নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নেই তো কোন পরিচয়

আহা রুবন

নেই তো কোন পরিচয়

আহা রুবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যক্তিত্বের হিসেব নিকেস

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০২



দবির সাহেব মাঝারি মানের কর্মকর্তা। চার বছর পূর্বে পদন্নতি হবার পরও নিম্নপদস্থদের আচরণ সেই একই। মশা-মাছি ছাড়া অতিরিক্ত কিছু ভাবে না কেউ, ধারণা তাদের — তার আদৌ প্রয়োজন নেই অফিসে — সব ঠিকঠাক চলে যাবে তাকে ছাড়াই। চা চাইলে দেয় সকলের শেষে — তাই বন্ধু-বান্ধব কেউ অফিসে আসতে চাইলে বলেন ‘আমি-তো বাইরে যাচ্ছি, একটু কাজে। তোমার সঙ্গে আমিই না-হয় কোথাও দেখা করি…’

পাতলা শরীর-লম্বা দেহটা, টেনেটেনে পা ফেলেন। মনে হয় সব সময় অদৃশ্য একটি নিচু দরজায় ঢুকছেন। আশপাশ তেমন একটা খেয়াল করেন না। কারণ তাকে কেউ কখনও রাস্তায় নাম ধরে ডাক দেয় না। নামটাও হয়ত জানে না কেউ। অফিসে মাকু সাহেব, আড়ালে — সামনে মেজ স্যার। চোখে একটা চশমা ঢলঢল করে — বহু ব্যবহৃত কাঁচুলির মতো।

নিম্নপদস্থরা কেউ ভুল করলে নিজেই সেগুলো ঠিক করে দেন। এবং ভুলত্রুটির ক্রম উল্লেখ করে সংক্ষেপে প্রতিকারের পরামর্শ বা ব্যাখ্যা লিখে হাতে ধরিয়ে দেন। আর বলেন ‘আমরা যেদিন দেখব ভুল বানান বা ভুলভাবে লেখা বন্ধ হয়ে গেছে, তখন খুশিতে নিজেকেই নিজের পুরস্কার দিতে ইচ্ছে করবে।’ কখনও- বা বলেন ‘নিজের ভুল ধরতে পারার মধ্যে এবং সংশোধন করতে পারায় যে কত আনন্দ…’ কাগজখানা তারা হাতে নেয়, টেবিলে গিয়ে কাঁচা বাজারের ফর্দ তৈরি করে। আরও বেশি ভুল করতে থাকে, যেন তাদের ভুল করতে বলা হয়েছে।

সব কাজ নির্ভুলভাবে করে থাকেন বলে ঊর্ধ্বতনরা তার নাম সহজে মনে করতে পারেন না। পদন্নতির সুপারিশ করতে ভুলে যান। পরে তাকে দেখে জিভে কামড় দেন। দবির সাহেব বলেন ‘ঠিক আছে স্যার সামনেরবার দেখবেন।’

সবাই বলে বউ তাকে দিয়ে নিয়মিত মরা চাল বাছায়, তাই বাসায় দেরিতে ফিরলে মারে — তিনি বাথরুমে বসে কাঁদেন। তার বউ কথায় কথায় ধমকায় এবং সে খুব মোটা মহিলা। ‘মাকু মিয়া বউরে ডরায়… কেননা সে খুব মোটা…’ হি হি করে হাসে সবাই।

একমাত্র ছেলেমেয়েরা তাকে খুব ভালবাসে। চারজন একত্রে ক্যারাম খেলে। ছোট মেয়ে যখন বরিক পাউডার দিয়ে কপালে টিপ এঁকে দেয়, চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকেন।


বাসের অপেক্ষায় থেকে বাসস্ট্যান্ডের চর্মকারের ওখানে জুতোজোড়া কালি করিয়ে নেন প্রয়োজন মতো। আজ তলাটা ঠিক করে কালি করে দিতে বললেন — আঠা খুলে যাচ্ছিল। আঠা থাকবে না বলে ধাপ্পুর ধুপ্পুর কয়েকটা তারকাঁটা মেরে কালি করে দিল সে।

