নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভূতটির নাম শূন্যতা।সে এই গল্পের কেন্দ্রিয় চরিত্র। কেননা তাদের কার্যক্রম তুচ্ছ করে দেখবার দিন শেষ । একথা এখন আমরা কম বেশি সবাই জানি সৃষ্টির সমীকরণ মিলাতে জড়, জীব ও ভূতের রয়েছে সমান অংশগ্রহণ।
তার কাজ কী? মানুষ ধরে ধরে কিলানো । এতে অবশ্য শূন্যতাকে শুধু শুধু দোষ দেয়া যায় না । ভ্রমাণ্ডের নিয়ম অনুযায়ী এই বেচারার ও আছে একটি যদি” শর্তযুক্ত প্রটোকোল, একটি নির্দেশমালা। সেখানেই লেখা আছে “যদি সুখে জমে যাওয়া মানুষ দেখতে পাও তবে তাদের কিলাও”।
সেরকম একজন ভিকটিম, ইসমত হায়দার । আকাঙ্ক্ষিত নারী, ছয় সংখ্যার বেতন, ভবিষ্যৎ বংশধর , বয়স , স্বাস্থ্য , সৌন্দর্য কি নেই তার ! চিন্তা নেই, ভাবনা নেই, চাপ নেই ,তার সংসার যেন জমা হিমবাহ। সংগত কারণেই শূন্যতা এখন তার উপর সকাল দুপুর চাউর।
অসহ্য হয়ে হায়দারের দেহ মনেও এখন প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে । তার উত্তেজনা চাই । উত্তেজনা ! মাথার ভেতর, বুকের মাঝে । ভয়, আনন্দ আর নিষিদ্ধ ধুপ ধাপ চোরা হৃদস্পন্দন মানেই তো তো মানুষের বেঁচে থাকা। তাতেই তো জীবন উপচে পড়ে আনাচে –কানাচে । খুশি থাকে ব্যক্তি নিজে আর তা থেকে কুড়িয়ে নেয় আত্মীয় পরিবার বন্ধু।
সে কোন লম্পটতো নয়। নতুন শরীর নয় তার একটা নতুন একটা মন চাই যেটা তাকে রেসে দৌড়ানো ঘোড়ার মত হাঁপিয়ে তুলবে , কখনো জেতাবে কখনো হারাবে কিন্তু ছুটাবে মাইলের পর মাইল।
২।
দেহের যেমন একটা অদৃশ্য আত্মা থাকে। আত্মার ও তেমন একটা অদৃশ্য শরীর থাকে। যার নিজস্ব পছন্দ নিজস্ব বন্ধুতা আছে। যে স্বাধীন ও পরাক্রমী।চাইলেই মাইলের পর মাইল পেরোতে পারে। দেহের মিলনের সময় তার আত্মার প্রয়োজন যতটাই গৌণ, আত্মার মিলনের সময় তার দেহের প্রয়োজন ততটাই মুখ্য। কথাগুলো বারান্দায় দাঁড়িয়ে যখন ভাবছিল শান্তা তখন তার আত্মাটা দিগন্ত পেরিয়ে আকাশের ওপার ছুঁচ্ছিল। হায়দার ফিরে আসার সময় হতেই শান্তা গুলশান তিনের শেষ মাথার বাড়িটায় সেটাকে নামিয়ে আনলো ।
শ্বশুর পক্ষের মানুষের জ্বালা নেই, টাকা নিয়ে চিন্তা নেই,না আছে হায়দারকে নিয়ে অন্যরকম দুশ্চিন্তা। তবু কেন জানি রোজই এইসব ভাবে শান্তা আর কারণ ছাড়াই নিজেকে দুঃখী হিসাবে পায়। এর পক্ষে নানান যুক্তি দেখায় নিজেকে ।তার এখন ক্যারিয়ার বলে কিছু নেই, অভিযোগ , জবাবদিহিতা, বিবাহিত জীবন পুষিয়ে নেয়ার মত অনৈচ্ছিক যৌনতার দিন শুরু হয়ে গেছে বেশ কয়েকদিন হয়, ছোট্ট রেহান ছাড়া বাড়িটা খা খা একটা শ্মশান।স্বামীর অপেক্ষায় প্রায়ই ইলেকট্রিক থামে বসে থাকা দাঁড়কাকের সাথে নিজের কোন অমিল পায় না সে।
হায়দার বাসায় ফিরে। ঘন্টার পর ঘণ্টা তারা একসাথে কাটায়। শান্তার মন তবু কেবলি উইন্ড চাইমের শব্দে উদাস হয়ে যায়। কিছুই এমন হয় নি দুজনের মাঝে তবু দীর্ঘশ্বাস আসে আর তার সাথে তাল মেলায় বেঢপ আকারের টিকটিকিটা।পুতুলের মত শরীর মিলে তারপর দীর্ঘরাত পর্যন্ত টিভি চলে, চলতেই থাকে। হায়দার ঘুমিয়ে পড়ে। কেঁদে উঠা রোহানকে কোলে নিতে নিতে ক্লান্ত শান্তার চোখে পানি জমে উঠে। এসময় অদৃশ্য কে যেন পিঠে একটা আলতো মমতার হাত রাখে। তার চোখের একফোঁটা জল ফোয়ারায় বদলে যায়। এ আর কেউ নয়। আমাদের সেই গুণধর ভূত। একজন রমণীকে তো আর বেঢপ কিলানো যায় না। সেটার কি রমণীয় ধাঁচ ! একটা হাততালি চাই ।
৩। কয়েক মাস পর...
