নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

পুলহ

পুলহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফেব্রুয়ারির একুশ এবং ধুঁকতে থাকা কিছু ভাষা

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:২৭



বইমেলার কিছু কিছু স্টলকে চিপসের প্যাকেটের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। বিনা কারণে ফুলে থাকা প্যাকেটগুলোতে যেমন চিপসের চেয়ে বাতাস বেশি, তেমনি সে স্টলগুলোর আশেপাশেও একটা ফাপা ফাপা অবস্থা বিরাজ করতে দেখা যায়। গত বছর বইমেলায় এমনি এক স্টল দেখে সেটার দিকে এগিয়ে গেলাম।
স্টলের নাম আমার এই মুহূর্তে খেয়াল নেই, তবে সেটা আদিবাসীদের প্রকাশিত নানা সাহিত্যকর্ম দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সম্ভবতঃ সময়টা তখন সন্ধ্যের ঠিক আগে আগে; আধো আলো আধো ছায়ায় দেখতে পেলাম অস্পষ্ট, ধুসর বেশ কিছু বই নিয়ে একজন আদিবাসী মানুষ বিরস মুখে প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে আছেন, চোখেমুখে তার জগৎসংসারের প্রতি উদাসীনতার ভাবটুকু স্পষ্ট।
যাই হোক- আমি কিছুক্ষণ এই বই সেই বই নাড়াচাড়া করে শেষমেষ উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট, রাঙ্গামাটি এর প্রকাশিত একটা বই কিনে ব্যাগে ভরলাম। বইয়ের নাম- 'উপজাতীয় রূপকথা, লোককাহিনী এবং কিংবদন্তী'। মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে যখন দিতে যাচ্ছি, তখন পেছন থেকে শুনতে পেলাম কে যেনো বলছে- "আরে ধুর! এইডা চাকমা স্টল। চল, সামনে যাই...." (কোন একটা বিচিত্র কারণে আদিবাসী মানেই আমাদের বাঙ্গালিদের কাছে সে 'চাকমা'। যেন চাকমা ছাড়া আর কোন জাতিসত্তা এ দেশে নেই)

২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে এই ব্লগেই গত কয়েকদিন ধরে একটা প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে- যেটা খুবই স্বাভাবিক। বেশ কিছু তথ্যবহুল ও মানসম্পন্ন লেখাও লিখেছেন অনেকে। নিজের ভাষার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে হোক, আর শ্রদ্ধা জানাবার জন্যেই হোক- সেরকম প্রতিটি লেখাই এই ব্লগ-জগত, অন্তর্জাল, সর্বোপরি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য এক মূল্যবান সম্পদ বলেই আমি মনে করি।
যাই হোক, আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য- বাংলাদেশের বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভাষা এবং তার বর্তমান দুরবস্থা নিয়ে অতি সামান্য আলোচনা। এমন গৌরবোজ্জ্বল একটা সময়ে এসে নিজেদের দুর্বলতা নিয়ে ঘাটাঘাটি করাটা কি আদৌ ঠিক হবে কি না- কে জানে! কিন্তু আমার মনে হয়- আজ হোক, কাল হোক- সে আলোচনা জোরেশোরে শুরু হওয়া উচিত। যে দেশের মানুষ মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বুলেটের মুখোমুখি দাড়িয়েছেন, যারা মায়ের ভাষার স্বীকৃতি আদায় করবার জন্য নিজেদের মাথা উচু করেছেন বারবার- সে জাতি, সে বর্ণমালার ধারক বাহক হয়ে আজ যদি অন্য কারো মাতৃভাষাকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে দেখা লাগে, তাও আবার সেই বাংলাদেশেই- তবে সেটা নিঃসন্দেহে ভাষা শহীদদের অপমান, অপমান একুশের চেতনার!

আর কথা না বাড়িয়ে তবে মূল আলোচনায় প্রবেশ করি।

প্রাথমিক পরিচয়

একেবারে সুনির্দিষ্ট না হলেও- বাংলাদেশে বাংলা ভাষার পাশাপাশি আরো প্রায় ত্রিশটির মতন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর ভাষা রয়েছে বলে মনে করা হয়।

পড়ার সুবিধার জন্য আমি সে ভাষাসমূহ নিয়ে একটা টেবিলের মত বানিয়েছিলাম, কিন্তু সেটা এখানে দিতে পারলাম না। যতবার টেবিলটা দেয়ার চেষ্টা করেছি, পুরো পোস্টের চেহারা ভয়ংকরভাবে 'চ্যাগায়া' [দুঃখিত পাঠক, এই শব্দের পরিশীলিত রূপটি ব্যবহার করতে পারলাম না বলে!] গিয়েছে। শেষমেষ নিচের ক্রম অনুযায়ী বিশটি ভাষা সাজিয়ে আপনাদের সামনে পেশ করছি-

