নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা বলি..... বর্তমানের- কথা বলি ভবিষ্যতের.......

মাই নেম ইজ রেজাউল ইসলাম। এন্ড আই অ্যাম নট এ রাজাকার !!!

মোঃ রেজাউল ইসলাম

আমি নতুন সর্বদা----

মোঃ রেজাউল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাকিস্তানের গোপন লজ্জা: যৌনকাজে ব্যবহার হচ্ছে ছেলেশিশুরা

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২১

জঙ্গিবাদের আখড়া পাকিস্তানে যৌননির্যাতন ও যৌনঅপব্যবহার থেমে নেই। বরং ছেলেশিশুরাই এখন যৌন নির্যাতন ও অপব্যবহারের শিকার হচ্ছে। এখানকার পুরুষেরা তাদের যৌন ক্ষুধা মেটাতে হরহামেশাই এসব ছেলেশিশুদেরেকে ব্যবহার করছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী পাকিস্তানের প্রতি ১০জন ছেলেশিশুর ৯ জনই এ যৌন অপব্যবহারের শিকার হচ্ছে। এমনকি এই শিশুদের বাবা মায়েরাও তাদের সন্তানদের এমন যৌনঅপব্যবহার নিয়ে অসচেতন।

সম্প্রতি ‘পাকিস্তান’স হিডেন শেইম’ নামের এক তথ্যচিত্রে পাকিস্তানের এই ভয়াবহ চিত্রের কথা তুলে ধরা হয়। তথ্যচিত্রটির পরিচালক মোহাম্মদ নকিবের কথায় উঠে আসে এই তথ্যচিত্রটির মুলবক্তব্য। তার ভাষ্য নতুনদিনের পাঠকদের জন্য ভাষান্তরিত করে তুলে ধরা হলো:

পাকিস্তানের বিপদজনক শহর পেশোয়ারের রাস্তার এক দক্ষ ছেলে নাইম। বয়স তেরো বছর। আট বছর বয়স থেকেই সে যৌন কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। আর নয় বছর বয়স থেকেই হয়ে উঠেছে একজন মাদকসেবী। প্রথমবারের মত নাইম তার দেহ বিক্রি করেছিল যখন তার ভাই তাকে কিছু উপার্জন করে আনার জন্য বাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। এবং বলেছিল যেকোনো উপায়েই তাকে উপার্জন করে আনতে হবে। ‘আমি তিন দিন বাসায় ছিলাম না। এবং ঐ সময়ই রাস্তার পাশের পার্কের এক লোকের সাথে আমি দেহ ব্যবসার কাজটি করেছিলাম’ বলেন নাইম।

এরপর মোহাম্মদ নকিব এভাবেই তার তথ্যচিত্র তৈরীর অভিজ্ঞতা বর্ননা করেন। তিনি বলেন, এরপর আমরা তথ্যচিত্র তৈরীর কাজ শেষ করি এবং নাইমকে ধন্যবাদ জানাই আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য। কারন তথ্যচিত্রে নাইম-ই ছিল শেষ স্বাক্ষাৎকারদাতা। সুতরাং তখনই আমরা সিনেমা তৈরীর কাজ গুটিয়ে ফেলি। তারপর কাজ শেষে আমি যখন গাড়িতে উঠি ঠিক তখনই আমি অভিভূত হয়ে গিয়েছি আর অসুস্থবোধ করতে শুরু করেছি। যদিও এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা তারপরও গত কয়েক সপ্তাহে তথ্যচিত্র তৈরীর যে টুকরো টুকরো অভিজ্ঞতা সেটা আমাকে আবেগপ্রবণ করে তুলেছে।

তথ্যচিত্র তৈরীর কাজে নাইম ছাড়াও আমি তার বয়সী আরো কিছু রাস্তার শিশুর স্বাক্ষাৎকার দৃশ্যায়ন করেছি। যারা নাইমের মতই যৌন অপব্যবহারের শিকার হচ্ছে। আমি কিছু যৌন অপব্যবহারকারীর সাথেও সাক্ষাৎ করেছি। তাদের মধ্যে একজন হলো এক মাদক ব্যবসায়ী যিনি শিশুদেরকে যৌন কাজের বিনিময়ে মাদক দেন।

আরেকজনের সাথে কথা বলেছি যিনি একজন বাসের সহকারী এবং এখন পর্যন্ত ১১ জন ছেলেকে ধর্ষণ করেছেন। আমি এখনও ঐ বাসের সহকারীর কথাগুলো স্পষ্ট মনে করতে পারি। বাসের সহকারী ২০ বছর বয়সী এজাজ বলছিল, আপনি একজন নারীর সাথে মুক্তভাবে ঘুরাফেরা করতে পারবেন না। মানুষ আপনার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে। আপনাকে অনেক ধৈর্য্য ধরতে হবে। কিন্তু একটা ছেলের সাথে যেভাবে খুশি সেভাবেই ঘুরে বেড়াতে পারবেন। কেউ কিছু সন্দেহ করবে না।

