নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যে ও সুন্দরের পক্ষে সব সময়

রাসেল উদ্দীন

জীবনের সবকিছু মহান স্রষ্টার জন্য নিবেদিত

রাসেল উদ্দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলাম ও নারী—ইভোন রিডলী

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:৩৫


যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পনের দিন পর ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে আমি আপাদমস্তক একটি নীল বোরকার অন্তরালে ছদ্মবেশে আফগানিস্তানে লুকিয়ে প্রবেশ করেছিলাম; উদ্দেশ্য ছিল পত্রিকার জন্য সেখানকার দমনমূলক শাসনের অধীনে বিদ্যমান জীবনের বৃত্তান্ত লেখা। কিন্তু আমি ধরা পড়ে গেলাম, গ্রেফতার হলাম এবং দশদিন তাদের কারাগারে থাকলাম। যারা আমাকে বন্দী করে রেখেছিল আমি তাদের গায়ে আক্ষরিক অর্থেই থুথু দিয়েছিলাম এবং গালাগাল করেছিলাম, যার ফলশ্রুতিতে তারা আমাকে রীতিমত একজন মন্দ নারী বলে আখ্যায়িত করেছিল। কোরান পড়ার ও ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করার প্রতিশ্রুতি আমি তাদেরকে দিয়েছিলাম এবং এরপর তারা আমাকে মুক্ত করে দিয়েছিল। (খোলা মনেই বলছি; আমি ঠিক নিশ্চিত না মুক্তিলাভের সময় কে বেশী খুশী হয়েছিল—তারা না আমি।)

লন্ডনে বাড়ী ফিরে আমি আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলাম। ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে আমি যা আবিষ্কার করলাম তা আমাকে বিস্মিত করল। কিভাবে বউকে পেটাতে হয়, কন্যাকে দমিয়ে রাখতে হয়, কোরান পড়তে গিয়ে তা সব পাওয়া যাবে বলেই আমার প্রত্যাশা ছিল; কিন্তু তার বদলে আমি সেখানে পেলাম নারীর মুক্তির কথা। বন্দী হবার আড়াই বছর পর আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলাম। ধর্মান্তরের বিপরীতে আমি মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলাম—বন্ধু ও আত্মীয়দের কেউ অবাক হলেন, কেউ হতাশ হলেন, আবার কেউ-বা উৎসাহিত হলেন।

অধুনা আমি বিরক্তি ও শঙ্কার সাথে লক্ষ করছি যে, নিকাবের—মুখের আচ্ছাদন যা কেবল চোখ খোলা রাখে—বিরুদ্ধে ব্রিটেনে একটি প্রচারণা চলছে। প্রাক্তন বিদেশ সচিব জ্যাক স্ট্র মুসলিমদের নিকাবকে বর্ণনা করলেন জাতিগত সমাকলন বা অঙ্গীভবনের জন্য একটি অনাহুত বাধা হিসেবে। তিনি তাল মেলালেন প্রধান মন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, লেখক সালমান রুশদির সাথে এবং এমনকি ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী রোমানো প্রোদি তার সমর্থনে এগিয়ে আসলেন।

নিকাব প্রশ্নে আমার অবস্থান উভয় দিকেই ছিল—এই আমি আপনাদের বলছি যে, অধিকাংশ পশ্চিমা পুরুষ রাজনীতিক ও সাংবাদিকেরা যারা ইসলামী বিশ্বে নারী নির্যাতন নিয়ে কেঁদে কেঁদে চোখের জলে ভাসছেন তাদের কোন ধারণাই নেই তারা কী নিয়ে কথা বলছেন। নিকাব, শিশুবিবাহ, অনার কিলিং, বলপূর্বক বিবাহদান—এসবই তাদের অবলম্বন, এবং ভ্রান্তভাবে ও অন্যায্যভাবে তারা এগুলোর জন্য ইসলামকে দায়ী করে থাকেন। তাদের অহমিকা অতুলনীয় হয়ে উঠেছে কেবলমাত্র তাদের অজ্ঞতা দ্বারা।

মুসলিম বিশ্বে বিদ্যমান এসব সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ও প্রথার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। খেয়াল করে কোরান পড়লে এটি লক্ষণীয় হয়ে উঠবে যে, যা কিছুর জন্য ১৯৭০ এর দশকে পাশ্চাত্যের নারীবাদীরা লড়াই করছিল তা সবই ১৪০০ বছর আগের মুসলিম নারীদের অধিকারে বিদ্যমান ছিল। ইসলামের নারীরা আত্মিকতা, শিক্ষা ও মূল্য এসব বিচারে পুরুষদের সমান বলেই বিবেচিত এবং সন্তান জন্মদানে নারীদের উপহার ও সন্তান প্রতিপালনে নারীর ভূমিকাকে ইতিবাচক গুণ হিসেবে সম্মান ও সমীহ করা হয়েছে।

ইসলাম যখন নারীকে এত কিছু দিয়েছে, সেখানে পশ্চিমের পুরুষেরা মুসলিম নারীর পোশাক নিয়ে এত বিকারগ্রস্ত কেন? এমনকি ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন ও জন রীড নিকাব সম্বন্ধে শালীনতা বিবর্জিত মন্তব্য করেছেন—অথচ এরা এসেছেন স্কটিশ সীমান্ত থেকে যেখানে পুরুষেরা স্কার্ট পরে থাকে।

যখন আমি ইসলাম গ্রহণ করলাম ও মাথায় স্কার্ফ পরা শুরু করলাম, প্রতিক্রিয়া ছিল বিশাল। আমি কেবল আমার মাথা ও চুলটুকুই ঢেকেছিলাম মাত্র; আর ওতেই আমি হয়ে গেলাম দ্বিতীয় শ্রেণীর এক নাগরিক। আমি জানতাম, কিছু বিচ্ছিন্ন ইসলামাতঙ্কে আক্রান্ত ব্যক্তির বাতচিত আমার কানে আসবে, কিন্তু আগন্তুকদের কাছ থেকে এত নগ্ন বৈরিতা আমার কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল। ক্যাবগুলো আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যেত, যদিও ‘ভাড়ার জন্য’ বাতিটা জ্বলেই থাকত। এক ক্যাবওয়ালা শ্বেতাঙ্গ এক যাত্রীকে আমার সামনেই নামাল, কিন্তু আমি জানালা দিয়ে উঁকি দিতেই রাঙা চেখে তাকিয়ে সাঁই করে চলে গেল। অন্য একজন বলেছিল, ‘গাড়ীর পিছনের সিটে কোন বোমা রেখে যেও না।’ এবং প্রশ্ন করেছিল, ‘বিন লাদেন কোথায় লুকিয়ে আছে?’

হ্যাঁ, এটি মুসলিম নারীর জন্য ধর্মীয় কর্তব্য যে তারা শালীনভাবে পোশাক পরিধান করবে, কিন্তু আমার দেখা অধিকাংশ মুসলিম নারী হিজাব করতে পছন্দ করে মুখ না ঢেকেই; তবে অল্প কিছু নারী এমন আছে যারা নিকাবকে অগ্রাধিকার দেয়। এটি আমার ব্যক্তিগত মত: আমার পোশাক তোমাকে জানান দেয় যে, আমি প্রত্যাশা করি আমার সাথে সম্মানজনক আচরণ করা হবে—ঠিক যেমন ওয়াল স্ট্রিটের একজন ব্যাংকার আশা করে যে, তার বিজনেস স্যুট তাকে পরিচিত করে একজন নির্বাহী হিসেবে ও সে গুরুত্বের সাথে গৃহীতব্য। এবং, বিশেষভাবে আমার মতো ধর্মান্তরিতদের কাছে—যেসব পুরুষ নারীদের মুখোমুখি হয় অযথোচিত আচরণ ও অপাঙ্গ দৃষ্টিসহ—তাদের মনোযোগ সহনীয় নয়।

