নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কে আলাদা ভাবে কিছুই বলার নেই। খুব সাধারন মানুষ। অন্য আট, দশজনের মতোই।

রাসেলহাসান

লেখালিখি করতে ভালো লাগে তাই লিখি। নতুন কিছু ক্রিয়েট করতে সব সময় ভালো লাগে। ফেসবুক লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/rasel.hasan.7

রাসেলহাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

---"রহস্যের চাদরে মোড়ানো একটি রাত"--- (ছোট গল্প)

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৩:০৪

রাত ১২ টা বেজে গেছে অথচ' রবিনের সেদিকে কোন খেয়াল নেই। একটা কল সেন্টারে চাকরি করে রবিন। প্রমোশন পেয়েছে আজ! তাই পার্টি চলছে। রবিন একের পর এক ড্রিংস করেই চলেছে।

কিরে রবিন তুই কি আজ বাসায় যাবি না?

কেন? তোর আবার কি হয়েছে? হঠাৎ বাসায় যাওয়ার কথা বলছিস যে?

রাত ১২ টা বেজে গেছে, সে খেয়াল কি আছে তোর?

কি বলিস! ১২ টা বেজে গেছে? সোহেল তুই আমার সাথে ফাজলামো করছিস?

না সত্যি দোস্ত, অনেক রাত হয়ে গেছে। তুই ড্রিংস করতে করতে হয়ত সময়ের কথা ভুলেই গেছিস..হ্যাঁ দোস্ত, হবে হয়তোবা.. আমি তাহলে উঠি।

একা যেতে পারবি? না আমি আসবো সাথে?

ধুর কি যে বলিস, এতটা টাল হয়নি! একাই যেতে পারবো। আর আমার সাথে কার আছে নাহ, আমি আমার আর কার আজকে লং ড্রাইভে...

বুঝছিস?

তুই তো ঠিক মত দাড়াতেও পারছিস না,

যাবি কি করে?

আরে ওইসব চিন্তা বাদ দে, ঠিকই যেতে পারবো।

শাহিন আর ফুয়াদ কোথায়? ওরা কি চলে গেছে?..

ওরা তো সেই কখন চলে গেছে,

যাওয়ার আগে তোকে তো বলে গেলো ভুলে গেছিস?

হুম খেয়াল নাই। যাই দোস্ত, কাল দেখা হবে বাই...

ওকে সাবধানে যাস কিন্ত।

বার থেকে ঢুলতে ঢুলতে রাস্তায় বের হলো রবিন,

পকেট থেকে রিমোট বের করে টিপ দিলো। হলুদ আলো জ্বলে উঠলো।

হুম, ওইতো আমার গাড়ী...



কিছুদিন আগে টয়োটা প্রিমিও কিনেছে রবিন। এখনো চক চক করছে, ব্রান্ড নিউ কার। খুব শখের গাড়ী রবিনের। গাড়ীর দরজা খুলতে খুলতে মুখে আরেকটা সিগারেট ধরালো রবিন। সিগারেট মুখে নিয়ে একটা জোরালো টান দিলো রবিন। মুখ থেকে ধোয়া ছাড়তে ছাড়তে গাড়িতে চেপে বসলো। গাড়ী স্টার্ট করে পারকিং জোন থেকে বেরিয়ে সোজা রাস্তায় নামালো, কুয়াশায় ঘেরা চারিদিক, ফাকা রাস্তা গাড়ীর স্পীড ৯০ থেকে ১০০ এর কাছাকাছি। গভীর রাত প্রায়। চারিদিকে কোন মানুষের সন্ধান নেই। শুধু ফাকা আর ফাকা। এক হাত দিয়ে সিগারেট টানছে আর এক হাত দিয়ে গাড়ী ড্রাইভ করছে। হঠাৎ সামনে দেখতে পেলো, রাস্তার সাইডে একটা লোক হাত উঁচু করে লিফট চাচ্ছে। রবিন গাড়ী আস্তে স্লো করে থামালো। লোকটা দৌড়িয়ে এসে জানালার কাছে মুখ নিয়ে গ্লাসে টোকা দিল। রবিন গ্লাস নামিয়ে,

কি চাই?

ভাই অনেক বিপদে পরেছি একটু লিফট দেওয়া যাবে?

