নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

পুলহ

পুলহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হে অরণ্য কথা কও

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০১

(বাংলা সাহিত্য অনুরাগীদের কাছে 'বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়' নামটি অতিপরিচিত। সেই মহান লেখকের জন্ম এ সেপ্টেম্বর মাসেই। কথা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ এর জন্মতারিখকে সামনে রেখেই নীচের এই লেখাটি।

গভীর শ্রদ্ধা আর নিখাদ ভালোবাসায় আপনাকে স্মরণ করছি- প্রিয় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়!)


কিছুদিন আগেই ডিসকভারি চ্যানেলে চীনের ইউনান প্রদেশের বনাঞ্চল নিয়ে একটা প্রতিবেদন দেখিয়েছিলো, সেদিন আমার এক চাইনিজ বন্ধুর সাথে কথায় কথায় প্রসঙ্গটা তুললাম। তাকে খুশি করার জন্য প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস আর আবেগ দেখিয়ে গদগদ গলায় বললাম- 'সুযোগ পেলেই চীনের ইউনান প্রদেশ বেড়াতে চলে আসবো। মন ভরে দেখে নেবো তার ঐশ্বর্যশালী আর সমাহিত সেই আশ্চর্য অরণ্য!'

আমার সে কথা শুনে চাইনিজ বন্ধুটি কিছুটা হতাশ হয়েছিলো কি না কে জানে! মহান চীন- বৈচিত্রময় সৌন্দর্য আর সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের দেশ। সেখানে আর সব কিছু বাদ দিয়ে কেউ যদি স্রেফ 'জঙ্গল' দেখার মত একটা বিষয় নিয়ে আহা-উহু শুরু করে তবে চাইনিজরা কেউ কেউ বিরক্ত হলেও হতে পারে!

তবে আমার মত এমন কৃত্রিম আবেগ নয়, গহীন অরণ্য আর পার্বত্য বনাঞ্চল নিয়ে সত্যি সত্যিই মাতামাতি করতে দেখা যায় বাংলা সাহিত্যের একজন শক্তিমান কথাশিল্পীকে। তিনি গভীর অন্তর্দৃষ্টি আর প্রকৃতির জন্য আন্তরিক ভালোবাসা বুকে নিয়ে বনে আর পাহাড়ে ঘুরে ঘুরে বেড়ান। 'বাতাবী লেবুর ফুল নয়, ঘেঁটুফুল নয়, আম্রমুকুল নয়, কামিনীফুল নয়, রক্তপলাশ বা শিমুল নয়, কি একটা নামগোত্রহীন রূপহীন নগণ্য জংলী কাঁটাগাছের ফুলের' সৌন্দর্যে তিনি অভিভূত হন। একই চেতনা থেকে রাজা- রাণী কিংবা রাজ্যজয়ের কোন সম্ভ্রান্ত কাহিনী না শুনিয়ে আমাদেরকে বাংলার সাধারণ মানুষের গল্প লিখে শোনান। অন্যের প্রতি তার প্রবল বিশ্বাস আর মমতার গুণে সাধারণ মানুষের ছোট-খাট আনন্দ বেদনার সে সামান্য জীবনখানাই পরাক্রমশালী, দিগ্বিজয়ী কোন সম্রাটের চাকচিক্যময় আর ঘটনাবহুল জীবনকে পেছনে ফেলে দাঁড়ায়; আমরা নতুন করে আবিষ্কার করি যে- সাধারণের সৌন্দর্যটাই আসলে চিরন্তন, চির-আকর্ষণীয়!