কিন্তু কোথায় বাস! বারবার সময় দেখছিল সবাই। হঠাৎ খবর এল — কিছুক্ষণ আগে ছাত্ররা বাসের হেলপারকে মারধোর করায়, বাস আর চলবে না।

খবরটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে সকলে স্কুটারটায় হামলে পড়ল। দাঁড়ানো ছিল মোটে দুটো। কোনটায় উঠতে পারলেন না। পরে যে কটা এল — ভর্তি হয়ে। মেজাজ চড়তে লাগল।

অন্যদের মতো হাঁটা শুরু করলেন — চৌরাস্তায় গিয়ে একটা কিছুতে চাপবেন। কিন্তু সামান্য পথ হাঁটতে গিয়ে বিপদে পড়ে গেলেন। ব্যাটা আজ এমন করে কাঁটা মেরেছে — বারবার বাঁ পায়ের গোড়ালিতে লাগছে। খানিকটা পথ চলে আসায়, সামান্য রাস্তার জন্য রিক্সাও নিতে পারছেন না। আর রিক্সাও তো চোখে পড়ছে না। আঘাতটা ক্রমশ: অসহ্য হয়ে উঠছে — পেছনে পড়ে গেলেন সবার। মনেমনে ছাত্র, হেলপার, মুচি, জুতো, তারকাঁটা...কে এক চোট নিলেন। যখন চৌরাস্তায় ফিরলেন একদম ফাঁকা — যাত্রী, যান কিছুই নেই। ঘড়ি দেখে চমকে উঠলেন ‘সোয়া দশ!’ ভাবলেন ফোন করবেন স্যারকে, ব্যাপারটা জানাবেন। ফোন বের করতেই সিদ্ধান্ত বদলালেন ‘এত সিনসিয়ারিটির কী আছে? জীবনে তো কোনদিন দেরি হয়নি...যা হবার তাই হবে...গোল্লায় যাক ব্যাটারা...’

একটা স্কুটার এসে সামনে দাঁড়াতেই উঠে বসলেন। কিন্তু ঝামেলা বাধল ভাড়া মেটানোর সময় মিটার থেকে দেড়শ বেশি দিতে হবে।
‘কোন যুক্তিতে আমি বেশি দেব?’
‘এত যুক্তির কথা বুঝি না। দেড়শর এক পয়সারও কমে পারব না।’
‘তুমি কি জোর করতে চাচ্ছো?’ গলা চড়ে গেল তার।
কোন কথা না বলে ড্রাইভার হর্ন দিতে লাগল।
‘পঞ্চাশ টাকা বেশি দিলাম, যা ইচ্ছে তুমি কর...’
ঘার বাঁকিয়ে কিছুক্ষণ চেয়ে রইর সে।
‘জীবনে চড়েছেন নাকি! পায়ে হাটা ভদ্র সা...’ টাকা ছোঁ দিয়ে শাই করে টান দিয়ে চলে গেল।



গেটে ঢুকতে দেখেন দারোয়ান নেই। গেটে একটা কুকুর অন্যটার...শুঁকছে। চিৎকার করে উঠলেন ‘কোথায় ব্যাটা সোলেমান?’
সোলেমান হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে দাঁড়াল।
‘গেট ছেড়ে এত কাজ কোথায় পড়ে থাকে?’

কুকুর দুটো চিৎকার শুনেই পালিয়েছে। দবির সাহেব ভেতরে ঢুকে যান।

পিয়ন দৌড়ে এসে বলে ‘ব্যাপার কী ভাই!’
‘কী জানি, কি একটু পেশাব করতে গিয়েছিলাম — এসে দেখি চেঁচাচ্ছে। বোবার মুখে কথা ফুটলে যা হয়...এখানে তো কেউ গোনে না — গেছিল কোথাও ইন্টারভিউ দিতে, চাকরি হয়নি, এখানে এসে চোটপাট দেখাচ্ছে।’
‘নানা হয়ত চাকরি হয়েছে তাই, সেই ডাঁটে...?’
‘হবে হয়ত...’

