নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাদের হাতে দলীল প্রমান কম তারা গালি দেয় বেশী

.

রাতুলবিডি৪

বলার কিছু নাই

রাতুলবিডি৪ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বান্দরবানে অপহরণ, বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন , সীমান্ত রাজনীতি, আন্তর্জাতিক কুটনীতি আর বর্তমান পরিস্হিতি ।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:০৬

১৯৯৭ -৯৮ সালে বান্দরবান - খাগড়াছড়ি - রাংগামাটি এলাকায় ট্রাভেলার -ট্রেকারদের আনাগোনা নিয়মিত ভাবে শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই হাজার হাজার লোক এসব অঞ্চলে গিয়ে থাকে । পর্যটন ও ট্রেকিং সহ এডভেঞ্চার একটিভির প্রাণ কেন্দ্র এই পার্বত্য অঞ্চল । প্রায় দেড় যুগের ইতিহাসে এই প্রথম কিছুদিন আগে প্রথম বারের মত দুই জন টুরিষ্ট ( মুলত ট্রেকার ) অপহরণ হলেন। ট্রেকিং আর এডভেঞ্চার কমুনিটিতে এটা একটা বড় রকমের বিপর্যয় । খবরে প্রকাশ এই অপহরণ কর্মটি সম্পাদন করে মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী দল এ-এল-পি ( আরাকান লিবারেশন পার্টি ) ।

মায়ানমার বা বার্মার একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী দল এ-এল-পি ( আরাকান লিবারেশন পার্টি ) । বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন বিভিন্ন দেশেই থাকে । মায়ানমারেও আছে । এরা মুলত বাংলাদেশ ও ভারতে ঘটি স্হাপন করে মায়ানমারে যুদ্ধ বিগ্রহ করে থাকে । প্রায় সব বিচ্ছিন্নতাবাদীরাইও সাধারণত একটা দেশে হোষ্ট হিসেবে থাকে আর আরেকটা দেশে অপারেশণ চালায় । হোষ্ট দেশ - বা ঘাটি স্হাপনকারী দেশে সাধারণত এরা কোন গোলযোগ সৃষ্টি করে না । সে দেশ তাদের আশ্রয় । সেখানে একটা নিরাপদ আশ্রয় তারা হারাতে চায় না ।

এর সাথে সাধারণত যোগ হয় সীমান্ত রাজনীতি । ক্ষমতাশীল প্রতিটি দেশই দেখা যায় প্রতিদন্দ্বী কোন দেশের সাথে ক্ষমতার দন্দবে লিপ্ত । আর এই দন্দ্বের ফলশ্রুতিতে তারা প্রতিদন্দ্বী দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে বেশ স্বত:স্ফুর্ত ভাবে সহায়তা করে থাকে । পাকিস্তান আমলে কেওক্রাডং-এর অতি কাছের পাহাড় কপিতালে মিজো আর্মির ক্যাম্প ছিল । কথিত আছে এটা মিজো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ড়াজধানী বা ক্যাপিটেল ছিল । আর এই ক্যাপিটেল থেকেই কপিতাল হিল নামকরণ । অন্য দিকে মদক এর দক্ষিণে সাংগুর উৎসমুখের কাছে " সাংগু রিজার্ভ ফরেষ্ট " এ কিছু দিন আগেই স্হায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত এ এল পি ক্যাম্প ছিল । সীমান্ত রাজনীতির অংশ হিসেবে এসব দল কখনই আশ্রিত দেশে কোন রকম বিশৃংখলা করে থাকে না ।

