নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাদের হাতে দলীল প্রমান কম তারা গালি দেয় বেশী

.

রাতুলবিডি৪

বলার কিছু নাই

রাতুলবিডি৪ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রেইনহোল্ড মেসনারের অক্সিজেন বিহীন এভারেষ্ট আরোহণের কাহিনী : ৩য় পর্ব (অল ফোরটিন এইট থাউজেনডারস থেকে অনুবাদ )

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:২৪



নর্থ ফেস দিয়ে মেসনারের সলো ক্লাইম্বের ঘটনা :



অক্সিজেন বিহীন এভারেষ্ট - এ আরোহণের দুবছর পর, ১৯৮০ সালে আমি প্রথম এভারেষ্ট এ সলো এসেন্ট করি । অর্থাৎ এবার আমি পর্বতের বেস ক্যাম্প থেকে চুড়া পর্যন্ত কারো কোন সাহায্য না নিয়েই আরোহণ করি । পুরা এক্সপিডিশনে বেস ক্যাম্পের উপরে আমার কোন সংগী ছিল না । দ্বিতীয় অভিযানটি প্রথমটিকে সত্য প্রমাণ করার করার জন্য ছিলনা, কিংবা 'পিটার ছাড়াও আমি এভারেষ্ট আরোহনে সক্ষম' এটা প্রমাণ করার জন্যও ছিলনা । শুধুমাত্র "আমি বিশ্বাস করছিলাম যে ১৯৭৮ - এ আমার অর্জন থেকে আরো এক ধাপ আগানো সম্ভব" - এজন্যই ছিল সেটা ।



চীন পর্বত অভিযানের জন্য তিব্বতকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার সাথে সাথেই আমি একটা পারমিটের জন্য আবেদন করলাম । আর তিব্বতের আকর্ষণ আমার কাছে একটা আট হাজারী চুড়া থেকে কোন অংশেই কম ছিল না । আর এছাড়াও এভারেষ্টের নর্থ সাইড আমার কাছে সবচেয়ে বেশী আগ্রহের এবং ঐতিহাসিক ভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা স্হান । অন্য যে কোন অভিযানের তুলনায় ,এই অভিযানটির জন্য আমি বেশী আগ্রহ ও উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষায় ছিলাম ।



আর ভাগ্যই বলতে হবে আমি যখন পারমিট পাই তখন আমি পিকিং - এ । ১৯৮০র জুলাই - এ আমি এভারেষ্ট এর রম্বুক পার্শে থাকব । আর এটাই ছিল ১৯২০ - ৩০ এ একেবারে শুরুর কালের, বৃটিশ অভিযানের জায়গা । যদিও একজন লিয়াজো অফিসার আর দোভাষী নিতে হয়েছিল , নিয়মের কারণে , তবু এই অভিযানে আমার সাথে বন্ধু হিসেবে ছিল একমাত্র নিনা হলগুইন । তাই এ অভিযাত্রী দলের আকার ছিল খুবই ছোট . । তবে ছোট হলেও পয়সা খরচ হয়েছিল এ বারই সবচেয়ে বেশী! খরচ এতটাই বেশী ছিল যে সেটা উঠাবার কোন পথই ছিল না । না বই লিখে - লেকচার দিয়ে না কোন কোম্পানীর সাঠে চুক্তি করে । কিন্তু এরপরও 'এভারেষ্ট সলো' আর 'তিব্বত' এতটাই টাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে আমার মাথায় বিষয়টা গেথে গিয়েছিল , খরচ যাই হোক । আমি যাবই ।



এভারেষ্ট এ পোছে বুঝতে পারলাম - পর্বতে আরোহণ সম্ভব হবে যদি মৌসুমী বায়ু কিছু সময়ের জন্য একটু বিরতি দেয় ,শুধু মাত্র তখনই । তুষার পাতের পরপর গভীর নরম তুষারে ট্রেইল বের করা অসম্ভব ছিল । অথচ তুষার কিছুটা শক্ত হবার মত বিরতিও পাওয়া যাচ্ছিল না । এই বাজে অবস্হার মাঝেই আমি কোন রকম নর্থ কোল পর্যন্ত পৌছাতে পেরেছিলাম , কিন্টু এটাও বুঝলাম যে নতুন নরম টুষার কতটা বিপজ্জ্ঝনক ! বেস ক্যাম্পে নেমে এসে আমি পশ্চম তিব্বতে ঘুরে বেরালাম , অগাষ্ট পর্যন্ত আর কোন চেষ্টাই করলাম না । আবশেষে ভাল আব হাওয়ার কয়েকটা দিন পাওয়া গেলো । কিন্তু এটা বুঝার উপায় ছিলনা এটা কি আসলেই মৌসুমী বায়ুর বিরতি ছিল না সাময়িক বিরতি । আমরা বেস ক্যাম্প থেকে এডভান্ক্স বেস ক্যাম্প পর্যন্ত আগালাম, আর এ পর্যন্ত ইয়াক যেতে পারে । অর্থ্যাৎ এইপথটুকু বোঝা বইবে ইয়াক বা তিব্বতের চামরী গাই ।



