নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেবু লিংক https://www.facebook.com/tashfic007

ভবঘুরে যাত্রি

বিনা অনুমতিতে কিংবা লেখকের নাম বিহিন লেখা কপি করবেননা

ভবঘুরে যাত্রি › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুঃস্বপ্ন || তাসফিক হোসাইন রেইযা ||

২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৪৬



আমায় প্রেম করেন বাপু? আমায়? ( প্রশ্নটি করে এক মুখ হেসে নিল শিউলি )। আপনাদের আমার মত মেয়েকে প্রেম করা যায়না। আপনারা আসবেন বসবেন। কতক্ষণ আমার উপরে উঠে আমার ভেতরে ভিতর প্রবেশ করবেন। তারপর বের হলে টাকা দিয়ে চলে যাবেন।
এইসব প্রেম-ট্রেম শিউলি করেনা। এখন জলদি কাজ সেরে উঠে পড়েন তো দেখি।
ওর সামনে বসা লোকটা ঠাই বসে ওর কথা শুনছে আর মনে মনে বলছে ( শালি বেশ্যার দেমাগ দেখো কত। করবি বেশ্যাগিরি দাম দেখাবি রাজ রানির)। পকেটে হাত দিয়ে ১০০ টাকার তিনটা নোট রুপার দিকে বারিয়ে দিয়ে বলে
-নে আজকে আর সময় নাই। আমি যাই।
-ঠিকাছে যান তাইলে। শুনেন ঘরে গিয়া বউরে প্রেম করেন গিয়া। বেশ্যাদের সাথে শোয়া যায় প্রেম করা যায় না।
*
সকালের মিষ্টি সূর্যের আলো জানালার ফাঁক দিয়ে ঢুকে রুপার চেহারায় পরে রুপার ঘুম ভেঙ্গে যায়। রুপা ছটফট করতে করতে বিছানায় উঠে বসে। আজকে রাতে আবার সেই দুঃস্বপ্ন। আবার সেই পতিতা পল্লীর রাত। বেশ কিছুদিন ধরেই দেখছে এগুলো। যেন ঘুম হলেই ও চলে যায় অন্য একটি জীবনে। যেখানে ও ওর নিজের ভিতর থাকে না। ওকে যেন বাঁচতে হয় অন্য একটা অচেনা মেয়ের জীবন। ও প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই মেয়টির চেহারাটা মনে করতে চায়। কিন্তু মনে করতে পারেনা। মূলত কখনো ও মেয়েটিকে দেখেনি। কারণ ও নিজেই থাকে মেয়েটার চরিত্রে। ওর মনে শুধু একটাই চিন্তা ঘুরতে থাকে। দুঃস্বপ্ন মানুষ দেখে কিন্তু তাই বলে প্রতিদিন? ওর বয়স টা খুব একটা বেশিও নয় কিছুদিন আগে ১৮তম বসন্ত পার করেছে। যদিও ওকে দেখতে ২২ বছরের মেয়ের মতো লাগে। ওর আপন বলতে শুধু ওর মাই আছে। ওর বাবার ব্যাপারে ও তেমন টা জানেওনা। কখন দেখেওনি। ওর মার কাছে জিজ্ঞেস করলে ব্যাপারটা কেমন যেন এড়িয়ে যেতে চায়। শুধু বলে ওর বাবা ওর ছোটবেলায় ওদের ছেড়ে চলে গেছে। এমনকি ওদের গ্রামের বাড়িতে ওর মা ওকে কখনো নিয়ে যায় নি। শহরে একটা সাবলেট বাসায় ওরা দুইজন মা মেয়ে থাকে। ওর মায়ের গার্মেন্টসে কাজ করার বেতনে ওদের সংসার টেনেটুনে ভালই চলে যায়।
*
দুঃস্বপ্নের কথা চিন্তা করতে করতেই ওর মনে হয় ওর কলেজে যাবার সময় হয়ে গেছে।
*