তার কিশোর উপন্যাসগুলোর মধ্যে (খুব বেশি কিশোর উপন্যাস তিনি লেখেনও নি) সবার আগে চলে আসবে "চাঁদের পাহাড়" এর নাম। যাদের হার্টে সমস্যা আছে, বইটি তাদের না পড়াই ভালো! পাতায় পাতায় রোমাঞ্চ, এডভেঞ্চার আর শিহরণ উপন্যাসটিকে রীতিমত নেশার বস্তু করে তুলেছে। কাহিনীর যত গভীরে যাবেন, পাঠকের মনে হবে তিনি উপন্যাসের নায়ক শঙ্করের সাথে সাথে আফ্রিকার আরো, আরো গহীনে ঢুকে পড়ছেন! বইটা এতোটাই জীবন্ত আর বাস্তব যে আপাদমস্তক যান্ত্রিক কোন শহরের ইলেকট্রিক আলো কিংবা আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অত্যাধুনিক সব মোবাইল ডিভাইস- কোন কিছুই আফ্রিকার আদিম অরণ্যের ভয়ঙ্কর সৌন্দর্যটাকে উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাড়াতে পারবে না বলেই আমি বিশ্বাস করি। আমার কাছে আজো বইটার এক একটি পাতা উলটে যাবার অর্থ হোল এক একটা পদক্ষেপ; শংকর আর আলভারেজ এর সাথে আফ্রিকার আরো গভীরে, আরো দুর্গমে প্রবেশ!

এখানে একটা কথা না বললেই না (যেটা আমি নিজেও অনেক পরে এসে জেনেছি এবং এতো অবাক হয়েছি যে বলার নয়!)। বিভূতিভূষণ নিজে কিন্তু কখনো আফ্রিকায় যান নি। চাঁদের পাহাড় পুরো উপন্যাসটি লেখা হয়েছে আফ্রিকা সম্বন্ধে লেখকের নিজের গবেষণালব্ধ জ্ঞান এবং চেনা-পরিচিত আফ্রিকা ফেরত মানুষজনদের সাথে কথপোকথন থেকে আহরিত নানা তথ্য নিয়ে। এ থেকেই লেখক বিভূতিভূষণের শিল্পীসত্তার শক্তিটা সম্পর্কে বোধহয় কিছুটা হলেও ধারণা জন্মে।

সুযোগ যখন পেয়েছিই তখন আরেকটা কথাও বলে নেই- সম্প্রতি কলকাতার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিভূতিভূষণের চাঁদের পাহাড় অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। এতে শংকরের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা গেছে নায়ক দেবকে। আমার কাছে মনে হয়েছে- বইটার পুরো রোমাঞ্চের দশ হাজার ভাগের এক ভাগও সিনেমাটা ধারণ করতে পারে নি। 'বুনিপ' নামের যে রহস্যময় আর শক্তিধর প্রাণীর কথা বইয়ে পড়ে গায়ে কাটা দিয়ে উঠেছিলো, সিনেমায় তাকে অতিকায় এক কোলাব্যাং এর মত হাস্যকর দেখালো। সত্যি কথা বলতে সিনেমার একটা জিনিসই আমার কিছুটা ভালো লেগেছে- আর সেটা হোল 'চাঁদের পাহাড়' গানটি!

বিভূতিভূষণের লেখা আমার আরেকটা যে কারণে ভালো লাগে- সেটা হোল অতিপ্রাকৃত বিষয়-আশয় নিয়ে তার সীমাহীন আগ্রহ। উনার প্রচুর ছোটগল্পে অলৌকিক নানা ঘটনা ঘুরে ফিরে বারবার শুধু এসেছে। সেখানে ভুত-প্রেত সংক্রান্ত চিরায়ত ভৌতিক কাহিনী যেমন আছে, তেমনি আছে অদেখা এক আশ্চর্য রহস্য-জগতেরও গল্প! যে জগতে লেখক প্রেতের ভয় আনেন নি, আনেন নি অনিষ্টের কোন অমঙ্গল! বরং সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীরা যাকে মঙ্গল বলে বিশ্বাস করে, তার স্পর্শ এঁকেছেন; নিজের বিশ্বাস থেকে বলতে চেয়েছেন চিরন্তন মমতা আর তীব্র ভালোবাসার কথা!