এত রাতে, আপনাকে চিনিনা জানিনা লিফট দেই কি করে?

প্লিজ ভাই কোথাও কিছু পাচ্ছি না, একটু সামনে যাবো প্লিজ ভাই, নিন না...

রবিন সিগারেটে একটা টান দিয়ে দরজা খুলে দিলো, হুম.. আসুন।

ধন্যবাদ ভাই, সত্যি অনেক উপকার করলেন।

ইটস ওকে, তা কোথায় যাবেন?

এইতো সাম্নেই নেমে যাবো।

কিছুদুর যাওয়ার পর, সামনে চেক পোস্ট দেখতে পেলো রবিন।

একটা পুলিশ দৌড়িয়ে এলো...স্টপ স্টপ... গাড়ী থামান,

গ্লাস নামিয়ে দায়িত্বরত পুলিশ কে জিজ্ঞেস করলো রবিন, কি সমস্যা ব্রাদার?

গাড়ী নিয়ে সামনে যাওয়া যাবেনা, সামনে একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে।

এক্সিডেন্ট? কিসের এক্সিডেন্ট?

ঘন কুয়াশা আর ঝড়ো হাওয়ার কারনে একটা গাছ বিদ্যুতের তারের পরে পড়ে, ল্যাম্প পোস্ট সহ রাস্তায় পড়েছে। এখন সেখানে রাস্তার পানিও কারেন্ট হয়ে গেছে, একটা লোক মারাও গেছে।

আপনার অন্য কোন রাস্তা দিয়ে যেতে হবে। গাড়ী ব্যাকে নেন।

রবিন গাড়ী ব্যাকে নিয়ে আবার আগের রোড ধরে চলা শুরু করেছে। বাড়ি যাওয়ার রোড তো ওই একটাই। এখন কিভাবে যাবে? পাশের লোকটি বলে উঠলো, সমস্যা নাই ভাই..আমি শর্ট কার্ট রাস্তা জানি। আপনি সামনের ওই বাগানের রাস্তা ধরেন। ওইখান থেকে শর্ট কার্টে বেরনো যাবে। শিওর? হ্যাঁ শিওর...

গাড়ী ঘুরিয়ে পাশের জঙ্গলের রাস্তা ধরলো রবিন। চারিদিকে ঘন কাল অন্ধকার, সামনে ঠিক মত সব কিছু স্পষ্ট না। হুম, এখন কোনদিকে?

হ্যাঁ ডান দিয়ে যান..কিছুদুর চলতে চলতে

গাড়ী হঠাৎ একটা জায়গায় আটকে গেল। আর উঠছে না। গাড়ী থেকে নামায় লাগ্লো রবিনের।

লোকটিও নেমে পড়লো। গাড়ীর চাকা নরম মাটিতে আটকে গেছে, এখান থেকে উঠানো মুশকিল। রবিন বলল, আমি গাড়ী স্টার্ট দিচ্ছি আপনি পিছে জোরে ঠ্যালা দেন।

রবিন গাড়ী স্টার্ট দিল, লোকটিও প্রান পনে চেষ্টা করলো কিন্ত কোন কাজ হলোনা। রবিন গাড়ী থেকে নেমে পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করলো। সিগারেট ধরাতে ধরাতে লোকটিকে বলল, আজকে রাতটা হয়তো এই জঙ্গলে কাটিয়ে দিতে হবে। লোকটি বলল, ইস আর কিছুদুর গেলেই তো আমার বাসায় পৌঁছে যেতে পারতাম। এখন এই অন্ধকার জঙ্গলে কি করে থাকবো? কেন আপনার কি ভুতের ভয়, টয় আছে নাকি?

লোকটি বলল, ভুতের ভয় কার না আছে...

আমার কিন্ত ভুতের ভয় নেই।

কি বলেন ভাই আপনার ভুতের ভয় নাই?

রবিন হেসে উত্তর দিল, এইসব আজাইরা ভয় আমার নাই।

তাছাড়া ভুত, প্রেত বলতে পৃথিবীতে কিছুই নাই। সব ফালতু।

তা আপনার নামটা জানা হলোনা, আপনার নাম কি ভাই?

