নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিচিত, অর্ধ-পরিচিত কেউ আমাকে ঘৃণা করে না। কিন্তু আমি যাকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি সেই মানুষটা আমাকে প্রচণ্ড ঘৃণা করে!

আকাশ দেখা ঘুড়ি

এভ্রি সিঙ্গেল পোস্ট ইজ এ সাইলেন্ট ম্যাসেজ টু সামওয়ান!

আকাশ দেখা ঘুড়ি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঠাকুমা

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬

অসময়ের আশ্রয়স্থল,সবকিছুর মূল ভরসা আর ছোট ছোট দুঃখের একমাত্র সঙ্গী ছিলেন ঠাকুমা। এইটা খাবো, ওইটা খাবো, ঘুরতে যাবো এই সব আবদার ঠাকুমাই মেটাতেন। ছোটবেলায় ঠাকুমার জন্যই বারংবার মায়ের হাতে মার খাওয়া থেকে বেঁচে যেতাম। সব সময় নিজের ছায়া দিয়ে রাখতেন, মাকে কিছু বলতেও দিতেন না এতোটা ভালোবাসতেন। স্কুলে নিয়ে যাওয়া, ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া, পূজা দেখতে নিয়ে যাওয়া, মেলায় নিয়ে যাওয়া, আরও কতো কিছু, ঠাকুমা ছাড়া যেনো এইগুলো অসম্ভবই ছিল। ৬৫-৬৬ বছর বয়সে স্কুলে নিয়ে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা, ক্লাস শেষ করে বাসায় নিয়ে আসা কিন্তু মুখের কথা না। আমি স্কুল মিস দিলে বা কোনো দুষ্টামি করলে মা যখন বকাঝকা করতেন ঠাকুমা তখন নিজের বুকে আগলে রাখতেন। মাকে উল্টো দমক দিতেন আর আমি ঠাকুমার পিছনে দাঁড়িয়ে হাততালি দিতাম। মাঝেমধ্যে ঠাকুমা যদি কোথাও একা চলে যেতেন তাহলে ভালো লাগতো না আমার, তবে একটা আশা নিয়ে বাসায় বসে থাকতাম যে, ঠাকুমা কিছু খেলে অবশ্যই আমার জন্য নিয়ে আসবেন। হুম কথাটা সত্যি, এমন দিন খুব কম এসেছিল যে ঠাকুমা নিজের খাবার থেকে কিছু নিয়ে আসেননি। ক্লাস নাইন-টেনে উঠার পরও ঠাকুমার পাশেই ঘুমাতাম, না হলে ঘুম আসতো না। ঠাকুমা টিভি দেখতে পছন্দ করতেন,একদিন রাত্রে টিভি দেখা শেষ করে ঘুমানোর জন্য বিছানা ঠিক করছিলেন, হঠাৎ একটু অসুস্থ হয়ে গেলেন, কথা বলা বন্ধ করে দিলেন। মুখ থেকে পান বের হয়ে আসলো। সাথে সাথেই ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুদিন পর বাসায় ফিরে আসলেও শেষ ৩-৪ টা বছর থেকে আর আগের মতো একা একা কিছু করতে পারেননি। ঠাকুমা লুডু খেলতে খুব পছন্দ করতেন। শেষ দিকে খুব কম সময় পেয়েছি লুডু খেলার জন্য। তখন সুযোগ পেলেই ইচ্ছে করে হারতাম, ঠাকুমা জিতে খুব খুশি হতেন। ওনার শেষ একটা বছর খুব কষ্টেই পার হয়েছে। অধিকাংশ সময় বিছানায় শুয়ে কাটিয়েছেন।চোখেও সমস্যা দেখা দিয়েছিল, এক চোখ অপারেশন করানো হয়েছিল কিন্তু বয়সের জন্য অন্যটা করানো যায়নি। বাসার মানুষ ছাড়া কাউকে খুব সহজে চিনতে পারতেন না। আত্মীয়স্বজন কেউ আসলে চিনতে পারতেন না, চোখের সমস্যার কারণেই এমন হতো। কিন্তু আমি যখন ওনার পাশে থাকতাম তখন যদি আমার গায়ে একটা মশাও বসত ঠাকুমা সেটাও দেখতে পেতেন। জানি অবিশ্বাস্য তবুও এইটাই সত্যি, আমরাই অবাক হতাম। আজ ২৮ শে ডিসেম্বর, আমার ঠাকুমার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ঠাকুমা তুমি আশেপাশে নেই, কিন্তু জানি তুমি দূর থেকেও আমাকে আশীর্বাদ করছ। তুমি যেখানেই থাকো ভালো থেকো। যদি পারো একটু আশীর্বাদ করো যেন সে ফিরে আসে, না পারলে আমাকেও নিয়ে যাও তোমার কাছে :)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৯

কল্লোল পথিক বলেছেন: ভাল লেগেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.