নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বসন্তকাল না পেরুতেই বর্ষা ঋতুর ভাব নিয়ে মিটমিটিয়ে রাতের আকাশের বুক চিড়ে বৃষ্টি এসে জুড়ে বসে রোজ রোজ। আর সকাল হলেই এ গলি, ও গলি কিংবা পিচঢালা পথের ডানে-বায়ে দেখা মিলে পিচ্ছিল কাদার। পুরো শহরটার নর্দমা হতে ছাপিয়ে আসা দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা, কালচে পানি, মনুষ্য বাড়ির ফেলে রাখা আবর্জনা.... এই সবটার মিশেলে কাদাগুলো মৃত্তের কায়া আঁকড়ে ধরে রয়। দেখলেই কেমন গা ঘিনঘিনিয়ে ওঠে!
অবনীর কিন্তু মোটেও অমন লাগেনা!! কারণ, বৃষ্টিটা যে ওর ভীষণ প্রিয়!
আর বর্ষা ঋতু হলো ওর উৎসবের ঋতু। ওর সব ভালোলাগা যেন ঐ ঋতুকে ঘিরেই। ইস!!! ছ'টি ঋতু জুড়েই যদি বৃষ্টিরা রাজত্ব করতে পারতো... কতইনা আনন্দ হতো! বছর গড়ালেও অবনীর এই চাওয়াটার পরিবর্তন হয়না মোটেও। আজকাল মাঝরাতে টাপুরটুপুর শব্দ কানে এলেই ও এক লাফে বেলকনিতে গিয়ে দু'হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি ছোঁয়। আর খানিকটা সুযোগ পেলেই ছাদে গিয়ে আচ্ছামতো ভিজে। ওতে যে রোগ বাধবার শঙ্কা রয়েছে, এ নিয়ে ওর কিঞ্চিত বোধও নেই। কারণ, ওর মতে... রোগ তো হবার ই জন্য। রোগব্যাধিরও তো স্বাধীনতা থাকা চাই!!
মেয়ে হিসেবে অবনী কিছুটা অদ্ভুত বটে। জীবনের ১৭টি বসন্ত পেরিয়েছে গত মাসের মেঘলা দিনে। অথচ, ওর আচরণগুলো এখনো বাচ্চাদের মতো। কলেজের টিফিনে রোজ ললিপপ থাকা চাই ই চাই!!!
আশপাশে ঘুরঘুর করা ভ্রমরদের' ও মোটেও সহ্য করেনা। এখন অব্দি যে ক'টি চিরকুট পেয়েছে, সবগুলোই ওর মায়ের হাতে সেটে দিয়ে ছুট লাগাতো পাড়াতো পিচ্চিদের খোঁজে।
ওর দু'টো দামি মুঠোফোন আছে। তবে একটিতেও সিম নেই। ওতে লাগানো আছে ১৬ আর ৩২ জিবি'র মেমোরি কার্ড। একটিতে ও গান শোনে। আর অন্যটি দিয়ে ছবি তোলে।
নিজের ছবি নয় কিন্তু!
ছাদে ওর ছোট্ট একটি শখের বাগান আছে। ঐ বাগানটিতে উড়ে আসা রঙবেরঙের প্রজাপতি, ফড়িং, ফুল ও ঘাসের ফাঁকে লুকিয়ে থাকা পোকা, দেয়ালের ফাটল জুড়ে দলবাঁধা পরিশ্রমী পিঁপড়ে আর ওর রাঁধাচূড়া গাছে বসে থাকা পাখিগুলির ছবি তোলে। মাঝে মাঝে রূপসী প্রকৃতির বহুরূপী রং ধরে রাখতেও অবশ্য সে কখনো ভোলেনা।
বাবাকে বলে দোকান থেকে একটি ঝুটিঅলা কাকাতুয়া আনিয়েছে সে। ওটি নিয়েই ওর সময় কাটে।
ভাই-বোন নেই বলে অবনীদের দ্বিতল বাড়িটা বেশ ফাঁকা থাকে। দিনে কলেজ থেকে ফিরে মা ছাড়া আর সঙ্গ দেবার মতো থাকেনা কেউ। তাই, দিনটা অবনীর কাছে নিরামিষ বলে মনে হয়।
তবে রাতটা ওর ভীষণ প্রিয়। আজ একটু বেশিই প্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ, আজকের আকাশে ধূসর মেঘের গা ঘেঁষে চাঁদ রয়েছে, দু' চারটে তারারও দেখা মিলছে, আবার এক পশলা বৃষ্টি হবার গন্ধ নিয়ে ঘাস-পাতাদের গুড়ো আর ধুলোর মিশেলে উদাসী হাওয়া এসে ওর কাঁধ ছুঁয়ে যাওয়া চুলগুলোকে এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে বারবার।
অনুভূতিটা বেশ ভালোলাগার। ঐ অনুভূতি ধরে রাখবার মতো কোনো ব্যবস্থা রইলে, অবনী ঠিকই ধরে রাখতো। পাশে থাকা কাকাতুয়াটাও যেন খাঁচার ভেতর থেকে ভালোলাগার মুহূর্ত উপভোগ করছে!
হঠাৎ, বিকট শব্দে সুন্দর পরিবেশটা বদলে গেল। ছাদের কার্নিশের ফাঁকে উঁকি দেয়া আকাশটা,,,, বেলকনিতে প্রাণ জুড়ানো বাতাসটারও কেমন ছন্দপতন হলো!!!
অতঃপর............
___'অসমাপ্ত'___
"T.T"
১৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৩০
রাসেল উদ্দীন বলেছেন: অবনীর গল্প লিখেই শুরু করেছিলাম! অনেক দিন হল অলসতা করে গল্প লেখা হয়না।
আমার অপ্রকাশিত প্রথম পোস্ট পড়ে আপনার মন্তব্য করা দেখে আশ্চর্য হয়েছি।
আপনার প্রশংসায় মুগ্ধ হয়েছি! ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় খায়রুল আহসান
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:১২
খায়রুল আহসান বলেছেন: 'অসমাপ্ত' হলেও গল্পটা ভাল লাগলো, ভাল লাগলো অবনী'র কথা জেনে। আরো বেশী ভাল লেগেছে কথাগুলো আপনি এত সুন্দর করে গুছিয়ে বলেছেন, সেজন্যে।
গল্পে প্রথম ভাল লাগা + +।
এখানে প্রকাশিত আপনার প্রথম পোস্টটি দিয়েই আপনার ব্লগ পড়া শুরু করলাম।
বাংলা ব্লগের এ আসরে আপনাকে বিলম্বিত সুস্বাগতম জানিয়ে যাচ্ছি। এখানে আপনার বিচরণ স্বচ্ছন্দ হোক, আনন্দময় হোক, দীর্ঘস্থায়ী হোক, ফলপ্রসূ হোক!