নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবী একবার পায় তারে !!!

২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ২:৪৩

আমার জন্মদিনে যারা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। অভিজ্ঞতা যত কঠিনই হোক তা জীবনের অংশ। আমি সেই কঠিনকেই ভালোবাসিলাম।

টাইম অ্যান্ড টাইড ওয়েটস ফর নান। মন এবং জানালা কোনোটাই বন্ধ করে রাখার কোনো মানে নেই। মানুষের স্বল্পায়ু জীবনে এটা যত বেশি খুলে রাখা যায়, তত বেশি তার দৈর্ঘ্য। মানুষের জীবনটাই এমন। এক জীবনের ছোট্ট ঝুলিতে অনেক অভিজ্ঞতা জমা হয়। যার কোনোটা ভারী মধুর কোনোটা ভারী তিক্ত। কোনো একটি একক অভিজ্ঞতা দিয়ে জীবন পার করে দেবার সুযোগ নেই। পৃথিবী একবার পায় তারে। অথচ সেই একবারের বাবুই পাখির জীবনে কত ঘটনা কতভাবে যে যুক্ত হয়। মানুষ আসলে এই পৃথিবীতে কিছুদিনের জন্য এক অদ্ভুত অনিশ্চিত পর্যটক। অন্য কারো জীবনের দায় কাউকে আটকাতে পারে না। যদি না সে কোনো চরম অপরাধ না করে। অথবা অন্য কারো জীবনের হননকারী না হয়। যদি না সে হত্যাকারী না হয়। তাহলে যার যার জীবনের সকল দায় তার তার। আর মানুষ সেই দায় জেনেই সামনে এগিয়ে যায়। কারো জন্য এখানে বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই।

মানুষের জীবন বড় বিচিত্র ঘটনায় ভরপুর। সেখানে আনন্দ আছে, বেদনা আছে। হাসি-ঠাট্টা-মস্করা আছে। দুঃখ-কষ্ট আছে। সুখ তামাশা তিরস্কার আছে। সুখানুভূতি আছে। আর আছে ভালো লাগা মন্দ লাগা নানান কিসিমের গল্প। মানুষের গোটা জীবন আসলে একটা ছোটগল্পের ব্যবচ্ছেদের মত। সেখানে নিশ্চিত আর অনিশ্চিতের এক দোলনা খেলা করে সারাটা জীবন। এই ভালো তো এই খারাপ। মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ দুপিঠ মিলেই মানুষের জীবন। জোয়ার ভাটার প্রবাহের মত এক চলমান টাট্টু ঘোড়া।

কিছু প্রশ্নের কোনো ন্যায্য জবাব নেই। কিছু বিষয়ে আছে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক খামখেয়ালীপনা। যার সমাধান অন্য কেউ দিতে পারে না। নিজেকেই খুঁজে নিতে হয় সেই নিরুত্তর সাঁঝের বেলার রঙ। নির্বিকার আকাশের গায়ে সেই জবাব স্পষ্ট লেখা থাকে। কারো অন্তরজগতের বিভ্রাট হলে সেই রঙ অনুবাদ করা যায় না। সেই দুর্মেদ কঠিন ভাষার কোনো বিকল্প অনুবাদক দিয়েও কাজটি হবার নয়। যা কেবল নিজের চোখেই অনুবাদ করে বুঝে নেবার সময়।

সময় এক সবুজ ডাইনি। পৃথিবীর চরাচরে সে ঘটনার সাক্ষি হবার জন্য ডানামেলে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়। পৃথিবীর শরীরে যখনই অসুখ হয়, সেই রোগের নিরাময় তখন পাতা ঝড়ার মত উড়ে উড়ে পাতা উল্টায়। কোথাও যার কোনো যথার্থ ব্যবস্থাপত্র নেই। সত্যি সেই অসুখের কোনো প্রেসক্রিপসশান নেই।

মানুষকে সামাজিক জীব বলা হলেও মানুষ আসলে এক নিঃসঙ্গ প্রাণী। এক মানুষের অন্তর্জগতের খবর অন্য মানুষ পুরোটা টের পায় না। টের পায়না বলেই মানুষে মানুষে অনেক অন্তরলোকের দূরত্ব। সেই দূরত্ব মাপারও কোনো যথার্থ বাটখারা নেই। সমাজবিজ্ঞানীরা যতোই নানান ধরনের অনুজ্ঞা জাহির করুক না কেন, একজনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে অন্য মানুষের বাহ্যিক অনেক সাদৃশ্য চোখে পড়লেও সেই সাদৃশ্যের মধ্যে যোজন যোজন দূরত্ব আছে। হাজার হাজার সময় পরমানু সেখানে ভিন্ন সাক্ষ্য দেবে, এটাই স্বাভাবিক।

