নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শান্তির জন্য যুদ্ধ

হাল ছেরো না! দিন শেষ হয়ে যায়নি।

যাযাবরমন

যাযাবরমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাকওয়া: স্রষ্টা বলে কি আসলেই কেউ আছেন?

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫

লিংক: তাকওয়া: স্রষ্টা বলে কি কেউ আছে?



বিগ-বেং থিউরি যখন কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছিল না, তখন জনাব আন্দ্রেই লিন্ডে অধিকতর কার্যকর ইনফ্লেশন কসমলজিকাল থিউরি আনলেন। বললেন "বিগ-বেং সৃষ্টির সুচনা নয়। বরং ইনফ্লেশন দিয়ে সৃষ্টির সুচনা হয়েছে, আর ইনফ্লেশনের ফলে সৃস্ট শুন্যে বিগ-বেং ঘটেছে।" সুফীরা যেমন বলেন, স্রষ্টা ছিলেন গুপ্ত। তিনি স্ব-মহিমা প্রকাশ করতে চাইলেন। তিনি বললেন "হও", হয়ে গেল। আমরা শূণ্য বলতে ফাকা স্থান বুঝি,আসলে প্রকৃত শূণ্য কি তা কল্পনাও করতে পারি না।

প্রকৃত শূন্য হচ্ছে এমন অবস্থা যেখানে-

1. কোন বস্তু কণা, আলো বা কোন ধরনের শক্তি তরঙ্গও নাই।

2. স্থান(যেমন: আপনার ও মনিটরের দূরত্ব) বা কাল(সময়) নাই।

3. এমনকি এই শূন্য/শূন্যতা সম্পর্কে জানে এমন কিছু/কেহ ও নাই!

এটাকে আমরা শুন্য না বলে অনস্ত্বিত্ব বলতে পারি। এর একমাত্র বিপরীত অবস্থা হচ্ছে অস্তিত্ব। অনস্ত্বিত্ব<->অস্তিত্ব।



ডাইমেনশন বা মাত্রা -এর প্রচলিত অর্থ "ডিরেকশন", যার ডাইমেনশন যত বেশি তার বিস্তৃতি তত বেশি। আমাদের পক্ষে চতুর্মাত্রিক কিছু কল্পনা করা খুব কঠিন নয়, আর চেষ্টা করলে আমদের ত্রিমাত্রিক জগতে চতুর্মাত্রিক কিছু বানানোও জেতে পারে। কিন্তু দ্বিমাত্রিক কিছু বানানো কি সম্ভব? আমরা কি আসলে কোন দ্বিমাত্রিক কিছু কল্পনা করতে পারি? কাগজের তলে আকা ছবি কি আসলে দ্বিমাত্রিক? এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনিত হচ্ছি যে, "মাত্রা অর্থ ডিরেকশন বা বিস্তৃতি না হয়ে মাত্রা মানে হওয়া উচিৎ সীমানা। মাত্রা যত বেশি, তত বেশি সীমানা। আপনি ১টা ঘরে আছেন যার ২টি দেয়াল, এই ঘরের ভেতরে আরও কয়েকটি দেয়াল তুললে মনে হবে ঘর বড় হয়ে গেছে, যদিও বাস্তবে তা হয়নাই।

আমাদের মতে ডাইমেনশন মানে হচ্ছে সীমানা/প্রতিবন্ধকাত। যার ডাইমেনশন যত বেশি, সে আসলে তত সীমাবদ্ধ। ১ মাত্রার উপাদান ১টি মাত্র সীমানা, দৈর্ঘ্য, দ্বারা আবদ্ধ, যেমন সময়। ২ মাত্রার উপাদান দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ এই ২টি সীমানায় আবদ্ধ, যেমন শক্তি/বিকিরন। ৩ মাত্রার উপাদান দৈর্ঘ্য, প্রস্থ আর উচ্চতা এই ৩টি সীমানায় আবদ্ধ, যেমন বস্তু। অর্থাৎ মাত্রা যত বৃদ্ধি পায়, ততই তার পরিমাপযোগ্য প্যারামিতার বারতে থাকে। আমরা ৪ মাত্রার বস্তুর প্রজেকশন করতে পারি, কিন্তু ১/২ মাত্রার কিছু কখনওই বানাতে পারি না। কারন ২ মাত্রার কিছু বানাতে হলে উচ্চতার সীমানা অতিক্রম করতে হবে। অপরদিকে ২ মাত্রার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের সাথে উচ্চতা যোগ করে ৩য় মাত্রায় পৌছান সম্ভব।

আমরা শক্তিকে ২ মাত্রার বলছি কারন অতি বিক্ষ্যাত ঝালর পরীক্ষায় দেখা যায় শক্তি বা আলো একই সাথে একাধিক ছিদ্র দিয়ে যেতে পারে। ত্রিমাত্রিক জগতে ঝালরের ছিদ্রগুলি আলাদা-আলাদা তলে অবস্থান করলেও দ্বিমাত্রিক জগতে ঝালরের ছিদ্রগুলি একই তলে অবস্থান করে, ফলে আলো একসাথে একাধিক ছিদ্র দিয়ে যেতে পারে।

সময়ের মাত্রা ১, দৈর্ঘ্য। সময় চলছে ত চলছেই। এর শুরু বা শেষ নেই, কারন শুরু বা শেষ করতে হলে ২য় আরেকটা ডাইমেনশন দরকার হবে। সময়ের দৈর্ঘের গায়ে প্রস্থ বসিয়ে তাতে শক্তি/বিকিরন আশ্রয় নেয়, আর বিকিরনের গায়ে উচ্চতা বসিয়ে বস্তু জন্ম লাভ করে।

বস্তু ভাঙ্গতে থাকলে শেষ পর্যন্ত কোয়ার্ক/ক্লার্ক পাওয়া যায়। কোয়ার্কের ভেতরে পাওয়া যায় তরঙ্গ। অর্থাৎ ২ মাত্রার শক্তি পুঞ্জীভূত হয়ে ৩ মাত্রার বস্তু গঠন করে। কিন্তু বস্তু পরস্পর যুক্ত হয়ে শক্তি গঠন করার কোন উদাহরণ পাওয়া যায় নয়া।

বিজ্ঞানীরা অনেক বছর ধরে শক্তি/বিকিরনের প্রবাহের ১টি মাধ্যম খুজেছে। কিন্তু পায় নাই, ফলে সিদ্ধান্ত নিয়াছে যে বিকিরনের সঞ্চারনের জন্য মাধ্যম দরকার না। আসলে মাধ্যম দরকার হয়। সময় হচ্ছে সেই মাধ্যম। মহাবিশ্বের শক্তি ও বস্তু মূলত সময়ের একক মাত্রার উপরে মহাবিশ্ব/স্পেস গড়ে তুলেছে। আমরা বলি স্পেস, আসলে স্পেস হলো সময়ের ১ মাত্রার উপর বস্তু ও শক্তির শয্যা। বস্তু যত গতি লাভ করতে থাকে তত তা ৩য় মাত্রা থেকে মুক্ত হতে থাকে, এবং আলোর গতিতে বস্তু ৩য় মাত্রা থেকে পুরোপুরি মুক্তি লাভ করে শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। তখন ১টি মজার ঘটনা ঘটে, সময় থেমে যায়। হ্যা, শক্তির কোন বয়স থাকে না। যেমন:- গ্যাভিট্রনের কথা ধরা যাক। যে গ্র্যাভিট্রন সুর্য ও পৃথিবির আকর্ষনের জন্য দ্বায়ি, আমাদের দৃষ্টিতে তার সুর্য থেকে পৃথিবিতে আসতে ৮ মিনিট, কিন্তু গ্র্যাভিট্রনের নিজের কাছে মনে হবে যে সে সুর্য ও পৃথিবিকে একই সাথে ধরে রেখেছে।

