নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা বলি..... বর্তমানের- কথা বলি ভবিষ্যতের.......

মাই নেম ইজ রেজাউল ইসলাম। এন্ড আই অ্যাম নট এ রাজাকার !!!

মোঃ রেজাউল ইসলাম

আমি নতুন সর্বদা----

মোঃ রেজাউল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কি হচ্ছে পাকিস্তানে ? গণঅভ্যুত্থান না উর্দি পরা শাসকের পুনঃআবির্ভাব ??

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৩১

পাকিস্তানের ৬৭ বছরের ইতিহাসে ৩২ বছরই সরাসরি শাসন করেছে সেনাবাহিনী। আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউল হক ছাড়াও এই তালিকার সর্বশেষ শাসক হচ্ছেন পারভেজ মোশারফ। ক্ষমতা দখল করলে কিছুই হয় না- বিশ্বের কাছে যেন এ উদাহরণ তৈরি করছিল পাকিস্তান। তবে চলতি মেয়াদে ক্ষমতায় এসে নওয়াজ শরীফ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের দায়ে কাঠগড়ায় তুলেছেন পারভেজ মোশারফকে। ধারণা করা হয়েছিলো এবার বুঝি ছেদ পড়ল সেই সেনাশাসনের ধারাবাহিকতায়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই আশাও যেনো নিভু নিভু।



১৯৯৯ সালে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে নওয়াজকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন পারভেজ মোশারফ। ২০০১ সালে ক্ষমতায় থেকে দল করে নির্বাচন দেন পারভেজ মোশারফ। কারচুপির সেই নির্বাচনে জিতেও আসেন তিনি। মোশারফের আধা সামরিক সরকার ক্ষমতায় থাকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত।



২০০৭ সালের ২৮ নভেম্বর চিফ অব আর্মি স্টাফের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং তারই উত্তরসূরি জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। পরে নির্বাচনে ক্ষমতায় ফেরে পাকিস্তান পিপলস পার্টি-পিপিপি। পিপিপি তার নির্ধারিত সময় কোন মতে পার করলেও বার বার সংবাদের শীরোনা হয় সেনাবাহিনী। ২০১৩ সালের নির্বাচনে পিপিপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগ।



প্রায় দেড় বছর মোটামুটি শান্তই ছিলো পাকিস্তানের পরিস্থিতি। নির্বাচনের পর থেকেই নওয়াজ সরকারের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ আনলে, তা তেমন যুতসই ছিলো না। সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এবং ধর্মীয় নেতা তাহিরুল কাদরির পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক (পিএটি)।

পাকিস্তানে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা সরকারবিরোধী কর্মসূচিকে ঘিরে পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সংকট সমাধানে সব পক্ষকে আলোচনায় বসার জন্য চাপ দিচ্ছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। এদিকে নওয়াজ শরিফ পদত্যাগ না করলে তার বাসভবন দখলের হুমকি দিয়েছেন ইমরান খান। ২০১৩ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত দেশটির সাধারণ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে তা বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ইমরান খান।



নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের দাবিতে ইমরান খানের ‘আজাদি মার্চ’ আর তাহির উল-কাদরির ‘ইনকিলাব মার্চের’ কারণে পাকিস্তানে গভীর রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পরামেের্শর জন্য সেনাপ্রধান জেনারেল রাহেল শরিফের কাছে দূত পর্যন্ত পাঠান প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ। সরকারের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রে জানা যায়, নওয়াজের দূতেরা সুসংবাদ ও দুঃসংবাদ দুই এনেছেন।

সুসংবাদ হলো, সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানো হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। আর দুঃসংবাদ হলো, ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইলে তাঁকে সামরিক বাহিনীর জন্য ছাড় দিতে হবে।

সামরিক বাহিনীর জন্য ‘কিছু ছাড় দেওয়ার’ মানে হলো, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, নিরাপত্তা ও কৌশলগত নীতিতে জেনারেলদের কর্তৃত্ব বেড়ে যাওয়া। যার অর্থ দাঁড়ায়, আবারও চালকের আসনে আসীন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী।



ইমরান খানের নেতৃত্বে তাঁর দল পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীরা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে পাঞ্জাবের লাহোর থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে ‘আজাদি মার্চ’ শুরু করে ১৪ আগস্ট। ১৫ আগস্ট তাঁদের গাড়িবহর গুজরানওয়ালা শহরে পৌঁছালে সেখানে ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান মুসলিম লিগের (পিএমএল-এন) নেতা-কর্মীরা আজাদি মার্চে জুতা ও ইটপাটকেল ছুড়ে মারেন।

সরকারের সমর্থকেরা এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইমরান খানের মুখপাত্র আনিলা খান জানান, হামলায় ইমরান খান আহত হননি। তবে তার গাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব দেখেও পুলিশ নিশ্চুপ ছিলো।



ইমরানের অভিযোগ, তাঁর গাড়িবহর লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, কোনো গুলির ঘটনা ঘটেনি।

ইমরান খান বলেন, ‘জাতির সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমি এখানে অবস্থান করব। কারচুপি করে ক্ষমতায় বসা প্রধানমন্ত্রীকে আমরা মেনে নেব না।’

প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ইমরান খানের সঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচির শুরু থেকেই বৈঠক করার ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছেন। তবে আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই। তারা নওয়াজের পদত্যাগ ছাড়া অন্যকিছু ভাবছে না। এদিকে, রাজধানীর রেড জোনে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগে ইমরান খান ও তাহিরুল কাদরিকে নোটিশ দিয়েছেন আদালত।

পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী খাজা সাদ রফিক জানান, চলমান অচলাবস্থা নিরসনে পিটিআই প্রধান ইমরান খানের সঙ্গে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। দেশের স্বার্থে নওয়াজ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে কবে এ বৈঠক হবে তা জানাননি তিনি। বৈঠকে নওয়াজ গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ব্যালটগুলো ফের গণনার প্রস্তাব দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফকে বিচারের মুখোমুখি করা, তালেবানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তহীনতা, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের নীতিসহ কয়েকটি কারণে নওয়াজের ওপর নাখোশ পাকিস্তানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা। বিষয়টি নওয়াজও জানেন। আর এ কারণেই তাঁর ভয়, চলমান রাজনৈতিক সংকটকে পুঁজি করে আবারো দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে যেতে পারে।



পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ এবং একটি বাদে সব কটি প্রাদেশিক পরিষদের আসন থেকে ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।

পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, ‘জাতীয় পরিষদ এবং পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান ও সিন্ধু প্রাদেশিক পরিষদ থেকে আমরা পদত্যাগ করেছি।’ খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের ক্ষমতায় রয়েছে পিটিআইয়ের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার।



অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, আজ থেকে অবৈধ এই সরকারকে কোনো ধরনের কর দেব না। বিদ্যুৎ বিল দেব না, গ্যাস বিল দেব না। ব্যবসায়ীদের প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা কর দেওয়া বন্ধ করুন।’



ইমরানের বক্তৃতার পর খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী মুশতাক গনি বলেন, তাঁদের প্রদেশ থেকে গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে কোনো ধরনের কর দেওয়া হবে না। এ জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এই সেবাগুলো বন্ধ করে দিলে টারবেলা কেন্দ্র থেকে পাঞ্জাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইনও বন্ধ করে দেওয়া হবে।



১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে উপমহাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ থেকে এখন পর্যন্ত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পরিচয় পায়নি পাকিস্তান। বারবার সামরিক শাসনের কারণে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া কখনও শক্তিশালী হয়নি দেশটিতে।



পাকিস্তানের জন্ম আর সামরিক শাসন যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জন্মের পর থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত লিয়াকত আলী খান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ চালান। তখনও দেশ পায়নি সংবিধান। আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল’ দিয়ে দেশ চালান ১০ বছর। পরে আন্দোলনের মুখে হটে যেতে বাধ্য হলেও রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব তিনি দিয়ে যান আরেক সেনাপ্রধান ইয়াহিয়া খানের হাতে। ১৯৭০ সালের নির্বাচন হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা দিতে রাজি না হওয়ার ফলশ্রুতিতে হয় যুদ্ধ এবং নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আত্মপ্রকাশ ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের।

দেশের একটি অংশকে হারানোর পরও হুঁশ হয়নি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর। ১৯৭৭ সালে আবার হয় সামরিক অভ্যুত্থান। জিয়াউল হক ক্ষমতায় এসে ফাঁসিতে ঝোলান প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোকে। ১৯৮৮ সালে বিমান দুর্ঘটনায় জিয়াউল হক মারা যাওয়ার পর অবসান হয় সামরিক শাসনের।



এরপর নির্বাচনে ক্ষমতায় আসেন ভুট্টোর মেয়ে বেনজির ভুট্টো। পরে আসেন মুসলিম লিগ নেতা নওয়াজ শরিফ। কিন্তু ভারতের সঙ্গে কারগিল যুদ্ধের এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাত করে ক্ষমতা নেন সেনাপ্রধান পারভেজ মোশারফ। এরপরে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন পিপিপি এবং সর্বশেষ পিপিপিকে পরাজিত করে ক্ষমতায় আসেন নওয়াজ শরীফ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:১৭

দূর আকাশের নীল তারা বলেছেন: ফাকিস্তানকে নিয়ে এত মাথা ব্যথা কেন? খুব বেশী মাথা ব্যথা হলে ফাকিস্তানে চলে যান। বাংলাদেশে বসে আছেন কেন?

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:২১

মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেছেন: কি অদ্ভুত এক মানুষ আপনি- 'দূর আকাশের নীল তারা' !!!

দেশ কি আপনি নগদ পয়সায় খরিদ করেছেন ?? যাকে খুশি এসব বলার অধিকার কে দিয়েছে আপনাকে?

এমন অশালীন ভাবনা যদি বিশেষ কোন 'চেতনা' থেকে উৎসারিত হয়, তবে সেই চেতনার দন্ডও নিম্নমুখী, নিম্নগামী !!

২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৫২

সরদার হারুন বলেছেন: নিজের দেশের খবর নেয়ার সময় নেই, আবার পাকিস্তান ?

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:২৯

মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেছেন: হুম। পাকিস্তান। কারন, পাকিস্তানের ঘটনার প্রভাব শুধুমাত্র সেই দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে না।

সেটা দক্ষিন এশিয়া থেকে শুরু করে মার্কিন মুল্লুক পর্যন্ত প্রভাব ফেলে। পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা বা ভারত- এসব দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন, শক্তির উত্থান পতন এসব থেকে আমার দেশও মুক্ত নয়।

এমনকি, আরব বসন্তের প্রভাব থেকেও কি আমি আপনি মুক্ত?
বিশ্বায়নের এই যুগে কেউই isolated না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.