এজাজ পেশোয়ারের নিষ্ঠুর মানুষের বিকৃত মনের বর্ণনা দিয়ে বলছেন, এখানে নারীর প্রতি শ্রদ্ধা মানেই ঘরে বন্দী রাখাকে বোঝায়। তারা মনে করে, নারী হচ্ছে ঘরে রাখার জিনিস। আপনি তাকে বাইরে আনতে পারবেন না। বাইরে আনলেই এখানকার মানুষ আপনার সম্মান নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। এজাজের দৃঢ় কথাগুলো শুনে তাকে নারীবিদ্বেষী বলেই মনে হচ্ছিল। তার কথাগুলো শুনে মনে হচ্ছিল নারীরা ঘরের ভিতর সীমাবদ্ধ থাকতে বাধ্য। হুমকি দেওয়া সত্ত্বেও নারীরা যদি ঘরের বাইরে যায় তবে তার পরিবারের সম্মান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এজাজের মত মানুষেরা মনে করে, নারীরা যদি কোথাও বের না হয়ে যৌন সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে, তবেই তারা বিয়ে পর্যন্ত সতী থাকতে পারবে। যেহেতু নারীদের সাথে যৌন বিচ্ছিন্নতা গভীর যৌন হতাশা তৈরী করে। তাই এজাজের মতো লোকেরা এসব ছেলেশিশুদেরকে যৌন কাজে অপব্যবহার করে হতাশা থেকে মুক্তি পায়।

এদিকে এজাজ প্রথমদিকে আমাদের সাথে অকপটেই ছেলেশিশুদের যৌন অপব্যবহারের কথা শিকার করলেও পরবর্তীতে তিনিই তার দেয়া সাক্ষাৎকার ফুটেজ ফেরত দিতে বলেন। তা না হলে আমাদেরকে মেরে ফেলারও হুমকি দেন তিনি। এ অবস্থায় আমরা মধ্যরাতেই পেশোয়ার থেকে করাচিতে পালিয়ে আসি।

এরপর তথ্যচিত্র নিয়ে কাজ শেষ করার পর পাকিস্তানে ছেলেশিশুদের যৌন অপব্যবহারের একটা পরিসংখ্যান পাওয়া যায়। তবে, পেশোয়ারে এরকম যৌন অপব্যবহারের শিকার হওয়া শিশুদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা অত্যন্ত কঠিন। এরপরও পাকিস্তানের গবেষকরা বলছেন পাকিস্তানের পথশিশুদের প্রতি দশজনে নয় জনই এরকম যৌন অপব্যবহারের শিকার হয়। এমনকি পাকিস্তানের প্রধান শহর করাচি কিংবা ইসলামাবাদেও একই পরিস্থিতি।

পাকিস্তানে বেড়ে ওঠা এই আমি, এটাই প্রথম শিশুদের যৌন কাজে ব্যবহারের কথা শুনিনি। আরো অনেকবারই শিশুদের ভয়ানক যৌন অপব্যবহারের কথা আমি শুনেছি। এর আগে আমার তৈরী ‘শেম’ তথ্যচিত্রটিতেও গণধর্ষণের শিকার নারীনেত্রী মুখতারান মাইকে নিয়ে কাজ করেছি। ওটা বানাতে আমার চার বছর সময় লেগেছিল।

আমার বর্তমান তথ্যচিত্রের প্রযোজক জেমি ডোরান শিশুদের যৌন অপরাধ নিয়ে আরও একটি কাজ শুরুর আলাপ দিলে আমি শঙ্কিত বোধ করি। কারন এই কাজগুলো একজনক তথ্যচিত্র নির্মাতা হিসেবে নিজের মধ্যে আবেগীয় কুপ্রভাব তৈরী করে। কিন্তু তারপরও জেমি ডোরানের আফগানিস্তানের শিশুদের যৌনদাসত্ব নিয়ে তৈরী ‘ডান্সিং বয়েজ অব আফগানিস্তান’ তথ্যচিত্রটি আমাকে এই তথ্যচিত্রটি তৈরীতে উৎসাহিত করে। কারন এটি দেখে আফগান সরকার অপরাধীদের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নিয়েছিল। তাই আমি আমার দেশের শিশুদের মুক্তির কথা বিবেচনা করে এই তথ্যচিত্রটি তৈরিতে হাত দিই।

এছাড়াও দেখা গেছে পেশোয়ারের বাবা মায়েরাও তাদের সন্তানদের যৌন অপব্যবহার নিয়ে উদাসীন। দেখা যায় এখানকার ছেলেরা রাস্তায় থাকতেই পছন্দ করে। এদেরই একজন সাত বছরের ছেলে বিলাল। আমরা তথ্যচিত্রে তারও সাক্ষাতকার নিয়েছিলাম। একসময় সে বলেছিল মানুষজন আমাকে ভয় দেখায়। তার এই কথাটি এখনো আমার কানে বাজে।





উৎসঃ নতুনদিন

Click This Link

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৭

ক্ষ্যাপা দয়াল দাস বলেছেন: ভালো লিখেছেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.