নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যে ও সুন্দরের পক্ষে সব সময়

রাসেল উদ্দীন

জীবনের সবকিছু মহান স্রষ্টার জন্য নিবেদিত

রাসেল উদ্দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অণুগল্প : শুভক্ষণে অশুভ পরিণতি

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৭

সেদিন সকালের আকাশটা হাস্যজ্জল ছিল। চতুর্দিকে কর্মব্যস্ত মানুষের আনাগোনা শুরু হয়েছে। অত্যন্ত ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে শহরের সবচেয়ে অভিজাত কফিশপের দিকে রওয়ানা হয়েছি। আজ ইউনিভার্সিটি না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ সকাল বেলা আম্মু তিন পৃষ্ঠার একখানা বাজার লিস্ট হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন। লিস্টের শুরুতেই শেরওয়ানি, টোপর, গহনা এগুলো লেখা।

: আম্মু! এসব বিয়ের বাজার করতে আমাকে পাঠাচ্ছে কেন?
: বিয়েই বা কার?
জিজ্ঞেস করতেই ধমক দিয়ে বললেন- তোর এতকিছু জানতে হবে না। জলদি এগুলো কিনে নিয়ে আয়! বুঝতে আর বাকী রইল না, বিয়ের জোয়াল আমার কাধেই চড়ানো হচ্ছে। আম্মুর কোন কথা কখনো অমান্য করিনি। কিন্তু এই বিয়ের ব্যপারটা বরাবরই অস্বীকার করে আসছি। গত পাঁচ বছর ধরে বলে আসছি, আর ছ’মাস পর বিয়ে করব। পাঁচ বছর পর এখনো বলে আসছিলাম একই কথা। কথার পরিবর্তন করিনি- কারণ, আজ এক কথা আবার কাল আরেক কথা বলাতো ঠিক না। এ নিয়ে আম্মুকে অনেকবার ঝাড়ি দিয়েছি। তাই বিয়ের দিনক্ষণ পাকা করেও আমাকে জানানো হয়নি।

বাইক নিয়ে লেকের পাড়ে পৌছাতেই পুুলিশ ও সাধারণ মানুষের ভীড় দেখতে পেলাম। ঘটনা জানতে এগিয়ে গেলাম সেদিকে। অজ্ঞাত তরুণীর রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। দেখে সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে, গতরাতে খুন হয়েছে। শুধু খুন নয়, কাটাঁ-ছেড়া বস্ত্র দেখে বুঝা গেল শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যা। ফুরফুরে মেজাজটা আকস্মিক বিগড়ে গেল। মুহূর্তেই হৃদয়ের আকাশে কালো মেঘ জমে উঠল। কালবৈশাখী ঝড় এসে লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেল চেতনা জগত। কাদাঁ-মাটি ও রক্ত মাখা চেহারা। তা সত্ত্বেয় মেয়েটাকে স্পষ্ট চিনতে পারলাম।

সপ্তাহ খানেক আগে আম্মু এ মেয়েটার ছবিই আমাকে দেখিয়েছিলেন। ক্যম্পাসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি, তখন আম্মু ছবিটা দেখিয়ে বলেছিলেন, দেখতো মেয়েটা কেমন? বললামঃ সুন্দর। হ্যাঁ! এই মেয়েটির সঙ্গেই আজ আমার বিয়ে হওয়ার কথা।

মেয়েটির লাশ তদন্তের জন্য থানায় নেওয়া হল। ইতিমধ্যে মেয়ের বাবা মা থানায় অভিযোগ করেছেন। বাবা-মা থানায় আসলেন, পুলিশের কাছে বিস্তারিত খুলে বললেন। মেয়েটির নাম সাদিয়া মেয়ের বাবা-মা জানালেন,

“একটা ছেলের সাথে আমার মেয়ের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ছিল। ছেলেটি বেকার বলে এখনি বিয়ে করতে চাচ্ছিল না। আমরাও রাজী হয়নি। অন্যত্র পাত্র ঠিক করেছিলাম। আজই সেখানে বিয়ে হওয়ার কথা। আমাদের ধারণা এ কারণে ঐ ছেলেটিই আমার মেয়েকে খুন করেছে।”
গতরাতের বর্ণনা দিয়ে মেয়ের মা জানালেন, সন্ধ্যায় সাদিয়ার কাছে একটা ফোন আসল। শপিং করার কথা বলে ও বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। আর ফিরে আসেনি। রাত নয়টা থেকে ফোন করছি। তখন থেকে ফোন বন্ধ।