আজ রোজকার নিখুঁত ছবিতে গড়মিল দেখা যায়। অফিস থেকে এসে হাওদারের ক্লান্ত শরীরটা সোফায় এলিয়ে পড়ে নি। অস্থির অস্থিরতা আর চাপা ফুর্তি তাকে চাঙ্গা করে রেখেছে। আহ “প্রীতি” ! অধীনস্থ হয়ে কি তরতাজা অহংকার মেয়েটির। এই মেয়েই জানে কিভাবে পুরুষদের ছুঁড়ে ফেলতে হয় তবে এমন কলায় যাতে তা নিতান্ত তার অনিচ্ছায় আবার তার হাতেই ফিরে যায়। কয়েকদিন হয় একটা ইঁদুর বিড়াল খেলা চলছিল আজ বিকেলে লং ড্রাইভে যেন মোড় ঘুরে গেল।
তার রক্ত পেয়ে গেছে প্রিয় উত্তেজনা ! শিরায় শিরায় তার কী ছুটোছুটি ! কি অদ্ভুত উৎসব শরীর মনের ! ছটফট ছটফট আত্মার খাঁচাময় নাচন। মন আজ তার আদিম ,অস্থির , অসাবধান। কিন্তু শান্তা? হায়দার বাসায় ফেরার আগেই তার এক শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধু শান্তাকে সব জানিয়েছে। আত্মা আর শরীর নিয়ে শান্তার দর্শন আর দুঃখবাদে নয় আজ একটা জাগতিক অস্তিত্বের প্রশ্নে সে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জৈবিক চাহিদার , নিরাপত্তার কিংবা অধিকার হারিয়ে ফেলার দুশ্চিন্তায় চোখের পানিতে নয় । কষ্টে পাথর হয়ে সে প্রস্তুত হচ্ছে যুদ্ধের জন্য।
আর শূন্যতা? এতদিনের মায়া ! তার খুব খারাপ লাগছে । কিন্তু প্রটোকলটাও যে খুব কড়া “যদি অসুখি মানুষ দেখতে পাও তবে স্থান ত্যাগ।"সে দুজনকেই ত্যাগ করল।
।।।
একটা অনেক দীর্ঘ রাইটার্স ব্লকের পর লেখাটি লিখলাম। পোষ্ট করতে গিয়ে দেখি মডেমে টাকা নাই। টাকা লোড করে দেখি ব্রাউজার হ্যাং আর ফ্রিজড পোষ্ট বাটন কাজ করছে না। মোবাইলে পোষ্ট করতে গিয়ে দেখি কিছু এডিট পিসি তে করা ছিল আপডেট নাই। নানান বাধা পেরিয়ে এই পোষ্ট। নিজেকে এখন জম্বি মনে হচ্ছে না। মানুষ মানুষ ফিলিং।
০১ লা আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:২১
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: ধন্যবাদ ডার্ক ম্যান
২| ৩১ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপাতত আপনার ''রাইটার্স ব্লক'' কেটেছে এটাই সুসংবাদ !
লিখাটাও ভাল হয়েছে ।
০১ লা আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:২১
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন
৩| ০২ রা আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৫৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: শূন্যতার প্রস্থানে শূন্য সময় আর অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হয় কেবল। একমুঠো শূন্যতার অধিগ্রহণে একাকী জীবন পায় অশরীরী ভৌতিক বন্ধুতা। ভালো লাগা রইলো লেখায়।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৪৯
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: হাসান ভাই, আপনি যে আমার লেখা পড়েন আমি খুব কৃতজ্ঞ অনুভব করি। ভালো থাকবেন সব সময়।
৪| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৩
তুষার কাব্য বলেছেন: চমৎকার লেগেছে ।
শুভেচ্ছা লেখক কে।
১২ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:৪৭
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ তুষার কাব্য
৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৭
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন: মায়াহীন সম্পর্ক স্বার্থবাদী সময়কে নিয়ে বেচে থাকে নাকি বেঁচে থাকা প্রশ্নই থাকে ৷
অক্ষর থাকুক মনে বা পাতায় ৷শুভকামনা ৷
১২ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:৪৬
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: কেমন আছেন জাহাঙির আলম?
শুভেচ্ছা জানবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৪
ডার্ক ম্যান বলেছেন: গল্পটা জটিল মনে হচ্ছে। আপাতত মাথায় ঢুকতেছে না। পরে আবার পড়তে হবে।
প্রতিটি মানুষের মাঝে শূণ্যতার হাহাকার থাকে। কেউ প্রকাশ করতে পারে আর কেউ তাকে সযত্নে লুকিয়ে রাখে।