এখন মাত্রা যদি ০ হয়? এর কোন সীমানা থকে না। অর্থাৎ এটা অসীম হয়ে যায়। "০" ডাইমেনশন বিবেচনা করলে দেখবেন এটির কোন আকার থাকতে পারে না। অর্থাৎ ০ ডাইমেনশন নিরাকার, এর আগে বা পরে কিছু হতে পারে না।

সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করলে আপনি ১ টা প্রশ্নে এসে আটকে যাবেন। প্রশ্নটা হচ্ছে, তার আগে কি?

০ ডাইমেনশন বিবেচনা করলে দেখবেন মাত্রা "০" বলে এটি চির বিরাজমান, আর এর কোন আকার থাকতে পারে না এটি নিরাকার। এর আগে বা পরে কিছু হতে পারে না। ধর্মে ঈশরকে নিরাকার বলা হয়েছে। কিন্তু মাত্রা "০" হলেই কেবল নিরাকার হওয়া সম্ভব।

আমরা আস্তিক-নাস্তিক সবাই স্রষ্টাকে মানুষের মত কিন্তু অতি পাওয়ারফুল কেউ বলে কল্পনা করি। এটা মানতে পারে না বলে অনেকে নাস্তিক হয়। আসলে স্রষ্টার মানুষ বা বস্তুর মত হওয়ার কি কোন কারন আছে? তিনি কি অন্যরকম কিছু হতে পারের না?

আমাদের মতে তিনি স্বয়ং ০ মাত্রা। আর ১ মাত্রার “সময়” হচ্ছে স্রষ্টার চেতনা। ফলে কোন কিছুই স্রষ্টার অগোচরে থাকতে পারে না। সৃষ্টির প্রত্যেকটা অনু-পরমানু তাঁর অনুমতি নিয়েই নরা-চরা করে।

তাহলে মানুষের বিশেষত্য কি?

মানুষের বিশেষত্য হল স্বাধিন মন! মানুষ নিয়ত করতে পারে, চেষ্টা করতে পারে। আর হাশরের ময়দানে মানুষের প্রচেষ্টা বা নিয়তের হিসাব নেয়া হবে।



মহাবিশ্ব কত বড়?

১_কাছের-তারা: ২_১০০০গুন বড় ছায়াপথ:

৩_১০০গুন-লোকাল-গেলাক্টিক-গ্রুপ

৪_১০ গুন-সুপার ক্লাস্টার_ভিরগো)

৫_ ১০গুন বড় সুপার ক্লাস্টার গ্রুপ

৬_১৪গুন বড়_অবজারভেবল-মহাবিশ্ব)

বিগ-বেং-এর ফলে সৃস্ট মহাবিশ্ব এত বড় যে বিজ্ঞানের চোখও তার পুরোটা দেখতে পারে না। তারপরও এই মহাকাশের গ্রহ-নক্ষত্র-গ্যালাক্সি সমূহের পারস্পরিক সুশৃংখলা অবস্থান এবং সর্বত্র বিজ্ঞানের সূত্রের একই রকম কার্যকারিতা দেখে বিস্মিত হবেন। বলতে বাধ্য হবেন যে, মহাবিশ্ব বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনায় তৈরী হয় নাই। কোন একক কেন্দ্রের ডিজাইন ও ব্যবস্থাপনায় মহাবিশ্ব তৈরী হয়েছে। ১জন ডিজাইনার মহাবিশ্ব তৈরি করার জন্য অবকাঠামো তৈরি করেছিলেন। তারপর তিনি যেভাবে চেয়েছেন / ডিজাইন করেছেন সেভাবেই এই মহাবিশ্ব তৈরি হয়েছে। সুরা মুলক: ৩- তিনি সাত আকাশ সৃষ্টি করেছেন সুবিন্যস্ত ভাবে। তুমি পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে অসামঞ্জস্য দেখতে পারবে না। তারপর তুমি তোমার দৃষ্টি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নাও, তুমি কি কোন ফাটল দেখতে পাচ্ছ?

এখন প্রকৃতি/গড/খোদা যে নামেই ডাকুন, যে স্বত্তা এই মহাবিশ্ব সৃস্টির জন্য দ্বায়ী তিনিই এক ও অদ্বিতীয় স্রষ্টা।



< ২. এই ডিজাইনার বা স্রষ্টা কে? কোথায় থাকেন? >

কোরআনে একটি আয়াত আছে-

إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي [٢٠:١٤]

আমিই আল্লাহ, আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর। (Taa-Haa: 14)

মেরাজের ঘটনার বিবরণ থেকে বোঝা যায় যে বেহেস্ত, দোজখ, আসমান, দুনিয়া, হাশর সবই সৃষ্টি-জগতের অধীন, কারণ এসব স্থানে জিবরীল(আঃ) রসুলুল্লাহ(সাঃ) এর সাথে ছিলো। কিন্তু আল্লাহর দিদারের সময় জিবরীল(আঃ) রসুলুল্লাহ(সাঃ) এর সাথে ছিলেন না। বরং বিবরণে দেখা যায় কোন কিছুতে করে রসুলুল্লাহ(সাঃ)-কে অন্য কোথাও নেওয়া হয়েছিলো, যেখানে যাওয়ার সাধ্য ফেরেশতা শ্রেষ্ঠ জিব্রাইল(আঃ)-এরও ছিল না। অর্থাৎ, রসুলুল্লাহ(সাঃ)-কে আল্লাহর দিদারের জন্য সৃষ্টি-জগতের বাহিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো।

কোরআন-এ বলা হয়েছে-

• তিনি নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু ছয়টি পর্যায়কালে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন (সূরা আল-ফুরকান ৫৯)

• তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে (সুরা বাক্বারাহ ২৫৫)

• যা কিছু নভোমণ্ডলে আছে এবং যা কিছু ভূমণ্ডলে আছে, সব আল্লাহরই। সব বস্তু আল্লাহর মুষ্টি বলয়ে। (সূরা আন-নিসা ১২৬)

উপরের আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি-জগতের বাহিরে অবস্থান করছেন।

অনেক কোরআন শরিফ তফসির কারক আলেমের মতে কোরআন-হাদিসের যেসব বিবরণে আল্লাহকে দুনিয়ায় উপস্থিত বলা হয়েছে সেখানে আল্লাহ-কে শারীরিক ভাবে নয় বরং তাঁর জ্ঞানের মাধ্যমে উপস্থিত বুঝান হয়েছে।