অনেক বছর যাবত আমি ছিলাম পশ্চিমা ধাঁচের নারীবাদী, কিন্তু যা আমি আবিষ্কার করেছি তা হলো মুসলিম নারীবাদীরা তাদের ইহলোকবাদী প্রতিপক্ষদের চেয়ে অধিকতর মৌলিক। আমরা সুন্দরীদের ঐসব অসুস্থ প্রদর্শনী ঘৃণা করি এবং ২০০৩ সালে যখন বিচারকেরা বিশ্বসুন্দরী নির্বাচনকালে বিকিনি পরা মিস আফগানিস্তানকে দেখে উল্লাস প্রকাশ করছিল তখন আমরা হাসি সম্বরণ করতে রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছিলাম। এই নির্বাচকেরা ওয়িদা সামাজাদির বিকিনি পরিধানের মধ্যে দেখতে পেয়েছিল আফগান নারীর স্বাধীনতা ও মুক্তির বিশাল লম্ফ। ‘নারী অধিকারের এই বিজয়ের ক্ষণে’ তারা এমনকি সামাজাদিকে একটি বিশেষ পুরস্কারেও ভূষিত করেছিল।

কিছু যুবা বয়সী মুসলিম নারীবাদী হিজাব ও নিকাবকে রাজনৈতিক প্রতীক হিসেবেও বিবেচনা করে। তাদের বিবেচনায় উৎসবী মদ্যপান, নৈমিত্তিক যৌনাচার ও ড্রাগ সেবনের পশ্চিমা আতিশয্যগুলোর বিরুদ্ধে এটি একটি স্পষ্ট ‘না’ উচ্চারণ। কোনটি বেশী মুক্তি প্রদায়ী?—স্কার্টের হ্রস্বতা ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সম্প্রসারিত বক্ষের আকৃতি দ্বারা পরিমিত হওয়া, নাকি চারিত্র্য বৈশিষ্ট্য ও বুদ্ধিমত্তা দ্বারা বিচার্য হওয়া? ইসলামে মহিমা অর্জিত হয় শুভ জীবনের সাধনা দ্বারা—রূপ, সম্পদ, ক্ষমতা, অবস্থান বা লিঙ্গ দ্বারা নয়।

আমি বুঝতে পারি না—আমি চিৎকার করব নাকি হাসিতে ফেটে পড়ব, যখন দেখি ইতালির প্রোদি একটি বিতর্ক সভায় যোগ দেন এই ঘোষণা দেয়ার উদ্দেশ্যে যে, নিকাব সামাজিক সম্পর্ক ‘অধিকতর কঠিন’ করে তোলে, আর একারণে ‘কাণ্ডজ্ঞান’ই নাকি যথেষ্ট নেকাব অপরিধেয় এটা বুঝার জন্য। এই মূর্খতাকেই ইংরেজিতে বলে ‘ননসেন্স’। এটাই যদি হবে তো তারা প্রতিদিন সেলফোন, ল্যান্ডফোন, ই-মেইল, টেক্সট মেসেজিং, ফ্যাক্স ব্যবহার করেন কেন? উপস্থাপকের মুখ দেখা যায় না বলে কেউ তো রেডিও বন্ধ করে দেয় না।

ইসলামে আমি সম্মানিত হই। তা আমাকে বলে যে, আমার শিক্ষার অধিকার আছে; বলেছে আমি অবিবাহিত বা বিবাহিত যা-ই হই না কেন, জ্ঞানের সন্ধান করা আমার কর্তব্য। ইসলামের ফ্রেমওয়ার্কের কোথাও আমাদেরকে একথা বলা হয়নি যে, নারীরা পুরুষদের জন্য ধোয়া-মোছা বা রান্নার কাজ করবে। স্ত্রীকে প্রহার করার অনুমতি মুসলিম পুরুষদেরকে দেয়া হয়েছে—এমন কথা সত্য নয়। ইসলামের সমালোচকরা কোরানের আয়াত বা নবীর হাদিস খাপছাড়াভাবে ও সাধারণত প্রসঙ্গ বহির্ভূতভাবে উল্লেখ করে বেড়ায়। যদি কোন পুরুষ তার স্ত্রীর প্রতি আঙ্গুল উঁচু করেও, তাকে এই বলে সতর্ক করা হয়েছে যে, স্ত্রীর গায়ে একটি আঁচড় কাটার অধিকারও তার নেই। আরে বোকা! স্ত্রীকে মারতে পারবে না—এটাই কোরান বলেছে।

নারীর প্রতি আচরণ কেমন করা হচ্ছে তা পূনর্মূল্যায়ন করে দেখা কেবল মাত্র মুসলিম পুরুষদেরই করণীয় নয়। অধুনা ন্যাশনাল ডোমেস্টিক ভায়োল্যান্স হটলাইন সার্ভে এর মতে, চার মিলিয়ন নারী তাদের পুরুষ সঙ্গীদের দ্বারা গুরুতর শারীরিক আঘাতের শিকার হচ্ছে বৎসরে। দৈনিক তিনজনেরও বেশী নারী তাদের স্বামী বা বয়ফ্রেন্ডের হাতে খুন হচ্ছে—৯/১১ থেকে যার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট প্রায় ৫,৫০০।

সহিংস পুরুষেরা কোন নির্দিষ্ট ধর্ম বা সংস্কৃতির বলয় থেকে আসে না; সমস্ত পৃথিবী জুড়ে প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে একজন প্রহৃত হয়েছে, যৌন অত্যাচারের শিকার হয়েছে, অথবা অন্যভাবে হয়রানির শিকার হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এই হটলাইন সার্ভেতে। এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা যা ধর্ম, সম্পদ, শ্রেণী, জাতি এবং সংস্কৃতিকে অতিবর্তন করে।

এটাও সত্য, পাশ্চাত্যের পুরুষরা এখনও আদতে বিশ্বাস করে যে তারা নারীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ, এর বিরুদ্ধে সকল প্রতিবাদ সত্ত্বেও। নারীরা এখনও একই পরিমাণ কাজ করেও কম বেতন পাচ্ছে, তা সেটা চিঠি বিলিবন্টনের কক্ষেই হোক বা পরিচালকদের সম্মেলন কক্ষেই হোক—এবং নারীদেরকে এখনও দেখা হচ্ছে যৌন পণ্য হিসেবে, যার ক্ষমতা বা প্রভাব আসে সরাসরি তার দৈহিক অবয়ব বা রূপ থেকে।

এবং এরপরও যারা এই দাবী করার চেষ্টা করেন যে, ইসলাম নারীদের উপর নির্যাতন করে, তারা নারীর ক্ষমতায়ন সম্বন্ধে রেভারেন্ড প্যাট রবার্টসনের কথা স্মরণ করে দেখুক। রবার্টসন বলেছেন, ‘নারীবাদ হচ্ছে সমাজতান্ত্রিক, পরিবার বিধ্বংসী রাজনৈতিক আন্দোলন যা নারীদেরকে উৎসাহিত করে স্বামীদের পরিত্যাগ করতে, সন্তানদের হত্যা করতে, ডাকিনী-বিদ্যা চর্চা করতে, পুঁজিবাদকে বিনাশ করতে এবং লেসবিয়ান হতে।’

এখন আপনি আমাকে বলুন, কে সভ্য আর কে তা নয়।

*** *** ***

ব্লগটি ইভোন রিডলী’র একটি ইংরেজি লেখার অনুবাদ; নাম ‘ইসলাম ও নারী: আমি কিভাবে হিজাব ভালবাসতে শুরু করলাম’। মূল লেখিকা একজন ইংরেজ সাংবাদিক এবং ইসলাম চ্যানেল টিভি এর রাজনীতি বিষয়ক সম্পাদক।

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


পশ্চিমের অনেকেই ভালো বেতনের চাকুরী পাচ্ছে!

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৮

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: কি বলতে চেয়েছেন ঠিক বুঝতে পারিনি, চাঁগাজী ভাই!

২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:২২

মানুষ জিহাদ হাসান বলেছেন: আপনার লেখায় সত্য উঠে এসেছে।ধন্যবাদ। সবচেয়ে দুখ:জনক বিষয় হচেছ বর্তমানে অনেক মুসলিমই ইসলাম ধর্মের মাহাত্য,ব্যক্তি স্বাধীনতা,ইসলামে নারী-পুরুষের অধিকার,নারী-পুরুষের স্বাতন্ত্রতা এগুলো পরিষ্কার বুঝে না।যেমন অনেকে বলে থাকে “স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত” যা প্রকৃত পক্ষে ইসলামে নেই।এরকম আরও অনেক বিষয় ইসলামকে কলুসিত করতে ব্যবহার করা হয়,সঠিক ধারনা না থাকার কারনে।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩১

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: ইসলামের বিভিন্ন সুক্ষ্ম বিষয়কে মানুষের সামনে নেগেটিভভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামকে কলুষিত করা। ইসলামের প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করার পর ইসলাম সম্পর্কে কারো বিরুপ ধারণা থাকতে পারে না।

ধন্যবাদ! মন্তব্য ভালো লেগেছে জিহাদ হাসান ভাই!

৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৮

এ আর ১৫ বলেছেন: সুরা আহযাব আয়াত ৫৯ ------ ৩৩:৫৯ - হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। ----------- এখানে স্পষ্ঠ লেখা আছে -- ( এতে তাদের চেনা সহজ হবে ) ---- তার মানে কেউ মুখ লুকাতে পারবে না । মুখ ঢেকে রাখলে কাউকে সহজে চিনা যাবে না ।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:২৭

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: একজন নারীর চেহারা তার আওরাহ যা কিনা অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে। এটা তার শরীরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংগ। কারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি একজন নারীর চেহারাকেই দেখে, তাই একজন নারীর চেহার হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আওরাহ। এই যুক্তি হলো শরীয়াতের দলীলগুলো ছাড়াই অন্য আরেকটা যুক্তি – একজন নারীর চেহারা ঢেকে রাখা তার জন্য ওয়াজিব এই কথা প্রমানের জন্য।উদাহরণ স্বরূপ আল্লাহ বলেন,“(হে নবী আপনি) ঈমানদার নারীদেরকে বলুনঃ তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না ‘জুয়ুবিহিন্নাহ’(শরীর, চেহারা, ঘাড় ও বুকের) উপর ফেলে রাখে...”সুরা আন-নূর, আয়াত ৩১।ওড়না জুয়ুবের উপর ফেলে রাখার মাঝে মুখ ঢেকে রাখাও অন্তর্ভুক্ত।আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে নিচের এই আয়াতের তাফসীর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলোঃ“হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিন নারীদেরকে বলুনঃ তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়।”সুরা আল-আহজাব, আয়াত ৫৯।তখন ইবনে আব্বাস (রাঃ) তিনি তার চেহারা ঢাকলেন, শুধুমাত্র এক চোখছাড়া। তার মানে এই আয়াত থেকে বোঝা যাচ্ছে এই আয়াত দ্বারা ঢেকেরাখা দ্বারা চেহারাও ঢেকে রাখতে আদেশ করা হয়েছে। এই তাফসীর বর্ণিত হয়েছে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে।এই ব্যপারে সুন্নাতে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যেমন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ইহরামে থাকা অবস্থায় নারীদের জন্য চেহারা ঢেকে রাখা (নেকাব পড়া) অথবা বোরখা পড়া নিষিদ্ধ।তার মানে এইনা যে একজন নারী ইহরাম অবস্থায় তার নেকাব বা বোরখা খুলে একজন গায়ের মাহরাম পুরুষের সামনে তার চেহারা উন্মুক্ত রাখবেন। বরং তিনি নেকাব বা বোরখা ছাড়া অন্য কোনো কিছু দিয়ে পর্দা করবেন, যেমনটা আয়িশাহ (রাঃ) এর হাদীস থেকে বর্ণিত হয়েছে।মা আয়িশাহ (রাঃ) বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে ইহরামে থাকা অবস্থায় ছিলাম। পথচারীগণ আমাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করত। তারা আমাদের নিকট আসলে আমরা মাথার উপর থেকে খিমার চেহারার উপর ফেলে দিতাম। তারা চলে গেলে সেটা উঠিয়ে নিতাম।সুনানে আবু দাউদঃ ১৮৩৩, ফাতহুল বারী ৩/৪৭৪।নারীদের জন্য ইহরামে থাকা অবস্থাতে বা অন্য সময়েও ওয়াজিব হচ্ছে গায়ের মাহরাম পুরুষের সামনে তাদের চেহারা ঢেকে রাখা, কারণ তাদের চেহারাই হচ্ছে পুরষদের জন্য আকর্ষণীয় এমন সৌন্দর্যের কেন্দ্র...ফাতাওয়া আল-মার’আহ আল-মুসলিমাহ, ১/৩৯৯।

মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। @এ আর ১৫

৪| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৩

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: খুবই মূল্যবান লেখাটি পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ইসলাম সম্পর্কে অনেকেরই নেতিবাচক ধারণা রয়েছে।
এমনকি খোদ নামধারী মুসলিমরাও এমন নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে থাকে, যারা আদৌ কুরআনের মৌলিক শিক্ষা সম্বন্ধে ন্যূনতম ধারণাই রাখে না। কিছু কাঠমোল্লার অবদানও এতে কম নয়, যারা ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে না বুঝেই নিজেদের স্বার্থে এর বিভিন্ন বিধানের অপব্যাখ্যা করে থাকে।
সত্যিকার অর্থে যারা কুরআনকে বুঝতে চেষ্টা করে তারা প্রায় সবাই ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করে নিজের জীবন এবং সমাজকে সুন্দর করার চেষ্টায় ব্রতী হয়।
ধন্যবাদ ভাই।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৩১

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: আপনার বক্তব্যের সাথে সম্পুর্ণ একমত।
ইসলাম সম্পর্কে সু-স্পষ্ট জ্ঞান অর্জন করলে ইসলামী বিধানের ব্যপারে কেউ বিরুপ ধারণা পোষণ করতে পারে না।

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা নিবেন!

৫| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৯

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: ভালো লিখেছেন।





ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৩৪

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও দেশ প্রেমিক বাঙালী!

ভালো থাকবেন!

৬| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:১৯

গ্রীনলাভার বলেছেন: শিক্ষা ও প্রযুক্তির বিকল্প নেই।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৩৭

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: জ্বী, শিক্ষা ও প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে বিকশিত করে। গঠন করে নৈতিক চরিত্র।

অসংখ্য ধন্যবাদ গ্রীনলাভার!

৭| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:৩৫

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: @এ আর ১৫ কে বলছি আপনাকে ব্লগে খুব একটা দেখা যায়না কিন্তু ইসলাম এবং ইসলাম বিষয়ক লেখা দেখলেই কোথা থেকে যেন টর্নেডো মতো হাজির হয়ে কোরআনের কয়েকটি আয়াতের অনুবাদ দিয়ে গ্যাজানো শুরু করেন; কারণটা কী? আপনি ইসলামের কী বোঝেন? আপনি আপনার ধর্ম নিয়ে থাকুন। ইসলাম ধর্ম নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবেনা।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৪৫

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: আমাদের কারো উপর আক্রমণাত্মক কথা না বলে গঠনমূলক সমালোচনা বা মতবিনিময় করা উচিত। সকলের চিন্তাধারা তো আর এক নয়! ভিন্নমত থাকতেই পারে!

ধন্যবাদ আপনাকে!

৮| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:২১

হাফিজ হুসাইন বলেছেন: অনেক ভালো আর জ্ঞানমূলক একটা পোষ্ট। পড়ে অনেক ভালো লাগলো। জাযাকাল্লাহু খাইরান।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৪৯

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: কষ্ট করে পড়ে মূল্যায়ন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ! অনেক খুশি হয়েছি!

শুভেচ্ছা নিবেন!

৯| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:২৮

হাফিজ রাহমান বলেছেন: এখন আংশিক পড়লাম। তাতেই আকৃষ্ট হলাম। বাকিটা পরে পড়বো। তাই প্রিয়তে রেখে দিলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ লেখককে।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৫১

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: জ্বী, সময় করে বাকি অংশ পড়ে নিবেন। প্রিয় রাখাই খুশি হয়েছি!

ধন্যবাদ! ভালো থাকবেন।

১০| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:৪০

মরুচারী বেদুঈন বলেছেন: এ আর ১৫ আপনি বিষয়টা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। :(


শরীর আবৃত হয় এমন কাপড় পরিধান করার পর গায়ে একটি চাদর পরিধান করা হত!


আপনাকে সম্মানের সহিত অনুরোধ করা হচ্ছে যে - আপনি বিষয়টা জেনে নিবেন!


তবে মুখ না ঢাকার ও অনুমতি আছে।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৫৫

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: উনার কমেন্টের প্রতুত্তোরে এ বিষয়ে কিছু দালিলিক সমাধান দেওয়া চেষ্টা করেছি!

গঠনমূলক মতামত দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!

