নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতদিন লেখার ক্ষমতা থাকবে ততদিনই লিখব, একটুও বেশি না

বঙ্গতনয়

ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি।

বঙ্গতনয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

জেলের বেশে কয়েকদিন সুন্দরবনে

০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ২:২৬

মাগরিবের নামাজান্তে ছইয়ের বাইরে গেওয়া কাঠের এবড়ো থেবড়ো পাটাতনের উপর বসে আছি, আর প্রায় থেঁতলে যাওয়া পায়ের পাতায় হাত বুলিয়ে দেখছি। চারদিকে একটু একটু আঁধার নেমে আসছে কিছুটা ফিকে-ধুসর। আঁধারের এই অচেনা রূপটি কেমন রহস্যময় মনে হতে থাকে। নদীতে জোয়ার লেগেছে। নৌকার পানি সংলগ্ন তলে বঙ্গোপসাগরের বয়ে যাওয়া লোনা জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ সেই সাথে হালকা দুলুনি নূতন এক ছন্দের সৃষ্টি করছে। আমি কবি নই, নইলে দু’ছত্র লিখে নিতুম। তীর থেকে প্রায় ৩০ চল্লিশ হাত দূরে নোঙ্গর করে আছি।

মাঝে মাঝে গভীর বনের দিকে তাকিয়ে গা-টা একটু ছমছম করে উঠছে আবার ভয় পেতে ভালই লাগছে। হাতের কাছে বড় টর্চ থাকলেও দূরে আলো ফেলা যাবে না, আব্বার নিষেধ। তাই মৃদুমন্দ বাতাসে বসে মশার কামড় খেতে খেতে আকাশের তারা গুনছি আর সাত-সতেরো ভাবছি।

হাত দুয়েক দুরেই রান্নার কসরত করছে সমবয়সী মামাত ভাই আলামীন। টিনের উনুনে বোধ হয় কাচা কাঠ ঢুকিয়ে ফেলেছে তাই বার বার চুঙ্গি দিয়ে ফুঁকছে আর ধোঁয়ায় কেঁদে ফেলার মত অবস্থা। কেঁদে কেটে বেচারা কোনমতে রান্না শেষ করে পাশে এসে বসল।

তার কত কথা। “এই কাজ সে কখনোই করতনা। সে কি খারাপ ছাত্র ছিল নাকি? বাবা অচল না হলে আজ সে নাকি আমার মত শহরে এসে পড়ালেখা করত, ইত্যাদি। নিজের কথা, গাঁয়ের কাকে পছন্দ হয় সেসব একনাগাড়ে বকেই চলেছে। আমিও চুপচাপ বসে নয়-ছয় হিসাব মেলানোর চেষ্টা করছি আর হয়তবা অবচেতন মনে কারো কথা উঁকি দিচ্ছে তাতে কি আসে যায় ।

হঠাৎ দূরে ইঞ্জিন-বোটের শব্দে ভাবনায় ছেদ পড়ল। ইঞ্জিনের শব্দের সাথে মানুষের চেঁচামেচি শুনে কান দুটো খাড়া করে কিছু বুঝার চেষ্টা করলাম। একটু পর ভারি টর্চ-লাইটের আলো এসে নৌকার চেহারা অন্ধকারে হঠাৎ জ্বলে ওঠার মত উজ্জ্বল হয়ে উঠল। কিছু টের পাওয়ার আগেই পাশ থেকে আলামিন বলল পার্টি এসেছে পার্টি। জলদস্যুদেরকে জেলেরা ডাকাত না বলে পার্টি বলে থাকে।

(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.