নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কে আলাদা ভাবে কিছুই বলার নেই। খুব সাধারন মানুষ। অন্য আট, দশজনের মতোই।

রাসেলহাসান

লেখালিখি করতে ভালো লাগে তাই লিখি। নতুন কিছু ক্রিয়েট করতে সব সময় ভালো লাগে। ফেসবুক লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/rasel.hasan.7

রাসেলহাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ "বৃষ্টি"

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৯



বৈশাখ চলে এলো প্রায় তবুও বৃষ্টির যে এখনো কোন দেখা নাই!

শহরের বিভিন্ন জায়গাতে বৃষ্টি হয়েছে তবু এই বাড়ির উঠনে এখনো পর্যন্ত বৃষ্টি নামেনি। সবখানেই নাকি শিলা বৃষ্টি হচ্ছে!

এখানেও একটু শিলা বৃষ্টি হতে পারতো। আপাতত শুধু বৃষ্টিটা হলেও বা কি ক্ষতি ছিল?

একটু বৃষ্টির অপেক্ষায় যেনো দিন ফুরিয়ে যায়।

খনিকের একটু ভালো লাগার অপেক্ষায় অবাক চাহিয়া রয় রুদ্র।

রৌদ্রের তিব্রতা কাটিয়ে আকাশে ঘন বর্ষণের মেঘ ভেসে উঠবে সেই অপেক্ষায় অপার দৃষ্টিতে দুরপানে চেয়ে রয় রুদ্র। সময় গড়িয়ে চলেছে,

রৌদ্রের তাপদাহ বাড়ছে তবুও রুদ্রের মন থেকে কেমন যেনো বলছে খুব শীঘ্রই আজ তুমুল আঁকারে বৃষ্টি শুরু হবে। বাড়ির পেছনের জামগাছ তলার সাথে মিশে থাকা দেয়ালটার ওপর প্রায় ২ ঘণ্টা যাবত বসে আছে রুদ্র। ওর মনটা

কখন ভালো হয় আর কখন খারাপ হয় ও নিজেও ঠিক মত বুঝতে পারেনা।

এখন ওর মনটা বেশ খারাপ এটা ওর চেহারার এক্সপ্রেশন দেখলেই বোঝা যায়।

অতীতের কিছু স্মৃতি আজ গভীর ভাবে ঘিরে আছে ওকে তাই অনেকটা আবেগে চোখের কোনে জ্বল টসটস করছে। কিশু স্মৃতি হাত বাড়িয়ে ডাকে। কিছু কথা মনের আড়ালে চাঁপা পড়ে যায়। একাকীত্বের জন্ত্রনা বিষণ্ণ মনকে কুড়ে কুড়ে খায়।

ভীষণ কষ্ট হয় যখন আপন কেউ সুখের দিনের সাথী হয়, অথচ দুঃখের দিনে সে জীবনের কোন অংশে থাকেনা! বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা কমে আসছে, নাকি রুদ্রের শ্বাস কষ্ট বাড়ছে! বেশী কষ্টের কোন স্মৃতি মনে পড়লে রুদ্রের বুকের বাম পাশে চাঁপা ব্যাথা হয় আর তখনই শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এজন্য ডাক্তার "ইনহেলার" দিয়েছে সর্বদা কাছে রাখার জন্য। শ্বাস কষ্ট হলেই এটা খুব কাজে আসে। কিন্ত রুদ্র সহজে পাম্প ব্যাবহার করেনা! ওর কষ্ট সহ্য করাটা অভ্যাসে পরিনত হয়ে গেছে। চোখে ভাসছে পুরনো দিন গুলির স্মৃতি, বন্ধুদের স্মৃতি। বিশেষ করে "নীলা" নামের মেয়েটার স্মৃতি! কেন চলে গেলো ওভাবে?

কিছু প্রশ্ন মাথার মধ্যে চক্কর দেই রুদ্রের। প্রশ্নের জালে ইলুশনে ভুগতে শুরু করে। মাথা স্থির থাকেনা রুদ্রের। রাতে ঘুম হয়না কত বছর তাঁর কোন হিসেব নেই। মাথার মধ্যে সব সময় গরম হয়ে থাকে। মনে হয় আগুন বের হচ্ছে মাথা থেকে!