প্রত্যেকের জীবন তার ইচ্ছের মতন স্বাচ্ছন্দে কাটুক আমরা কেবল এটুকু সুন্দর প্রত্যাশা করতে পারি। মানুষ নিজেই তার জীবনকে এক সময় টেনে নিয়ে যায় মহাশশ্বানের সিঁড়িঘরে। তারপর সে কেবল অন্য মানুষের কাছে গল্প হয়ে কিছু সময় টিকে থাকে। মহাকালের বিচারে সেই গল্পেরও কোনো নিরবিচ্ছিন্ন উপস্থিতি থাকার কথা নয়। কালের অথৈ গভীরে এককালের মানুষের গল্প হারিয়ে যায়। সেখানে আবার কয়েক শো বছর পরের মানুষের নতুন গল্প উড়ে বেড়ায়। ঘুরে বেড়ায়। আমরা আসলে পৃথিবীতে একটা গল্প রেখে তারপর সবাই দূর মহাশূন্যে কেবলই হাওয়া হয়ে যাই। এটাই অবধারিত নিয়তি।

মানুষের সব স্মৃতিও একসময় বয়সের সাথে সাথে বিস্মৃতিতে পরিনত হয়। স্মৃতি আর বিস্মৃতি একই মস্তিক্সে বাস করে। তারা একই পাড়ায় খায়দায়, খেলাধুলা করে। একই বাড়িতে তাদের জন্য জীবন জুয়ার আসর বসে। জুয়ার দান শেষে যে যার ভাগ ঠিকঠাক বুঝে নেয়। মানুষের জীবন তাই জুয়া খেলার মত। সেখানে হার-জিত দুটোই গলা ধরাধরি করে সকাল সন্ধ্যা পাশাপাশি হাঁটে। পাশাপাশি একই বিষয় নিয়েই তাদের সকল দেন দরবার। সেই কারবারিতে যে কোন পক্ষ বিজয়ী হবে আগে থেকে সিদ্ধান্ত দেওয়ার কিছু নেই।

তবু মনে রেখো যদি দূরে যাই চলে ।
যদি পুরাতন প্রেম ঢাকা পড়ে যায় নবপ্রেমজালে ।
যদি থাকি কাছাকাছি,
দেখিতে না পাও ছায়ার মতন আছি না আছি–
তবু মনে রেখো
যদি জল আসে আঁখিপাতে,
এক দিন যদি খেলা থেমে যায় মধুরাতে,
তবু মনে রেখো ।
এক দিন যদি বাধা পড়ে কাজে শারদ প্রাতে– মনে রেখো ॥
যদি পড়িয়া মনে
ছলোছলো জল নাই দেখা দেয় নয়নকোণে–
তবু মনে রেখো ॥


.......................................
রেজা ঘটক
৮ বৈশাখ ১৪২২
২১ এপ্রিল ২০১৫
ঢাকা


মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৫৩

সুফিয়া বলেছেন: সময় এক সবুজ ডাইনি। পৃথিবীর চরাচরে সে ঘটনার সাক্ষি হবার জন্য ডানামেলে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়। পৃথিবীর শরীরে যখনই অসুখ হয়, সেই রোগের নিরাময় তখন পাতা ঝড়ার মত উড়ে উড়ে পাতা উল্টায়। কোথাও যার কোনো যথার্থ ব্যবস্থাপত্র নেই। সত্যি সেই অসুখের কোনো প্রেসক্রিপসশান নেই।


লাইনগুলো খুব ভাল লেগেছে। সর্বোপরি লেখাটা সুপাঠ্য হয়েছে।

ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৪০

ময়না বঙ্গাল বলেছেন: ওদের সাথে মেলা্ও
যারা ছরায় তোমার ধেনু

৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:১৫

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: ঝরঝরে লিখা, প্রতিটি বাক্য সুখপাঠ্য ---
ভাল লাগাটুকু রেখো গেলাম

৪| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:৫১

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: শুভেচ্ছা ভাইয়া

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.