তার এমনই অতিপ্রাকৃত দু'টি উপন্যাস দৃষ্টি-প্রদীপ আর দেবযান। দৃষ্টি প্রদীপের নায়ক জিতু অলৌকিক এক ক্ষমতা নিয়ে বড় হয়। ধুলো-কাদার পৃথিবীর সামান্য মানব-জীবন যে আসলে অনন্ত নক্ষত্রবীথির অসীম রহস্যেরই এক অংশ- সেটা জিতুর মত মানুষেরা মাঝে মাঝে অনুভব করতে পারে। এ জীবন যে তুচ্ছ নয়, বরং অলৌকিক এক মহাজাগতিক দীর্ঘ যাত্রার এক অবশ্যম্ভাবী পর্যায়- দৃষ্টি-প্রদীপ কোমল হয়ে জ্বলে ওঠলেই বুঝি কেবল তার আলোতে সে সত্যটা স্পষ্ট হয়!

আমার মতে দৃষ্টি-প্রদীপ উপন্যাস রচনায় লেখকের উল্লেখযোগ্য মুন্সিয়ানা হোল- অলৌকিকত্বের ছোয়াটাকে বজায় রেখেই কঠিন বাস্তবতার এক ছবি একে যাওয়ায়। উপন্যাসের নায়ক জিতু সংসারবিমুখী, কিন্তু পাঠক স্পষ্ট বুঝতে পারবেন- কি গভীর মায়া আর মমতা নিয়েই না সে তার পুরো পরিবারটির নিজের হৃদয়ে ধারণ করে! যে ঈশ্বরের প্রেম আর মহানুভবতায় জিতুকে তীব্র আবেগে উদ্বেলিত হয়ে উঠতে দেখা যায়, সে জিতুকেই আবার বাধা পড়তে হয় নশ্বর এক মানবীর লৌকিক প্রেমে।

দৃষ্টি-প্রদীপের মতনই আরেক অতিপ্রাকৃত উপন্যাস 'দেবযান'। এ উপন্যাসের কাহিনী শুরুই হয়েছে নায়কের মৃত্যুর পর থেকে, ওপারের জগত নিয়ে! সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস যে জন্ম-পুনর্জন্ম, স্বর্গ-নরকের কথা বলে, উপন্যাসেও সেটাকেই অনুসরণ করা হয়েছে। নরকের প্রসংগ এসেছে অবশ্য তুলনামূলকভাবে অনেক কম, বেশিরভাগ ঘটনাই আবর্তিত হয়েছে পরপারের সেই জগতটাকে কেন্দ্র করেই- যেটা জীবজগতের খুব কাছাকাছি। দৃষ্টি প্রদীপে জিতুর মাধ্যমে যে ঈশ্বর অনুসন্ধানের সূচনা করেছিলেন ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষণ, দেবযানে এসে সে ক্লান্তিহীন, দীর্ঘ যাত্রার পরিসমাপ্তি ঘটে। গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র পুষ্পকে দেখা দেন 'তিনি'- যিনি নাকি "বিশ্বের আদি কারণ"; যার ইঙ্গিতেই নাকি পুরো সৃষ্টিজগত জন্ম থেকে জন্মান্তরে বয়ে চলেছে নক্ষত্র-জোৎস্নায় ভাসানো এই অপূর্ব জীবন উল্লাসের স্রোতে!

আমাদের এই দেখা-নাদেখা জগতের যিনি পরম সত্য- সেই চির মঙ্গলময়কে বিভূতিভূষণ নিজেও কি তার উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মতই সারাটা জীবন ধরে অনুসন্ধান করে যান নি? লেখক বিভূতিভূষণ মৃত্যুর বছরখানেক আগে থেকেই সংসারের প্রতি নিরাসক্ত হয়ে ওঠেন, ঠিক তার নিজেরই সৃষ্ট চরিত্র জিতুর মতই! কে জানে- জিতুর মতন তিনিও কোন দৃষ্টি-প্রদীপের সন্ধান পেয়ে গিয়েছিলেন কি না! যার আলোতে হয়তো ওপারে চলে যাওয়া প্রিয় মানুষগুলিকে তিনি দেখতে পেতেন- তার ভাই ইন্দুভূষণ, যিনি অল্পবয়সে মারা যান। কিংবা আদরের ছোট বোন সরস্বতী, যাকে বিভূতিভূষণ ডাকতেন দুর্গা নামে ! অথবা আরেক বোন জাহ্নবী- যে ইছামতী নদীতে ডুবে মারা যায়; হয়তো পরপারে চলে যাওয়া পরম শ্রদ্ধেয় পিতা-মাতা কিংবা মমতাময়ী প্রথম স্ত্রী গৌরী দেবী...

