নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার যত কথা' মনের কথা-রফিকুল কাদের

সব ভাল কথাই ভাল নয়...........

কে এম রফিকুল কাদের

আমি দিক্ষণা বাতায়ন খুলে রাখি, বাধ ভাঙা মুক্ত বাতাসের অনুপ্রেবেশ ............

কে এম রফিকুল কাদের › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রগ্রেসিভ মুভমেন্ট-কে সময়ের হাতে তুলে দিতে হবে

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১১

সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নের প্রকৃত ধারাকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর উদ্যোগ আজ সংকটাপন্ন। প্রচলিত রাজনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমগুলো আমাদের যেভাবে স্বপ্ন দেখাচ্ছে সেভাবে বাস্তবমুখী কার্যক্রমের অভাবে জনগণের মধ্যে দেশের শিক্ষিত, প্রজ্ঞাবান ও প্রগতিশীল মানুষেরা আস্থাহীন হয়ে পড়ছে। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি কিছুটা হ্রাস পেলেও প্রশান্তি পাওয়ার কিছু নেই। যখন দেখি নতুন নতুন সন্ত্রাস আর বিশ্বজিতের মতো নিরীহ মানুষের নৃংশস হত্যা এবং একইসাথে গুম, অপহরণ আর ক্রসফায়ারের সুকৌশলী প্রয়োগ তখন প্রচলিত রাজনীতি ক্ষমতাসীনদের প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠে, যখন সাধারণ মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে তখন রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়েই কী এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ডাল পালা মেলে বেড়ে উঠছে না?



প্রসঙ্গত বলা যায়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর জনকল্যাণমুখী ভূমিকা কতটা দেশের জনমানুষের কাছে স্পষ্ট। আর রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে যে দুর্নীতি হচ্ছে তারও খতিয়ান রয়েছে জনগণের কাছে। তথাকথিত রাজনীতি আর প্রতিনিধিত্বের বেড়াজালে আটকে জনগণের নাভিশ্বাস উঠছে। সময়ের সাথে তাদের আশা- আকাঙ্খা পদপিষ্ঠ হচ্ছে। রাজনীতি, নির্বাচন আর শাসনের নামে অস্থিরতা এবং দুর্নীতি ক্রমে সাধারণ মানুষের শঙ্কায় ফেলে দিচ্ছে। সর্বোপরি দ্বি-দলীয় বৃত্তের বাইরে তেমন কোন রাজনৈতিক শক্তি জনগণের চোখে কোন চমক দেখাতে পারেনি কিম্বা জনগণের দ্বাঁরে পৌঁছুতে পারেনি।



বিগত আওয়ামীলীগ সরকার তথা ১৪ দলীয় জোটের অন্তর্ভূক্ত নতুন নতুন কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি ও দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হলেও তারা জনগণের আশা-আকাঙ্খার বাইরেই রয়ে গেছেন। তাদের এই বিকল্প রাজনৈতিক আদর্শ আর গণতান্ত্রিক ধ্যান- ধারণা কোন কাজে আসেনি। বর্র্তমান সময় হতাশায় কাটছে। দেশের এক একটি অর্থনৈতিক মন্দা কাটতে না কাটেেতই আরেকটি বিপর্যয় ক্রমেই আমাদের দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গতিশীলতাকে শ্লত করে দিচ্ছে।



রপ্তানী বাণিজ্যেও নেই তেমন কোন বড় ধরণের চমক। বড় বড় প্রকল্পগুলি থেমে আছে। আর যত উন্নয়ন হচ্ছে তার একটি বড় অংশই রাজনৈতিক নেতাদের পকেটভারী করছে। বিভিন্ন আন্দোলন দানা বাধলেই শক্তি প্রয়োগ করে রাতের অন্ধকারে তা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে দলীয়করণ করা হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন অপশক্তি মানুষের অনুভূতিপ্রবণ দুর্বল জায়গাগুলিতে ঢুকে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। রাজনীতির এ গোলক ধাঁধাঁ থেকে জনগণ মুক্তির পথ খুঁজছে। কিন্তু কারা সেই মুক্তির সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবে বর্তমান সময়ে সেই প্রশ্নটি অনেক বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।