< ৩. স্রষ্টা সবই জানেন কিভাবে? >

আমরা সামনে/পিছে, কাছে/দুরে যেতে বা দেখতে পারি। বাস্তব জগতে বস্তুর ৩টি মাত্রা(dimension)- দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা। এদের আমরা সহজেই মাপতে পারি, এপাশ থেকে ওপাশে যেতে পারি। বিজ্ঞানের নিয়ম আমাদের স্থানের ভিতর দিয়ে চলাচল করতে দেয়, কিন্তু বিজ্ঞানের নিয়ম আমাদের সময়ের ভিতর দিয়ে চলাচল করতে দেয় না। ফলে আমরা অতীতকে দেখতে বা পরিবর্তন করতে পারিনা এবং ভবিষ্যৎ দেখিও না জানিও না। সময়ের কোন প্রমাণ মাপ নেই, কারণ সময়কে আমরা সরাসরি ধরতে পারি না। শুধুমাত্র সময় প্রবাহের আপেক্ষিক হিসাব রাখতে পারি। আমরা যেমন আমাদের সামনের টেবিলে রাখা জিনিষ-পত্র একবারে দেখি, আল্লাহ্ তায়ালাও সৃষ্টির শুরু(big bang) থেকে সৃষ্টির শেষ(big-crank) পর্যন্ত কবে কি হয়েছে এবং কবে কি হবে একইসাথে দেখতে পান।

আল্লাহর অবস্থান যেহেতু সৃষ্টি-জগতের সীমানার বাহিরে। সুতরাং, সৃষ্টি-জগতের (স্থান-কালের) বিজ্ঞানের নিয়ম আল্লাহর জন্য প্রযোজ্য হবে না। সময়ের সীমানায় তিনি আবদ্ধ নন, বরং তিনি সময়ের সূত্রের বাইরে অবস্থান করেন। ফলে মহাবিশ্বের কোন কিছুই তাঁর পেছনে বা অতীত /ভবিষ্যতে নয়, সবকিছুই তাঁর কাছে বর্তমান। তাই তিনি সৃষ্টি করার সাথে সাথেই জেনে গেছেন এর শেষ কী। আর তাঁর অনন্যতার নিদর্শন হিসেবে সব লিখে “লওহে-মাহফুজ”-এ রেখে দিয়েছেন।

আল্লাহ্ নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের অদৃশ্য বিষয় জানেন, তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা দেখেন। (সূরা আল হুজরাত ১৮)

তাঁর জ্ঞান সীমা থেকে তারা কোন কিছুই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। (সুরা বাক্বারাহ ২৫৫)|

আল্লাহ সর্বপ্রথম কলম তৈরি করেছেন এবং সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কি কি হবে তা লিখে রেখেছেন। এই লিখে রাখা আল্লাহ-তায়ালার অনন্যতার একটি নিদর্শন। “আলেমুল গায়েব” নামের প্রমাণ। যাতে আমরা চিন্তা করে বুঝতে পারি যে আমাদের উপর ১জন আছেন যিনি সমস্ত সৃষ্টি-জগতের উপর একক আধিপত্য রাখেন।



< ৪. আল্লাহ করান না আমরা করি?>

আমরা আগেই বলেছি যে, “লওহে-মাহফুজ”-এ লিখে রাখাটা আল্লাহর অনন্যতার একটি নিদর্শন। লিখে রেখেছেন বলে ঘটনা সমূহ ঘটছে এমন নয়, বরং “আলেমুল গায়েব”বলে আল্লাহ-তায়ালা সৃষ্টি করার সাথে সাথেই জেনে গেছেন যে আমরা কে কী করব, কখন কী হবে, কিসের পরিণতি কী।

কোয়ান্টাম মেকানিক্স থেকে একটা উদাহরণ দেয়া যায়। যেমন- ১ টি বাক্সে ২টি(১ জোড়া) মজা রাখলেন, এরপর চোখ বন্ধ করে ১টা মজা নিয়ে আপনার পকেট ভরলেন। এখন সাধারন ভাবে আমরা বোলব পকেটের রাখা মোজাটা ৫০-৫০ চান্স বাম বা ডান হবে। কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিক্স বলে যতক্ষণ পর্যন্ত জোড়ার কোন ১টি মোজা পর্যবেক্ষণ করা না হবে ততক্ষণ এরা ১টা জটিল অবস্থায় থাকবে, বামও না ডানও না; এবং যেকোন ১ টা মোজা পর্যবেক্ষণ করলেই জোড়ার ২ টি মোজাই আকার লাভ করবে।

এই কথাটাই আমরা এভাবে বলতে পারি যে, আমাদের সামনে একাধিক পথ আছে, এটা করলে এই হবে, ওটা করলে ওই হবে।

সৃষ্টি করার পর বা সাথে সাথে তিনি সবকিছু জেনে গেছেন। কারন তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একসাথেই দেখতে পান।

১টা সহজ উদাহরন এভাবে দেয়া যায় যে, আপনার চোখ ও ব্রেনের দেখার ক্ষমতা ১ বিলিয়ন গুন বারিয়ে দেয়া হল আর ৩ ঘন্টার ১টা মুভির সবগুলো ফ্রেম প্রিন্ট করে আপনার সামনে দেয়ালে লাগিয়ে দেয়া হল। এখন আপনাকে মুভিটা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন করলে আপনি যেমন নির্ভুল ভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন, বিষয়টা কিছুটা এরকম।

তিনি বিভিন্ন ধরনের সিচুয়েশন তৈরি করে রেখেছেন, মানুষকে দিয়েছেন চিন্তা করার ও সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা। আমরা নিজেদের মত করে সিদ্ধান্ত নেই ও কাজের প্রচেষ্টা চালাই, কিন্তু কাজ কি হবে তা পুরোপুরি আল্লাহ-তা'লার উপর নির্ভর করে। এখানে আল্লাহ্-তায়ালা কিছু প্যারামিটার দিয়ে রেখেছেন, আপনি চাইলেও কিছু কিছু কাজ করতে পারবেন না।

আর হাশরের ময়দানে মানুষকে মুলত তার প্রচেষ্টার নিয়তের হিসাব দিতে হবে।

< ৫. মানুষ সৃষ্টি উদ্দেশ্য কী? >

১- স্রষ্টা প্রথমে বিশুদ্ধ শক্তি তৈরি করেছেন।

২- তারপর এই শক্তি থেকে বস্তু বা পদার্থ তৈরি করেছেন।

৩- এরপর বস্তুর মন তৈরি করেছেন।

কোরআনে বলছেন-

অতঃপর এ ঘটনার পরে তোমাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে। তা পাথরের মত অথবা তদপেক্ষাও কঠিন। পাথরের মধ্যে এমন ও আছে; যা থেকে ঝর্ণা প্রবাহিত হয়, এমনও আছে, যা বিদীর্ণ হয়, অতঃপর তা থেকে পানি নির্গত হয় এবং এমনও আছে, যা আল্লাহর ভয়ে খসে পড়তে থাকে! আল্লাহ তোমাদের কাজকর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। (Al-Baqara: 74)

