নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাফিব্লগ

রথো রাফি

রথো রাফি লেখালেখি গাণ্ডীব, অনিন্দ্য, শিড়দাঁড়া এবং দ্রষ্টব্যেই । মূলত কবিতা অন্তঃপ্রাণ তবে গদ্যও লিখেছি কিছু। অনুবাদেও আগ্রহ আছে। বই এখনো নাই। জন্ম: দক্ষিণ তারুয়া, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বসবাস ঢাকায়। প্রকাশনা সংস্থায় কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ফ্রিল্যান্স কাজ করছি। [email protected]

রথো রাফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিজার কাব্বানি: কাব্য

১০ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৯





১.

বন্ধুরা

মারা গেছে পুরোনো শব্দেরা

হয়েছে মরণ পুরোনো বইয়ের

ছেঁড়া জুতোর মতো আমাদের ছেদো কথাবার্তাও মরেহেজে গেছে

আর পরাজয়গামী মনটারও হয়েছে মরণ।



২.

পচাগান্ধা হয়ে গেছে কবিতা আমাদের

পচাবাসি হয়ে গেছে

নারীর কেশ, রাতগুলো, পর্দা আর সোফাগুলো ।

পচেহেজে গেছে সবকিছুই।



৩.

ও আমার দুঃখভরা দেশ

পলকেই

প্রেমের কবি থেকে এমন কবিতে

বদলে দিয়েছো আমাকে যে কিনা লিখে ছুরি দিয়ে।



৪.

আমাদের অনুভব প্রকাশে অক্ষম শব্দরা:

লজ্জিতই হতে হবে আমাদের কবিতা নিয়ে।



৫.

প্রাচ্যের হম্বিতম্বিতে সাড়া দিয়ে,

দম্ভভরা হাউকাউ শুনে, আসলে যা একটা মাছিও মারতে পারেনি

নাকাড়া আর দামামার নিনাদে

গিয়েছিলাম যুদ্ধে,

আর হলাম পরাজিতই।

৬.

কাজের চেয়ে চিল্লাচিল্লি আমাদের অনেক বেশি চড়া

আমাদের চেয়েও বড় বেশি আমাদের তরবারী

আর এইতো দুর্ভাগ্য আমাদের।



৭.

এক কথায়

আমরা সভ্যতার আলখাল্লা পড়ে আছি

আর আমাদের আত্মা পড়ে আছে সেই প্রস্তরযুগেই।



৮.

একটা নলখাগড়া আর একটা বাঁশি দিয়ে

যুদ্ধে তুমি জয়ী হতে পারো না।



৯.

আমাদের অধৈর্যের খেসারত দিতে হলো

পঞ্চাশ হাজার নতুন তাঁবু।



১০.

যদি ত্যাগ করে তোমাকে ঈশ্বর

দোষ দিও না তাকে

দোষো না পরিস্থিতিতে

ঈশ্বর যাকে ইচ্ছে জয়ী করেন

ঈশ্বরতো আর কামার নন যে হাতুড়ি পিটিয়ে গড়ে দেবেন তলোয়ার।



১১.

সকালের সংবাদ শোনা বড়ো যন্ত্রণার

বড়ো যন্ত্রণার কুত্তার ঘেউ ঘেউ শোনা।



১২.

শত্রুরাতো আমাদের সীমা লঙ্ঘন করেনি

বরং তারা পিঁপড়ের মতো প্রবেশ করলো আমাদের দুর্বলতারই ছিদ্র দিয়ে।



১৩.

পাঁচ হাজার বছর

দাড়ি গজিয়েছে

আমাদের গুহায়।

আমাদের মুদ্রাও হয়েছে অচল,

আমাদের চোখদুটিও হলো মাছির স্বর্গখানা।

বন্ধুরা,

ভাঙো ভাঙো দরজাটা,

তোমাদের মগজটা শোধরে নাও,

ধুয়ে নাও পোশাকআশাক।

বন্ধুরা,

একটা বই পড়ো অন্তত

অন্তত একটা বই লেখো,

কথা, ডালিম আর আঙুর ফলাও।

তুষার আর কুয়াশার দেশে পাড়ি দাও।

গুহার ভেতর-যে বেঁচে আছো কেউতো জানে না।

লোকজন জারজ কুকুরই ভাবে তোমাদের।



১৪.

মোটাচামড়ার লোকজন আমরা

আর ফাঁপা মনের।

জ্বিন খাটিয়ে, দাবা খেলে আর ঘুমিয়ে

দিন পার করি আমাদের,

আমরা কি সেই ‘জাতি যার মাধ্যমে মানবজাতিকেই আর্শিবাদ করেছিলেন ঈশ্বর’?