ভাষা-> জাতিগোষ্ঠী-> বাংলাদেশে বিস্তৃতি-> ভাষা পরিবার-> লিপি

১। চাকমা-> চাকমা-> পার্বত্য চট্টগ্রাম-> ইন্দো-ইউরোপীয়-> চাকমা (অব্যবহৃত)/বাংলা/ল্যাটিন
২। সাঁওতালি-> সাঁওতাল-> ময়মনসিংহ, উত্তরবঙ্গ-> ল্যাটিন/বাংলা/দেবনাগরি(ভারত) ইত্যাদি
৩। মারমা-> মারমা-> পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার-> চীনা-তিব্বতি-> বার্মিজ (ভারত)
৪। ককবোরক-> ত্রিপুরা-> পার্বত্য চট্টগ্রাম-> চীনা-তিব্বতি-> বাংলা/ ল্যাটিন
৫। মান্দি-> গারো-> বৃহত্তর ময়মনসিংহ-> চীনা-তিব্বতি-> বাংলা/ ল্যাটিন
৬। কুড়ুখ-> ওরাও-> উত্তরবঙ্গ-> দ্রাবিড়-> দেবনাগরি
৭। সাদরি-> ওরাও, মাহাতো, মাহালি, সিং, রাজোয়ার, পাহান-> ইন্দো-ইউরোপীয়-> বাংলা/ ল্যাটিন
৮। খাসি-> খাসিয়া-> সিলেট-> অস্ট্রো-এশিয়াটিক-> বাংলা(বর্তমানে প্রায় অব্যবহৃত)/ল্যাটিন
৯। ম্রো-> মুরং-> বান্দরবান-> চীনা-তিব্বতি-> ম্রো লিপি
১০। খুমি-> খুমি-> বান্দরবান-> চীনা-তিব্বতি-> --
১১। মুন্ডারি->মুন্ডা-> উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চল, সিলেট জেলার চা বাগান এবং বৃহত্তর যশোর এবং খুলনা জেলায়-> অস্ট্রো-এশিয়াটিক->বাংলা/দেবনাগরি/ল্যাটিন ইত্যাদি
১২। কোচ-> কোচ-> বৃহত্তর ময়মনসিংহ, বরেন্দ্র অঞ্চল-> চীনা-তিব্বতি-> বাংলা
১৩। পাত্র বা লালং-> পাত্র বা লালং-> সিলেট-> অজানা-> নিদর্শন পাওয়া যায় নি
১৪। মৈতেয় এবং বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি-> মণিপুরি-> মৈতেয় মণিপুরি –চীনা-তিব্বতি, বিষ্ণূপ্রিয়া মণিপুরি- ইন্দো-ইউরোপীয়-> মৈতেয় মণিপুরি- বাংলা/মিতেয়ি মায়েক, বিষ্ণূপ্রিয়া মণিপুরি-বাংলা
১৫। লুসাই-> মিজো/লুসাই-> রাঙ্গামাটি, বান্দরবান-> চীনা-তিব্বতি-> বাংলা/ল্যাটিন
১৬। পাংখোয়া-> পাংখোয়া-> রাঙ্গামাটি, বান্দরবান -> চীনা-তিব্বতি-> দেবনাগরি/ল্যাটিন
১৭। চাক-> চাক-> বান্দরবান-> চীনা-তিব্বতি-> ---
১৮। রাখাইন-> রাখাইন-> কক্সবাজার, পটুয়াখালি ও বরগুনা জেলা-> চীনা-তিব্বতি-> বার্মিজ
১৯। ঠেট-> বেদে সম্প্রদায়-> অনির্দিষ্ট-> চীনা-তিব্বতি-> নিজস্ব লিপি নেই
২০। তঞ্চঙ্গা-> তঞ্চঙ্গা-> রাঙ্গামাটি, বান্দরবান,কক্সবাজার-> ইন্দো-ইউরোপীয়-> বর্মি-মনখমের

এখানে উল্লেখ্য, উপরের ভাষাগুলো ছাড়াও কিন্তু বাংলাদেশে আরো কিছু ভাষা দেখতে পাওয়া যায় (উদাহরণ- হাজং, পাহাড়িয়া, মাহালি, বম ইত্যাদি)। কলেবর বেড়ে যাবে দেখে এখানে সেগুলো আর উল্লেখ করলাম না।