দিন গুলো একে একে চলে যেতে থাকে। ওর মনে হয় ওর স্বপ্ন গুলো আস্তে আস্তে সামনের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে । প্রতিদিন একটু করে নতুন দিনের সূচনা করছে সেই শিউলির ( নাকি ওর নিজেরই ) জীবন। যে পৃথিবীকে দেখায় সে ভালো আছে অন্য দিকে একাকীত্বের সময় নীরবে অশ্রু ঝরায়। কারণ তার পৃথিবীটাই এমন মানুষ দিয়ে ঘেরা যেখানে দুঃখের কোন দাম নেই। সে একটি পণ্য আর তার ক্রেতারা সবসময়ই চায় একটি হাসি মুখ এবং একটি অ-ক্লান্তিকর শরীর। মনে হয় তারা দুঃখ দিয়ে সুখ কিনতে আসে। যদিও পৃথিবীর সবাই মূলত দুঃখ দিয়ে সুখটাই কিনতে চায়। সুখ যেন সেই রূপকথার সাপের মনি। যার খোঁজে মানুষ জন্ম থেকে জন্মান্তর পার করে দেয় কিন্তু পায়না। নাকি কোন গভীর নল কুপ যার পূর্ণতা পাওয়া অসম্ভব। অবশ্য ভালোবাসার মধ্যে মানুষ সুখ দুঃখ দুটোরই পূর্ণতা পায়। হয়তো তাই বলা যায় ভালোবাসা এমন একটা রোগ মানুষের জীবনের এমন একটা অংশ এর থেকে আপনি যতই দূরে থাকতে চাবেননা কেন এর কাছে এসে একদিন আপনার মাথা নত করতেই হবে। যেন ভালোবাসার মধ্যে স্বয়ং ঈশ্বর এর বসবাস করে থাকে। রুপার স্বপ্নে আসা শিউলি নামের মেয়েটির সাথেও তেমনি হয়। সে চেয়েছিল ভালোবাসা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে কারণ সে জানতো এখন মূলত ভালোবাসা বলতে মানুষ যৌন খুদা কেই বুঝায়। ভালোবাসার নাম করে সবাই চায় বিনা পয়সায় তার ভিতর প্রবেশ করতে। কিন্তু শিউলি কাওকে সে সুযোগ কখনো দেয়নি। তার মতে তাদের ভালোবাসায় বিশ্বাস করলে হয়তো মনের শান্তি মিলবে কিন্তু তা হবে ক্ষণিকের অন্যদিকে পেটের শান্তি মিলবেনা । প্রকৃত পক্ষে আমরা সবাই এক মাত্র পেটের জন্যই টাকাকে ঈশ্বর এর স্থানে বসিয়ে উপাসনা করে থাকি। যাজ্ঞে যা বলছিলাম শিউলির নিজেকে ভালোবাসা থেকে দূরে রাখার চেষ্টার পরেও সে একজন কে ভালোবেসে ফেলে। আসলে সেটা ভালোবাসা কিনা তা ও নিজেও জানেনা কিন্তু লোক টাকে সে বিশ্বাস করে। অবশ্য ভালোবাসার সূত্রপাত বা মুল ভিত্তিটাই হচ্ছে বিশ্বাস। তাই হয়তো সে ছেলেটিকে বলেছিল
-এই পথে আসার পরে আমাকে একটা জিনিস বার বার বলে দেওয়া হয়। সেটা হচ্ছে খদ্দের এর সাথে কখনো সম্পর্ক করবোনা। বেশ্যাদের কেউ ভালোবাসে না। সব বিনা-পয়সায় খাওয়ার ধান্দা।
-দেখো শিউলি তুমি আমাকে বিশ্বাস করতে পারো। আমি তোমাকে সত্যি ভালোবাসি।
-হ্যাঁ আমি আপনাকে বিশ্বাস করি।
*
এভাবেই রুপা বাঁচতে থাকে স্বপ্ন এবং বাস্তবের মাঝামাঝি জগতে। রুপা মাঝে মাঝেই ভাবে যে এটা ওর মাকে বলবে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সেই চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে এটা ভেবে যে ওর মা ওকে নিয়ে শুধু শুধু চিন্তা করবে। ও সবার মতনই কলেজে ক্লাস করে বাসায় আসে, খাওয়া দাওয়া করে ঘুমায় এবং ঘুমানোর পরে আবার চলে যায় একটি জীবনে যার সাথে ওর বাস্তবের কোন সম্পর্ক নেই।
