; সমস্যা হলো, ছাগলও হাতীর সমান হতে চায়।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:২০

মোহাম্মেদ মুহসীন বলেছেন: দোয়া করবেন

৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:০০

ধ্রুবক আলো বলেছেন: আপনার কথা আর আমার কথা প্রায়ই একি তাই জোরালো সমর্থন দিলাম।
কিন্তু পাগল, বুঝ, জ্ঞান হীন কি কখনো বুঝবে?!

যায় হোক, নতুন বছর শুভ হোক,
ব্লগিং চালিয়ে যান।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:২২

মোহাম্মেদ মুহসীন বলেছেন: ধন্যবাদ ।
আপনি বুঝেছেন, আমি বুঝেছি, দিনে দিনে তারাও বুঝবে আশারাখি !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.