পুলিশ ছেলেটিকে খুঁজে বের করল। ঘটনার সত্যতা প্রমাণ হল। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের সাথে সু-সম্পর্ক থাকার সুবাদে প্রশাসন মুখে কুলুপ এটে বসল। একটি সত্য ঘটনাকে পুলিশ চাপা মাটি দিল। আর সাদিয়ার লাশ মর্গে দিল পোস্টমর্টেম করতে। স্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেয় খুনী ছেলেটার কিছুই হল না। এমন জুলুম, এমন নির্লজ্জতা, মানবতার এতটা ভয়াবহ বিপর্যয় পৃথীবি হয়েতা আর কখনো দেখিনি।

ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণঃ
১. পশ্চিমা কালচারে প্রভাবিত অবৈধ প্রেম-প্রণয়।
২. দীর্ঘ জীবন লেখাপড়া করে বেকারত্বের বোঝা বহন করা। যা পুরুষকে সঠিক সময়ে বিয়ে করতে বাঁধা দেয়, কিন্তু প্রেম করতে বাঁধা দেয় না।
৩. ক্ষমতাসীন দলগুলোর ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রশাসন দলীয়করণ এবং বিচারব্যবস্থায় দুর্নীতি।
৪. নারী স্বাধীনতার নামে নারীদের যত্রতত্র ও একাকী চলাফেরার অবাধ স্বাধীনতা।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আমাদের সমাজে এমন ঘটনা অহরহ হচ্ছে।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৩

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: এত বেশীই ঘটছে যে, এগুলো আমাদের কাছে খুব স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে।

২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:১৩

আকিব হাসান জাভেদ বলেছেন: বেকার ছেলেটা কতটুকু শিক্ষিত তা জানা গেলো না । তবে বেকার ছেলেটার যে দোষ পুরোটা তা বলা যায় না । আপনার মতো ধনীদের দেখলে এরা অতীত প্রেম ভালোবাসা ভুলে যায় । বেকার ছেলেটা সহজ সরল ও হতে পারে । আজ একটা মেয়ে কতটুকু পাড়ে বা পাড়ে না তা আমাদের নিশ্চয় সবার জানা। পরিবেশ টা ওদের হাতে। যেমনটা চায় সেই ভাবে আলো বাতাস নাড়াতে পাড়ে। আপনার মতে আমি একমত ,
নারী স্বাধীনতা নামে নারীদের যত্রতত্র ও একাকী চলাফেরার অবাধ স্বাধীনতা।
দূরহউক আমাদের কূলষ দুষ্ট মন মানুষিকতা।।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৭

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: আমি ধনী-বড়লোকদের কেউ নই। ছেলেটা সমাজের স্বাভাবিক স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়েছে। দোষ সমাজব্যবস্থার, তারপরেও সে অপরাধী, সে খুনী, সন্ত্রাসী।

সমাজ সংস্কার করা ছাড়া এ অপরাধ আইন দিয়ে বন্ধ করা সম্ভব নয়।

৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:২৪

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: গল্প বর্ণনার ক্ষেত্রে কিছু জড়তা লক্ষ্যণীয়। গল্পের প্রেক্ষাপট সময় উপযোগী বলে ভালো লেগেছে। তাছাড়া ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ সমর্থনযোগ্য।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৮

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: জড়তা আছে হয়তো। শুধরে নেব। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে!

৪| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯

মৌরি হক দোলা বলেছেন: বাস্তব ঘটনার উপর গল্প। এসব গল্প আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

ভালো লাগল......

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪১

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: এসব ঘটনা তথা খুন-ধর্ষণ আমাদের কাছে পান্তা ভাতের মত হয়ে গেছে। কিন্তু এগুলো বন্ধের চিন্তা, সমাজ সংস্কারের চিন্তা কারো নেই। সবাই ভাবছে, আমি তো ভালোই আছি।

আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগল। ধন্যবাদ!

৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষকে সচেতন হতে হবে।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪২

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: জ্বী, সচেতন মানুষেরই অভাব! এসব নিয়ে কারো কোন মাথাব্যাথা নেই।
ধন্যবাদ!!

৬| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:


বাস্তব সম্মত লেখা।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: পড়েছেন জেনে ভালো লাগল। ধন্যবাদ!

৭| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:১৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: মেয়েদের বোঝা উচিত প্রেম করার আগে সেটা টাইম পাস হবে নাকি লাইফ টাইম হবে...

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৩:২২

রাসেল উদ্দীন বলেছেন: প্রেম-প্রণয়ের সংস্কৃতিটা নোংরামী আর টাইম পাস করার জন্যই আমদানী হয়েছে- লাইফ টাইমের জন্য নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.