১১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:৪১

দি রিফর্মার বলেছেন: আমরা মুসলিম। কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে খুব সামান্যই জানি। তাই আমরা ইসলাম বিদ্বেষীদের সাথে তাল মিলিয়ে নিজের অজাান্তেই নানা কথা বলে ফেলি। তাই ইসলামের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।
চমৎকার পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ। লেখাটি প্রিয়তে নিলাম।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:০০

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন। বর্তমান মুসলমানদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে- ইসলামী শিক্ষা থেকে দুরে থাকা। ইসলামের প্রকৃত জ্ঞান থাকলে কখনোই ইসলাম বিদ্বেষীদের কালচার আমরা গ্রহণ করতাম না।

ধন্যবাদ আপনাকেও! শুভেচ্ছা নিবেন!

১২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:৪২

মরুচারী বেদুঈন বলেছেন: @ এ আর ১৫

১৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৮

এ আর ১৫ বলেছেন: মরুচারী বেদুঈন বলেছেন: এ আর ১৫ আপনি বিষয়টা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।

আমি শুধু অনুবাদ দিয়েছি কোন ব্যাখা করিনি এবং ( এতে তাদের চেনা সহজ হবে ) --- এই বাক্যের অর্থ বলেছি ।

তবে মুখ না ঢাকার ও অনুমতি আছে।
আপনি তো আমার দেওয়া তথ্যের সাথে একমত হোলেন তাহোলে ভুলভাবে ব্যাখা কি করে হোল ???

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:১৬

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতে উল্লেখিত আলাইহিন্না এর ব্যখ্যা হচ্ছে, মাথার উপর দিক থেকে মুখমন্ডলের উপর চাদর লটকানো। অর্থাৎ, এ আয়াত পরিস্কারভাবে মুখমন্ডল আবৃত করার আদেশ ব্যক্ত করা হয়েছে। আয়াতে উল্লেখিত 'জালবাব' শব্দের অর্থ এমন কাপড় যা মুখমন্ডল আবৃত করে রাখে।

সুত্রঃ তাফসীরে মা'আরিফুল কুরআন।

ধন্যবাদ! শুভেচ্ছা নিবেন!!

১৪| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫০

এ আর ১৫ বলেছেন: দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: @এ আর ১৫ কে বলছি আপনাকে ব্লগে খুব একটা দেখা যায়না কিন্তু ইসলাম এবং ইসলাম বিষয়ক লেখা দেখলেই কোথা থেকে যেন টর্নেডো মতো হাজির হয়ে কোরআনের কয়েকটি আয়াতের অনুবাদ দিয়ে গ্যাজানো শুরু করেন; কারণটা কী
আমি টর্নেডো বা সাইক্লনের মত আসি তাতে কি আপনার কোন সমস্যা আছে । কোরানের আয়াতের অনুবাদ ছাড়া তো কিছুই লিখিনি । কোরানের আয়াতের অনুবাদ আপনার কাছে গ্যাজানো তাই না ? নিকাব পড়া যে কোরান সম্মত নহে সেটা মানতে আপনি নারাজ । আপনি ইসলামের এমন ই খেদমত কারি যিনি কোরানের অনুবাদকে পর্যন্ত সহ্য হয় না গ্যাজানো মনে করে ( নাউযুবিল্লাহ )


আপনি ইসলামের কী বোঝেন?
আপনার মত বোঝার আমার দরকার নাই , আপনার মতে কোরানে অনুবাদ হোল গ্যাজানো !!!!!! একইকা ইসলাম বোঝার আমার দরকার নাই

আপনি আপনার ধর্ম নিয়ে থাকুন।

আমার ধর্ম কোরানের মাধ্যমে মিথ্যা ইসলামকে প্রতিহত করা আর আপনার ধর্ম হোল কেউ কোরানে উদাহরন দিয়ে সঠিক কথাটা বল্লে তাকে তুচ্ছ তাৎছিল্ল করা ।

ইসলাম ধর্ম নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবেনা।

মনে হয় ইসলাম আপনার পৈত্রিক সম্পত্তি । কোরানের অনুবাদকে যিনি গ্যাজানো বলেন উনি হলেন ইসলামের ঠিকাদার

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:২৯

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: আমাদের কারো উপর আক্রমণাত্মক কথা না বলে গঠনমূলক সমালোচনা বা মতবিনিময় করা উচিত। সকলের চিন্তাধারা তো আর এক নয়! ভিন্নমত থাকতেই পারে!

ধন্যবাদ আপনাকে!

১৫| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫১

বিষাদ সময় বলেছেন: এ আর ১৫ বলেছেন- সুরা আহযাব আয়াত ৫৯ ------ ৩৩:৫৯ - হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। ----------- এখানে স্পষ্ঠ লেখা আছে -- ( এতে তাদের চেনা সহজ হবে ) ---- তার মানে কেউ মুখ লুকাতে পারবে না । মুখ ঢেকে রাখলে কাউকে সহজে চিনা যাবে না ।

ভাই এ আর ১৫ আপনি এ আয়াতের অর্থ সম্পূর্ণ ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না এ কথাটি দ্বারাই আয়াতটির অর্থ স্পস্ট হয়েছে। এই চেনা যাবে বলতে কাফির এবং মুমিন নারীর মধ্যে পার্থক্য করা যাবে। এ সময়কার বেশির ভাগ কাফির নারীরা ছিল বহুগামী, আর মুমিন নারিরা তা ছিল না। মুমিন নারীরা গায়ে চাদর জড়িয়ে রাখলে বোঝা যাবে যে এরা বহুগামী নয় আর যেহেতু তারা বহুগামী নয় অতএব পর পুরুষরা তাদের বিরক্ত করবে না।
এ্ই কথাটি দ্বারা আমার জানা মতে এই অর্থ প্রকাশ করা হয়েছে।

তবে কুরআনে কোথাও নারীর মুখ ঢেকে রাখার কথা আমি পাইনি। নারীদের মুখ ঢাকার বিষয়টির উৎস কি তা আমার জানা নেই। কারো জানা থাকলে সেটা নিয়ে ব্লগে আলোচনা করলে খুশি হতাম।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৫৬

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: আয়াতের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ! ভালো বলেছেন!
তবে কুরআনে কোথাও নারীর মুখ ঢেকে রাখার কথা আমি পাইনি এ বক্তব্যের জবাব...

প্রথমতঃ
কিছু সুক্ষ্ম বিষয়ের সমাধান কুরআনের বাচনভঙ্গি ও ব্যখ্যা থেকে উদঘটন করা হয়। আবার কিছু আয়াতের ব্যখ্যা হাদীস থেকে সম্পূরক হিসাবে নেওয়া হয়। মুখমন্ডল ঢাকার বিষয়টিও তাই।

দ্বিতীয়তঃ
একজন নারীর চেহারা তার আওরাহ যা কিনা অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে। এটা তার শরীরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংগ। কারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি একজন নারীর চেহারাকেই দেখে, তাই একজন নারীর চেহার হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আওরাহ। এই যুক্তি হলো শরীয়াতের দলীলগুলো ছাড়াই অন্য আরেকটা যুক্তি – একজন নারীর চেহারা ঢেকে রাখা তার জন্য ওয়াজিব এই কথা প্রমানের জন্য।উদাহরণ স্বরূপ আল্লাহ বলেন,“(হে নবী আপনি) ঈমানদার নারীদেরকে বলুনঃ তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না ‘জুয়ুবিহিন্নাহ’(শরীর, চেহারা, ঘাড় ও বুকের) উপর ফেলে রাখে...”সুরা আন-নূর, আয়াত ৩১।ওড়না জুয়ুবের উপর ফেলে রাখার মাঝে মুখ ঢেকে রাখাও অন্তর্ভুক্ত।আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে নিচের এই আয়াতের তাফসীর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলোঃ“হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিন নারীদেরকে বলুনঃ তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়।”সুরা আল-আহজাব, আয়াত ৫৯।তখন ইবনে আব্বাস (রাঃ) তিনি তার চেহারা ঢাকলেন, শুধুমাত্র এক চোখছাড়া। তার মানে এই আয়াত থেকে বোঝা যাচ্ছে এই আয়াত দ্বারা ঢেকেরাখা দ্বারা চেহারাও ঢেকে রাখতে আদেশ করা হয়েছে। এই তাফসীর বর্ণিত হয়েছে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে।এই ব্যপারে সুন্নাতে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। যেমন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ইহরামে থাকা অবস্থায় নারীদের জন্য চেহারা ঢেকে রাখা (নেকাব পড়া) অথবা বোরখা পড়া নিষিদ্ধ।তার মানে এইনা যে একজন নারী ইহরাম অবস্থায় তার নেকাব বা বোরখা খুলে একজন গায়ের মাহরাম পুরুষের সামনে তার চেহারা উন্মুক্ত রাখবেন। বরং তিনি নেকাব বা বোরখা ছাড়া অন্য কোনো কিছু দিয়ে পর্দা করবেন, যেমনটা আয়িশাহ (রাঃ) এর হাদীস থেকে বর্ণিত হয়েছে।মা আয়িশাহ (রাঃ) বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে ইহরামে থাকা অবস্থায় ছিলাম। পথচারীগণ আমাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করত। তারা আমাদের নিকট আসলে আমরা মাথার উপর থেকে খিমার চেহারার উপর ফেলে দিতাম। তারা চলে গেলে সেটা উঠিয়ে নিতাম।সুনানে আবু দাউদঃ ১৮৩৩, ফাতহুল বারী ৩/৪৭৪।নারীদের জন্য ইহরামে থাকা অবস্থাতে বা অন্য সময়েও ওয়াজিব হচ্ছে গায়ের মাহরাম পুরুষের সামনে তাদের চেহারা ঢেকে রাখা, কারণ তাদের চেহারাই হচ্ছে পুরষদের জন্য আকর্ষণীয় এমন সৌন্দর্যের কেন্দ্র...ফাতাওয়া আল-মার’আহ আল-মুসলিমাহ, ১/৩৯৯।