কথায় আছে দলীয় পদ-পদবী ছাড়া কোথাও কিছু হচ্ছে না। অর্থাৎ দলীয়করণের বৃত্ত এতটাই বি¯তৃত হয়ে পড়েছে যে, তার প্রভাব যেন সর্বত্র বিরাজমান। ফলে মেধা, কর্মদক্ষতা এবং যোগ্যতাকে অতিক্রম করে অপশক্তিগুলোর ডালপালা বি¯তৃত হচ্ছে ক্রমাগত। একটি সুশীল সভ্যসমাজ বিনির্মাণের প্রতিন্ধকতা দিনে দিনে প্রকট হয়ে উঠছে। দেশ ও জাতি যতদিন দলবাজদের কর্তৃত্বের বাইরে বেরিয়ে আসতে না পারবে ততদিন এই শক্তিগুলো ক্রম চক্রায়ণে আমাদের বিভ্রান্ত করবে। এই সকল অপশক্তিগুলো কোনভাবেই আমাদের আশান্বিত হবার ম্যাসেজ দিচ্ছে না, ফলে জনকল্যাণমুখি টেকসই কর্মসূচি আসছে না দেশ ও জাতির সামনে।



দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতাসীন দলগুলোর মধ্যে চলছে পারিবারিক উত্তরাধিকার ও দূর্নীতিপরায়ন, দলীয়করণের প্রতিযোগিতা। এই দুই উত্তরসূরীর বিরুদ্ধে নানা ধরণের অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন টক-শো তে আলোচনা-সমালোচনা হয়। তারেক রহমানের বিদেশ থাকা ও চিকিৎসার ব্যয় নিয়ে পাল্টাপাল্টি প্রশ্ন উঠলে তার সদুত্তোর দিতে পারেননি উভয় দলের বড় বড় নেতারা বরং তাদের মনোভাব সেই সকল দুর্নীতির আরেকটি নিদর্শন রেখে গেছেন। সর্বোপরি ২০১০ সালে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক এবং ২১ আগস্ট এর গ্রেনেড হামলা, একইসাথে ৬৩ জেলায় বোমা বিস্ফোরণ আমাদেরকে হতবাক করে।



অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে সাভারে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় প্রায় দেড় সহ¯্র শ্রমিকের মৃত্যু আমাদের চোখে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দেয় যে, দলীয় প্রশ্রয়ে সা¤্রাজ্যের স¤্রাটরা সাধারণ মানুষের জীবনে কতটা ভয়াবহ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা বাতিল করে, যা রাজনৈতিক কলঙ্কের ধাপকে আরেকটু অগ্রসর করে দিল। বাংলাদেশের একেকটি সহিংসতা পৃথিবীর বর্বর কোন দেশের সংস্কৃতিকেও হার মানায়। এতকিছু ঘটে যাওয়ার পরও বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের অস্থিরতার শঙ্কা কাটেনি বরং বেড়েই চলছে। পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারলাম ঈদের ২ দিন আগেও অনেক গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বোনাস দেয়া হয়নি। যাদের দেয়া হয়েছিল তার পরিমাণ ২০০০ টাকার অধিক নয়।



বাংলাদেশে সড়ক ও পরিবহণ খাতে দুর্নীতি বর্তমান সময়ে আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। ২০০৯ সালে নৌ-মন্ত্রীর চাপে ১০ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে কোনরকম পরীক্ষা ছাড়াই। শুধু তাই নয়, ২য় বার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশন কর্তৃক সাড়ে ২৪ হাজার লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করা হয়েছে। এর পেছনে কার স্বার্থ জড়িত তা দেশ ও জাতিকে স্পষ্ট করে বলার কিছু নেই। ঢাকা শহরের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ সড়ক থাকার প্রয়োজন। সেখানে রয়েছে মাত্র ৭ শতাংশ। যদিও বর্তমান সময়ে কিছু ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে হকার রয়েছে ২ লাখ এবং সারা দেশ মিলে ১০ লাখের উপরে। গুলিস্তানের মতো একটি ব্যস্ততম জায়গায় হকার্স রয়েছে ৩ হাজারের উপরে। এর পেছনে রয়েছে লাখ লাখ টাকার কালো বাণিজ্য। ওয়্যারলেস মোড়ের এক চা দোকানীর ভাষায় বলতে হয়, তাদের প্রতিদিন ৩০ টাকা হারে চাঁদা দিতে হয়। এসব অবৈধ হকার্স মার্কেটের অনেক পজিশন ১০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা আদায় করা হয়। যার ভাগ-বাটোয়ারা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। যেমন পুলিশের নিয়োগকৃত প্রতি থানায় ১ জন করে মোট ৪ শ লাইনম্যান রয়েছে। একই সাথে রয়েছে স্থানীয় ক্ষমতাসীন নেতাদের হাত।



অন্যদিকে ঈদকে সামনে রেখে সড়কের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশের চাঁদাবাজী রেকর্ড করার মতো। যার কোন প্রতিকারের শব্দ আমরা শুনতে পাইনি। অভিযোগ রয়েছে যে পুলিশের চাঁদাবাজী এতটাই বেসামল যে, প্রতি ১০ টনের একটি পণ্যবাহী ট্রাক ৪৩০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ২২ হাজার টাকা চাঁদার বিনিময়ে।