এই আয়াত থকে ২ টি বিষয় বোঝা যায়- ঃ সকল বস্তুরই মন আছে; ঃ এই মন স্বাধীন নয় বরং আল্লাহ্র নির্দেশ মত বা ভয়ে চলে। এমনকি ফেরেশতারাও এর ব্যতিক্রম নয়। তারাও আল্লাহ্র নির্দেশের বাইরে কিছুই করতে পারে না।

৪- সবশেষে আল্লাহ্-তায়ালার শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি - স্বাধীন মন

মানুষের মন আল্লাহ্ শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি , কারণ মানুষের মনকে আল্লাহ্ তাঁর নিজের গুণাবলী ও সৃজনশীলতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। একমাত্র মানুষই পারে নিজেকে আল্লাহ্ স্থানে কল্পনা করতে। শয়তানও নিজেকে স্রষ্টা বলে দাবি করে না বরং নেগেটিভ গড হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করে, কিন্তু ইতিহাসে অসংখ্য মানুষ পাবেন যারা নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করেছেন। এটা আসলে মানুষের মনের শ্রেষ্ঠত্বের নেগেটিভ একশন।

আবার অনেক আল্লাহ্ প্রেমিকও সূফী সাধকও নিজের ভেতরে আল্লাহ্র সকল বৈশিষ্ট্য দেখে, বোঝার ভুলের কারণে নিজেকে আল্লাহ (আনাল-হক) বলে দাবী করেছেন। আসলে মানুষের কেউই আনাল-হক না, বরং আল্লাহ্ দয়া করে মানুষকে তাঁর নিজের গুণাবলি ও সৃজনশীলতা দান করেছেন, মানুষকে করেছেন তাঁর প্রতিনিধি। কোরআনের ভাষায়:

(Yunus: 14) অতঃপর আমি তোমাদেরকে জমিনে তাদের পর প্রতিনিধি বানিয়েছি যাতে দেখতে পারি তোমরা কি কর।

(Al-Baqara: 30) আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেন: আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি, তখন ফেরেশতাগণ বলল, তুমি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা নিয়ত তোমার গুণকীর্তন করছি এবং তোমার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না।

(Al-An'aam: 165) তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন এবং একে অন্যের উপর মর্যাদা সমুন্নত করেছেন, যাতে তোমাদেরকে এ বিষয়ে পরীক্ষা করেন, যা তোমাদেরকে দিয়েছেন। আপনার প্রতিপালক দ্রুত শাস্তি দাতা এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, দয়ালু।

আল্লাহ্ মানুষকে তাঁর প্রতিনিধি বলেছেন। আর প্রতিনিধি তাকেই বলে যে স্বাধীন ভাবে অনুপস্থিত কারো হয়ে কাজ করে। আল্লাহ্ তাঁর সবচেয়ে বড় গুন "চিন্তা করার স্বাধীনতা" বা স্বাধীন মন দিয়ে মানুষ তৈরি করেছেন। আর স্বাধীন মন এর তুলনায় সমস্ত মহাবিশ্ব মূল্যহীন। এখন আল্লাহ পরীক্ষা করতে চাইছেন যে কোন স্বাধীন মন আল্লাহ্র প্রতি অনুগত আর কোনটি আল্লাহকেই হিংসা বা অহংকার করে। আসলে আমাদের এবাদত/বন্দেগি, দান-খায়রাত, সৎকর্ম/ পরোপকার এগুলোর কোনটাই আল্লাহর দরকার নাই, এগুলো সবই আল্লাহ্র প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্যের বাহ্যিক রূপ। এসবের উদ্দেশ্য স্রষ্টার সন্তুষ্টি পাওয়া না হলে এর সবই অর্থহীন। আবার এবাদত/বন্দেগি, দান-খায়রাত, সৎকর্ম না করলে আপনি কখনও প্রমাণ করতে পারবেন না যে আপনিও স্রষ্টার আনুগত্য করেছেন।

আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, যে কে আল্লাহর প্রতি যে কোন পরিস্থিতিতে নিঃশর্তে অনুগত থাকে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে; আর কে সুখে/দুঃখে আল্লাহকে দোষ দেয় বা অস্বীকার করে।

: আল্লাহ বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন/সিচুয়েশন তিরি করেছেন, কোনটা সুখের কোনটা কষ্টের, কোনটা সমৃদ্ধির কোনটা দারিদ্রের, কোনটা সততার কোনটা স্বার্থপরতার। এই বিভিন্ন ধরনের সিচুয়েশনের মূল্যমানও আলাদা। কেউ হয়তো সারা জীবন ধরে দারিদ্র ও সততার মোকাবেলা করলো, আরেক জন ১ ঘণ্টা কষ্টের মোকাবেলা করে পরীক্ষা শেষ করলো( মারা গেলো )। এমন হতেই পারে যে ২য় লোকটার ১ ঘণ্টার পরীক্ষার মান ১ম লোকটার সারা জীবনের দারিদ্র ও সততার চেয়ে বেশি। আবার অন্য ১জন সমৃদ্ধি ও সততা দিয়ে এক দানশীল জীবনে পার করলো, সে কোটি-কোটি টাকা উপার্জন করে তা দান-খায়রাত করে গেলো। এখন আল্লাহই ভাল জানেন যে কোনটার মর্যাদা বেশি, ৩য় ব্যক্তির দান-খায়রাতের না ১ম লোকটার সারা জীবনের দারিদ্র ও সততার। যেমন উমর(রা.) প্রায়ই বলতেন যে আবু-বকর(রা.) এর হিজরতের সময়কার ১ রাতের বিনিময়ে সারা জীবনের সওয়াব দিয়ে দিবেন।



সুরা ফাতিহায় দেখুন-

১- সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তা’আলার জন্য যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।:= শুরুতেই আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি যে ভাল কাজের প্রশংসা আমার না আল্লাহর প্রাপ্য। এবং আল্লাহই সবার ভরন=পোষণ কারী, মহাবিশ্বের সবকিছুর নেপথ্য চালিকা শক্তি।

২- যিনি পরম করুণাময় ও মহান দয়ালু := এটাও স্বীকার করছি যে আল্লাহ করুণাময় ও দয়ালু ।

৩- যিনি বিচার দিনের মালিক := এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাক্য। এই বাক্যের অর্থ হচ্ছে, " আমরা যেমন ভাবি যে এই করলে এই হয়, অমুক খারাপ কাজ করেছে তাই সে খারাপ থাকবে, আমি ভাল কাজ করি, অন্যের টা মেরে খাই না আমি ভাল থাকবো" এরকম ধারনা ঠিক নয়। মানুষের সকল কাজ কোন এক বিচার দিবসে পরিমাপ করা হবে ও উপযুক্ত প্রতিদান দেয়া হবে। দুনিয়াতে ভাল -খারাপ যত যাই হয় তার সবই আসলে আমাদের পরীক্ষা করার জন্য, কেউ ভাল করে খারাপ পায়, কাউ খারাপ করে ভাল পায়, আবার কেউ যেমন কর্ম তেমন কর্মফল পায়, এগুলো আসলে আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা করার জন্য করেন, যে, আমরা কে কোন অবস্থায় তাঁর প্রতি অনুগত থাকি বা বিরক্ত হই।