তৃতীয়তঃ
সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতে উল্লেখিত আলাইহিন্না এর ব্যখ্যা হচ্ছে, মাথার উপর দিক থেকে মুখমন্ডলের উপর চাদর লটকানো। অর্থাৎ, এ আয়াত পরিস্কারভাবে মুখমন্ডল আবৃত করার আদেশ ব্যক্ত করা হয়েছে। আয়াতে উল্লেখিত 'জালবাব' শব্দের অর্থ এমন কাপড় যা মুখমন্ডল আবৃত করে রাখে।

সুত্রঃ তাফসীরে মা'আরিফুল কুরআন।

ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা নিবেন!

১৬| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:০১

খাঁজা বাবা বলেছেন: সে আফগানে বন্দী হোক বা না হোক, ইসলাম গ্রহন করুক বা না করুক, কথা যুক্তি যুক্ত।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:০৩

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: জ্বী, একদম ঠিক বলেছেন। বক্তব্যে যুক্তি-প্রমাণ থাকলে অবশ্যই প্রত্যেকের বক্তব্য গ্রহণ করতে হবে।

ধন্যবাদ! মূল্যবান কমেন্ট করার জন্য।

১৭| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫২

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: কুরআনের কোন আয়াতকে বুঝতে হলে শুধু তার শাব্দিক অর্থ দিয়ে পুরো মীনিং বোঝা সম্ভব নয়, অন্য আয়াত, হাদীস, সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) দের ব্যাখ্যা ইত্যাদি বহু জিনিসের প্রয়োজন হয়।