আমার নাম "মকবুল জমাদ্দার। দুই ছেলে মেয়ে আছে। এইতো পাশেই আমার বাসা।

আজকে আপনি আমার জন্য কি বিপদেই না পরলেন ভাই...

আরে কিসের বিপদ, এটা কোন ব্যাপার না। এরকম হতেই পারে, আর আপনার জন্য কেন বিপদে পড়বো? কপালে ছিল তাই হইছে। হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে রবিন বলল, এখন তিনটা বাজে। আর বেশিক্ষন নাই। একটু পরেই তো সকাল হয়ে যাবে তখন একটা ব্যাবস্তা করা যাবে। আসেন গাড়ীর ভেতরে ঢুকে বসি। না ভাই আপনি ভেতরে বসেন আমি বাইরেই থাকি সমস্যা নাই। কি বলেন? একা একা বাইরে নিরাপদ নয়, গভীর রাত আর জঙ্গলের মধ্যে

কোন জীব, জন্তুও আক্রমন করতে পারে। ভেতরে আসেন। না আপনি বসেন আমি বাইরেই থাকি। ওকে আপনি যা ভালো মনে করেন। রবিন গাড়িতে ঢুকে একটা গান ছেড়ে দিলো স্লো সাউণ্ডে।

রবিন ভাই! আপনি বসে বসে গান শুনতে লাগেন, আমি একটু সামনে যেয়ে দেখে আসি কিছু পাওয়া যায় কিনা। কোন বাবস্থা হলে তো ভালো...

আপনি অন্ধকারে একলা যাবেন কি করে?

সমস্যা নাই সামনেই রাস্তা। আমার এই পথ ভালো করেই চেনা আছে, কোন সমস্যা হবেনা।

আপনি গান শুনতে লাগেন আমি আসছি।

আর হ্যাঁ, জানালার গ্লাসটা ভালো করে লাগিয়ে দিয়ে তাই বসুন, আমি এসে টাক দিলে তাই খুইলেন।

ওকে...

মকবুল যাওয়ার পর জানালা বন্ধ করে দিয়ে গান শুনতেছে আর একের পর এক সিগারেট ধরাচ্ছে রবিন। প্রায় আধা ঘণ্টা পার হয়ে গেলো, মকবুল এখনো আসেনা।

রবিনের চোখ বুজে আসছে গভীর ঘুমে, আবার চিন্তা করছে মকবুল আসলে যদি টের না পায়? বেচারা তাহলে তো বাইরেই দাড়িয়ে থাকবে। এসব চিন্তা করতে করতে কখন যে রবিন ঘুমিয়ে পড়লো ঠিক পেলোনা।

-জানালার টক টক শব্দে ঘুম ভাঙল রবিনের। চোখ ডোলতে ডোলতে গাড়ীর দরজা খুলল রবিন। কিরে তুই এখানে কি করিস? গাড়ী থেকে বাইরে বের হ...

রবিন দেখতে পেলো, এতো মকবুল নয়, এতো ওর বন্ধু সোহেল। আর বাইরে আলো ফুটে গেছে অনেক আগে। আর সোহেলই বা কি করে এই জঙ্গলে এলো?

রবিন গাড়ী থেকে বাইরে বের হলো, আর সাথে সাথে মাথাটা একটা চক্কর দিয়ে উঠলো।



গাড়ী কোন জঙ্গলে নয়! গাড়ী সেই পারকিং #এরিয়াতেই আছে! শরীরের মধ্যে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে উঠলো রবিনের।

তুই কি সারা রাত গাড়িতেই ছিলি?

সোহেলকে কি জবাব দেবে রবিন বুঝে উঠতে পারলো না। কি বলবে রাতের যে সব ঘটনা ওর সাথে ঘটেছে সেগুলো কি বিশ্বাস করবে সোহেল? এটা কি করে সম্ভব? কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না রবিনের। আচ্ছা তুই কোথায় ছিলি? আর আমি যে এখানে তা তুই কি করে টের পাইলি?