তবে আন্তর্জাতিক কূটনীতির হিসাব নিকাশ বড় জটিল । সিরিয়ায় 'আই এস তৈরী ও পালন' কর্মটি সম্পাদন করে খোদ পশ্চিম -ই এখন আই এস নিধনে সোচ্চার । শ্রীলংকাতে তামিল বিদ্রোহীদের অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দেবার পর খোদ ভারত -ই তামিলদের ঠান্ডা করতে সামরিক অভিযান চালায় । শন্তি বাহীনি লালন পালন করে ভারতই একসময় বাধ্য করে শান্তি চুক্তি সম্পাদন করতে । সুতরাং পক্ষ কখন বিপক্ষ হয়ে যায় , বিপক্ষ কখন বন্ধু হয়ে যায় , আর পরিক্ষিত বন্ধও কখন শত্রু হয়ে যায় তার হিসাব নিকাশ বড় জটিল ! যাই হোক বাংলাদেশের সাথে আপাত বন্ধু ভাবাপন্ন এ-এল-পি কেন কি কারণে বৈরী হয়ে গেল সেটার ভিতরের খবর কিছু আন্দাজ - অনুমান ছাড়া কোন বস্তুনিষ্ট তথ্য প্রমাণ এ পর্যায়ে আমাদের পক্ষে বের করার কোন সুজোগ নেই । তবে বৈরীতার ঘটনা প্রবাহের একটা তথ্যপঞ্জি সেটা ভালভাবেই উপস্হাপণ করা সম্ভব।

এ- এল- পি আর বাংলাদেশের মাঝে একটা অলিখিত চুক্তির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ অবস্হা বিরাজ করছিল । এ-এল-পি তাদের অপারেশণ চালায় মায়ানমারে , চুপচাপ থাকে বাংলাদেশে । মিজোতে বর্তমানে তাদের মূল ঘাটি হলেও যাতায়াতের পথ বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন 'পাড়া' বা উপজাতিয়দের গ্রাম গুলো । তারা বাজার-সদাই কেনা কাটা করে আমাদের দেশের রুমা - থানচি বা আলীকদমের মত বড় বড় বাজারগুলোতে । তাদের রিক্রুমেন্টের একটা অংশ-ও হয়ে থাকে বাংলাদেশ থেকে । ২০১৪'র জানুয়ারীতে রেমাক্রির পারে দেখা হয়েছিল এই এ -এল-পি 'র সাথে । সাথে ছিল স্হানীয় সুবীর ত্রিপুরা । সুবীর পরবর্তিতে আমাকে জানিয়েছিল সে নিজেও অফার পেয়েছে পার্টি (এ -এল-পি) তে যোগ দেবার । সে চিন্তায় ছিল পার্টিতে যোগ দিবে না মিশণারীতে যোগ দিয়ে পরবর্তিতে ফাদার হবে । তার এক মামা ফাদার হওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে শ্রীলংকা গেছে । তবে ফাদার হলে বিয়ে শাদী করা যায় না , এটা নিয়েও সে কিছুটা চিন্টা ভাবনা তখন দেখেছিলাম। যাই হোক ফাদার হওয়া বা পার্টিটে যোগ দেওয়া দুটাই তার কাছে এক রকম ক্যারিয়ার প্ল্যান -ই মনে হয়েছিল আমার কাছে!

কয়েক বছর আগে এ- এল -পি মদক বাজারে মদকের হেডম্যানকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে । দলিয়ান পাড়ার হেডম্যানকে ২০১৪'র অক্টোবরে আমি প্রশ্ন করেছিলাম : হত্যার কারণ কি ? জানতে চাইলে দলিয়ানের হেডম্যান বলেন এ - এল -পি মদকের হেডম্যানের মাধ্যমে অস্ত্র বিক্রি করত। এই টাকা ঠিকমত দেয়নি এ-এল-পি কে । পরবর্তিতে সেই টাকা উদ্ধার করতে এ-এল-পি আবারও অস্ত্র দেয় বিক্রির জন্য । কথা ছিল এবার অস্ত্র বিক্রি করে এ-এল-পি কে তার অংশ বাড়িয়ে দিতে হবে। আর এভাবেই আগের টাকার অংশ বুঝে পাবে এ -এল-পি । দলিয়ানের হেডম্যান জানান সেই টাকাও মদক হেডম্যান দেয়নি এ-এল-পি কে । আর তার ফলশ্রুতিতে হেডম্যানকে প্রকাশ্য দিনের আলোয় বাজারে হত্যা করে এ -এল-পি। এই হত্যা কান্ডের পর এ - এল-পি ক্যাম্প সাংগু রিজার্ভ থেকে সরিয়ে রাংগামাটির বিলাইছড়ি ভারত সীমান্তে নিয়ে যায় । মুলত ভারতের মিজোরামে এ-এল-পির হেড -কোয়ার্টার তৈরী হয় ।


( আগামী পর্বে বাকীটা .... )

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.