নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেবু লিংক https://www.facebook.com/tashfic007

ভবঘুরে যাত্রি

বিনা অনুমতিতে কিংবা লেখকের নাম বিহিন লেখা কপি করবেননা

ভবঘুরে যাত্রি › বিস্তারিত পোস্টঃ

হেমলক || তাসফিক হোসাইন রেইযা ||

১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:১৫

শেষবার জড়িয়ে ধরেছিলাম মেঘাকে
-তুমি কাঁপছ কেন? আর কেনই বা চোখের কোনে জল?
-সুকান্ত। একটু শক্ত করে ধরবে?
-ধরেছিত সেই কবেই। এবার কি বলবে?
-সূর্য এসেছিলো কাল রাতে? আমার জামায় এখনো রয়েছে তার ঘ্রাণ?
-চুমু খেয়েছিল কি বুকে? তোমার ঘামে করেছিল স্নান?
-তোমার বুকে মুখ লুকাতে দিবে? একটু শান্তি করেছি কতকাল ধরে সন্ধান।
-মেঘা খুঁজেছিলে আমাকে তার ঠোঁটে? ভগবানের দিব্যি করে বলো!
-তোমাকে খুঁজেছিলাম দখিনা বাতাসে। কাল রাতের অন্ধকারে। তুমি লুকিয়েছিলে কবিতায়। যেমন টা সময় হয় তোমার প্রায় সকালে।
-মেঘা। এভাবে তাকিওনা তুমি। তোমার চোখ থেকে ঝরছে অঝোর ধারায় বিষ। তোমার ঠোঁট মৃত্যু কামনা করে আমার। একান্ত গোপনে।
-বিশ্বাস করো। ও এসেছিলো একান্ত নীরবে। ক্ষণিকের জন্য শুধু মুছে গিয়েছিল সিঁথির সিঁদুর লোক-চক্ষুর অন্তরালে।
-কেউ দেখে নিতো? আমার সম্মান অনেক দামি। ভগবান দিয়েছেন পবিত্র উপহার।
-কেউ দেখেনি। শুধু ভগবান বাদে। তিনি হয়তো হেসেছেন কিম্বা কেঁদেছেন তোমার দুঃখে।
-কলঙ্কিনী। তোর চুলগুলো দে। যে চুলের আমি পুঁজ করেছিলাম কখনো। চুমু খেয়েছিলাম সঙ্গম কালে।
-তোমাকে দোহাই লাগে সুকান্ত। শরীরে বড্ড বেদনা। হৃদয়ে এখনো রয়েছে আট বছরের অবহেলার দাগ। খুলে দেখো আমাকে। আমার শরীরের পরতে পরতে লিখা আছে তোমার অবহেলা ধিক্কার।
-বিশ্বাসঘাতিনী চিন্তা নেই। আমি খুন করবোনা তোকে। সেখানে শুধু আমার অধিকার। কারণ মৃত্যু একটি ইচ্ছা এবং খুশির নাম।
-আমাকে শাস্তি দাও। নিজেকে কেন? নিজের অস্তিত্বকে কেন? আমাকে শাস্তি দাও তোমার বিষাক্ত আঙুলে। যা করছে আমাকে অভিশপ্ত, যা করেছে আমাকে অসামাজিক নারী। সুকান্ত আমি শুনেছি। শুনেছি এই আঙুল দিয়ে তুমি লিখেছ সুখ। বিকিয়ে দিয়েছে ঈশ্বরের কাছে নরকের দামে। আমার শরীরের নরম মাটিতে কত হেঁটেছে এই আঙুল। আমার নামে লিখেছে কত বিনিদ্র রাতের কবিতা। সুকান্ত তুমি কবিতায় আমাকে অমর করেছ। আজ না হয় চেপে ধরো গলা। আমার নিশ্বাস, আজ সকালে লিখেছি তোমার নামে। জেনেছেন ঈশ্বর । এবার তোমার জানবার পালা।
-ওকে দেখে লজ্জা করেনি তোমার? অনুতপ্ত হওনি এক মুহূর্তের জন্য? সত্যি করে বলতো তোমার শরীরে কাঁপন উঠেছিল পরিতৃপ্তির?
-আমি বুঝিনি ওগো। ওগো আমি ছিলাম না আমার মধ্যখানে। আমার বিছানা। আমার বিছানা কত রাত কেঁদেছে। কত শীতের রাতে কেপেছে থরথর করে হিমেল বাতাসের ছোঁয়ায়। আমার শিতানের বালিশ নিজেকে ভিজিয়েছে রাতের পর রাত কিন্তু পায়নি তোমাকে। সুকান্ত! তারা তোমাকে পায়নি।