আদিবাসী ভাষার বর্তমান অবস্থা

সত্যি কথা বলতে- অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। একটা ভাষা কতটা সমৃদ্ধ- তার একটা মাপকাঠি হতে পারে- সে ভাষার নিজস্ব সাহিত্য-ভান্ডার কতটা ঐশ্বর্যশালী। উদাহরণস্বরূপ চাকমা ভাষার কথা বলা যেতে পারে। বাংলাদেশে সংখ্যার বিচারে চাকমারা সর্ববৃহৎ আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী, 'চাকমা' তাদের মাতৃভাষা। সে ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা 'চাকমা' বর্তমানে আর তেমন ব্যবহৃত হয় না; বাংলা অথবা ল্যাটিন লিপি তার জায়গা দখল করে নিয়েছে। চাকমাদের মাতৃভাষায় সাহিত্য আছে ঠিকই, কিন্তু আশংকার কথা হোল- চাকমা জাতিসত্তার অল্প কিছু মানুষ শুধু সে সাহিত্য সম্পর্কে ভালোমত জানে। 'সিল ইন্টারন্যাশনাল' নামক এক আন্তর্জাতিক ভাষা-ভিত্তিক সংগঠনের জরিপ থেকে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। জরিপে অংশ নেয়া চাকমাদের অর্ধেক লোকের মতামতই হচ্ছে- তাদের নিজেদের ভাষার বেশিরভাগ উপকরণই তাদের নিজেদের কাছে দুর্বোধ্য। জরিপের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ বলেছেন শুধুমাত্র প্রার্থনার সময়েই চাকমারা নিজেদের ভাষা ব্যবহার করেন।
এ তো গেলো বাংলাদেশের সব থেকে বড় আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর কথা, অন্যদের কি অবস্থা? সিলের জরিপ থেকে উঠে এসেছে প্রায় অর্ধেক সাঁওতাল- তাদের নিজস্ব সাঁওতালী ভাষায় পড়তে বা লিখতে পারে না। এখানে উল্লেখ্য- সাঁওতালরা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী।
উত্তরবঙ্গের ওঁরাও জাতিগোষ্ঠীর ভাষা 'কুড়ুখ' আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। একই অবস্থা মিজো বা লুসাই ভাষার। আনুমানিক মাত্র ৬০০ জন প্রতিনিধির এ জনগোষ্ঠী মূলতঃ বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বসবাস করে। খাসি ভাষার অবস্থা বাংলাদেশে আশংকাজনক, হারিয়ে যাচ্ছে কোচ জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষাও। ইউনেস্কো থেকে রাজশাহীর জাতিগোষ্ঠী 'কডা'দের ভাষা অতিবিপন্ন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সব মিলে পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ যে- সৈয়দ শাহরিয়ার রহমান (সহযোগী অধ্যাপক, ভাষাতত্ব বিভাগ, ঢা.বি.) বলেন- গ্রেডেড ইন্টারজেনারেশনাল ডিসরাপশেন স্কেল (ভাষার বিপন্নতা/ দৃঢ়তা মাপার জন্য এক ধরণের মানদন্ড) অনুযায়ী এ কথা বলাই যায় যে বাংলাদেশের সব আদিবাসী ভাষার অস্তিত্বই হুমকির মুখে।

এই অধঃপতনের কারণ

বাংলাদেশের আদিবাসী ভাষাগুলোর এমন অধঃপতনের কারণ হিসেবে খুব স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার প্রসঙ্গটা চলে আসে। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির শিশুরা নিজ মায়ের ভাষায় কথা বলার ক্ষেত্রে প্রথম এবং বোধকরি সব থেকে বড় হোচটটা খায়- স্কুলে ভর্তি হবার পর। জন্মের পর থেকে শতকরা প্রায় ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে যে বাচ্চাগুলো মায়ের ভাষা ব্যবহার করে, সেই তারাই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য বিদ্যালয়ে এসে আবিষ্কার করে- শিক্ষকদের কথা আর তারা বুঝতে পারছে না। তাকে যে বইগুলো দেয়া হয়েছে- সেখানে অবোধ্য সব অক্ষর, তার মায়ের ভাষা থেকে যে বর্ণমালার দূরত্ব যোজন যোজন। সেই আদিবাসী শিশুটি- না শিক্ষক, না ক্লাশের অন্য ছাত্রদের কথা ভালোভাবে বুঝতে পারে, না পারে নিজের শৈশবের হাসি-আনন্দ অন্য শিশুদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে। অনেকে সংগ্রাম করে টিকে থাকে, যারা পারে না- তারা পড়ালেখাই ছেড়ে দেয়।

বেশিরভাগ আদিবাসী ভাষারই নিজস্ব বর্ণমালা নেই- যা তাদের ভাষা সংরক্ষণের কাজটাকে আরো কঠিন করে তুলেছে। ত্রিপুরা, গারো, খাসি, খুমি- এ ভাষাগুলোর কোনটিরই নেই নিজস্ব লিপি। পরিস্থিতি আরো খারাপ মনে হয় যখন আদিবাসীদের আর্থিক অবস্থার বিষয়টি সামনে চলে আসে। যেখানে পেটে ভাত যোগানোর জন্যই দিনরাত সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয়, সেখানে মাতৃভাষার অধিকার রক্ষা করাটা তো একরকম বিলাসিতাই! পূর্বে উল্লেখ করা সিল ইন্টারন্যাশনাল এর জরিপেই সে বাস্তবতা অনেকটা উঠে এসেছিলো- জরিপে অংশ নেয়া প্রায় অর্ধেক সাঁওতালই মনে করেন- নিজেদের ভাষার চেয়ে বাংলা তাদের কাছে বেশি 'প্রয়োজনীয়'। আর সে 'প্রয়োজনীয়তা' থেকেই তারা বাংলা ভাষাকে নিজ ভাষার তুলনায় প্রাধান্য দিচ্ছেন।