মূহুর্তে অফিসে রটে গেল দবির সাহেবের খুব ভাল একটা চাকরি হয়েছে — আর মাত্র কয়টা দিন এখানে তিনি আছেন। শুধু দবির সাহেবের কানে পৌঁছাল না খবরটা। অবশ্য খেয়াল করলেন, সবাই তার টেবিল লক্ষ করছে। তিনি ভাবলেন ধমকা-ধমকির জন্য হতে পারে...



পান-খেকো চুন্নু একটা আস্ত সুপুরি ভাঙ্গার জন্য দরজার ফাঁকে রেখে দরজা দিয়ে চাপ দিচ্ছিল। সেটা দেখে টেবিলে থাপ্পড় দিয়ে উঠলেন...’এসব কী! এটা অফিস না পানশালা?!...’
ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে চুন্নু দরজা ছেড়ে দেয়ায় সুপুরির টুকরোগুলো ঝরঝর করে পড়ে গেল। মুখ হয়ে গেল হা।
‘মুখ ব-ন-দ্ধ করো।’
চুন্নুর সঙ্গে খাতির জমিয়ে যারা পান ধরেছিল — শুকনো মুখে কাগজ হাতড়াতে লাগল।

‘এসো এ-দিকে — এই দরজাটা ক্যাঁচক্যাঁচ করে, দেখেছো ভাল করে দেখো — কেন করে? এখানে চুনের দাগ, এই যে এখানে, ঐ যে কোণাটা, পানের পিকের দাগ, কী, কী এসব?! এটাকে অফিস মনে হয় না — তবে কী মনে হয়, কী মনে হয় — পানশালা...?’
আর আপনার... আপনার এত বানান ভুল হয় কেন? কোনও দিন, কো-নও দিন ডিকশনারি খুলেছেন?...’

বড় সাহেব পিয়নকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন’ধমকা-ধমকি করছে কে?’
‘স্যার — দবির স্যার...’
‘দবির সাহেব যেন কে?’
‘স্যার — মেজ স্যার।’
‘ও হ্যাঁ হ্যাঁ — কিন্তু রাগারাগি করছেন কেন? কার সাথে?’
‘পান খাওয়া নিয়ে — অফিস নোংরা হয় তাই..’
‘ঠিকই করেছেন — ছাগলগুলা পান খায় আর অফিসের পরিবেশ নষ্ট করে...’
‘সাঈদ স্যার, রহমান স্যার কাউকে বাদ দিচ্ছেন না।’
‘কেন তারা আবার কী করল, ওরা তো কাজে গাফলতি করে না...?
‘না স্যার উল্টাপাল্টা করে — মেজ স্যার সব সময় ঠিক করে দেন...’
‘সে কী...?!’
‘স্যার উনার ভাল চাকরি হয়েছে। এখানে আর থাকছেন না।’
বড় সাহেব বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে থাকলেন, মুখে কিছু বললেন না।



লাঞ্চের পর বড় সাহেব টেবিলে এসে দাঁড়ালেন। উঠে দাঁড়ালেন দবির সাহেব।
‘কেমন আছেন দবির সাহেব? শরীর ভাল তো’
‘জি স্যার সব ভাল।’
‘তা বেশ। ছেলে-মেয়েরা?’
‘ভাল স্যার।’
‘ছুটির আগে একটু দেখা করে যাবেন।’
‘ঠিক আছে স্যার।’
ভাবলেন দেরি করার বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করবেন — সবার সামনে বলে জিজ্ঞেস করলেন না।