- আমরা তোমারই এবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি

- তুমি আমাদের সরল এ সহজ পথ দেখাও

- তাদের পথ যাদের তুমি অনুগ্রহ দান করেছ ।

- তাদের পথ নয়,(যারা) অভিশপ্ত এবং পথহারা হয়েছে।

:= এই ৪টি বাক্যে আসলে প্রার্থনা। এই ৪টি বাক্যে দিয়ে আমরা আল্লাহকে বলছি যে "আমরা যে এবাদত করি তার উদ্দেশ্য একটাই যাতে আল্লাহ আমাদের কে তাঁর প্রতি অনুগত পথে পরিচালিত করেন, কখনও বিপথে যেতে না দেন"। এটা আসলে একধরনের রক্ষাকবচ। বিচার দিবসে আল্লাহ-তায়ালা আমাদের পাকরাও করে ফেললে যেন বলতে পারি "আমিতো দুর্বল ছিলাম আর তাই তোমার আশ্রয়ও চেয়েছিলাম।

মন্তব্য ২৯ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৬

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: সময় করে পড়তে হবে ----- প্রিয়তে নিয়ে গেলাম

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:২১

যাযাবরমন বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।

২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:০৫

চলেপথিক বলেছেন:
তথ্যবহুল যুক্তি আর সচ্চ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ চমৎকার লেখা তারপরও বিতর্ক থেকে যায় , করাও যায় আরও অধিক সচ্ছতার স্বার্থে বাধা সসীম ক্ষমতা দিয়ে আসিম কে বুঝতে পারাটা ।

সীমাবদ্ধতা আয়ুর স্বল্পতা , আরো লিখবেন আশা করি ।

লেখক কে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৫

যাযাবরমন বলেছেন: এত চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:১৩

যাযাবরমন বলেছেন: আমার চিন্তার ধারা ভিন্ন ধরনের, যা প্রকাশ না করাই ভাল। আর আমার চিন্তাও আটকে গেছে। ভাল কোন গুরু দরকার।

৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০২

চলেপথিক বলেছেন:
"পাগলের সঙ্গে যাবি পাগল হবি বুঝবি শেষে "

গুরু আপনার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ,খুজতে থাকেন একদিন পেয়ে যাবেন ।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৩৭

যাযাবরমন বলেছেন: চলেপথিক ভাই, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৩০

বাংলার ডাকু বলেছেন: লেখাটির প্রসংসা করার মত ভাষা পাচ্ছিনা

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:১১

যাযাবরমন বলেছেন: আপনি নিশ্চই খুব বড় সাহিত্যিক। এরকম ১টা কমেনট করার পরও বলছেন যে আপনি ভাষা পাচ্ছেন না!!

৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৬

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন:
আমরা আগেই বলেছি যে, “লওহে-মাহফুজ”-এ লিখে রাখাটা আল্লাহর অনন্যতার একটি নিদর্শন। লিখে রেখেছেন বলে ঘটনা সমূহ ঘটছে এমন নয়, বরং “আলেমুল গায়েব”বলে আল্লাহ আগেই জানতেন যে আমরা কে কী করব, কখন কী হবে, কিসের পরিণতি কী।


আগে বলি, আমি নাস্তিক না। কিন্তু একটা প্রশ্নের উত্তর দিয়েন, আমি নিজের বুদ্ধিতে সেইভাবে দিতে পারিনা।

আল্লাহ যেহেতু জানতেন আমরা কে কী করবো, কখন কি হবে এবং কিসের পরিনতি কি, তাইনা তাহলে দুনিয়াতে পাঠানোর আগেই তো উনি জানতেন আমরা কে কি করবো, অথবা শেষ বিচারে কে নাজাত পাবে আর কে পাবেনা অথবা কে ঠিক পথে চলবে আর কে চলবেনা, তাইনা? তাহলে সেগুলো তো আগে থেকেই নির্ধারিত হয়ে আছে বলেই ধরে নেয়া যায় যেহেতু উনি আগে থেকেই সব জানেন। তাহলে আমাদের দুনিয়াতে পাঠানোর কারনটা কি? আমাদের কি ক্ষমতা যে যেটা আগে থেকেই নির্ধারিত সেটা আমরা ভুল প্রমান করবো?

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:১৬

যাযাবরমন বলেছেন: ভাই প্রশ্ন টা করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এটা আসলে আমার মিসটাইপিং। কথাটা আসলে হবে " তাই তিনি সৃষ্টি করার সাথে সাথেই জেনে গেছেন এর শেষ কী। আর তাঁর অনন্যতার নিদর্শন হিসেবে সব লিখে “লওহে-মাহফুজ”-এ রেখে দিয়েছেন।"।
কথাটা আমি ২ যাগায় ২ ভাবে লিখেছিলাম। আপনি বলাতে সংশোধন করে দিলাম। আপনাকে আবারও ধন্যবাদ।

৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:৪৩

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: তাহলেও প্রশ্ন প্রায় একই থেকেই যায়। জেনে যখন গেছেন তখন দুনিয়াতে পাঠানোর দরকার কি?

জানা থাকলে দিয়েন, না জানলে নাই। কোন ক্ষতি নাই। সবাই সবকিছু জানবে এমনও না। ধন্যবাদ

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১:২৩

যাযাবরমন বলেছেন: তিনি জানেন বলে আমরা করছি এমন নয়। আমরা করছি বলেই সৃষ্টি-জগতের বাইরে বসে তিনি সবকিছু জেনে যাচ্ছেন। আমরা না করলে তিনি জানতে পারতেন না।
সৃষ্টি করার আগে নয়, সৃষ্টি করার পর বা সাথে সাথে তিনি সবকিছু জেনে গেছেন। কারন তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একসাথেই দেখতে পান।
১টা সহজ উদাহরন এভাবে দেয়া যায় যে, আপনার চোখ ও ব্রেনের দেখার ক্ষমতা ১ বিলিয়ন গুন বারিয়ে দেয়া হল আর ৩ ঘন্টার ১টা মুভির সবগুলো ফ্রেম প্রিন্ট করে আপনার সামনে দেয়ালে লাগিয়ে দেয়া হল। এখন আপনাকে মুভিটা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন করলে আপনি যেমন নির্ভুল ভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন, বিষয়টা কিছুটা এরকম।
তিনি বিভিন্ন ধরনের সিচুয়েশন তৈরি করে রেখেছেন, এর সাপেক্ষে আমাদের আচরন/কাজ আমরাই করছি। তিনি জানেন বলে আমরা করছি তা নয়, বরং আমরা করছি বলেই তিনি জানেন।
আল্লাহ-তায়ালা এই জ্ঞান কাজে লাগিয়েই মহাবিশ্বকে ১টি চুরান্ত রূপ/পরিনতি দিয়েছেন। তবে তা আমাদের আচরন/কাজ কে প্রভাবিত করার মাধ্যমে নয়, প্রকৃতিকে প্রভাবিত করে। যেমন ইদুর তার কেটে সর্টসার্কিট করে আগুন লাগিয়ে দিল।
আপনি জানেন হাশরের ময়দানে মানুষকে মুলত তার কাজের বা প্রচেষ্টার নিয়তের হিসাব দিতে হব।