সব মিলে ঘুরে ফিরে এগুলোই আসলে ভাষা বিপন্ন হবার পেছনের কারণ।

বিশেষজ্ঞ মত অনুযায়ী সম্ভাব্য সমাধান যা যা হতে পারে

স্পর্শকাতর এ বিষয়টির উন্নয়নে সব ধরণের পৃষ্ঠপোষকতা দান করবার কথা মূলতঃ সরকারের; এ বিষয়ে কাজও যে হচ্ছে না, এমন নয়। তবে সেটা এখনো বলা যায়- আটকে আছে কাগজে কলমেই। খাতা পত্রের সে নীতিও যদি অন্ততপক্ষে দ্রুত বাস্তবায়ন করা শুরু হয়, তাহলেও বিরাজমান পরিস্থিতির অনেকখানি উন্নতি করা সম্ভব। সে উদ্দেশ্যে অনতিবিলম্বে যা যা করা যেতে পারে, সেগুলো মোটামুটি এই-

১. জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর আলোকে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা যার যার মাতৃভাষায় দান করবার জন্য পরিবেশ তৈরি করাটা জরুরি। এ লক্ষ্যে প্রথমেই আদিবাসী ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনা ও সে ভাষার শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। এমন চিন্তাধারা থেকেই স্বল্প পরিসরে প্রথমে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাদরি ও গারো ভাষার শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়েছে, কিন্তু এখনো সেটা পুরোপুরি গুছিয়ে আনাটা সম্ভব হয় নি....

২. ঢাকার সেগুন বাগিচাস্থ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এর কার্যক্রম সম্পর্কে উইকিপিডিয়ার পেইজে উল্লেখ আছে-
"এই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে পৃথিবীর সব ভাষা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হবে। পাশাপাশি হুমকির সম্মুখিন ভাষার বিস্তার ঘটানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। বিভিন্ন ভাষার উপাদান ডাটাবেজে সংরক্ষিত হবে, শ্রবণ-দর্শন যন্ত্রের মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় বা বিলুপ্ত ভাষাগুলোকে দৃশ্যমান করা হবে। থাকবে বিশ্বমানের পাঠাগার, যাতে থাকবে বিভিন্ন ভাষার উপর লিখিত বই, ব্যাকরণ....।" বলার অপেক্ষা রাখে না- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট তার পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে যদি সে অনুযায়ী কাজ করে যেতে পারে, তাহলেই আদিবাসী ভাষা সমস্যার একটা বড় অংশের সমাধান হয়ে যাবে। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠির ভাষার ওপর এই প্রতিষ্ঠানের একটি সমীক্ষা প্রকল্পের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আশা করবো খুব দ্রুত সে প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।

৩. বিদ্যমান অবকাঠামোর আওতায় উপজাতীয় কালচারাল একাডেমির কার্যক্রম আরো শক্তিশালি, আরো বেগবান করা যেতে পারে। এ উদ্দেশ্যে আদিবাসীদেরকে এ প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট করে এগিয়ে যেতে হবে; সাথে থাকবেন এ বিষয়ে অভিজ্ঞরা।

৪. ইলেকট্রনিক কিংবা প্রিন্ট মিডিয়া এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বিভিন্ন জাতিসত্তার ভাষাভাষী মানুষদের সাহিত্য তথা গল্প, গান, কবিতা তাদের নিজ নিজ ভাষায় প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে গ্রহণ করা বিভিন্ন পদক্ষেপ, একই উদ্দেশ্যে স্থাপিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান (যেমনঃ উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি) ও তার কর্মকান্ড সুনির্দিষ্টভাবে আদিবাসী সমাজ পর্যন্ত পৌছে দেবার কাজে মিডিয়ার ভূমিকাই প্রধান। উপযুক্ত পরিসরে ধীরে ধীরে এ চর্চা অব্যাহত থাকলে এবং মিডিয়ার সে অবদান একেবারে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত পৌছে দেয়া সম্ভব হলে- অবস্থার উন্নতি আশা করা যায়।

৫. একুশে বইমেলা কিংবা জাতীয় কবিতা উতসবের মত বড় বড় উপলক্ষ্যে আদিবাসী ভাষা বিষয়ক এ স্পর্শকাতর সমস্যাটির প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া যেতে পারে। আশার কথা হোল- এ ধরণের অনুষ্ঠানগুলোতে আদিবাসী ভাষাভাষীদের অংশগ্রহণ- স্বল্প পরিসরে হলেও- শুরু হয়ে গেছে। ২০০৫ সালের বইমেলাতেই চাকমা ভাষার একটি উপন্যাস এসেছিলো। গত কয়েক বছর ধরে জাতীয় কবিতা উতসবে 'অন্য ভাষার কবিতা' শিরোনামে আদিবাসীদের মাতৃভাষায় কবিতা পাঠের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। হয়তো এমন দিন খুব বেশি দূরে নয়- যখন বইমেলায় মানুষ আর অনাগ্রহ নিয়ে আদিবাসী কোন স্টলের সামনে গিয়ে দাঁড়াবে না, বরং শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় গ্রহণ করে নেবে অন্য নানা জাতিগোষ্ঠীরও অপূর্ব সব সাহিত্য।