এক জীবনে বিভূতিভূষণ আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন, কিন্তু তার ভেতরকার পবিত্র অনুভূতিগুলোকে হারিয়ে যেতে দেন নি। নরম গলায় নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন- এমন একজন মানুষ, যার জীবনে কোন অপূর্ণতা নেই! আমি নিজে লেখকদের ব্যাক্তিজীবন আর সাহিত্যিক জীবনকে একসাথে গুলিয়ে ফেলার তীব্র বিরোধী, কিন্তু সেই আমিও লেখক বিভূতিভূষণের সাহিত্যিক জীবনের পাশাপাশি ব্যাক্তিজীবনটাকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে অধ্যয়ন করার পক্ষে। লেখক বিভূতি তার লেখা দিয়ে বাংলা সাহিত্যকে যতটা সমৃদ্ধ করেছেন, ঠিক তেমনিভাবে তার নির্লোভ, উদারতা আর সরল-সাদাসিধে জীবনযাপনের আদর্শে সমৃদ্ধ করেছেন মানবতা, নিঃসন্দেহে!

চীনের গল্প দিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম, সেটা দিয়েই শেষ করি! আমি যদি কখনো চীনের ইউনান প্রদেশের অরণ্য-ভ্রমণে যেতে না পারি, তবে তাতে খুব একটা কিছু আসবে যাবে না। কিন্তু বিভূতিভূষণ সেখানে না যাওয়াতে ইউনানের গহীন, রহস্যেঘেরা সে অরণ্যেরই এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলো! একজন সাহিত্যিক সৌন্দর্যকে পরিপূর্ণতা দান করেন। প্রকৃতির কোন শোভা অপরূপ হয়ে ওঠে না যতক্ষণ না একজন শক্তিমান লেখক সেটাকে দেখছেন, প্রকৃতির কোন ঐশ্বর্যই সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠতে পারে না- যদি একজন লেখকের সামনে কখনো সেটা উন্মুক্ত না হয়! জ্বি, লেখকদেরকে এমনই ক্ষমতা দান করা হয়েছে!

সরস্বতী পুজোর সময় জ্যাঠার সাথে নীলকন্ঠ পাখি দেখতে গিয়ে অল্পবয়েসী যে বালকটি একসময় নিজে মুগ্ধ হয়েছিলো, সেই একই মানুষ- আজ প্রায় অর্ধশতক ধরে মুগ্ধ করে চলেছেন বাংলার অগুনতি লেখক-পাঠককে। ব্যাক্তি বিভূতিভূষণ বেচে নেই, কিন্তু তার কোমল অনুভূতিগুলো সব রয়ে গেছে। একজীবন পুরোটা ধরে সৃষ্টিজগতের অপার রহস্যের সন্ধান করে যাওয়া শক্তিমান সে লেখকের ভালোবাসা আর স্বপ্নে মোড়ানো ধুলোমাটির জীবনখানা শেষ হয়ে গেছে সেই বহু আগেই।
কিন্তু আসলেই কি সেটা শেষ, নাকি সবে শুরু?

আমার প্রিয় লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাছ থেকেই আপনারা শুনুন!!

"পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন – মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে, ঠাঙাড়ে বীরু রায়ের বটতলায় কি ধলচিতের খেয়াঘাটের সীমানায়? তোমাদের সোনাডাঙা মাঠ ছাড়িয়ে, ইছামতী পার হয়ে, পদ্মফুলে ভরা মধুখালি বিলের পাশ কাটিয়ে, বেত্রবতীর খেয়ায় পাড়ি দিয়ে, পথ আমার চলে গেল সামনে, সামনে, শুধুই সামনে… দেশ ছেড়ে বিদেশের দিকে, সুর্যোদয় ছেড়ে সূর্যাস্তের দিকে, জানার গন্ডি এড়িয়ে অপরিচয়ের উদ্দেশ্যে…

দিনরাত্রি পার হয়ে, জন্ম মরণ পার হয়ে, মাস, বর্ষ, মনন্তর, মহাযুগ পার হয়ে চলে যায়… তোমাদের মর্মর জীবন-স্বপ্ন শেওলা-ছাতার দলে ভরে আসে, পথ আমার তখনো ফুরোয় না… চলে… চলে… চলে… এগিয়েই চলে…
অনির্বাণ তার বীণা শোনে শুধু অনন্ত কাল আর অনন্ত আকাশ…

সে পথের বিচিত্র আনন্দ-যাত্রার অদৃশ্য তিলক তোমার ললাটে পরিয়েই তো তোমাকে ঘরছাড়া করে এনেছি!…

চল এগিয়ে যাই"

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১৭

জুন বলেছেন: বিভূতিভূষনের চাঁদের পাহাড় সত্যি অনন্যসাধারন এক উপন্যাস । যখন বইটি পড়ি তখন আফ্রিকা ছিল এক অন্ধকার মহাদেশ । প্রতি পদে পদে রোমান্চ । বুনো ফুল লতাপাতার প্রতি আকর্ষন তাঁর রচিত অনেক গল্প উপন্যাসেই দেখা যায় । আমারো অত্যন্ত প্রিয় একজন লেখক ।
আপনার লেখাটি ভালোলাগলো ।
+

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২২

পুলহ বলেছেন: আমার নিজেরো খুব পছন্দের একটা কিশোর উপন্যাস "চাদের পাহাড়"।

অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটা সময় করে পড়ার জন্য। ভালো থাকবেন :)

২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৯

উড়োজাহাজ বলেছেন: আমার এক প্রিয় লেখক, যার কয়েকটা উপন্যাস (একত্রে) আমি গোগ্রাসে গিলেছি। ইয়া মোটা বইটা যতই শেষ হয়ে আসছিল ততই আমার মন খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। কি যে মন্ত্রমুগ্ধ করা অরণ্যের কাহিনী! সত্যি, আমি যদি ঐ কাহিনীগুলোর হারিয়ে যেতে পারতাম। এই নগর, এই সভ্যতা আমার কাছে সেই জীবনের তূলনায় তুচ্ছ মনে হয়।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৬

পুলহ বলেছেন: একেবারে মনের কথা বলেছেন উড়োজাহাজ ভাই :) ধন্যবাদ লেখাটা সময় করে পড়ার জন্য!

৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৪

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: কয়েকটা জায়গায় খটকা আছে| তাঁর বোন স্বরস্বতীকে তিনি দূর্গা নামে ডাকতেন, এটা বুঝলাম না| দৃর্গা চরিত্রটি অকস্মাৎ তৈরী, পত্রিকায় প্রকাশিত যখন হচ্ছিল, তখন চরিত্রটি ছিলই না| পরে তিনি তা যোগ করেন| একটু রেফারেন্স দরকার ছিল|

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৫

পুলহ বলেছেন: আরণ্যক রাখাল ভাই অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটা সময় করে পড়ার জন্য। আপনি ঠিকই বলেছেন- পথের পাচালীর দুর্গা চরিত্রটির কথা প্রথমে লেখকের চিন্তায় ছিলো না, পরবর্তীতে তিনি সে চরিত্রটিকে অপুর বড় বোন হিসেবে উপন্যাসে অন্তর্ভুক্ত করেন। কিন্তু আমি এখানে যে দুর্গার কথা বলেছি- তিনি কিন্তু অপূ-দুর্গার দুর্গা নয়, তিনি ছিলেন বিভূতিভূষণের নিজের ছোটবোন সরস্বতী!