চারিধার কেমন নিস্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে। সুমনের দেখা করতে আসার কথা সেই অপেক্ষা, আবার বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা! বৃষ্টি নাম মনে পড়াতে কলেজের সেই "বৃষ্টি" মেয়েটার নাম মনে পড়ে গেলো রুদ্রোর। কতই না পাগলের মত পছন্দ করতো রুদ্রকে! শুধু নীলার কারনে মিষ্টি চেহারার বৃষ্টি নামের মেয়েটাকে দূরে ঠেলে দিতে হলো রুদ্রকে।

এখন বুঝতে পারছে জীবনে আসলেই ভুল পথে দৌড়িয়েছে রুদ্র। লাজ লজ্জা ভেঙ্গে লাইব্রেরির ভেতরে কমপক্ষে ২০ জন মানুষের সামনে প্রপোজ করেছিল বৃষ্টি নামের সেই মেয়েটা। সবাই কি না হাসাহাসি করেছিলো। আমি কিছু বলার আগেই নীলা ওকে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছিল।

তখন শুধু বৃষ্টি না, কলেজের প্রায় সব ছেলে মেয়েই রুদ্র আর বৃষ্টির ভালোবাসার কথা জানতো।

সুমন এসে পড়েছে। গেট পেরিয়ে সামনে তাকিয়ে রুদ্রকে ওয়ালের পরে বসে থাকতে দেখে সামনে এগিয়ে গেলো।

কি ব্যাপার? এখানে বসে আছিস যে?

এতক্ষনে রুদ্রের চোখের জ্বল শুকিয়ে ভ্যানিশ হয়ে গেছে। সুমনের দিকে তাকিয়ে ওকেও ওপরে উঠে বসার ইঙ্গিত দিলো রুদ্র।

সুমন দেয়ালের উপরে চেপে বসলো। আকাশে এতক্ষনে মেঘ জমতে শুরু করেছে। অলৌকিক ভাবে রুদ্রের মনের আশা পুরন হতে চলেছে আজ। অচিরেই মেঘ ফেটে বৃষ্টি নামবে! রুদ্র আজ বৃষ্টিতে ভিজে বৃষ্টির জলের সাথে একাকার হয়ে যাবে। কিছু দুঃখ কষ্ট আজ এই বৃষ্টিতেই বিসর্জন দেবে।

অতীত ভুলে যাবার ব্যার্থ চেষ্টা আজো চালাবে রুদ্র। বৃষ্টির ফোঁটা টিপটাপ পড়তে শুরু করেছে। সুমন উঁচু থেকে নেমে বৃষ্টি থেকে বাঁচার আশ্রয় স্থান খুজছে। পা ঝুলিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ বুজে বৃষ্টিকে স্বাগত জানাচ্ছে রুদ্র। আজকের দিনটা একটু অন্য রকম দিন।

আজকের এই বৃষ্টিটা একটু অন্যরকম! , আজ "বৃষ্টি" নামের সেই মেয়েটার মৃত্যুর দিন!

আজকে যে বৃষ্টিটা বড়ই দরকার ছিল। সেদিন হাঁসি হাঁসি মুখে রুদ্র, নীলা লাইব্রেরি থেকে বেরিয়েই হতভম্ব হয়ে যায়। পাঁচতলা থেকে নীচতলা ঘিরে মানুষের ভিড়। কলেজের ঠিক মাঝখান টায় পড়ে আছে বৃষ্টি নামের মেয়েটার মরা দেহ! যেনো দেহ ছিড়ে আত্মা বেরিয়ে গেছে। মুক্ত হয়ে গেছে জীবন থেকে। চিরমুক্ত করে দিয়ে গেছে রুদ্রকে। আজো এই দিনটায় আকস্মিক ভাবে বৃষ্টি চলে আসে। বৃষ্টিতে" বৃষ্টির স্মৃতি যেনো আরো গভীর হয়ে উঠে রুদ্রর মনে!

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৪০

ইমিনা বলেছেন: মন খারাপ হয়ে গেলো :( :(
নীলার আপডেট দেন। নীলা এখন কোথায় ?

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:১৫

রাসেলহাসান বলেছেন: :( আপনার মন খারাপ করে দেওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিছু প্রশ্ন রেখেই গল্পটা শেষ করা। নীলা হয়তোবা আছে, খুব সুখেই আছে। হয়তো অন্য কারো সঙ্গে সংসার করছে।

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫২

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: মন খারাপের গল্পে ভালোলাগা !

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:১৯

রাসেলহাসান বলেছেন: মন খারাপের গল্পে ভালো লাগায় অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানবেন "প্রিয় অভি" ভাই।

৩| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:০৩

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
বৃষ্টি, রৌদ্র... নামগুলো খুব সুন্দর!