শেষ কথা

আমি নিজে ব্যাক্তিগতভাবে অত্যন্ত আশাবাদী একজন মানুষ, তাই নবীজী (সাঃ) এর একটা হাদীস আমার খুব প্রিয়- "তোমরা সহজ কর, কঠিন করো না এবং (লোকদেরকে) সুসংবাদ দাও। তাদের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টি করো না।"[বুখারি ৬৯, ৬১২৫, মুসলিম ১৭৩৪, আহমদ ১১৯২৪, ১২৭৬৩].... চাইলেই এটা নাই, ওটা করা হয় নাই- ইত্যাদি ইত্যাদি বলে খুব সহজে শোরগোল সৃষ্টি করে ফেলা যায়, কারণ সত্যি কথা বলতে আমাদের এই দেশে অনেক কিছুরই অভাব আছে, শুধু অভাব নেই সমস্যার! তাই আমার মতে- যতটুকুই কাজ হয়েছে কিংবা হচ্ছে- সেটাকে আমরা স্বাগত জানাতে থাকি, উৎসাহ দিয়ে যাই; আর যে অংশটুকু হয় নি, অথচ হওয়া উচিত- সেটার জন্য নিজ নিজ জায়গা থেকে যতটা সম্ভব সচেতন থাকার চেষ্টা করি, সুদিন নিশ্চই আসবে!

আর অবশ্যই, অবশ্যই স্বপ্ন দেখি! স্বপ্ন দেখি এমন এক সময়ের- যখন আর কোন আদিবাসী শিশুকে ভাষার জন্য পড়ালেখা ছেড়ে দিতে হবে না। ছোট্ট লুসাই শিশুটিকে তার মা যে ভাষায় রূপকথা শুনিয়ে রাতে ঘুম পাড়াবে, সে একই ভাষা বুকে নিয়ে বাচ্চাটি আনন্দের সাথে সকালে উঠে স্কুলে যাবে। এই দেশেরই এক বাঙালি শিশু যখন আবৃত্তি করবে "আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা ফুল তুলিতে যাই...", তখন ঠিক তারই বয়েসী আরেকজন, এদেশের আরেক প্রান্তে হয়তো পাংখোয়া কিংবা মান্দি ভাষার ছন্দ নিয়ে মেতে উঠবে উচ্ছ্বাসে, খেলায়! প্রথম প্রেমের মাদকতায় যখন কোন বাঙালি তরুণ নিজের মনেই গুন গুন করে গান ধরবে-
"... আপন হারা উদাসী প্রাণের
লহো গো প্রেমাঞ্জলি,
তোমারে রচিয়া ভরেছি
আমার বাউল গানের ঝুলি…।’
ঠিক তখনই, তার মতই কোন খাসিয়া কিংবা চাকমা তরুণী হয়তো নিজেকে সমর্পণ করে দেবে আপন আপন ভাষার ঐশ্বর্যশালী, ঝলমলে কোন প্রেমের কবিতার কাছে .....একসময় যে দেশের মানুষ একগুচ্ছ সাদাকালো বর্ণমালার জন্য নিজেরা রক্তের লালটুকু বরণ করে নিয়েছিলো, সে দেশে, সে ভাষার মানুষদের কাছ থেকে- আমার এ চাওয়া কি খুব বেশি কিছু!

ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল দুঃখিনী বর্ণমালা!

তথ্যসূত্র ও কৃতজ্ঞতাঃ

* প্রথম আলো, যায়যায়দিন, বিডিনিউজ২৪, সমকাল এবং সংবাদ পত্রিকার বিভিন্ন নিবন্ধ ও প্রতিবেদন
* বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ এর অফিসিয়াল সাইট
* শানজিদ অর্ণব এর 'ভাষাকোষ'
* Official site of Ethnologue
* উইকিপিডিয়া
* বাংলাপিডিয়া

মন্তব্য ৪৯ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৪৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪১

অভিমান ইগো এবং ভালোবাসা বলেছেন: একটি উপকারী পোস্ট।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪

পুলহ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সময় করে পড়বার জন্য :)
অনেক ভালো থাকবেন :)

২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪

সুমন কর বলেছেন: এতো কষ্ট করে তৈরি করা চমৎকার পোস্ট আজকাল খুব কম দেখা যায়।
ভালো লাগা রইলো। +।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৫

পুলহ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা :) ভালো থাকবেন।

৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৯

তার আর পর নেই… বলেছেন: হোস্টেলে আমি মাস ছয়েক তিনজন চাকমার সাথে ছিলাম। তাদের কাছে শুনেছিলাম ওদের ভাষাটা শুধুই কথ্য।
কিন্তু আপনি যেরকমটা লিখেছেন এটা খুবই কঠিন। আদৌ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমি বলছিনা পুরোটাই অসম্ভব কিন্তু …

পোস্টে ভালো লাগা রইলো।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩২

পুলহ বলেছেন: "...তাদের কাছে শুনেছিলাম ওদের ভাষাটা শুধুই কথ্য।"- হ্যা, 'চাকমা' লিপি এখন আর ব্যবহৃত হয় না, সে কারণেই চাকমা ভাষায় কিছু একটা লিখতে হলে তারা বাংলা/ ল্যাটিন বর্ণমালা ব্যবহার করে :)
"কিন্তু আপনি যেরকমটা লিখেছেন এটা খুবই কঠিন। আদৌ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমি বলছিনা পুরোটাই অসম্ভব কিন্তু … "- বিশেষজ্ঞগণ এ ধরণের সমাধানই প্রস্তাব করেছেন। কঠিন তো অবশ্যই, আর সে কারণেই প্রচেষ্টাটাও হতে হবে দুর্বার; আমি মনে মনে সেই আশাই করি- যে আন্তরিক চেষ্টাটা অন্ততঃ থাকবে :)