আমি নর্থ কোল পর্যন্ত একটা পুশ দিয়ে কিছু লোড ফেরী করলাম । এর পর নিনার সাথে ফিরে আসলাম । এরপর দিন আবার নর্থ কোল হয়ে ৭৮০০ মিটার পরযন্ত চলে গেলাম । আমি জানতাম এভারেষ্ট এ আমাকে দ্রুত ক্লাইম্ব করতে হবে । প্রথম দিনেই আমি অনেকটা পথ পার হয়েছিলাম , কিন্তু এতটা পথ শেষ করতে পারিনি যে দুই দিনে পিকে যেটে পারব ।



পরদিন বুঝতে পারলাম প্রথম থেকে যে রুট টা দেখে যাব বলে পরিকল্পনা করেছি , সেটাতে যাওয়া সম্ভব না । আর মেলোরীর রুটেও যাওয়া সম্ভব না । নর্থ ইষ্ট রীজের নীচে ফাকা জায়গায় গভীর নরম তুষার জমে আছে । আমি ট্রাভার্স করে ডানে গেলাম ( একটা পথ ধরে না গিয়ে - অনেকটা খাড়া দেয়াল ধরে ঝুলে ঝুলে যাওয়া ) আড় এই লাইনটা আমি বেস ক্যাক্প থেকে লক্ষ্য করে এসেছি ।



২য় দিনে আমি পুরা নর্থ ফেস ট্রাভার্স করে গ্রেট নরটন কুলিয়ার - এ পৌছালাম । এটা খুব খাড়া না হলেও বিপজ্জনক। একদম শেষ প্রান্তে চুড়ায় সমান জায়গা জাওয়ার পর্যন্তই বিপজ্জনক । আমার গতি এতো ধীর হয়ে গিয়েছিল যে আমি মরিয়া হয়ে চাচ্ছিলাম কোন রকমে পৌছাতে । শেষ কয়েক মিটার আমি আর পারছিলাম না , হাটু দিয়ে মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে শেষে পৌছালাম । আমি অবিরত যন্ত্রণা ভোগ করছিলাম । জীবনে কোন দিন এত ক্লান্ত মনে হয়নি এভারেষ্টের চুড়ায় উঠা এই দিনটির মত । আমি শুধু বসেই ছিলাম - সব কিছুই অপ্রতিরোধ্য ছিল । তাও আমি বসেই ছিলাম । দীর্ঘ সময় আমি নীচে নামছিলাম না , নামতে চাইছিলাম ও না । শেষে নিজেকে বাধ্য করলাম নামার জন্য . আমি বুঝতে পারছিলাম আমার শারিরিক সামর্থের শেষ বিন্দুতে পৌছে গেছি । এভারেষ্ট - এ আমার সলো ক্লাইম্ব পুরাটাই ঝুকিপূর্ণ ছিল না । তবে ছিল , প্রথম দিন এডভান্স বেস ক্যাম্প ছাড়ার পর, নর্থ কোলের নীচে একটা হিমবাহের খাদে ৮ মিটার গভীরে পরে গিয়েছিলাম । কিছুটা ভাগ্য আর কিছুটা দক্ষতা খাটিয়ে বেরুতে পেরেছিলাম । নামার সময় নর্থ কোল থেকে বেস ক্যাম্প যতটা পথ পায়ে নেমেছি তার চেয়ে বেশী পিছলে পড়েছি । এটা পুরাপুরি বিপজ্জনক ছিল না , কারণ আমি বিড়ালের মত পরছিলাম । ভাগ্যক্রমে হিমবাহের ফাটল আর পাথররের সাথে সংঘর্ষ পাশ কাটাতে পারছিলাম । শেষ পর্যন্ত পর্বতের গোড়ায় পৌছানোর পরই দূর্যোগের পরিসমাপ্তি ঘটল । আমাকে আর পরে যাবার ভয়ে আতংকিত থাকতে হবে না , ঠান্ডায় জমে বা ক্লান্তিতে বসে পরে মারার ভয়ে শংকিত থাকেতে হবে না । সমস্ত ইচ্ছা শক্তি একত্র করে পা ফেলতে হবে না, কুয়াশা ভেংগে আগে বারতে হবে না - শুধু মাত্র নামার পর এই অনুভুতি টুকু পেলাম। । যতক্ষণ -ই বিপদ ছিল আমি চলতে পারছিলাম , উপরে উঠাই হোক আর নীচে নামাি হোক । যখন বিপদ শেষ হয়ে গেল - আমিও তখন শেষ হয়ে গেলাম । আমার সব শক্তি সামর্থ সব নি:শ্বেষ হয়ে গেলো । এভারেষ্টে আমার দ্বিতীয় অভিযানের পর আমি বুঝেছিলাম এটাই আমার সামর্থের শেষ সীমা । আমার অনেক বন্ধ আর আমার মা -ও বলেছিলেন ঝুকিপূর্ণ পর্বতারোহন আর না করতে । এভারেষ্ট - এ সলো ক্লাইম্বের পর আমার কাছে একদম স্বচ্ছ ভাবে পরিষ্কার হয়ে গেলো একই প্রকৃতির অভিযান আমি যে কোন সময় ছোট ছোট পর্বতে চালাতে পারব - আরো দুরূহ বিষয়গুলো চেষ্টা করে ছোট ছোট পর্বতেও খুজে বের করতে পারব নিজেকে, নিজের সীমাকে ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৪

সাজিদ ঢাকা বলেছেন: পুত্তুম পিলাচ +++++++

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৪

রাতুলবিডি৪ বলেছেন: ধন্যবাদ সাজিদ ভাই ...
প্রথম না, একমাত্র !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.