মুখমন্ডল খোলা রাখার ব্যাপারে সবার জ্ঞাতার্থেঃ-

পর্দা-বিধান কুরআন মজীদেঃ
পর্দার বিধানটি ইসলামের একটি অকাট্য বিধান। কুরআন মজীদের অনেকগুলো আয়াতে এই বিধান দেওয়া হয়েছে। সুতরাং কোনো ঈমানদারের পক্ষে এই বিধানকে হালকা মনে করার সুযোগ নেই। এখানে কয়েকটি আয়াত সংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ তুলে ধরা হল।
এক.
يا ايها النبى قل لازواجك وبناتك ونساء المؤمنين ...
হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মুমিনদের নারীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আহযাব : ৫৯)
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, আল্লাহ তাআলা মুমিন নারীদেরকে আদেশ করেছেন যখন তারা কোনো প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে তখন যেন মাথার উপর থেকে ওড়না/চাদর টেনে স্বীয় মুখমন্ডল আবৃত করে। আর (চলাফেরার সুবিধার্থে) শুধু এক চোখ খোলা রাখে।-ফাতহুল বারী ৮/৫৪, ৭৬, ১১৪
ইবনে সীরিন বলেন, আমি (বিখ্যাত তাবেয়ী) আবীদা (সালমানী রাহ.)কে উক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, কাপড় দ্বারা মাথা ও চেহারা আবৃত করবে এবং এক চোখ খোলা রাখবে।
দুই.
واذا سألتموهن فسئلوهن من وراء حجاب ...
তোমরা তাঁদের (নবী পত্নীদের) নিকট কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাও। এই বিধান তোমাদের ও তাদের হৃদয়ের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। তোমাদের কারো জন্য আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেওয়া সংগত নয় এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পত্নীদেরকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য কখনো বৈধ নয়। আল্লাহর দৃষ্টিতে এটা ঘোরতর অপরাধ। (সূরা আহযাব (৩৩) : ৫৩)
এই আয়াত থেকেও বোঝা যায়, নারীর দেহের কোনো অংশই পর্দা-বিধানের বাইরে নয়। উম্মুল মুমিনীনগণের আমলও তা প্রমাণ করে।
এই আয়াতে যখন পর্দার বিধানকে সাহাবায়ে কেরাম ও উম্মুল মুমিনীনদের জন্যও অধিকতর পবিত্রতার উপায় বলা হয়েছে তখন উম্মতের আর কে আছে যে এই বিধানের বাইরে থাকতে পারে?
তিন.
قل للمؤمنت يغضنن من ابصارهن ويحفظن فروجهن ولا يبدين زينتهن الا ما ظهر منها
তরজমা : (হে নবী!) মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে ও তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। তারা যেন সাধারণত যা প্রকাশ থাকে তা ছাড়া নিজেদের আভরণ প্রদর্শন না করে। (সূরা নূর : ৩১)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত আছে যে, ‘সাধারণত যা প্রকাশিত’ অর্থ হচ্ছে কাপড়।-তাফসীরে তাবারী ১৮/১১৯
এই ব্যাখ্যা অনুসারে প্রতীয়মান হয় যে, গায়রে মাহরাম পুরুষের সামনে নারীর মুখমন্ডলসহ পূর্ণ দেহ আবৃত রাখা অপরিহার্য।
চার.
وليضربن بخمرهن على جيوبهن
তরজমা : তারা যেন গ্রীবা ও বক্ষদেশ মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে। ... (সূরা নূর : ৩১)
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন,
يرحم الله نساء المهاجرات الأول، لما أنزل الله : وليضربن بخمرهن على جيوبهن شققن مورطهن فاختمرن بها.
অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা প্রথম শ্রেণীর মুহাজির নারীদের প্রতি দয়া করুন। আল্লাহ তাআলা যখন
وليضربن بخمرهن على جيوبهن
আয়াত নাযিল করলেন তখন তারা নিজেদের চাদর ছিঁড়ে তা দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করেছিলেন।-সহীহ বুখারী ২/৭০০
উপরোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. বলেন-‘ফাখতামারনা’ অর্থ তারা মুখমন্ডল আবৃত করেছেন।-ফাতহুল বারী ৮/৩৪৭
আল্লামা আইনী রাহ. বলেন-‘ফাখতামারনা বিহা’ অর্থাৎ যে চাদর তারা ছিঁড়ে ফেলেছিলেন তা দিয়ে নিজেদের মুখমন্ডল আবৃত করলেন। (উমদাতুল কারী ১৯/৯২)
আল্লামা শানকীতী রাহ. বলেন, এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, উপরোক্ত মহিলা সাহাবীগণ বুঝতে পেরেছিলেন যে, এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে মুখমন্ডল আবৃত করারও আদেশ করেছেন। তাই তারা আল্লাহ তাআলার আদেশ পালনার্থে নিজেদের চাদর ছিঁড়ে তা দিয়ে মুখমন্ডল আবৃত করেছেন।
পাঁচ.
ولا يضربن بارجلهن ليعلم ما يخفين من زينتهن وتوبوا الى الله جميعا ايه المؤمنون لعلهم تفلحون
(তরজমা) তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে। হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা নূর : ৩১)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, পরপুরুষকে আকৃষ্ট করে এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকা ঈমানদার নারীর কর্তব্য। কারণ পরপুরুষকে নুপুরের আওয়াজ শোনানোর উদ্দেশ্যে সজোরে পদবিক্ষেপ যখন নিষেধ করা হয়েছে তখন যে সকল কাজ, ভঙ্গি ও আচরণ এর চেয়েও বেশি আকৃষ্ট করে তা নিষিদ্ধ হওয়া তো সহজেই বোঝা যায়। মুসলিম নারীদের জন্য এটি আল্লাহ রাববুল আলামীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।
পর্দার বিধান হাদীস শরীফে
১. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
নারী হল সতর তথা আবৃত থাকার বস্ত্ত। নিশ্চয়ই সে যখন ঘর থেকে বের হয় তখন শয়তান তাকে মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকে। আর সে যখন গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করে তখন সে আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বেশি নিকটে থাকে।-আলমুজামুল আওসাত, তবারানী
এই হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া উচিত নয়।
২. আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
ইহরাম গ্রহণকারী নারী যেন নেকাব ও হাতমোজা পরিধান না করে। (সহীহ বুখারী ৪/৬৩, হাদীস : ১৮৩৮)
কাযী আবু বকর ইবনে আরাবী বলেন, নারীর জন্য বোরকা দ্বারা মুখমন্ডল আবৃত রাখা ফরয। তবে হজ্বের সময়টুকু এর ব্যতিক্রম। কেননা, এই সময় তারা ওড়নাটা চেহারার উপর ঝুলিয়ে দিবে, চেহারার সাথে মিলিয়ে রাখবে না। পরপুরুষ থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখবে এবং পুরুষরাও তাদের থেকে দূরে থাকবে। (আরিযাতুল আহওয়াযী ৪/৫৬)
৩. আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
যে ব্যক্তি অহঙ্কারবশত কাপড় ঝুলিয়ে রাখে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তার দিকে (রহমতের দৃষ্টিতে) তাকাবেন না। তখন উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালামা রা. জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে মহিলারা তাদের কাপড়ের ঝুল কীভাবে রাখবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এক বিঘত ঝুলিয়ে রাখবে। উম্মে সালামা বললেন, এতে তো তাদের পা অনাবৃত থাকবে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে এক হাত ঝুলিয়ে রাখবে, এর বেশি নয়। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪১১৭; জামে তিরমিযী ৪/২২৩; সুনানে নাসাঈ ৮/২০৯; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ১১/৮২
ইমাম তিরমিযী বলেন, এই হাদীসে নারীর জন্য কাপড় ঝুলিয়ে রাখার অবকাশ দেওয়া হয়েছে। কারণ এটিই তাদের জন্য অধিক আবৃতকারী।
৪. ওকবা ইবনে আমের জুহানী রা.-এর সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-তোমরা নারীদের নিকট যাওয়া থেকে বিরত থাক। এক আনসারী সাহাবী আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! স্বামী পক্ষীয় আত্মীয় সম্পর্কে আপনি কী বলেন? তিনি বললে, সে তো মৃত্যু। -সহীহ বুখারী ৯/২৪২; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২১৭২; জামে তিরমিযী, হাদীস : ১১৭১; মুসনাদে আহমাদ ৪/১৪৯, ১৫৩
এই হাদীসে বেগানা নারী-পুরুষের একান্ত অবস্থানকে নিষেধ করা হয়েছে এবং এ প্রসঙ্গে স্বামী পক্ষীয় আত্মীয়-স্বজন যেমন দেবর-ভাসুর ইত্যাদির সাথে অধিক সাবধানতা অবলম্বনকে অপরিহার্য করা হয়েছে।
৫. হযরত আয়েশা রা. ইফ্কের দীর্ঘ হাদীসে বলেছেন-আমি আমার স্থানে বসে ছিলাম একসময় আমার চোখ দুটি নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ল এবং আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। সফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল আসসুলামী ছিল বাহিনীর পিছনে আগমনকারী। সে যখন আমার অবস্থানস্থলের নিকট পৌছল তখন একজন ঘুমন্ত মানুষের আকৃতি দেখতে পেল। এরপর সে আমার নিকট এলে আমাকে চিনে ফেলল। কারণ পর্দা বিধান অবতীর্ণ হওয়ার আগে সে আমাকে দেখেছিল। সে তখন ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বলে ওঠে, যার দরুণ আমি ঘুম থেকে জেগে উঠি এবং ওড়না দিয়ে নিজেকে আবৃত করে ফেলি।
অন্য রেওয়ায়েতে আছে, আমি ওড়না দিয়ে আমার চেহারা ঢেকে ফেলি।-সহীহ বুখারী ৫/৩২০; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৭৭০; জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩১৭৯
৬. উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালামা রা. বলেন, আমি একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ছিলাম। উম্মুল মুমিনীন মায়মুনা রা.ও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এমন সময় আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম উপস্থিত হলেন। এটি ছিল পর্দা বিধানের পরের ঘটনা। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তার সামনে থেকে সরে যাও। আমরা বললাম, তিনি তো অন্ধ, আমাদেরকে দেখছেন না?! তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরাও কি অন্ধ? তোমরা কি তাকে দেখছ না?-সুনানে আবু দাউদ ৪/৩৬১, হাদীস : ৪১১২; জামে তিরমিযী ৫/১০২, হাদীস : ২৭৭৯; মুসনাদে আহমাদ ৬/২৯৬; শরহুল মুসলিম, নববী ১০/৯৭; ফাতহুল বারী ৯/২৪৮
৭. উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন, আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ইহরাম অবস্থায় ছিলাম তখন আমাদের পাশ দিয়ে অনেক কাফেলা অতিক্রম করত। তারা যখন আমাদের সামনাসামনি চলে আসত তখন আমাদের সকলেই চেহারার ওপর ওড়না টেনে দিতাম। তারা চলে গেলে আবার তা সরিয়ে নিতাম।-মুসনাদে আহমাদ ৬/৩০; ইবনে মাজাহ,
হাদীস: ২৯৩৫
এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, পরপুরুষের সামনে চেহারা ঢেকে রাখা আবশ্যক।
৮. আসমা বিনতে আবু বকর রা. বলেন, আমরা পুরুষদের সামনে মুখমন্ডল আবৃত করে রাখতাম। ...-মুসতাদরাকে হাকেম ১/৪৫৪
এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, সাহাবা-যুগের সাধারণ মহিলারাও গায়র মাহরাম পুরুষ থেকে নিজেদের চেহারা আবৃত করতেন। কারণ আসমা বিনতে আবি বকর রা. এখানে বহুবচন ব্যবহার করেছেন। যা প্রমাণ করে উম্মুল মুমিনগণ ছাড়া অন্য নারীরাও তাদের মুখমন্ডল আবৃত রাখতেন।
৯. ফাতিমা বিনতে মুনযির রাহ. বলেন, আমরা আসমা বিনতে আবু বকর রা.-এর সাথে ইহরাম অবস্থায় থাকাকালে আমাদের মুখমন্ডল ঢেকে রাখতাম।-মুয়াত্তা, ইমাম মালেক ১/৩২৮; মুসতাদরাকে হাকেম ১/৪৫৪
হযরত ওমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-যখনই কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে একান্তে সাক্ষাত করে তখন তাদের তৃতীয়জন হয় শয়তান।-জামে তিরমিযী
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন, একজন মহিলা পর্দার পিছন থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে একটি কাগজ দিতে চাইল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাত গুটিয়ে নিলেন (কাগজটি নিলেন না এবং) বললেন, আমি জানি না, এটা কি পুরুষের হাত না নারীর। মহিলা আরজ করলেন, ‘নারীর হাত।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি যদি নারী হতে তাহলে নিশ্চয়ই নখে মেহেদী থাকত।’-সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসায়ী
এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, পীর-মুর্শিদ ও উস্তাদের সাথেও পর্দা করা অপরিহার্য।
হযরত উমাইমা বিনতে রুকাইকা রা. থেকে বাইয়াত সংক্রান্ত একটি দীর্ঘ হাদীসে আছে যে, নারীগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আমাদের প্রতি আমাদের নিজেদের চেয়েও মেহেরবান। সুতরাং আপনার হাত মোবারক দিন, আমরা বাইয়াত হই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি নারীদের সাথে হাত মিলাই না। (যা মুখে বলেছি তা মেনে চলাই তোমাদের জন্য অপরিহার্য)।-মুয়াত্তা মালিক
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন, আল্লাহর কসম! বাইয়াতের সময় তাঁর (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর) হাত কখনো কোনো নারীর হাত স্পর্শ করেনি। তিনি শুধু মুখে বলতেন, তোমাকে বাইয়াত করলাম।-সহীহ বুখারী ২/১০৭১
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
দুই শ্রেণীর দোযখী এখনও আমি দেখিনি। (কারণ তারা এখন নেই, ভবিষ্যতে আত্মপ্রকাশ করবে) এক শ্রেণী হচ্ছে ঐ সকল মানুষ, যাদের হাতে ষাঁড়ের লেজের মতো চাবুক থাকবে, যা দিয়ে তারা মানুষকে প্রহার করবে। (দ্বিতীয় শ্রেণী হচ্ছে) ঐ সকল নারী, যারা হবে পোশাক পরিহিতা, নগ্ন, আকৃষ্ট ও আকৃষ্টকারী; তাদের মাথা হবে উটের হেলানো কুঁজের ন্যায়। এরা জান্নাতে যাবে না এবং জান্নাতের খুশবুও পাবে না অথচ জান্নাতের খুশবু তো এত এত দূর থেকে পাওয়া যাবে।-মুসলিম ২/২০৫, হাদীস : ২১২৮
এই হাদীসে বেপর্দা নারীদের প্রতি কঠিন হুঁশিয়ারি শোনানো হয়েছে। সুতরাং তাদের মৃত্যুর আগেই তাওবা করে পর্দার বিধানের দিকে ফিরে আসা কর্তব্য।
উপরের আলোচনা থেকে জানা গেল যে, কুরআন মজীদে ও হাদীস শরীফে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পর্দার বিধান দেওয়া হয়েছে। এই বিধান মেনে চলা সকল ঈমানদার নারী-পুরুষের জন্য অপরিহার্য। এবার ঐ সকল নিকটাত্মীয়দের কথা উল্লেখ করছি, যাদের মাঝে পর্দার হুকুম নেই। এরা ছাড়া অন্য সকলের সাথেই পর্দা করতে হবে।
যাদের সাথে পর্দা নেই
মাহরাম পুরুষের সাথে নারীর পর্দা নেই। মাহরাম পুরুষ দ্বারা উদ্দেশ্য হল এমন পুরুষ আত্মীয়, যার সাথে বর্তমানে কিংবা ভবিষ্যতে কোনো অবস্থায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়েয নয়। যেমন-পিতা, ভাই ইত্যাদি।
আর যে পুরুষের সাথে বর্তমানে কিংবা ভবিষ্যতে সাময়িক প্রতিবন্ধকতা (যেমন-নারীর বোন বা এমন নারীর বিবাহে থাকা, যাদের দু’জনকে বিবাহসূত্রে একত্র করা জায়েয নয়) দূর হওয়ার পর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়েয সে হল গায়র-মাহরাম। তার সাথে পর্দা করা ফরয।