তার আর পর নেই… কে অনেক অনেক ধন্যবাদ! ভালো থাকবেন :)

৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: পড়লাম পোস্টটা । কিন্তু বুঝতে পারছি না কী মন্তব্য করবো! শুধু ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম ।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৬

পুলহ বলেছেন: মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন রূপক বিধৌত সাধু :)
ভালো থাকবেন, অনেক :)

৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২১

উল্টা দূরবীন বলেছেন: পোস্ট ভালোলাগছে।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৭

পুলহ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে উল্টা দূরবীন :) ভালো থাকবেন।

৬| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৪

দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: প্রিয় ভাই আপনার তথ্যবহুল লিখাটি পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম, ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার ব্লগ বাড়িতে আপনার দাওয়াত রইলো

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৭

পুলহ বলেছেন: ধন্যবাদ :) অনেক ভালো থাকবেন ভাই।

৭| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৬

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
চমৎকার পোস্ট।
ধন্যবাদ ||

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৮

পুলহ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ইমরাজ কবির মুন :) অনেক ভালো থাকবেন।

৮| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৫

মহা সমন্বয় বলেছেন: এক কথায় অতি উত্তম পোষ্ট।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০০

পুলহ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ জানবেন মহা সমন্বয় :) সময় করে পড়বার জন্য আবারো কৃতজ্ঞতা।

৯| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০০

কৃষ্ণ কালো বলেছেন: চাকমাদের আমার ভালোই লাগে। ভার্সিটিতে আমার চাকমা জাতির ছেলেটিই আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। তারা যখন আরেক চাকমার সাথে কথা বলে তখন আমরা মজা করেই বলি "ভাই বাংলায বল, আমরাও শুনি, আমরাও হাসি" তখন সে বলছিলো এখানেও যদি বলা বন্ধ করি তাহলে আর চাকমা ভাষা ব্যবহার করবো কোথায়।

তারা বোধয় তাদের ভাষায় ভবিষৎ বুঝতে পারছে।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০৩

পুলহ বলেছেন: আপনার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা শেয়ার করবার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন :)
ভালো থাকবেন ভাই কৃষ্ণ কালো ।

১০| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আমার মনে হচ্ছে, এবারে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে যত লেখা এসেছে, তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্দ্বিধায় সেরাদের মধ্যে একটা।
খুব সুন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তুলে এনেছেন। আমরা একদিন লড়েছি ভাষার জন্য, প্রাণ দিয়েছি এবং এখনও লড়ে চলেছি ভাষার আগ্রাসনের বিরদ্ধে। আমরা রক্ত দিয়েছি ভাষার জন্য। সেই বাংলাদেশে আরেকটা ভাষাভাষী গোষ্ঠী তাদের ভাষা হারিয়ে ফেলবে, এটা মেনে নেয়াটা কষ্টকর। এবং অপমানের। হ্যাঁ, আপনি সঠিক বলেছেন, এটা শহীদদের চেতনার পরিপন্থী।
একটি নিষ্পাপ শিশু কেন জীবনের প্রথমেই ভাষার জন্য হোঁচট খাবে? তার নিজের ভাষায় সে কেন পড়তে পারবে না? ব্যাপারটা অনেকটা আমাদের বাঙালি একটা ছেলের জীবনের শুরুতেই ইংরেজি শেখার মতোই। সেখানে যেমন প্রাণ থাকে না, সেই আদিবাসী শিশুটিরও শিক্ষায় কোন প্রাণ থাকে না।
এখানে একটা ব্যাপার গুরুত্বপূর্ণ যে তাদের নিজের ভাষায় পড়লে তারা চাকরি বা অন্যান্য ব্যাপারে বাঙালিদের সাথে টিকবে কীকরে? সেক্ষেত্রেও তাদের প্রতি একটু নমনীয় হতে হবে।
তবে একথা মানতেই হবে যে কিছু ভাষা হারিয়ে যাবে। গেছেও আগে। এটাই ভাষার ধর্ম। তবে আমরা তাদের সংরক্ষণের একটা ব্যবস্থা অন্তত করতে পারি। আমাদের ইতিহাস এতে সমৃদ্ধ হবে। ইতিহাস! একটা জীবন্ত ভাষাকে আমি ইতিহাসে নাম লেখাতে বললাম!
সবশেষে, পোষ্টটির জন্য ধন্যবাদ

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৪

পুলহ বলেছেন: "এখানে একটা ব্যাপার গুরুত্বপূর্ণ যে তাদের নিজের ভাষায় পড়লে তারা চাকরি বা অন্যান্য ব্যাপারে বাঙালিদের সাথে টিকবে কীকরে? সেক্ষেত্রেও তাদের প্রতি একটু নমনীয় হতে হবে। "- তা তো বটেই, তবে এটা কিন্তু ভাষার বিপন্নতা সমস্যার সমাধান হয়ে যাবার পরবর্তী উচ্চতর পর্যায় আর তখনকার নীতি-কৌশল। আপাততঃ ভাষাগুলোকে বাঁচানোটাই হোল প্রধান চ্যালেঞ্জ...