*
একদিন ওর মা এসে ওকে জানায় ওরা ওদের নিজেদের বাড়ি যাবে। রুপা কথাটা শুনে অবাক হয়ে যায়
-আমাদের নিজেদের বাড়ি মানে?
-হ্যাঁ তোমার বাবার বাড়ি।
-আমার বাবার নিজের বাড়ি আছে তুমি জানাওনি কেন?
-জানাইনি কারণ অনেক আগেই একটা ঝগড়ার কারণে আমি তোমার বাবার কাছ থেকে চলে এসেছি। আমি চাইতাম না তুমি ওই লোকটার ব্যাপারে কিছু জানো। কিন্তু এখন যেহেতু লোকটা বেঁচে নেই এবং তার সব কিছু তোমার নামে করে গেছে তাই তোমাকে জানাতে আমার সমস্যা নেই।
-বেঁচে নেই মানে? আর কি সমস্যা?
-হ্যাঁ উনি অনেক আগেই দেশের বাহিরে চলে গিয়েছিলেন এবং গত মাসে মাড়া যান। কিন্তু আজ উনার উকিল আমাকে ফোন করে জানান উনার বাড়ি উনার মেয়ে মানে তোমার নামে করে গেছে। এবং হ্যাঁ সমস্যাটার ব্যাপারে তুমি জানতে চাবানা আসা করি। কারণ সেটা আমি তোমাকে বলবোনা।
রুপা প্রথমে মানা করলেও পরে ওদের নিজেদের বাড়ি গিয়ে উঠতে রাজি হয় কারণ ও সেই নিম্ন মধ্যবিত্ত জীবন বেঁচে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে উঠেছিল।
*
ওরা ওদের বাড়িতে গিয়ে উঠে। বাড়িটায় যেন সব খানেই আভিজাত্যের ছোঁয়া। দোতলা ডুপ্লেক্স একটি বাড়ি। যেখানে এখন রাজত্ব শুধু ওর এবং ওর মায়ের। এখানে আসার পড়ে ও অনেকদিন আর সেই দুঃস্বপ্ন দেখেনি। কিছুদিন তো ও ওর প্রতি রাতের দুঃস্বপ্নের কথা ভুলেই যায়। কিন্তু কিছুদিন নীরবে থেকে হটাত একদিন আবার দুঃস্বপ্ন হানা দেয় । ও দেখে শিউলির সেই প্রেমিক তাকে বলছে সেই নরক থিকে নিয়ে তাদের নিজেদের বাসায় নিয়ে একটি ঘড় বাধার কথা কিন্তু শিউলি রাজি হয়না। কেন যেন তার মন সায় দেয়না। কিন্তু কোন এক সময় শিউলি নিজের প্রেমের কাছে হেরে যায় (ভালোবাসা টা মূলত একটা নেশার মত আমরা যতই চাইনা কে এর থেকে দূরে থাকতে অবশেষে ঠিকি এর সামনে হাঁটু গেরে বসতে হয়)। ও উঠে আসে সেই ছেলেটির বাড়িতে সেই নরকিয় পাড়া থেকে পালিয়ে। রুপার ঘুম ভেঙ্গে যায়। একদিন ও ওর কলেজের সব থেকে কাছের ম্যাডামের কাছে ওর দুঃস্বপ্নের কথা বলে। জানতে চায় তার ব্যাখ্যা। ম্যাডাম শুধু ওকে স্বপ্ন নিয়ে মাথা ঘামাতে মানা করে কারণ স্বপ্ন হলো আমাদের অবচেতন মনের কিছু কাণ্ডকারখানা যা রুপা বিশ্বাস করে কারণ ওর স্বপ্ন গুলোর অনেক কিছুই ওর বাস্তবের সাথে মিলে যেমন ও ওদের যেই বাড়ি টাতে উঠে সেই বাড়ি এবং ওর স্বপ্নে দেখা শিউলির প্রেমিকের বাড়ি প্রায় এক। এটা মেনে নেবার পরে রূপার স্বপ্ন দেখা আবার কমে যেতে থাকে এবং দেখলেও রুপা সেটা নিয়ে তেমন মাথা ঘামায় না। সব কিছু প্রতিদিনের নিয়ম মাফিক চলতে থাকে। হঠাৎ একদিন রূপা আবার প্রতিদিন সেই মেয়েটির স্বপ্ন দেখা শুরু করে। দেখে মেয়েটি আর ছেলেটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতে থাকে। ঝগড়ার একটা পর্যায় মেয়েটি বাসা ছেরে চলে যায়। কিন্তু কি নিয়ে ঝগড়া হয় সেটা রুপা বুঝতে পারেনা কারণ ওর স্বপ্ন সব কিছু আবছা আবছা দেখে তখন। এভাবে প্রতিদিন একি জিনিষ দেখে ও। সেই মেয়েটির উপর করা একটি পুরুষের অত্যাচার যে পুরুষটাই কখন তাকে নরক থেকে স্বর্গে এনেছিল। মেয়েটি মাঝে মাঝে চায় আবার সেই নরকে ফিরে যেতে কিন্তু যায় না।
*
এবং সেই ভয়ংকর রাত। রুপা দেখে শিউলিকে তার প্রেমিক চুল ধরে টেনে আঘাত করে যাচ্ছে। আর ও চিৎকার করে কাঁদছে আর বলছে ওকে ছেরে দিতে। কিন্তু ছেলেটি কোন কথাই শুনছেনা। ওকে টানতে টানতে একটা ঘরে নিয়ে যায়। কিন্তু তারপরে রূপার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ও ঘামে যুব যুব অবস্থায় ঘুম থেকে উঠে। ও দৌড়ে যায় সেই ঘরের দিকে কিন্তু দেখে সেখানে কিছুই নেই। সেখানে কোন ঘর নেই। শুধু একটি দেয়াল। রুপা বুঝতে পারে ও শুধুই একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছে তাছাড়া আর কিছুনা। কিন্তু পরের রাতে আবার সেই স্বপ্ন এবং তারপরের রাত আবার। আর প্রতিবারই সেই ঘড়ের ভিতরে গিয়ে আটকে যায় আর কিছুই দেখতে পারেনা। এবার ও দিনের বেলা হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে ওদের বাড়িতে সেই ঘড়। স্বপ্নে দেখা বাড়ির সাথে ওদের বাড়ির সব কিছু মিল শুধু এই একটা ঘর বাদে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হয় দুপুর গড়িয়ে বিকেল। ওর মা অফিসে যাওয়ার পরেই শুরু করে ওর অনুসন্ধান যদিও ও জানে কিছুই পাবেনা তাও খুঁজতে থাকে। কিন্তু সন্ধ্যায় সব আশা শেষ করে যখনই ভাবে এখানে আসলেই কোন ঘর নেই ঠিক তখনই খেয়াল করে দেয়ালের কণা দিয়ে উঠে আসছে একটি ওয়ালপেপারের কিছু খসে যাওয়া অংশ। ও সেটা টানতে থাকে। কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারে রঙ বা চামড়া জাতিয় কিছু ভারী কিছু দিয়ে দেয়ালকে ঢাকা হয়েছে। ও সেই ওয়ালপেপার টাকে টেনে খুলতে থাকে। কিন্তু কিছু অংশকে অনেক মোটা মনে হয়। মনে হয় এখানে চামড়া জাতীয় কিছু। যদিও ও সেটা এড়িয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরেই পেয়ে যায় একটি দরজা যা একটি কাঠ বোর্ড দিয়ে দেয়ালের সাথে সমান করে ঢেকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তার উপড়ে যেই ওয়ালপেপার ছিল সেটা ওড় কাছে কেমন যেন লাগে যেন এই অংশটা মানুষের শরীরে চামড়া দিয়ে বানানো। ওর বুকের ভীতর কে যেন হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করছে এমন মনে হয় ওর কাছে। ওর মাথায় বিদ্যুৎ এর গতিতে একটা চিন্তা এসে ভর করে। ও কাঁপা কাঁপা হাত দিয়ে চামড়া টাকে টেনে সরিয়ে ফেলে দেয়াল থেকে যদিও