রবিনের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সোহেল।

শোন রাতে তুই বেরিয়ে যাওয়ার পর, আমিও ও বের হয়েছিলাম। কিছুদুর যাওয়ার পর দেখি চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। সেখান থেকে বলল, সামনে যাওয়া যাবেনা। একটা ল্যাম্প পোস্ট ভেঙ্গে পড়ছে নাকি, আর একটা লোক মারাও গেছে। পানিতেও বিদ্যুৎ ছড়িয়ে গেছে। এগুলো শোনার পর আমি পাশেই এক রেস্ট হাউজে রাত কাটায়। সকালে যখন বের হবো তখন তোর বাসা থেকে ফোন আসে তুই নাকি রাত্রে বাসায় পৌছাইস নাই। এজন্য তোকে খোঁজ করতে করতে এই পর্যন্ত।

কি বলছিস তুই? আর আমিও তো ওই চেক পোস্ট পর্যন্ত...

না থাক তা তুই আমাকে ফোন দিতে তো পারতিস? ফোন দিস নাই কেন?

তোর কাছে ফোন থাকলে তো ফোন দেবো। রাতে তুই বারেই ফোন রেখে চলে গেছিলি। সকালে বারে খোঁজ নিতে এসে তোর ফোন পাই।

এখন চল, তোকে নিয়ে আগে বাসায় যাই। তোকে বাসায় রেখে তারপর আমি আমার বাসায় যাবো। তোর গাড়ী নিবি না? ওটা পরে নেয়া যাবে তুই আগে চল। তুই সর আমি ড্রাইভ করছি। রবিন পাশের সিটে বসে চিন্তা করছে, রাতে যা ঘটলো তা কি সব মিথ্যা? কি করে সম্ভব? সিগারেটের প্যাকেট হাতে নিয়ে দেখলো রাতে যে কইটা সিগারেট বের করেছে সেই

কইটাই কম আছে, অবাক! সেই চেক পোস্টের একটু সামনে যেয়ে অনেক মানুষজন দেখতে পেলো রবিন। সোহেলকে গাড়ী স্লো করতে বলল, জানালার বাইরে হাত বাড়িয়ে একজন লোককে ডাক দিল রবিন। এই যে ভাই একটু শুনুন তো?

জী ভাই বলেন?

আচ্ছা এখানে যে লোকটা মারা গেছে তার নাম কি?

লোকটি বলল, তার নাম মকবুল...

নামটা শোনার পর ভয়ে শরীরটা জমে গেলো রবিনের।

আচ্ছা ওনার কি কোন ছেলে মেয়ে আছে?

হ্যাঁ..মকবুলের দুই ছেলে মেয়ে।

আচ্ছা আপনি যান।

কি হয়েছে কোন সমস্যা? এই গুলো জিজ্ঞেস করলি কেন? সোহেল রবিনকে জিজ্ঞেস করতেছিল।

না এমনি জিজ্ঞেস করলাম। তুই গাড়ী চালা...

রবিনের মাথার মধ্যে ঘুরতেছে, এসব কি হলো? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না..

পরান টা ধুক ধুক করছে। হঠাৎ মাথায় আসলো মকবুল যখন চলে গেলো, যাওয়ার আগে যে বলল, রবিন ভাই আমি এসে গ্লাসে টোকা দিলে তাই খুলবেন...

কিন্ত আমিতো ওকে আমার নাম বলিনি যে আমার নাম রবিন!

আর গাড়িটায় বা জঙ্গল থেকে পারকিংয়ে আসলো কি করে?

কয়েকটা প্রশ্নের সমাধান কিছুতেই খুজে পাইনা রবিন।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৪:১৪

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: হাউকাউ

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৫৮

রাসেলহাসান বলেছেন: 8-| B:-) !:#P :P

২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৭:৪৫

খেয়া ঘাট বলেছেন: সবকিছু খুব দ্রুত ঘটে গেলো।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৫৮

রাসেলহাসান বলেছেন: হুম.। :P :#>

৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৪:১০

অপ্রচলিত বলেছেন: পটভূমিটা বেশ ভালো ছিল। আরও অনেক ভালো হতে পারত গল্পটি।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:০৬

রাসেলহাসান বলেছেন: আরেকটু ভালো ভাবে চেষ্টা করলে কিছুটা ভালো হতে পারতো। চেষ্টা করবো পরবর্তীতে মনোযোগ দিয়ে আরো ভালো কিছু লেখার।
জানাবার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.