রাজনৈতিক সহিংসতা তথা বিভিন্ন হরতালের মাধ্যমে যে প্রাণহানি আর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার একটি বিভৎস চিত্র তুলে ধরছি ঃ বিগত ৩টি শাসনামলের মধ্যে ১৯৯১-৯৬ সালে নিহতের সংখ্যা ১৭৪ জন, ১৯৯৬-২০০১ সালে ৭৬৭ জন, ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ১৩১জন, ২০০১-২০০৬ সালে ৮৭২জন, ২০০৭-২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ১১জন, ২০০৯-২০১৩ সালে ৫৬৪জন। রাজনৈতিক সহিংসতায় বিগত ২২ বছরে সর্বমোট ২,৫১৯জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে অর্থনীতিতে শুধু পরিবহন খাতে ক্ষতি হয়েছে ২০০ কোটি টাকা, ক্ষুদ্র ব্যবসায় ২৫০কোটি টাকা সহ আরও ৬০০ কোটি টাকার। যা আমাদের জাতীয় জীবনে চরম প্রভাব ফেলছে।



সোনালী ব্যাংকের ৪ হাজার কোটি টাকা এবং বেসিক ব্যাংকের ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারী নিয়ে দায়িত্বশীল কতৃপক্ষের লাগামহীন বক্তব্য আমাদের আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দেয় দেশে কী পরিমাণ হরিলুট হচ্ছে। অন্যদিকে শেয়ার বাজার ধ্বংসের দায়ও এড়াতে পারেনা বর্তমান ক্ষমতাসীনরা।



শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা নতুন কিছু নয়। এমনকী বুয়েটের মেধাবী ছাত্রী সনির মতো অনেক নিরীহ ছাত্র নেতাদের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন। সম্প্রতি সিলেটের এম.সি কলেজ ও পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অন্তর্দলীয় কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ হলো একাধিকবার সংঘর্ষ। এছাড়া সরকারের শেষ সময়ে বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনের প্রভাবশালী ছাত্র নেতারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের পেশীশক্তির মহড়া দিতে। যা আমাদের শান্তিপ্রিয় সভ্যসমাজকে ভীত সন্ত্রস্ত করতে পারে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দ্যা গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয় যে, সহিংসতা বাংলাদেশের নির্বাচনকে ব্যহত করতে পারে।



আমাদের যুবশক্তির একটি বড় অংশ আজ হুমকীর সম্মুখীন। এমনকি যুব গণপ্রতিনিধির একটি অংশও নানা সময়ে বিভিন্ন কলঙ্কিত অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছেন। লুৎফুজ্জামান বাবরের মতো আলোচিত না হলেও সম্প্রতি পটুয়াখালী ৩ আসনের সরকার দলীয় এমপি গোলাম মওলা রনির সাংবাদিক নির্যাতন, লুটতরাজ, চাঁদাবাজী রাজনৈতিক মহলে বেশ নাড়া দেয়।



যুবশক্তির একটি অংশের মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ততাও আমাদের সমাজের জন্য হুমকী। আর আক্রান্ত যুবক-যুবতীর মধ্যে সম্প্রতি বাবা-মাকে হত্যার দায়ে আটক ঐশী একটি বড় দৃষ্টান্ত। আমাদের দেশে মাদকের এতই ছড়াছড়ি যে রেললাইন কিম্বা নীরব জায়গা মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফেন্সিডিল, গাঁজা, হেরোইনের পাশাপাশি সম্প্রতি ইয়াবা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলছে। ভারত-মিয়ানমারের সীমান্ত সংলগ্ন নদী ও স্থলপথের ৬১২ টি পয়েন্ট দিয়ে মাদক দেশে আসছে। কারণ টেকনাফের প্রায় ৪৫ কিলেমিটার সীমান্ত অরক্ষিত। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক দপ্তর (ইউএনওডিসি) থেকে প্রকাশিত ২০০৯ সালে বাংলাদেশে ১ লাখ ৩০ হাজার, ২০১০ সালে ৮ লাখ ১২ হাজার এবং ২০১১ সালে ১৪ লাখ ইয়াবা বড়ি ধরা পড়ে। এতকিছুর পরও আমাদের মাদক সংশ্লিষ্ট ৪৫ হাজার ৮১২ টি মামলা আদালতে ঝুলে আছে। ফলে মাদক চোরাচালানকে আরও প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে।



বাংলাদেশের নারী যুবশক্তি উন্নয়নের আশীর্বাদ। কিন্তু হেফাজতের তেঁতুল হুজুর নামে খ্যাত শাহ আহমদ শফি’র বিতর্কিত বক্তব্যের মাধ্যমে নারী সমাজকে হেয় ও পশ্চাতপদ করে রাখতে উস্কানী দিয়েছেন। নারী যুবশক্তি শিক্ষা, চিকিৎসা, উন্নয়ন খাতসহ বিভিন্নভাবে অগ্রসর হয়ে দেশকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সংবিধানে ১৯ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে- ‘জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে।’ অন্যদিকে ২৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান অধিকার ভোগ করবে।’