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৫

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন:

দারুণ পোস্ট দিয়েছেন পুলহ। +

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩২

পুলহ বলেছেন: মন্তব্যে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানবেন কবি :)
এবং অবশ্যই, অবশ্যই ভালো থাকবেন।

১২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:০৪

আহসানের ব্লগ বলেছেন: ধন্যাবাদ

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৭

পুলহ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ সময় করে পড়বার জন্য :)

১৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৪৫

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: যে মায়ের মুখের ভাষার জন্য ২১শে ফেব্রুয়ারির সৃষ্টি আজ তেমন অনেক মায়ের মুখের ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে।

আমাদের দেশের এই হারিয়ে যেতে বসা ভাষা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৩

পুলহ বলেছেন: মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন রুহী আপু :)
আর অনেক ভালো থাকবেন :)

১৪| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৪

অগ্নি সারথি বলেছেন: বেশ ভাল কিছু বিষয় সামনে নিয়ে এসেছেন ভ্রাতা। ভাষা দিবসে এমন একটা পোস্ট লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু ব্যাস্ততার কারনে আর লেখা হয়ে ওঠেনি। তাতে কি? আপনি তো লিখে ফেলেছেন। অনেক ধন্যবাদ।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৪

পুলহ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ সময় করে পড়বার জন্য :) ভালো থাকবেন।

১৫| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০০

হাসান মাহবুব বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ একটা পোস্ট। মায়ের ভাষার মর্যাদা আমরা না বুঝলে কারা বুঝবে? বেঁচে থাকুক, জেগে উঠুক পাহাড়ের শিখরে পতাকা উড়ুক সমস্ত আদী ভাষার।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৬

পুলহ বলেছেন: মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা রইলো হাসান মাহবুব ভাই :) ভাল থাকবেন।

১৬| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৫৯

কল্লোল পথিক বলেছেন: চমৎকার তথ্যমূলক পোস্ট ।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৮

পুলহ বলেছেন: ধন্যবাদ কল্লোল পথিক ভাই লেখাটা সময় করে পড়বার জন্য! ভালো থাকবেন, অনেক :)

১৭| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫১

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অসাধারণ একটি পোস্ট। এমন একটি লেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানবেন।ভালোলাগা ও প্রিয়তে নিলাম।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০১

পুলহ বলেছেন: আপনার মন্তব্যে সব সময়েই অনুপ্রাণিত হই, এবারেও তার ব্যতিক্রম হোল না। অসংখ্য ধন্যবাদ জানবেন আপু সময় করে পোস্টটা পড়বার জন্য।
শুভকামনা :)

১৮| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫২

আহসানের ব্লগ বলেছেন: :)

১৯| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১

জেন রসি বলেছেন: একটি ভাষার আগ্রাসনে অন্য ভাষার বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া নতুন কিছু নয়। ভাষার সাথেও জড়িয়ে আছে রাজনীতি এবং অর্থনীতির ক্ষমতাকেন্দ্রিক খেলা। তাই অনেক ভাষাই হারিয়ে গেছে কালের অন্ধকারে। আবার প্রয়জনে কিছু ভাষা হয়েছে সুপ্রতিষ্ঠিত।

চমৎকার পোষ্ট। এই বিষয়টি নিয়ে আসলেই বহুমাত্রিক আলোচনার প্রয়োজন আছে।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬

পুলহ বলেছেন: "ভাষার সাথেও জড়িয়ে আছে রাজনীতি এবং অর্থনীতির ক্ষমতাকেন্দ্রিক খেলা।"-- ভয়ের জায়গাটা এখানেই; কারণ রাজনৈতিক/ অর্থনৈতিক সে খেলা, সে প্রতিযোগীতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয় অসুস্থ...
অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে সময় করে পড়বার জন্য! অনেক ভালো থাকবেন :)

২০| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪০

তার আর পর নেই… বলেছেন: আপনার এই লেখাটা নিয়ে আমি ভাবছি।
আপনি জানেন কিনা জানিনা প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়েও বেশিরভাগ ইংরেজি বলতে পারেনা। সেখানে আদিবাসীদের জন্য তখন তিনটা ভাষার দরকার পড়বে। না পারবে তারা তখন বাংলা, না পারবে ইংরেজি। তখন তাদের জন্য চাকরির বাজারটাই হাতছাড়া হয়ে যাবে।
আদিবাসীরা অনেকে ভয়ঙ্কর অবস্থায় দিন যাপন করে, সেখানে পড়াশোনা তাদের কাছে বিলাসিতা। আমার বেশ কিছু ফ্রেন্ড চাকরি করেন বিভিন্ন জায়গায়। তাদের কাছেই শুনেছি।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৪