-একি তুমি কাঁদছো কেন? কেঁদোনা প্রিয় মুছে ফেল অভিমান। বারান্দার বাগানটা কি এখনো জীবিত? যেখানে শালিক গাইতো গান? সেখানে রেখেছিলাম একটি গাছ গোপন করে। ঈশ্বর ভালোবাসেন সেটাকে। পান করান কবিদের। তার ফুলে রয়েছে মুক্তি। পৃথিবীর বিশ্বাস অবিশ্বাসের খেলায় এক জাদুকরী বীজয়। এখন রাত। সাদা ফুল গুলোর ফিরে পাওয়া জীবন। বন্ধন ছেড়ে দেও প্রিয়। (মেঘার পেটে হাত রেখে) ওর আগমনের সংবাদ দিতেও কি এসেছিল সূর্য? রাত গুলো ভালই কেটেছে তাইনা? কেটেছে উন্মাদনায়।
-আমাদের মাঝে ছিল যুগান্তকারী অভিমান। আমার সিঁথিতে ছিল দুই কৌটার সিঁদুরের রঙ। যার দুটি নাম। একটি হৃদয়ে, একটি মনে। যুগ যুগ বেঁচে থাকে মেঘার মাথার ঘোমটায়।
-একি? বাচ্চাটা দেখি লাথি মারে পেটে। এখানে আমার দাড়িয়ে থাকার অধিকার নেই। নাহলে ওর পিতা জানাবে ধিক্কার। এসো ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চুমু খাই শেষ বার।
-সুকান্ত। আজ আমি একান্ত তোমার। আমার মন, আমার শরীর, আমার পৃথিবী যাতে রয়েছে একান্ত তোমার অধিকার।
-দেখো আকাশে উঠেছে কি অপরূপ চাঁদ। নিশ্চয়ই সাদা ফুলগুলো ফুটেছে এখন। আমি চললাম। চিবিয়ে খাবো হেমলক গাছ। পান করিব পবিত্র সুধা। কারণ কবিদের আছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আজন্ম অধিকার।
-যেওনা একটু দারাও। একবার শুধু শেষ বার আমার কথা শোন। দিব্যি রইলো ঈশ্বরের, আমাকে শাস্তি দাও।
-তিনি দেখেছেন সব। বলেছেন, মৃত্যুই এক মাত্র পন্থা তাকে সম্মুখে নালিশ জানাবার। তোমাকে রেখে গেলাম আমার অগোচরে। রবে চিরদিন। বিদায় ওগো, বিদায় নরকে দেখা হলে। আশা করি দেখা হবে চরিত্র অমলিন।
-সুকান্ত। যেওনা তুমি খেওনা বিষ, কষ্ট হবে তোমার।
-মেঘা। অপেক্ষায় রবো। নরকে দেখা করিও সখি।
*
হেমলক || তাসফিক হোসাইন রেইযা ||

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৪

বিজন রয় বলেছেন: কি ধারনা থেকে এমন লেখার জন্ম হলো?

লেখাটির একটি নিজস্ব গতিময়তা আছে।

১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৪৭

ভবঘুরে যাত্রি বলেছেন: রয়েছে কিছু ব্যাক্তিগত চিন্তা ভাবোনা।

২| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৬

কানিজ রিনা বলেছেন: খুব ভাল লাগল।

১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৬

ভবঘুরে যাত্রি বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৪

ধ্রুবক আলো বলেছেন: লেখাটির একটি নিজস্ব গতিময়তা আছে। +

১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪২

ভবঘুরে যাত্রি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৩১

রিকতা মুখাজীর্র্ বলেছেন: লেখা টা বেশ অন্যরকম.ভালো লাগল।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৩৩

রিকতা মুখাজীর্র্ বলেছেন: লেখা টা বেশ অন্যরকম.ভালো লাগল।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৩৩

ভবঘুরে যাত্রি বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.