৭| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫

কাবিল বলেছেন: দুনিয়াটা মানুষের জন্য একটা পরীক্ষাগার।
আর এই পরীক্ষার হাতিয়ার হিসেবে দিয়েছেন মানুষের বিবেক।


আপনার সুচিন্তাই নিয়ে যাবে আপনার ইচ্ছের গন্তব্যে।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৪৪

যাযাবরমন বলেছেন: আপনার সুচিন্তাই নিয়ে যাবে আপনার ইচ্ছের গন্তব্যে

এই চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৮| ০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৪:০০

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: আগেই উত্তর পড়ে গেছিলাম, তবে কারনের ব্যাখ্যা পছন্দ হয়নাই।

মুভির উদাহরন দিলেন তো, এইটা যুক্তিযুক্ত না। কারন মুভিও তো বানানো হয়, বানানোর সময়ই তো কাহিনীর সব জানা থাকে। পরে দেইখা তো বলার কিছু নাই। চোখের ক্ষমতা কোটিগুন বাড়ানো হোক, ওইটা কোন ব্যাপারনা।

নিজে লজিক অথবা রিজন খুজতেছি, পছন্দ হইতেছেনা। কিন্তু অকাট্য যুক্তি তো আছে অবশ্যই।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:০৪

যাযাবরমন বলেছেন: শতদ্রু একটি নদী...ভাই, আমি অতন্ত দু:খিত, আগের কমেন্টে আমি ভুল জবাব দিয়েছি।
"দুনিয়াতে পাঠানোর দরকার কি?" এটা আসলে ব্যাপক বিস্তৃত প্রশ্ন। এর অনেকগুলো এসপেক্ট থাকতে পারে।
মানুষের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে আল্লাহ তার জানার প্রমান তৈরি কারার জন্য মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
আল্লাহ বলেছেন-" আমি তোমাদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছি যাতে দেখতে পারি সতকর্মে কে অগ্রগামী"।
তিনি মানুষকে সৃষ্টির সেরা মর্যাদা দিয়েছেন। এখন আল্লাহ শুধুমাত্র তার জ্ঞান থেকে শ্রেণিবিন্যাস করলে মানুষ কখনোই তা মেনে নেবে না। তাই তিনি আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন আর শেষ বিচারের(হাশর) ব্যবস্থা করেছেন, যাতে আমরা আল্লাহ-তায়ালার বিচার নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারি।

৯| ০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৪:১২

সানোয়ারুল ইসলাম বলেছেন: আলহামদু লিল্লাহ !! জাঝাকাল্লাহ খাইর।এই পোস্টের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।অনেক কিছু জানলাম,অনেক কিছু শিখলাম।আপনাকে গুরু ডাকতে খুব ইচ্ছে করছে ভাই।আপনি আজকের দিনের সিম্বল অফ ট্রথ।আশা করব আপনি এভাবে লিখতে থাকবেন।অনেক অনেক লিখুন ভাই.....আপনি,আপনার মত ভাইরাই পারেন পৃথীবিটা বদলে দিতে,আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি যাতে আপনার মত জানতে,শিখতে,আর বলতে পারি।সালাম রইলোঃ "আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ"

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৩৫

যাযাবরমন বলেছেন: আল্লাহ-তায়ালা আপনার উপর সালামত ও রহমত বর্ষিত করুন।
আমি কোনভাবেই সিম্বল অফ ট্রথ নই, আমি একজন অনুসন্ধানি মাত্র। আর এই লেখাটা অনেক বড় যদিও মূল বক্তব্য মাত্র ১ লাইন, আর সেটা এখানে লেখা নাই।
আর আমরা কেউই পৃথীবিটা বদলে দিতে পারি না। এমনকি নবীজী মুহাম্মদ(সা: ) ছারা সামান্য কয়েকজন নবী(আ: ) (যাদেরকে আল্লাহ আজাবের ফেরেস্তা দিয়ে সাহায্য করেছিলেন) পৃথীবির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এছারা পৃথীবিটা বদলে দেয়া মানুষের কাজ বা উদ্দেশ্য না। মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য নিজেকে পরিশুদ্ধ করা।
খুব সহজ ১টা উদাহরন দেই,-
আপনার আশেপাশে অনেক নারীই দেখবেন অতিরিক্ত বেপর্দা চলাফেরা করে। এখন তাদের পর্দা করতে বাধ্য করা ব্যক্তি আপনার-আমার কাজ নয়। আমাদের কর্তব্য হচ্ছে ঐ বেপর্দা নারীর দিকে না তাকানো এবং পারলে তার সাথে সম্পর্ক না রাখা( সংশোধন না হওয়া পর্জন্ত)। আপনার সাথে ঐ নারীর কোন সম্পর্ক থাক বা না থাক, সে যদি দেখে তার বেপর্দার কারনে আপনার বা কারও সমস্বা হচ্ছে তাহলে দেখবেন ঐ নারী অন্তত আপনার সামনে কিছুটা সংযত থাকার চেষ্টা করছে। কারন পর্দা করা নারীর(সব দেশের) সহজাত বৈশিষ্ট।( অবশ্য তার অন্য কোন উদ্দেশ্য না থাকলে)

১০| ০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: @ শতদ্রু একটি নদী... ভাই

এই কারণটা আপনি নিজেই!

চমকে উঠলেন? হ্যা। রুহের জগতে আমরা ছিলাম স্বাধীন। তখন রুহেরা পরস্পর প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হল আল্লাহর কাছে দেখাতে বোঝাতে সে আল্লাহকে বেশি ভালবাসে পছন্দ করে, আনুগত্য করে।

এই প্রতিযোগীতা যখন চরম রুপ লাভ করে- তখন আল্লাহ তাদের থামিয়ে দেন। থামো - তোমাদের আমি দুনিয়াতে পাঠাবো কিছূদিনের জন্য। যাতে জানতে পারি কে শ্রেষ্ঠ। কে আমার আনুগত্যে অটল থাকো আর কে থাকোনা!