অন্যদিকে এ বছরের সবচেয়ে বড় আলোচিত বিষয় জাতির কাছে উন্মুক্ত হয়েছে টিআইবি’র জরিপের মাধ্যমে। তাদের জরিপে বলা হয়- ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে দুর্নীতি পরায়ন খাত হচ্ছে রাজনৈতিক দল।’ রাজনৈতিক দলের আয়-ব্যয়ের উৎস আর খাতকে আরো স্পষ্ট ও নিরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। নির্বাচনকেন্দ্রিক ব্যয় বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। ফলে পুঁজিপতিদের কাছে রাজনীতি চলে যাচ্ছে। যোগ্য, সৎ এবং স্বচ্ছ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে।



বাংলাদেশ সেক্যুলার (ধর্মনিরপেক্ষ) রাজনীতি নিয়ে বড় ধরণের ধাক্কা খাচ্ছে একাধিকবার। সাম্প্রতিক সময়ে ইতিহাসকে কলঙ্কমুক্ত করতে শুরু হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম। অনেকগুলোর রায় হয়েছে। এই রায়কে বিভ্রান্ত করতে ধর্মীয় অস্ত্রব্যবহারের মতো নোংরা খেলা আমরা দেখেছি। জাতীয় কল্যাণের ঋণাতœক এই সকল অপশক্তিগুলো রাতের অন্ধকারে ধর্মকে ব্যবহার করে গড়ে উঠা হেফাজত লেভেলের সংগঠন। যাদের মূল লক্ষ্য হলো ধর্মান্ধ মানষের ধর্মীয় চেতনায় আঘাত করে জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস।



জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ, হুজি’র মতো একটির পর একটি জঙ্গি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ আমাদের ভাবিয়ে তোলে। ১৪ আগষ্ট “আনছার উদ-দীন” নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের ৯ জন নেতা গ্রেফতার হয়। এমনকি নারীরা এই জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে ক্রমন্বয়ে জড়িয়ে যাচ্ছে। যা এতদিন প্রকাশ পায়নি। কিন্তু বিগত ২৪ আগষ্ট-২০১৩ হিজবুত তাহরীর ২ নারী সদস্য গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে তা উন্মোচিত হয়।



বাংলাদেশে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বড় দুটি রাজনৈতিক দল তাদের চিন্তা ধারা ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে অনড়। অর্থাৎ একদল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে অন্য দল বিপক্ষে। শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত যদি উভয়েই উভয়ের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন তাহলে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে না? আর তার ফলাফল কি অতীতের মতো অনির্বাচিত তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ? তারা উভয়েই এক অর্থে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছেন। কারণ তাদের এই ধাক্কাধাক্কিতে তৃতীয় পক্ষগুলো কি হাত গুটিয়ে বসে থাকবে? আমাদের অতীতের রাজনৈতিক ইতিহাস তা প্রমাণ করে না।



এই সকল শক্তিগুলোকে দ্বিধাবিভক্ত না করতে পারলে তাদের দ্বারা জাতীয় ঐক্য বা সিদ্ধান্তের সমন্বয় করা কঠিন। যদি ভারতের মতো একটি শক্তিশালী বামফ্রন্ট থাকতো তাহলেও কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে বাম ঘরানার শক্তিগুলোর একটা অংশ সময়ের ¯্রােতে গা ভাসিয়েছে। তাদের শক্তি দিন দিন শ্লথ হয়ে আসছে, এ যেন ৯০ বছরের বৃদ্ধ।



বাংলাদেশের রাজনীতিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার কোন শক্তি হয়তো নেই। জনগণের ঐক্য রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনাকে প্রভাবিত করতে পারে, তার জন্য দরকার নির্দলীয়, নিরপেক্ষ একটি যুবজনগোষ্ঠী। সর্বোপরি বর্তমান প্রজন্মের সুশিক্ষিত প্রগতিশীল যুব সংখ্যা হচ্ছে ৬ কোটি। নেতৃত্ব গঠনে তারুণ্যের নৈতিকতা, উদ্যম, সততা আর মেধাকে কাজে লাগাতে হবে। তাদের লক্ষ্য হবে রাজনৈতিক চেতনা ধারণ করে গঠনমূলকভাবে রাজনৈতিক শূণ্যতা আর অনৈক্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন বেগবান করা। প্রগ্রেসিভ মুভমেন্ট হবে তার অন্যতম অগ্রপথিক



facebook.com/progressive.movement

E-mail: [email protected]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.