১৫



আমাদের মরুর তেল হতে পারতো

আগুন আর শিখার খঞ্জর

মহান বাপদাদাদের লজ্জা আমরা:

আমাদের তেল বইতে দিয়েছি বেশ্যার পায়ের আঙুলের মাঝ দিয়ে।



১৬.

রাস্তাগুলোতে আমরা উন্মাতাল ছুটাছুটি করি

রশি দিয়ে লোকদের টেনেহেঁচড়ে,

জানালা গুঁড়িয়ে আর তালা ভেঙে।

আমরা ব্যঙের ঘ্যাঙর ঘ্যাঙরের মতো প্রশংসা করি

মাঝারিরা বনে যাই নায়ক,

আর নায়কেরা বদমাস:

আমরা কখনো থামি না আর ভাবি না।

মসজিদে আমরা অলস আঢুল ঢেলান দিয়ে পড়ে থাকি,

কবিতা লিখি,

বচন বানাই,

খোদার কাছে শত্রুর বিরুদ্ধে

আমাদের বিজয় প্রার্থনা করি



১৭.

আমাকে যদি নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হতো

যদি দেখা করতে পারতাম আমি সুলতানের সাথে

তাকে বলতাম: ‘ও সুলতান!

তোমার ক্ষুধার্ত কুত্তারা আমার চাঁদর কুটি কুটি করেছে ছিঁড়ে

গোপন-সন্ধানীরা তোমার আমার পিছনে লেগে-আছে সারাক্ষণ।

তাদের চোখ

তাদের নাক

তাদের পা তাড়া করে বেড়ায় আমাকে

কপালের মতো, নিয়তির মতো

তারা আমার বউকে জিগ্যাসাবাদ করে

আর লিখে নেয় আমারই যত বন্ধুর নাম।

ও সুলতান!

আমি তোমার বধির দেয়ালগুলোর দিকে এগোনোর সাহস করি বলে

আমার দুঃখ আর দুভার্গ্যকে আমি প্রকাশ করার

চেষ্টা চালাই বলে

আমার শো দিয়েই পিটানো হয়েছে আমাকে।

ও সুলতান!

দুইদুইবারই যুদ্ধে হেরেছো তুমি

ও সুলতান

আমাদের অর্ধেক লোকেরই কোন জিভ নেই,

জিভহীন লোক বলো কোন কাজে লাগে,

দেয়ালগুলোর মাঝখানে

আমাদের অর্ধেক লোকজনইতো

ইঁদুর-পিঁপড়ার মতো ফাঁদে আটকা।’

যদি নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হতো আমাকে

তাকে বলতাম:

‘দুইদুইটা যুদ্ধে হেরে গেছো তুমি

হারিয়েছো এমনকি শিশুদের সাথে থাকার সুযোগটাও।’



১৮.

আমরা যদি আমাদের একতাকে কবর না দিয়ে থাকি

আমরা যদি এর তাজা শরীরকে বেয়নেটে খুঁচিয়ে খুন করে না থাকি

আমাদের চোখেই যদি থাকতো ওই একতা

তাহলে কুত্তারা হয়তো আমাদের মাংস ছিলাফালা করতো না কামড়ে।



১৯.

আমরা তো কোন রাগী প্রজন্ম চাই না

আকাশ চষে বেড়াতে

ইতিহাস উড়িয়ে দিতে

আমাদের ভাবনা নিভিয়ে দিতে

আমরাতো চাই নতুন এক প্রজন্ম

যারা ক্ষমা করবে না কোন ভুলকেই

যারা নত হবে না।

দানবের এক প্রজন্মই চাই আমরা।



২০.

ও আরব শিশুরা

তোমরাইতো যবের ভবিষ্যত অংকুর

শেকল গুঁড়িয়ে দেবেতো তোমরাই

মগজভর্তি আফিমঘোর ছিঁড়বেতো তোমরাই

খুন করবে আমাদের যতো বিভ্রম।

ও আরব শিশুরা,

আমাদের দমবন্ধ প্রজন্মের কথা পড়ো না তোমরা

আমরাতো নিরাশার দৃষ্টান্ত মাত্র।

আমরা তরমুজের খোসার মতোই বড়ো ফেলনা।

আমাদের সম্পর্কে জানার দরকারও নেই,

অনুকরণও করো না আমাদের,

আমাদের মেনেও নিয়ো না

মেনে নিয়ো না আমাদের ভাবনাগুলো,

যতো বাটপার আর বাজিকরের এক জাত আমরা।

ও আরবের শিশুরা,

বৃষ্টি ঝরাও,

যবের ভবিষ্যত-অঙ্কুর,

তোমরাতো সেই প্রজন্ম

পরাজয়কেই জয় করবে যারা।





























































মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩

shfikul বলেছেন: অসাধারণ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.