সেই প্রতিযোগীতা আমি আপনি করেছীলাম বলেই আজ এই কষ্টের কারাগারে পরীক্ষাধীন।

আবার সবচে মজার অনেকে ভূলেও বসে আছি যে আসলেই আসছি পরীক্ষা দিয়ে চলে যেতে!
পরীক্ষার হলে গিয়ে যেমন বসবাস করা যায় না- পরীক্ষা দিয়েই চলে আসতে হয়! আমার হলটাকে চূড়ান্ত ধরে চলে যাওয়ার কথা ভুলে বসে আছি!
যদিও তাতে কেউই থাকতে পারছে না। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় চলে যেতেই হচ্ছে! কিন্তু থকন আর সময় থাকছে না। চক্রাবর্তে ততক্ষনে যাত্রা শুরু হয়ে গেছে।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪

যাযাবরমন বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু ভাই, হয়তো আপনার কথা ঠিক।
যদিও আমি মনে করি রুহ কোন বস্তু নয়, যদিও আজকাল অনেকেই একে ভরসম্পন্য বস্তু বলে প্রমান করতে চাচ্ছে।
কারন আল্লাহ-তায়ালা নিজেই বলেছেন "রুহ তার আদেশ মাত্র"। আমি মনে করি আল্লাহ-তায়ালা কোন কারনে শুধুমাত্র তার সৃস্টিকর্মের উপর অন্যদের ভাগ দিতে চাচ্ছেন। (জমীদারের জমি প্রজাদের বন্টন করা দেয়ার মত।)
এখন এই সৃষ্টির পজিটিভ-নেগেটিভ ২ ধরনের অংশই রয়েছে, আর আল্লাহ-তায়ালা সবাইকে এক দরে সমান ভাগ করে দিতে চান না। তাই দুনিয়ার এই পরীক্ষা ক্ষেত্র তৈরি করেছেন। এখানের পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে মানুষ ও জিন কে তার সৃষ্টি থেকে পজিটিভ(বেহেস্ত) ও নেগেটিভ(দোজখ) ভাগ করে দেয়া হবে।
আর রুহ হচ্ছে এই অংশিদারীত্বের আদেশের নাম। যা একটি খাতা বা মেমোরি-স্পেসে লেখা আছে।
এগুলো সবই আমার নিজের কথা। কোন প্রমান নাই।

১১| ০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৪

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: ভৃগু ভাই,

কোন স্পেসিফিক রেফারেন্স আছে এই রুহের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবার ব্যাপারে? আয়াত কিংবা হাদীস আছে?

১২| ১৯ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:২২

জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেছেন: ভাই অসাধারণ লেখা, একবার পড়লে সব কিছু বুঝা যাবে না, তাই বার বার পড়তে হবে,++++++++++++++++++++++++

১৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩০

দরবেশমুসাফির বলেছেন: চমৎকার লেখা।

১৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: @ শতদ্রু একটি নদী...
রুহের জগতে কথোপকথন এবং সেই মূল সূত্রটা খূঁজতে সময় লাগবে।

আপাতত কোরআনের একটা আয়াত দেখূন যেখানে সকল রুহের অঙ্গীকার নেয়ার কথা আছে-..

رَبُّكَ مِن بَنِي آدَمَ مِن ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَى أَنفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ قَالُواْ بَلَى شَهِدْنَا أَن تَقُولُواْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَذَا غَافِلِينَ (172
আর যখন তোমার পালনকর্তা বনী আদমের পৃষ্টদেশ থেকে বের করলেন তাদের সন্তানদেরকে এবং নিজের উপর তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করালেন, আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই ? তারা বলল, অবশ্যই, আমরা অঙ্গীকার করছি। আবার না কেয়ামতের দিন বলতে শুরু কর যে, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।

সকল রুহকে একত্রে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে - আলাসতুবিরাব্বিকুম? আমি কি তোমাদের প্রভূ নই?
সকরেই সমস্বরে উত্তর দিয়েছে ক্বালু বালা! জ্বি! নিশ্চয়ই আপনি!
এবং আরো মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে- এটা করা হল এ জণ্যে যাতে কেয়ামতের দিন কেউ বলতে না পারে- এ বিষয়তো আমাদের জানা ছিল না।!!

ঐ সময়েরই আগে পরে- রুহের ঐ প্রতিযোগীতা হয়েছিল! সকলেই নিজেকে আল্লাহর প্রিয়তম হিসাবে নিজেকে উপস্থাপনে ক্রেজি হয়ে পড়েছিল।
আরো ডিটেইলস পেলে শেয়ারের ইচ্ছা রইল।

২০ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:২৫

যাযাবরমন বলেছেন: এই আয়াতটা আসলেই কি রুহ নিয়ে বলা হয়েছে?
অনেক আলেম রুহের কথা বললেও নবীজী (সা: ) রুহ-এর কথা বলেন নাই।



আর আমার কথা যদি বলেন তাহলে বলবো, এখানে আসলে বনি-আদমের কোন গোষ্টির মানুষদের কথা বলে হয়াছে।

১৫| ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৫২

বিন এনাম বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু ভাই, শায়খ মুহাম্মদ আল-গাযালী বিরচিত 'আকীদাতুল মুসলিম' বই থেকে কিছু লাইন তুলে ধরলাম। সেখানে তাকদির বা ভাগ্যলিপি অনুচ্ছেদে এখানে আমাদের স্বাধীনতা শিরোনামে এই কথা গুল লেখা রয়েছে, "তাকদীরের দ্বিতীয় অংশ আমাদের বাস্তব কর্মজীবনের সাথে সম্পৃক্ত। এ ক্ষেত্রে আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীন। আমরা যখন কোন কাজ করি তখন পরিস্কারভাবে অনুভূত হয় যে, আমাদের বুদ্ধি-বিবেক জাগ্রত আছে, অন্তর সতর্ক আছে এবং আবেগ গতিশীল রয়েছে।

কর্মময় জীবনে আমরা কতটুকু স্বাধীন? আমাদের কর্মতৎপরতায় আমরা কতদূর স্বাধীনতা ভোগ করি? আমরা নিজেদের কাজকে তাকদীরের সাথে সংশ্লিষ্ট করে থাকি –এর অর্থইবা কি?

ব্যাপারটি অত্যন্ত সহজ। ইনশাআল্লাহ এ সম্পর্কে আমরা এমন আলোচনা করব যাতে বিবেক-বুদ্ধি আলো পেতে পারে, অন্তর প্রশান্তি লাভ করতে পারে এবং এ সম্পর্কে যাবতীয় সংশয় ধূলির মত উড়ে যায়।

যেসব কাজ আমাদের ইচ্ছা ও এখতিয়ারাধীন তা করতে গিয়ে আমাদের পরিস্কার মনে হয় এগুলো আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে করে যাচ্ছি এবং এ ব্যাপারে আমরা পূর্ণ কর্তৃত্বের অধিকারী। আমরা ইচ্ছা এবং কর্মক্ষেত্রে স্বাধীন –এটা মেনে নেওয়ার জন্য আমাদের এই অনুভূতিই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু কোন ব্যক্তি বলতে পারে না, তা যথেষ্ট নয়। কারণ অনুভূতিও কোন কোন সময় ভুল করে বসে। সুতরাং কেবল অনুভূতির ওপর নির্ভর করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে না।

সর্বপ্রথম আমাদের দেখা উচিত এ সম্পর্কে কুরআন মজীদ আমাদের কি বলে? এই দৃষ্টিকোণ থেকে যখন কুরআন অধ্যয়ন করি তখন আমরা আশ্বস্ত হয়ে যাই যে, আমাদের এই অনুভূতি নির্ভুল। যারা অনুভূতির এই সাক্ষ্যকে গুরুত্ব দিতে চায় না তাদের অনুসৃত পন্থা সঠিক নয়। কুরআন এই অনুভূতির ওপর জোর দিচ্ছে এবং মানবীয় ইচ্ছার স্বাধীণতা ঘোষণা করছেঃ

