নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্ত আকাশ

এমএইচ রনি১৯৭১

আমি মার্কসীয় সমাজতান্ত্রিক আর্দশে বিশ্বাসী একজন মানুষ ।

এমএইচ রনি১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘পদ্মাবত’ জুড়ে আলাউদ্দীন খিলজীর দাপট!

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮



বহুল আলোচিত সমালোচিত `পদ্মাবত’ সিনেমার মুক্তির দিন ২৫ জানুয়ারি সারা ভারতবর্ষ জুড়ে ছিল চাপা উত্তেজনা।গুজরাত, রাজস্থান,কর্ণাটক ও ইউপি ছাড়া সবর্ত্র নির্বিঘ্নেই ছবিটি প্রথমদিন অতিবাহিত করেছে।কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর আসেনি সংবাদমাধ্যমে। এরকম চাপা উত্তেজনার মাঝে ভয় ও আশংকা নিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার রুপসী সিনেপ্লেক্সে আমি আর পাভেল ২য় শোতে `পদ্মাবত’ দেখলাম।
কেমন ছবি পদ্মাবত?
ইতিহাস আশ্রিত কাহিনী নিয়ে পদ্মাবত নির্মান করেছেন সঞ্জয় লীলা বানসালি। রাজস্থানের মেওয়ারের রানী পদ্মাবতীর অসামান্য সৌন্দর্য্যের সংবাদে এক নজর দেখার বাসনায় দিল্লির সুলতান আলাউদ্দীন খিলজীর উন্মত্ততা, হত্যা ও ধ্বংসলীলা নিয়ে `পদ্মাবত’। ‘ ইচ্ছা পুরনে’ আলাউদ্দীন যেমন নিজ চাচা অর্থাৎ শ্বশুরকে হত্যা করতে কুন্ঠাবোধ করেন না, তেমনি পদ্মাবতীকে একনজর দেখার জন্য মেওয়ারের রাজা রতন সিংকে হত্যার মাধ্যমে পুরো মেওয়ার ধ্বংস করতে বিলম্ব করেন না।পুরো সিনেমাজুড়ে আলাউদ্দীন খিলজীর চরিত্রে দাপুটে অভিনয় করেছেন রনবীর সিং। সিনেমা দেখতে দেখতে মনে হয়েছিল, এ ছবির নাম পদ্মাবতের স্থলে কেন আলাউদ্দীন হলো না ? ছবির শুরুতে মেওয়ারের রাজা রতন সিং মুক্তোর সন্ধানে সিংহল পৌছে শিকারে যান।কিন্তু শিকারের বদলে তিনি নিজেই সিংহল রাজকন্যা পদ্মাবতীর ছোড়া তীরে বিদ্ধ হন। রাজকন্যার সেবায় সুস্থ্য হন এবং তাকে বিয়ে করেন।
অন্যদিকে আলাউদ্দীন দিল্লির সুলতানকে হত্যা করে শুধু সিংহাসনই দখল করেন না, চাচাতো বোনকে বিয়ে করেন। মেওয়ারের রানী পদ্মাবতীর অসামন্য রূপের আগুনে কামনায় জ্বলতে থাকেন রাজগুরু। বিষয়টি টের পেয়ে রতন সিং ডেকে এনে রাজগুরুকে শুধু আপমানিত করেননি , তাকে রাজপ্রাসাদ থেকেও বিতাড়িত করেন। অপমান ও ক্রোধে প্রতিশোধের নেশায় ছুটে যান কামুক ও নারীলোভী হিসেবে খ্যাত দিল্লির সুলতান আলাউদ্দীনের কাছে। রাজগুরুর কাছে পদ্মাবতীর রূপের বর্ননায় আলাউদ্দীন অস্থির হয়ে উঠেন অপুর্ব সুন্দরীকে দেখার জন্য।এ পর্যায় এসে সিনেমার বাঁক ঘুরিয়ে দেন সঞ্জয় বানসালি। রাজগুরুকে কু-মন্ত্রনার শক্তি এবং আলাউদ্দিনকে চিত্রায়িত করা হয় নিষ্ঠুর, কামুক, নারীলোভী, যৌনতাপ্রিয় নৃপতি হিসেবে। অন্যদিকে রাজপুতদের প্রতিনিধি মেওয়ারের রাজা রতন সিংকে প্রেমিক পুরুষ ও সুশাসক হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।নানানভাবে রাজপুত সম্প্রদায়কে অনেকবেশী গৌরবান্বিত করা হয়।