সূত্রঃ http://www.alkawsar.com/article/442

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:১১

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: কুরআনের কোন আয়াতকে বুঝতে হলে শুধু তার শাব্দিক অর্থ দিয়ে পুরো মীনিং বোঝা সম্ভব নয়, অন্য আয়াত, হাদীস, সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) দের ব্যাখ্যা ইত্যাদি বহু জিনিসের প্রয়োজন হয়।

জ্বী, একদম ঠিক বলেছেন! শরিয়তের মুলভিত্তি কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস। হাদীস হচ্ছে কুরআনের ব্যাখ্যা!

দলিলসহ বিস্তারিত আলোচনা উপস্থাপন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে!!

১৮| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৬

মরুচারী বেদুঈন বলেছেন: @ এ আর ১৫ ৩ নং কমেন্টের এক পর্যায়ে বলেছেনঃ তার মানে কেউ মুখ লুকাতে পারবে না


এর মাধ্যমে আপনি কি আলাদা কিছু বিষয় যুক্ত করেন নি?

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:১৯

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: ‘তার মানে কেউ মুখ লুকাতে পারবে না’ এটি ভুল বক্তব্য।
সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতে উল্লেখিত ‘আলাইহিন্না’ এর ব্যখ্যা হচ্ছে, মাথার উপর দিক থেকে মুখমন্ডলের উপর চাদর লটকানো। অর্থাৎ, এ আয়াত পরিস্কারভাবে মুখমন্ডল আবৃত করার আদেশ ব্যক্ত করা হয়েছে। আয়াতে উল্লেখিত 'জালবাব' শব্দের অর্থ এমন কাপড় যা মুখমন্ডল আবৃত করে রাখে।

সুত্রঃ তাফসীরে মা'আরিফুল কুরআন।

ধন্যবাদ।

১৯| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:১৪

প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট। ধন্যবাদ

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৩২

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: মূল্যায়ন করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ!

শুভেচ্ছা নিবেন প্রমানিক ভাই।

২০| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:২১

এ আর ১৫ বলেছেন:
একজন নারীর চেহারা তার আওরাহ যা কিনা অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে। এটা তার শরীরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংগ। কারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি একজন নারীর চেহারাকেই দেখে, তাই একজন নারীর চেহার হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আওরাহ। এই যুক্তি হলো শরীয়াতের দলীলগুলো ছাড়াই অন্য আরেকটা যুক্তি – একজন নারীর চেহারা ঢেকে রাখা তার জন্য ওয়াজিব এই কথা প্রমানের জন্য
--- আইডেনটিফিকেশনের জন্য মুখ ঢাকা যাবে না সেটা স্পষ্ঠ ভাবে ৩৩-৫৯ আয়াতে বলা আছে - এতে তাদের চেনা সহজ হবে ---- এই চেনা শব্দের ব্যাখা কি ???
এবার আসা যাক পুরুষদের কি নির্দেশ আছে সুরা আল নূরের ৩০ তম আয়াতে --- সেখানে কি পুরুষদের চোখের গেজ নিয়ন্ত্রণ করার আদেশ নেই ।
এই বিষয় নিয়ে অন্য ব্লগে অনেক আলোচনা হয়েছে সেখানে চেনা বলতে দাবি করা হয়েছে নিম্ন বাক্য --
এখানে চেনা সহজ হওয়ার আর্থ হল- নারীরদের এই ধরনের অনাডম্বর লজ্জা নিবারণকারী পোষাকে সজ্জিত দেখে প্রত্যেক প্রত্যক্ষকারী জানবে তারা অভিজাত ও পুত পবিত্র মেয়ে, ভবঘুরে অসথী পেশাদার মেয়ে নয়, কোন অসাধুচারী মানুষ তার কাছে নিজের কামনা পুর্ণ করার আশা না করে।--
উত্তরে বলা হয়েছে ------ তাই নাকি এটা কোথাকার আবিষ্কার ??? আপাদমস্তক ঢাকা পেশাদার দেহদান কারি মহিলারা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে এখন খদ্দর যোগার করে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় । ইসলামের প্রথম যুগ থেকে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত মুসলিম মহিলারা আপাদমস্তক ঢেকে চলা ফেরা করে তাদের ৯৭ বা তারো বেশি শতাংশ সাধারন পরিবারের, অভিজাত পরিবারের নয় । সৌদি আরবে সকল ধর্মের মহিলাদের ঐ পোষাক পরতে হয় তাহোলে কে সতি বা কে অসতি বা কে অভিজাত কে গরিব বা কে মুসলিম বা কে অমুসলিম ইত্যাদি পোষাক দেখে বোঝার উপায় নাই ।