ওকে খুব বেগ পেতে হয়। তারপর কার্ট-বোর্ড টি সরিয়ে দরজা খুলতে গিয়ে বুঝতে পারে সেটা তালা মাড়া। ও অনেক চেষ্টার পরেও যখন দেখে সেটা খুলছেনা। দুদিন আগে দেয়ালে পেরেক লাগানোর জন্য আনা হাতুড়ি টা দিয়ে কয়েকটা বাড়ি মেরে তালা ভেঙ্গে ফেলে। দরজা খোলার পরে ওর নাকে একটা গুমোট গন্ধ এসে ঢুকে তাও ও নাক চেপে ধরে ঘরের ভিতরে যায়। কিন্তু ঘড় সম্পূর্ণ অন্ধকার ছিল। ও টর্চ লাইট নিয়ে এসে ঘরের ভেতর দেখতে যায় এবং তখনই দেখতে পায় সেই অনাকাঙ্ক্ষিত জিনিষ এবং ও একটা চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। ওর যখন জ্ঞান আসে তখন দেখতে পায় ও মাটিতে শুয়ে আছে এবং ওর মা ওর পাসে বসে নীরবে কান্না করে যাচ্ছে। ওর মায়ের কাছে ওর প্রথম প্রশ্নই থাকে
-কংকাল টি কার মা?
-আমি যেই সত্য থেকে তোকে দূরে রাখতে চেয়েছিলাম অবশেষে তুই সেটা জেনে গেলি। আমি কখনো ভাবিনি হারামিটা তোর মাকে মেরে এই বাড়িতেই রেখেছে। আমি ভেবেছিলাম অন্য কোথাও পাঠিয়ে দিয়েছে হয়তোবা।
-কি বলছো আমার মা মানে? তাহলে তুমি কে?
-আমি তোর মায়ের বান্ধবী। একি গ্রামে থাকতাম। আমি ঢাকায় এসে কাজ করতাম। একদিন তোর মা কোথা থেকে যেন আমার বাসায় আসে। তুই তখন তোর মায়ের পেটে। ও আমাকে সব বলে যে তোর মা কিভাবে পতিতা হয় কিভাবে তোর বাবার সাথে পরিচয় এবং ও অন্তঃসত্ত্বা হবার পড়ে তোর বাবা যে ওকে মেনে নেয়নি সেটাও। ও আমার সাথে থাকে এবং আমার বাসাতেই তোর জন্ম হয়। কিন্তু একদিন তোর মা হঠাৎ উধাও হয়ে যায় তুই জন্মানোর কিছুদিন পরেই। কোথাও ওর খোজ পাওয়া যায় না। তার কিছুদিন পরেই আমার কাছে একজন লোক এসে বলে সে তোর বাবা। বলে সে শিউলিকে দেশের বাহিরে পাঠায় দিছে। অবশ্য তখনই আমার মনে সন্দেহ হয় যে শিউলির সাথে কিছু অঘটন ঘটেছে। কিন্তু আমিতো গরীব কিছু বলতেও পারিনি। সে আমাকে কিছু টাকা দিয়ে বলে দূরে কোথাও চলে যেতে। তার চোখে যেন কখনই না পরি এবং পরলে আমার বা তোর কারো জন্য ভালো হবেনা। আমি তার কথামত পালিয়ে যাই ওখান থেকে। অন্য একটি জায়গায় গিয়ে তোকে নিয়ে জীবন শুরু করি। কিন্তু টাকা একসময় ফুরিয়ে যায়। তোকে ভালো রাখতে আর পেটের তাড়নাই আমার আবার এই শহরে সহরে ফিরে আসতে হয়। কিন্তু বিশ্বাস কর আমি তোর মাকে অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। শুধু চেয়েছিলাম তোর মাঝেই তোর মাকে বাঁচিয়ে রাখতে।
রূপার মনে হচ্ছিল ও তখনো দুঃস্বপ্ন দেখছে মূলত ওর বাস্তবতা আর স্বপ্ন এক সাথে মিলে গিয়েছিল। যাকে আলাদা করার সামর্থ্য ওর নেই। ও অপলক সেই ঘড়টার দরজার দিকে তাকিয়ে ছিল। যদিও ও জানেনা এমন আরো গোপন দরজা রয়েছে এই বাড়িতে যা হয়তো ও কেন কেওই জানতে পারবেনা।
*
দুঃস্বপ্ন || তাসফিক হোসাইন রেইযা ||