পদ্মাবতীর সৌন্দর্য্যে পাগলপ্রায় আলাউদ্দিন খিলজীর উন্মত্ততা তুলে এনে সঞ্জয় বানসালি ভারতবর্ষে মুসলিম শাসক ও মোঘল সুলতানদের কি প্রশ্নবিদ্ধ করলেন না? সিনেমার শেষাংশে দেখানো হয় বিশ্বাসঘাতক আলাউদ্দীনকে। যে কিনা বন্ধুত্বের সন্ধি করে তলোয়ার যুদ্ধ হারাতে ব্যর্থ হয়ে রতনসিংকে ইশারায় তীর ছুঁড়ে হত্যা করায়। কিন্তু যার জন্য এতো যুদ্ধ বিগ্রহ সেই পদ্মাবতী জহরব্রত পালন করে আগুনে আত্মাহুতি দেয়ায় শেষ পর্যন্ত অধরাই থেকে যায় আলাউদ্দীনের কাছে। শুরুতেই বলেছি আলাউদ্দীন চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন রনবীর সিং। রতন সিং চরিত্রে রনবীরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন শহীদ কাপুর।রানী পদ্মাবতীর চরিত্রে দীপিকা পাড়ুকোন এককথায় অসামান্য । অদিতি রাও হায়দারি,রাজা মুরাদের অভিনয় ছিল চোখে পড়ার মতন। দুই ঘন্টা চব্বিশ মিনিটের এ সিনেমার ক্যামেরা ওয়ার্ক, সিনেমাটোগ্রাফি, কালার গ্রেডিং,এডিটিং, সাউন্ড ইফেক্ট, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক সবই হলিউডের সিনেমার সমতুল্য বলা যায়।
আবারও বলছি, ছবির নামকরন’ ‘ পদ্মাবতের পরিবর্তে আলাউদ্দীন কেন হলো না ‘আমার প্রশ্নের সঙ্গে ছবি দেখে যেকোন সচেতন দর্শক এককমত হবেন।
সবশেষে আরেকটি বিষয় বলি , বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতীয় রাজনীতি যে শেষ পর্যন্ত ছবিটি মুক্তি দিয়েছে তাই অনেক বেশি। ছবিটি তার্কিশ ফান্ডে নির্মিত হলে আলাউদ্দীন খিলজিকে দেখা যেত ভূ-ভারতের ত্রাণকর্তা হিসাবে। রাজনৈতিক ব্যবসা ও ব্যবসায়িক রাজনীতি দুইটাই গুরুত্বপূর্ণ এ ছবির ক্ষেত্রে।
ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ ঠিক হয়নি আপনার যতবার মনে হবে, ততবারই মনে হতে পারে ঠিকই হয়েছে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: হিন্দু পরিচালক ইচ্ছা করেই এমনটা করেছে।

২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৪

রিনকু১৯৭৭ বলেছেন: লেখা পড়ে ভালো লাগলো। ইচ্ছে আছে এই সিনেমা দেখার।

৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৮

সালাউদ্দীন খালেদ বলেছেন: ভাল লাগলো। ধন্যবাদ

৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:২১

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভারতীয়রা সিনেমার লোকেরা দেখে বাজার; আপনি বাজারের একজন?

৫| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মুসলিম বিদ্বেষী যারা
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে দেখে
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ তাদের কাছ থেকে
এর বেশী কি আশা করা যায়। বিষ্ঠা নিয়ে
নাড়াচাড়া না করাই শ্রেয়। তাদে দুঃগন্ধ থেকে
রেহা্ই পাওয়া যায়।

৬| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪৬

মুকতাফী বলেছেন: ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ ঠিক হয়েছে কি হয় নাই সেইটা মনে হওয়াটা নির্ভর করে আপনার সম্প্রদায় শাসন করছে কি না তার ওপর।

আজকে দিল্লির শাসকরা মুসলিম হলে হয়তো মুভির কাহিনীও অন্যরকম হতো।

৭| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৪

মনির হোসেন মমি বলেছেন: ছবির রিভিউতে যা মনে হল আমার এ ছবি না দেখাই ভাল।একটি ইতিহাসকে বিকৃত করা ছবিটি শুধুই বানিজ্যিক মনে হল।তবু ধন্যবাদ সুন্দর রিভিউর জন্য।

৮| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৫৮

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:


আপনি প্রচার চালান আরো বেশি করে হিন্দি সিনেমার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.