নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যে ও সুন্দরের পক্ষে সব সময়

রাসেল উদ্দীন

জীবনের সবকিছু মহান স্রষ্টার জন্য নিবেদিত

রাসেল উদ্দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাকবি আল্লামা ইকবাল- (রহঃ) এর জন্মদিন আজ

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৭

খুবতো বলছ, দুনিয়া হতে বিদায় নিচ্ছে মুসলমান!
প্রশ্ন আমার, মুসলিম কোথায় সে কি আজো আছে বিদ্যমান?
চলন তোমার, আর সে হিন্দুয়ানি তমদ্দুন,
ইহুদিও আজ শরম পাবে দেখিলে তোমার এসব গুণ!
হতে পার তুমি সৈয়দ, মীর্জা, হতে পার তুমি সে আফগান
সবকিছু হও, কিন্তু শুধাই: বলত’ তুমি কি মুসলমান?
হৃদয় তোমার ইমান-বিহীন,বাজু সে তোমার শক্তিহীন
তোমরা নবীর উম্মত? হায়! শরমে তাহার মুখ মলিন!
বুৎ-ভাঙ্গা দল বিদায় নিয়েছে,বাকী যারা তারা গড়িছে বুৎ,
'ইবরাহীমের' ছেলেরা এখন 'আযর' সেজেছে কী অদ্ভুত!

ফযরে উঠিয়া নামাজ পড়িতে পাও তুমি আজ কষ্ট ঘোর
আমারে ভুলিয়া অলস-আবেশে নিদমহলায় রও বিভোর।
প্রগতিপন্থী তুমি তো এখন! রাখো নাক' রোযা রমজানে
এই কি তোমার প্রেমের নিশান? ওফাদারী'র কি এই মানে?

কবর লইয়া তেজারতি করে যেসব ঘৃণ্য ব্যবসাদার
মূর্তি পেলে যে বেচিবে না তারা-কোথায় তাহার অংগীকার?
তোমাদের মাঝে হাজার ফিরকা,হাজার দল ও হাজার মত,
এমন জাতি কি দুনিয়ার বুকে খুজে পায় কভূ মুক্তি পথ!

(আল্লামা ইকবাল (রহঃ) কাব্য অনুবাদ)

মহাকবি আল্লামা ইকবাল রহঃ এর জন্মদিন আজ।
আল্লামা ইকবালের ১২৯৪ হিজরী ৩রা যিলকদ মোতাবেক ১৮৭৭ খৃস্টাব্দে ৯ই নভেম্বর বর্তমান পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সিয়ালকোটে জন্মগ্রহণ করেন। আল্লামা ইকবালের পিতার নাম শেখ নূর মুহাম্মদ। তিনি ছিলেন একজন সূফী-দরবেশ শ্রেণীর লোক। ইলমে তাছাউফের প্রতি তার ছিল প্রবল আকর্ষণ। নামায, রোযা, তাসবীহ-তাহলীল, মোরাকাবা-মোশাহাদার মাধ্যমে তিনি অতিবাহিত করতেন দিবসের অধিকাংশ সময়। শিখ শাসনের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে শিখ-মুসলিম দাঙ্গার সময় কাশ্মীর ছেড়ে সিয়ালকোটে বসতি স্থাপন করেন তিনি। আল্লামা ইকবালের মাতা ইমাম বিবিও ছিলেন পিতার মতই একজন ধর্মভীরু পরহেযগার মহিলা।
১৯২৩ সালে বৃটিশ সরকার ইকবালকে নাইট খেতাব দিয়ে সম্মানিত করে। তার এই নাইট প্রাপ্তি ভক্ত অনুরাগীদের মাঝে ভূল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। বিরুদ্ধবাদী কবিরা ব্যাঙ্গাত্মক কবিতা লিখে তাঁকে আক্রমণ করে। এমনকি তার বন্ধুরা চিঠি লিখে তার মতামত জানতে চায় এবং আশ্বস্ত হতে চায় ঘটনা যেন কোন ক্রমেই তাঁর স্বাধীন মতামত প্রকাশে কিংবা কওমের প্রতি খেদমতে বাঁধার সৃষ্টি না করে। আল্লামা ইকবাল বাকী জীবন কর্মের মাধ্যমে প্রমাণ করেগেছেন যে, তিনি কখনো দুর্দশাগ্রস্থ মুসমানদের কথা ভুলেন নি।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী কালীন সময়ে উপ-মহাদেশের নৈরাজ্যপূর্ণ অবস্থা বিশেষ করে মুসলমানদের দু:খজনক চিত্র তাঁকে ব্যথিত করে তোলে। তিনি বুঝতে পারেন, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শক্তিশালী হওয়া ছাড়া এই সমস্যা থেকে মুসলমানদেও উত্তরণ আর সম্ভব নয়। মুসলমানদের প্রতিটি সমস্যায় গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখার লক্ষে আমৃত্যু রাজনীতির কঠিন ময়দানে বিচরণ করেন তিনি। তিনি ১৯২৬ সালে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯২৭ সালে বৃটিশ সরকার ভবিষ্যৎ ভারতীয় শাসনতন্ত্রের পটভূমি তৈরীর প্রত্যাশায় “সাইমন কমিশন” প্রেরন করলে কংগ্রেস দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে আল্লামা ইকবাল নওয়াব জুলফিকার আলী খান ও মাওলানা মোহাম্মদ আলীর সাথে যৌথভাবে এক বিবৃতি প্রকাশ করে কমিশনকে সহযোগীতার আশ্বাস দেন। তিনি মুসলমানদের ল্য করে বলেন, যদি আমরা কমিশনকে সহায়তা না করি তবে বৃটিশরা মুসলমানদের স্বার্থকেই বাধাগ্রস্ত করবে। আল্লামা ইকবালের এই ধারণা বৃটিশদের শাসন পরিচালনায় মুসলমানরা হারে হারে টের পেয়েছিল। বৃটিশরা সবসময় মুসলমানদের কাছ থেকে মতা দখল করার কারণে মুসলমানদেরকেই প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে বিবেচনা করছে। যা তাদের দীর্ঘ দিনের কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে।