অবসর প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত বিভূতিভূষণের 'কিশোর রচনা সমগ্র' নামক ডিকশনারি সাইজের বইটার শেষে লেখকের যে জীবনপঞ্জি সংকলিত হয়েছে- সরস্বতী/দুর্গার রেফারেন্স সেই বইটি। বইটির ভূমিকা লিখেছেন সৈয়দ আজিজুল হক (বাংলা বিভাগ, ঢাবি)

ভালো থাকবেন। আবার ধন্যবাদ পড়ার জন্য :)

৪| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪২

এহসান সাবির বলেছেন: ভালো শেয়ার।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৬

পুলহ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে এহসান সাবির :)

৫| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৪

রাফিউল আলম ইমন বলেছেন: "পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন – মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে, ঠাঙাড়ে বীরু রায়ের বটতলায় কি ধলচিতের খেয়াঘাটের সীমানায়? তোমাদের সোনাডাঙা মাঠ ছাড়িয়ে, ইছামতী পার হয়ে, পদ্মফুলে ভরা মধুখালি বিলের পাশ কাটিয়ে, বেত্রবতীর খেয়ায় পাড়ি দিয়ে, পথ আমার চলে গেল সামনে, সামনে, শুধুই সামনে… দেশ ছেড়ে বিদেশের দিকে, সুর্যোদয় ছেড়ে সূর্যাস্তের দিকে, জানার গন্ডি এড়িয়ে অপরিচয়ের উদ্দেশ্যে…

দিনরাত্রি পার হয়ে, জন্ম মরণ পার হয়ে, মাস, বর্ষ, মনন্তর, মহাযুগ পার হয়ে চলে যায়… তোমাদের মর্মর জীবন-স্বপ্ন শেওলা-ছাতার দলে ভরে আসে, পথ আমার তখনো ফুরোয় না… চলে… চলে… চলে… এগিয়েই চলে…
অনির্বাণ তার বীণা শোনে শুধু অনন্ত কাল আর অনন্ত আকাশ…

সে পথের বিচিত্র আনন্দ-যাত্রার অদৃশ্য তিলক তোমার ললাটে পরিয়েই তো তোমাকে ঘরছাড়া করে এনেছি!…

চল এগিয়ে যাই"

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৯

পুলহ বলেছেন: :)

৬| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৬

রিকি বলেছেন: বিভূতিভূষণ আমার অনেক অনেক প্রিয় লেখকদের একজন...কিছু কিছু লেখকের লেখনীর মূল বৈশিষ্ট্য তার লেখার ব্লেন্ডটা অনেক দীর্ঘসময়ব্যাপী থেকে যায়...ম্লান হয় না কোনভাবেই. বিভূতিভূষণ সেই রকম মানুষ...পোস্টে অনেক অনেক ভালো লাগা রইল :)

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৫০

পুলহ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটা সময় করে পড়ার জন্য! ভালো থাকবেন রিকি ভাই :)

৭| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৯

নেক্সাস বলেছেন: অ মোর গোপাল....।

বিভুতিভূষণ আমার দৃষ্টিতে সৃষ্ট কথা সাহিত্যিক। কথা সাহিত্যের সুগভীরতার সাথে সাথে বাংলার প্রকৃতি ও জন জীনের খুঁটি নাটি বিষয়গুলো তার লিখনীতে অসাধারণ ভাবে ফুটে উঠেছে। পথের পাঁচালীর মত আরেকটা উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে আসবে কিনা কে জানে।

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৫৬

পুলহ বলেছেন: :)

৮| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার চমৎকার এ লেখাটা পড়ে সত্যিই খুব মুগ্ধ হয়ে গেলাম। একজন কালজয়ী লেখকের প্রতি এ শ্রদ্ধাঞ্জলি খুব ভালো লাগলো।
বেশ কয়েকটা মন্তব্যও খুব ভাল লেগেছে। সেগুলোতে লাইক দিয়েছি।
আপনার আরও কিছু লেখা পড়ার ইচ্ছে ব্যক্ত করে এখানে শুভকামনা জানিয়ে গেলাম।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫১

পুলহ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ খায়রুল আহসান আপনাকে- সময় করে লেখাটা পড়বার জন্য!
অনেক অনেক ভালো থাকবেন :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.