উপরে ছবি দুটি মুর্তি পুজাকারি ইউজিদি মহিলাদের কারন তারা মরুভুমিতে ৪৫ থেকে ৫৫ ডিগ্রী তাপের মধ্য থাকে তাই তাদের শরির না ঢেকে রাখলে না রাখলে ডিহাইড্রেড হয়ে চামড়া পুড়ে মারা যাবে । তাই হিজাব বোরকা পরলেই বোঝা যায় না সে মুসলমান না খৃষ্টান না ইহুদি বা ইউজিদি ( মুর্ত পুজা করে ) । সৌদি আরবে সব ধর্মের মহিলাদের বাধ্যতা মুলক বোরকা হিজাব নিকাব পোরতে হয় তাই তারা কোন ধর্মের অভিজাত না গরিব সতি না অসতি কিছুই বোঝা যায় না । আপনারা যাতের তফসির হতে যে আজগুবি ব্যাখা চেনা শব্দ থেকে আবিষ্কার করেছেন সেটা ধোপে টিকে না । সব চেয়ে বড় কথা ঐ সমস্ত তফসির কারিরা গোটা দুনিয়াকে মরুভুমি মনে করে তাই মরুভুমির ড্রেসকোড ফলো করার পরামর্শ দেয়।
মরুভুমির তাপমাত্রা ৪৫ থেকে ৫৫তে ভ্যারি করে সেটা বোধ হয় আপনার জানা নেই । ঐ তাপদাহ থেকে বাচার জন্য মুসলিম অমুসলিম সবাই মাথা সহ গোটা দেহ ঢেকে রাখে । ঘাস নাই সামান্য বাতাসে বালু উড়ে এই বালু যদি শরির বা মাথার চুলে প্রবেশ করে সেটা খুবই যতনা দায়ক তাই নারি পুরুষ মুসলিম অমুসলিম মাথা সহ শরির ঢেকে রাখে কারন পানি খুব দু:প্রাপ্য তাই পরিষ্কার করা বা গোসল করা সহজ নয় । মেয়েদের মুখের চামড়া নরম তাই অনেক মহিলা নিকাব পরে মুখকে তাপ হতে রক্ষা করার জন্য । তাই হিজাব বোরকা পরলেই বোঝা যায় না সে মুসলমান না খৃষ্টান না ইহুদি বা ইউজিদি ( মুর্ত পুজা করে ) । এই মুর্তি পুজা কারি ইউজিদি মহিলাদের দেখে বলুন তো আমার কথা ঠিক কিনা ??
১) মূরুভুমিতে তাপ মাত্র ৪৫ থেকে ৫৫ ডিগ্রী পর্যন্ত ভ্যারি করে
২) ঘাস নেই তাই সামান্য বাতাসে শরিরের ভিতর বালু ঢুকে যায় এবং সেটা খুব যতনা দায়ক । পরিষ্কার করা বা ধুয়ে ফেলা বা গোসল করা জরুরি হয়ে পরে ।
৩) পানির খুব অভাব তাই চেলেই ধোয়া বা গোসাল করা যায় না ।

তাই মরু ভুমিতে টিকতে হোলে পুরুষ নারী সবাইকে ঢোলা পোষাক পরতে হয় , মাথা ঢেকে রাখতে হয় যাতে চুলে বা গলা দিয়ে শরিরে বালু প্রবেশ পরতে না পারে । মেয়েরা নিকাব পরে কারন তাদের চামড়া পুরুষের থেকে নরম চামড়া পুড়ে যায় । শীত কালে যেমন কোট জাম্পার পরতে হয় তেমনি মরু ভুমিতে টিকতে হোলে ঐ ড্রেস কোড ফলো করতে হয় । অমুসলিম এমন কি ইউজিদি মহিলারা ও ( যারা মুর্তি পুজা করে) মাথা মুখ ঢেকে রাখে মরুভুমির আবহাওয়া থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখতে ।
মরুভুমির ঐ পোষাক যুক্তি সংগত কারন বাতাসে হিউমিডিটি নেই তাই ঢোলা পোষাক আপাদ মস্তক ঢাকা মাথা চুল সহ বিজ্ঙান সম্মত । কারন বাতাসে হিউমিডিটি কম থাকাতে শরিরের ভিতরে যে ঘাম সৃষ্টি হয় তা ঢোলা পোষাক শরিরের কাছে ধরে রাখে এবং শরিরে চামড়াকে সিক্ত রাখে । মরুভুমিতে আমাদের দেশের মত মার্জিত পোষাক শাড়ী সেলোয়ার কামিজ পরে থাকলে শরির পুড়ে যাবে এবং ডি হাইড্রেটেড হয়ে মারা যাবে । ঠান্ডার দেশে ঢোলা কাপড় শরিরের ক্ষতি করে এবং মৃর্তুর কারন হয় তাই ঐখানে টাইট পোষাক পোরতে হয় ।
------
ঐ ব্লগে আরেক জনের কথার জবাব --
ইমাম রাযী বলেনঃ “এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, লোকেরা যেন জানতে পারে এরা দুশ্চরিত্রা মেয়ে নয়। কারণ যে মেয়েটি নিজের চেহারা ঢাকবে, অথচ চেহারা সতরের অন্তর্ভুক্ত নয়, তার কাছে কেউ আশা করতে পারে না যে, সে নিজের ‘সতর’ অন্যের সামনে খুলতে রাজী হবে। এভাবে প্রত্যেক ব্যক্তি জানবে, এ মেয়েটি পর্দানশীল, একে যিনার কাজে লিপ্ত করার আশা করা যেতে পারে না।” (তাফসীরে কবীর, ২ খন্ড, ৫৯১ পৃষ্ঠা) ---
উত্তর --- উনি কি কারনে বোলেছেন আমি জানিনা - আপাদ মস্তক ঢাকা থাকলে নারীর চরিত্র বোঝার উপায় নাই সে কি সতি না অসতি । কয়েক দিন আগে পুলিশ ঢাকার বিভিন্ন স্পট থেকে বোরকা নিকাব পরা মহিলা ছিনতাইকারি দেহ ব্যবসায়ি কে আটক করেছে । মরুভুমিতে আবহাওয়া জনিত কারনে মুসলিম অমুসলিম নাস্তিক মুর্তি পুজারি সকলেই আপাদমস্তক ঢাকা পোষাক পরে মাথা চুল ঢেকে রাখে এবং মুখে নিকাব পরে মুখের চামড়া বাচানোর জন্য ।

এনারা সবাই মনে করেছেন গোটা দুনিয়াটা মরু ভুমি তাই দুনিয়ার সব পুরুষের সেক্স কন্ট্রোল মরুভুমির পুরুষের মত । মরুভুমি পুরুষরা সারা জীবন আপাদমস্তক ঢাকা নারি দেখে অভস্ত কারন আবহাওয়া তাই যদি তারা মেয়েদের হাত বা মাথার চুল বেরিয়ে থাকা দেখে তাহোলে যৌন উত্তেজনা বোধ করে তারা যদি আমাদের দেশের মত শাড়ী বা সেলোয়ার কামিজ পরা মেয়েদের দেখে তাহোলে তো কথাই নাই কারন সারা জীবন তারা মহিলাদের আপাদ মস্তক ঢাকা দেখে তাই কিন্তু দেখুন মার্জিত শাড়ী সেলোয়ার কামিজ পরা মহিলা দেখে আমাদের দেশের পুরুষরা অভ্যস্ত।
সমস্যা হোল এই সমস্ত কিছু লোক গোটা দুনিয়াকে মরুভুমি মনে করে কিন্তু মরুভুমিতে বসবাস কারি মিশরের গ্রান্ড মুফতি কিন্তু ব্যতিক্রম । ধন্যবাদ ।

২১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ ভোর ৬:১৬

এ আর ১৫ বলেছেন: সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতে উল্লেখিত ‘আলাইহিন্না’ এর ব্যখ্যা হচ্ছে, মাথার উপর দিক থেকে মুখমন্ডলের উপর চাদর লটকানো। অর্থাৎ, এ আয়াত পরিস্কারভাবে মুখমন্ডল আবৃত করার আদেশ ব্যক্ত করা হয়েছে। আয়াতে উল্লেখিত 'জালবাব' শব্দের অর্থ এমন কাপড় যা মুখমন্ডল আবৃত করে রাখে।
--- জালবাব শব্দের অর্থ বড় চাদর যা শরিরকে ঢেকে রাখে । কেউ ইচ্ছা করলে ঐ চাদর দিয়ে মাথা মুখ সহ আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে পারে । এই আয়াতে মুখ ঢেকে রাখার কথা বলা হয় নি কারন মুখ ঢেকে রাখলে তাদের সহজে চেনা যাবে না ।

২২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ ভোর ৬:২৫

এ আর ১৫ বলেছেন: সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন -------- আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, আল্লাহ তাআলা মুমিন নারীদেরকে আদেশ করেছেন যখন তারা কোনো প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে তখন যেন মাথার উপর থেকে ওড়না/চাদর টেনে স্বীয় মুখমন্ডল আবৃত করে। আর (চলাফেরার সুবিধার্থে) শুধু এক চোখ খোলা রাখে।-ফাতহুল বারী ৮/৫৪, ৭৬, ১১৪
ইবনে সীরিন বলেন, আমি (বিখ্যাত তাবেয়ী) আবীদা (সালমানী রাহ.)কে উক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, কাপড় দ্বারা মাথা ও চেহারা আবৃত করবে এবং এক চোখ খোলা রাখবে।

আমার ২০ নং কমেন্টে এর উত্তর খুজে পাবেন । ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.