এরপরও কেউ কেউ আল্লামা ইকবালের রাজনৈতিক কার্যকলাপের সমালোচনা করেন। কিন্তু তৎকালীন পরিস্থিতির বিচারে একজন মুসলমানের এরচেয়ে কতটুকু বেশী করার সুযোগ ছিল তা কিন্তু প্রশ্ন সাপে। সার্বিক বিবেচনায় ভারতীয় মুসলমানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণে আল্লামা ইকবালের অবদান অত্যন্ত তাৎপর্যবহ। তিনিই সর্ব প্রথম মুসলিম লীগের অধিবেশনে ভারতের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে পৃথক মুসলিম রাষ্ট্রের দাবী উত্থাপন করেন। এই দাবীই পরবর্তীতে পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনের সূচনা করে।

সব চেয়ে বড় কথা হল আল্লামা ইকবাল কেবল মাত্র রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন নি। জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার কাজ তিনি চালিয়ে যান সমান তালে। ১৯২৮ সালের ডিসেম্বর মাসে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়েই ৬টি বক্তৃতা দেন তিনি। এর পরপরই বাঙ্গালুর হায়দারাবাদ এবং আলীগড়ে বক্তৃতা দেয়ার আমন্ত্রণ পান। তার এ সকল বক্তৃতা The Reconstruction of Religious Thought in Islam নামক পুস্তকে প্রকাশিত হয়। যা আল্লামা ইকবালের চিন্তার গভীরতার সাক্ষর বহন করে।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



উনি মহাকবি নন, সাধারণ কবি; পাকিস্তানের রাজনীতির অংশ হওয়ায়, তিনি মহাকবি হয়ে গেছেন

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৯

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: উনি পাকিস্তানী নাকি হিন্দুস্তানী সেটা বড় বিষয় নয়। তার পরিচয় তিনি একজন কবি। সাধারণ কবি মনে করলে ‘সাধারণ’ অথবা না“!
ধন্যবাদ গাজী সাহেব!

২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



আসলে, ব্লগের কবিরা উনার থেকে ভালো করছেন

৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪০

প্রামানিক বলেছেন: “মুসলিম জিন্দা হোতা হায় হর কারবালা কে পর” এ লাইনটি মহাকবি ইকবালের।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪০

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: জ্বী প্রমাণিক ভাই!

ধন্যবাদ!

৪| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: স্টিকি পোস্টের ৯৭ নম্বর মন্তব্যের প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪১

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: দেখলাম। আমিও আলোচনায় আগ্রহী!

ধন্যবাদ জনাব!!

৫| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:০৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ইকবালের পর পাকিস্তানে আর কোন কবি জন্মাইছে?
বর্তমানের পাঁচজন পাকি কবির নাম বলেনতো

১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:২৪

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: কবি নজরুল, রবি ঠাকুর ছাড়া আল্লামা ইকবালের মত কবি ভারতীয় উপমহাদেশে নেই বললেই চলে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.