বিষাদের গল্পটিতে ভালো-লাগা :)

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:২৪

রাসেলহাসান বলেছেন: আপনার ভালো লেগেছে জেনে গর্বিত হচ্ছি। অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ভালো থাকুন।

৪| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৩৫

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
সুন্দর ||

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:২৮

রাসেলহাসান বলেছেন: গল্প পড়ায় কৃতজ্ঞতা অনেক। ভালো থাকুন নিরন্তর।

৫| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৫৪

মামুন রশিদ বলেছেন: বৃষ্টিতে 'বৃষ্টি'র স্মৃতিমাখা বিষাদের গল্প ।

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৩২

রাসেলহাসান বলেছেন: স্মৃতিমাখা বিষাদের গল্পে অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো "প্রিয় মামুন" ভাই। আপনার মন্তব্যে পেলে খুব ভালো লাগে। ভালো থাকুন সর্বদা। শুভ কামনা।

৬| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:০৯

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: প্রচণ্ড অনুশোচনা আর দগ্ধ হৃদয়ের কিছু অব্যক্ত কথা গল্পে উঠে এসেছে, যার পুরোটাই জুড়ে আছে বৃষ্টি নামের মেয়েটি। গল্পে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করা দিয়ে প্রকারন্তরে বৃষ্টি নামের মেয়েটির জন্যই অপেক্ষা করা হচ্ছে। আজকের দিনেই তো সে অভিমান করে মৃত্যুকে সাথী করে নিয়েছিল। তাই কষ্টের দাবানল নিভানোর জন্য বৃষ্টির জন্য অপেক্ষায় বসে রয়েছে রুদ্র।
গল্পটাতে বেশ কাব্যিক একটা ঢং লক্ষ করলাম। যথেষ্ট আবেগও পরিলক্ষিত হল কথামালায়। ভালো লাগলো। ধন্যবাদ রাসেলহাসান।

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৪০

রাসেলহাসান বলেছেন: আপনার গঠন মুলক মন্তব্যে গুলো বরাবর খুব সুন্দর হয়। গল্পের মুল বিষয় সমুহ গুলি খুব সুন্দর ভাবে বেরিয়ে আনতে পারেন আপনি। সুন্দর বিশ্লেষণ। অনেক মনোযোগের সাথে কিছু পড়লেই শুধু এটা করা সম্ভব! গল্পের গভীরতা বোঝার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং আন্তরিক শুভেচ্ছা জানবেন। ভালো থাকুন সর্বদা। শুব কামনা রইলো।

৭| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৪৮

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


ভাল লাগল।

এখন ওর মনটা বেশ খারাপ এটা ওর চেহারার এক্সপ্রেশন দেখলেই বোঝা যায়।

এখানে অভিব্যক্তি শব্দটা লিখলে আমার মনে হয় ভাল হতো।

১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:২৪

রাসেলহাসান বলেছেন: "কাণ্ডারি" ভাই, আপনি আসলেই একটা জিনিয়াস! লেখার ভুল গুলোকে খুব সুক্ষ ভাবে ধরে শুধরানোর একটা সঠিক রাস্তা তৈরি করে দেন। এগুলি আমার খুব ভালো লাগে। লেখার সময় "অভিব্যক্তি" শব্দটা আসলে মাথায় আসেনি। এজন্য "এক্সপ্রেশন" শব্দটা ব্যাবহার করেছি। :) অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকুন।

৮| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:০৮

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: গল্প বলার সহজ ভঙ্গিটা আকর্ষণীয় । কিন্তু আমার কাছে গল্পটা তাড়াহুড়ো করে লিখা মনে হয়েছে । অনেক ঘটনা , গল্পের অনেক টুইস্ট আরও বর্ণনার দাবি রাখে । গল্পে প্লাস । ভালো থাকবেন । :)

১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:২৮

রাসেলহাসান বলেছেন: একটু দ্রুত ভাবেই শেষ করা হয়েছে এটা সত্য, তবে গল্পটায় কিছু প্রশ্ন রেখেই শেষ করতে চেয়েছিলাম। :)
গল্পে প্লাস দেওয়াতে কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকুন।

৯| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:০০

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: সুন্দর লিখসেন।

১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:৩১

রাসেলহাসান বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ এবং পুলকিত শুভেচ্ছা জানবেন "প্রিয় পাঠক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.