পুলহ বলেছেন: "আদিবাসীরা অনেকে ভয়ঙ্কর অবস্থায় দিন যাপন করে, সেখানে পড়াশোনা তাদের কাছে বিলাসিতা।"-- আপনি ঠিকই শুনেছেন। সে কারণেই তো রাষ্ট্র এবং সংশ্লিষ্ট সকলের তাদের প্রতি আরো বেশি মনযোগ দেয়া উচিত [এ কথা রাষ্ট্রের সব পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যই প্রযোজ্য] আর চাকরির ক্ষেত্রে কিন্তু বাস্তবতাকে মাথায় রেখে- ইতোমধ্যেই রাষ্ট্র তাদেরকে বিশেষ প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। সরকারি চাকরির বেলায় তাদের জন্য বরাদ্দ কোটা ৫% খুব সম্ভব...
এগুলোই যথেষ্ট কি না সেটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে, আরো ভালো হোত যদি আপনার প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ/ একাডেমিক কারো মতামত আমরা এখানে পেতাম। সে যাই হোক- আমার কথা হোল- আপাততঃ ভাষাগুলোকে বাচানো জরুরি! প্রায়োগিক ক্ষেত্রে সেগুলোকে রাষ্ট্র কিভাবে/ কোন পরিসরে ব্যবহার করবে- সেটা হচ্ছে এর পরবর্তী উচ্চতর পর্যায়ের নীতি- কৌশল :)
আপনার আন্তরিক মতামতের জন্য ধন্যবাদ জানবেন। লেখাটা নিয়ে ভাববার জন্য কৃতজ্ঞতা এবং কৃতজ্ঞতা!
ভালো থাকবেন তার আর পর নেই… :)

২১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৫

গেম চেঞ্জার বলেছেন: নৃতাত্ত্বিক গোষ্টির সচেতনতার অভাবে তাদের রত্নভান্ডার খালি হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বড় কারণ হলো মানুষ বড়ই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে দিন দিন।
নিজের আখের গোছা নিয়েই ব্যস্ত সবাই। সমাজ, সংষ্কৃতির বারোটা বাজছে নাকি আটটা বাজছে সে দিকে খেয়াল রাখার সময় কই। আধুনিক ব্যবস্থায় এসে সবাইকে ব্যবহারিক ভাষা ইংরেজির কাছে যেতেই হচ্ছে। এর সংস্পর্শে আসার পর এক বিভ্রমে ঢেকে যায় নিজেদের মগজ। কিছুই করার নেই। সব সময়ের খেলা রে ভাই।

আর অবশ্যই, উপজাতীয় গোষ্টির লোকদের এগিয়ে না আসলে তাদের এই ঐতিহ্য, সংষ্কৃতি, ভাষা হারিয়ে যেতে কেবল সময়ের অপেক্ষা।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫২

পুলহ বলেছেন: " নৃতাত্ত্বিক গোষ্টির সচেতনতার অভাবে তাদের রত্নভান্ডার খালি হয়ে যাচ্ছে। "-- অনেক ক্ষেত্রে কিন্তু তারা বাধ্যও হচ্ছে!
"আধুনিক ব্যবস্থায় এসে সবাইকে ব্যবহারিক ভাষা ইংরেজির কাছে যেতেই হচ্ছে। এর সংস্পর্শে আসার পর এক বিভ্রমে ঢেকে যায় নিজেদের মগজ। কিছুই করার নেই। সব সময়ের খেলা রে ভাই।" -- সহমত
"উপজাতীয় গোষ্টির লোকদের এগিয়ে না আসলে তাদের এই ঐতিহ্য, সংষ্কৃতি, ভাষা হারিয়ে যেতে কেবল সময়ের অপেক্ষা।"-- আসলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ এগিয়ে আসলেই একটা টেকসই সমাধান সম্ভব :)

"এছাড়া বড় কারণ হলো মানুষ বড়ই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে দিন দিন।"-- এই বিষয়ে কিছু কমু না। কারণ আমি নিজেও এই দলে খুব ভালোমত পইড়া যাই :(

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ গেম চেঞ্জার । আশা করছি- খুব দ্রুতই আপনার অভিশপ্ত বটবৃক্ষ পুরোটা পাবো !

২২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৫১

সেয়ানা বলেছেন: আদি বাসি ভাষা নয়। উপজাতি ভাষা হবে। চাকমা, মনিপুরী এদেরকে উপজাতি বলা হয়। তবে পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। এরকম পোস্ট আরো চাই।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৩

পুলহ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য!

২৩| ০১ লা মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:২৫

প্রামানিক বলেছেন: অনেক গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট। ধন্যবাদ

০১ লা মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:১১

পুলহ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন :)

২৪| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: আর ১০০বছর অপেক্ষা ,বাংলা বিলিপ্ত ভাষা হবে

০২ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪

পুলহ বলেছেন: :(

২৫| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৪০

এহসান সাবির বলেছেন: ভালো শেয়ার।

অন্যদের মন্তব্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা উঠে এসেছে।

শুভেচ্ছা।

১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৫৩

পুলহ বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা এহসান সাবির ভাই।
ভালো থাকা হোক সব সময় !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.