(আরবী**************************************************************************************)

পরিস্কার বলে দাও, এই মহাসত্য তোমাদের রবের কাছ থেকে এসেছে। এখন যার ইচ্ছা মেনে নেবে, আর যার ইচ্ছা অমান্য বা অস্বীকার করবে।–সূরা কাহফঃ ২৯

কুরআন এ কথাও ঘোষণা করেছে যে, মানুষ নিজের ইচ্ছায় যা কিছু করে তার জন্য সে নিজেই দায়ী এবং একদিন তাকে এজন্য জবাবদিহি করতে হবে।

(আরবী*************************************************************************************)

বল, হে লোকেরা! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের কাছ থেকে প্রকৃত সত্য এসেছে। এখন যে লোক সোজা পথ অবলম্বন করবে, তার এই সোজা পথ অবলম্বন তার জন্যই কল্যাণকর হবে। আর যে ব্যক্তি পথভ্রষ্ট হবে, তার গোমরাহী তার জন্যই ক্ষতিকর হবে। আমি তোমাদের উপর কোন কর্তৃত্বধারী নই।–সূরা ইউনুসঃ ১০৮

এই দীনের প্রকৃতি হচ্ছে কষ্ট স্বীকার এবং পরীক্ষার সম্মুখীন হওয়া। মানুষের যদি স্বাধীনতাই না থাকে তাহলে পরীক্ষার প্রশ্ন আসে কি করে? আর পুরস্কার বা শাস্তির প্রশ্নই বা কি করে উঠতে পারে, যদি তার সামনে স্বাধীনভাবে কাজ করার বিস্তৃত ক্ষেত্র না থাকে? কুরআন মজীদে এ সম্পর্কে যেসব আয়াত এসেছে এখানে তার উল্লেখ করা প্রয়োজন নেই। কেননা গোটা কুরআনই এই সত্যের প্রমাণ বহন করছে।

আমাদের যাবতীয় কাজকর্মের সংবাদ কি পূর্ব থেকেই আল্লাহর জ্ঞানে রয়েছে? তিনি কি আগে থেকেই জানেন আমরা ভবিষ্যতে কি করব? হ্যাঁ, তিনি আমাদের সবকিছুই জানেন। আমাদের কোন কাজই তাঁর জ্ঞানসীমার বাইরে নয়।

(আরবী***********************************************************************************)

এ সম্পর্কিত জ্ঞান আমার প্রভুর কাছে একটি গ্রন্থে সুরক্ষিত রয়েছে। আমার প্রভু পথহারাও হন না এবং ভুলেও যান না। -সূরা ত্বাহাঃ ৫২

কিন্তু এ দুটি জিনিস একই সময় কি করে সম্ভব হতে পারে যে, আমাদের ইচ্ছা ও কর্মের স্বাধীনতাও রয়েছে আবার আমাদের কোন কাজই আল্লহার জ্ঞানসীমার বাইরেও নয়? এর জবাব অত্যন্ত সহজ। তুমি নিজের চেহারাকে বিকৃত করে একটি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যাও। তুমি নিজের হাতে নিজের চেহারাকে যেভাবে বিকৃত করেছ –আয়নার মাঝে ঠিক সেই দৃশ্যই দেখতে পাবে। এখানে আয়নার কি দোষ? সে তো তোমার সামনে তোমার অবিকল চেহারাই তুলে ধরছে। পক্ষান্তরে তুমি যদি তোমার হাস্যোজ্জ্বল চেহারা আয়নার সামনে তুলে ধরতে তাহলে সে তোমার চোখের সামনে অনুরূপ জিনিসই তুলে ধরত।

অনুরূপভাবে আল্লাহর জ্ঞান হচ্ছে একটি আয়না স্বরূপ। এর মধ্যে যাবতীয় কাজকর্মের অবিকল দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। কাজের ওপর এর কোন প্রভাব পড়ে না। এই আয়না যাবতীয় কাজের অধীন, কাজ তার অধীন নয়। অথবা বলা যায়, আয়না হচ্ছে কাজের প্রতিবিম্ব। কাজ আয়নার প্রতিবিম্ব নয়। আল্লাহর জ্ঞঅন নামক আয়তার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য এই যে, এর মধ্যে কেবল বর্তমানের দৃশ্যই নয় বরং অতীত ও ভবিষ্যতের দৃশ্যও দেখা যায়।

কোন জিনিস পূর্বে কেমন ছিল, বর্তমানে কিরূপ আছে এবং ভবিষ্যতে কেমন হবে –সব দৃশ্যই এই আয়নায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠে এবং তার অবিকল চেহারাই উদ্ভাসিত হয়।"

১৬| ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:০৯

বিন এনাম বলেছেন: এসব ছাড়াও আমার ব্যাক্তিগত কিছু পর্যালোচনা রয়েছে।

আমাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রন হয়তবা সম্ভাব্যতা বা probability এর নিয়ম অনুসারে বিন্যস্ত। যে কোন কাজেরই আপনার সামনে ২ টি পথ খোলা থাকে, এখন সেই পথের কোন দিকে যাবেন তা আপনার ইচ্ছাধিন। এইটি আল্লাহ্‌র নিয়ন্ত্রন ক্ষমতার বাইরে নয়, তবে তিনি ইচ্ছা করেই আমাদের এই স্বাধীনতা দিয়েছেন, যা স্বল্প বুদ্ধির ব্যাক্তিও বুঝবে।

এমন একটা হাদিস পরেছিলাম, "সকলের জন্যই আল্লাহ্‌ ২টি ঘর বানিয়ে রেখছেন। একটি বেহেশতে আরেকটি দোযখে। বেহেশতে ফেরেশতারা লোকদের স্বাগত জানাবে আর বলবে, ওই দেখো দোযখে তোমার জন্য ওই যন্ত্রনাদায়ক ঘরটি বরাদ্দ ছিল। তখন ব্যাক্তি আল্লাহ্‌র শোকর গুজার করবে। অনুরুপ ভাবে দোযখিদের ফেরেশতারা বলবে ওই দেখো বেহেশতে তোমার জন্য ওই সুখের ঘরটী বরাদ্দ ছিল। তোমার কর্মই তোমাকে এই আজাবে পতিত করেছে।"

হাদিসটি হুবহু দিতে পারলাম না। কারন নেটে খুজেও পেলাম না, আর কোথায় পরেছিলাম সেইটাও মনে নেই। কেউ রেফারেন্স খুঁজে পেলে জানাবেন প্লিজ।

এসব থেকে এই ধারণা গুল কিছুটা ক্লিয়ার হবে আশা করি।

১৭| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৫৯

যাযাবরমন বলেছেন: লেখাটি অনেক আগেই মুছে দিতাম, শুধুমাত্র আপনাদের চমৎকার সব কমেন্টের কারনে মুছতে পারিনা|

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.