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৩

সাহসী সন্তান বলেছেন: গল্পটা ভাল, তবে লেখার স্টাইলটা পছন্দ হয় নাই। লেখার মাঝে গ্যাপ দেওয়ার ব্যাপারটা সঠিক ভাবে নির্নয় করতে না পারলে যে কোন লেখাই পড়ে মজা পাওয়া যায় না। আপনারটাও তার ব্যতিক্রম নয়!

গল্পের শুরুর দিকটা পড়ে শেষ কিছুটা আন্দাজ করতে পারছিলাম। তবে পড়ার মাঝে বিরতি দিতে মন স্বায় দেয়নি। হয়তো কাহিনীই বাধ্য করেছিল লেখায় টেনে ধরে রাখতে। গল্পটা আসলেই দুঃস্বপ্নের... :(

শুভ কামনা জানবেন!

২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৩

ভবঘুরে যাত্রি বলেছেন: কথাটা ভূল বলেননি যদিও। অনেকদিন পরে আবার লেখা শুরু করা। মূলত তাই হয়তো গুছিয়ে উঠা হয়নি। ধন্যবাদ।

২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৮

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: এই গল্পের ইতিবাচক দিক হলো, আপনি একটি গল্প লেখার চেষ্টা করেছেন।
যা নিয়ে আপনার আরো কাজ করা উচিত - গল্পের কাহিনী বিন্যাস, সংলাপ, দৃশ্যায়নের সঠিক বর্ণনা এবং নিয়ন্ত্রিত মেলোড্রামা।

শুভ কামনা রইল।

২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৫

ভবঘুরে যাত্রি বলেছেন: শুভ কামনা জনাব।

৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৫

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: পাশাপাশি, পোস্টের শিরোনামে আপনার নাম সংযুক্ত করার প্রয়োজন নেই। কারন পাঠক হিসেবে আপনার নাম আমরা আপনার পোস্টের শিরোনামের নিচেই দেখতে পাচ্ছি :)

আমি কিছুটা সমালোচনা করেছি বলে, আপনি আশা করি আহত হন নি। ব্লগে একটা সময় প্রচুর আলোচনা সমালোচনা হতো, পিঠ চাপড়াচাপড়ির কমেন্টের চাইতে।

শুভ কামনা রইল।

২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭

ভবঘুরে যাত্রি বলেছেন: হাহাহা সমস্যা নাই। মূলত আগে লেখা চুরি হবার কারনে আলাদা করে লেখে দিতাম। মধ্যে খানে সেকারনে অনেক দিন আসিওনাই ব্লগে। ( খারাপ লাগে যখন দুএকটা বাজে লেখা লিখি তাও মানুষ ফেবুতে গিয়ে নিজের নামে চালায় দেয়)। কিন্তু আজ একটু ঘুরে বুঝতে পারলাম। অন্যের নামে কপি হওয়ার ঝামেলা টা এখন কম।
আর সমালোচনে করে যাবেন কারণ জিনিষ টা আমার জন্যই ভালো। ভুল না পেলে ঠিকি বা করবো কি করে।
ভালোবাসা নিবেন।

৪| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৬

কবি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেছেন: অন্যরকম ! তবে ভালো ।

২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০৭

ভবঘুরে যাত্রি বলেছেন: ধন্যবাদ জনাব :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.