খানিক পরে বাসা থেকে স্ত্রী ফোন করে বলল ‘পাউরুটি আর ঝোলাগুড় এনো ─ খুব খেতে ইচ্ছে করেছে।’
‘ঠিক আছে ফেরার পথে নিয়ে আসব।’
‘খেজুরের ঝোলা কিন্তু...’
‘ঠিক আছে আনব।’


স্যারের রুমে গিয়ে বসলেন দবির সাহেব। বেল টিপলে পিয়ন দুই হাত ঝুলিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াল।
দু কাপ চা দাও। চা খেতে খেতেই কথা বলি।’ শেষের বাক্যটি দবির সাহেবকে উদ্দেশ করে বললেন। তিনি ঘার নেড়ে সায় দিলেন।

‘দবির সাহেব, ‘আমি হেড অফিসে কথা বলেছি... আপনার মতো দায়িত্ববান, ব্যক্তিত্ব-পূর্ণ অফিসার আমাদের‌ খুব প্রয়োজন, অনেক সেবা দিয়েছেন কোম্পানির জন্য, ফল সব সময় হয়ত পাওয়া যায় না — কিন্তু একটা সময় আপনি তা পাবেনই। আপনার মতো রুচিবান, ব্যক্তিত্ব আমার অফিসে আছে ভাবতেই গর্ব হয়।’
খেয়াল করলেন দবির সাহেব আজ পরেছেন নেভি-ব্লু প্যান্টের সঙ্গে কড়া ইস্ত্রি আকাশী সার্ট। পকেটে নীল কলমের মাথা বেরিয়ে আছে, ক্লিপটা ভারি সুন্দর। আরও ভাবলেন হয়ত গাঢ় নীল টাইটা খুলে অফিসে ঢুকেছেন। জুতোর দিকে তাকালেন, দেখতে পেলেন না।
‘আপনাকে বদরপুর ব্রাঞ্চে উপ-ব্যবস্থাপক করে পাঠানো হচ্ছে, আপনার ওপরে কেউ থাকছেন না — ওখানে আপনিই সব। আর একটি কথা — ছয় মাস পর আপনাকেই ব্যবস্থাপক পদে উন্নীত করা হবে। এখনই করা সম্ভব হচ্ছে না — বুঝতেই পারছেন?.... কাল মেইল পেয়ে যাবেন... কাজেই কয়দিনে গুছিয়ে ফেলুন। বাসা পাবেন পরিবার নিয়ে যেতে অসুবিধা হবে না।’
‘সেটা ভাবছি না — স্কুল-কলেজ বদলানো খুব ঝামেলা স্যার।’
‘তা ঠিক — তাতে পড়া-লেখার ব্যাঘাত ঘটে। সেক্ষেত্রে আপনি বাসা ভাড়া পাবেন। যদি না-ই নেন...’
‘ঠিক আছে দবির সাহেব।’
হাত মেলালেন স্যার।



দবির সাহেব টেবিলে বসে ঝিম মেরে রইলেন। সহকর্মীরা এসে জিজ্ঞেস করল — বড় স্যার ডাকার কারণ? কেউ জিজ্ঞেস করল —অফিসে দেরির কারণ — কেউ অসুস্থ কি না। পিয়ন পুরনো জুতো নতুন ভেবে প্রশংসা করল। কেউ সার্টের’কেউ-বা রঙের...

ফেরার পথে চিন্তাক্লিষ্ট মনে পাউরুটি কিনলেন; কিন্তু গুড় কেনার কথা ভুলে গেলেন। তখনও তিনি উত্তেজিত— সকালের ঘটনা তিনি ভুলতেই পারছিলেন না।



খাবার টেবিলে স্ত্রীকে দেখতে পেলেন না। ডাকতে গেলেও এল না। গুড় না আনায় একটা ঝামটা দিয়ে বললেন ‘তোমার কোন কথাটা মনে থাকে? কোনও একটা কাজও-তো ঠিক মতো করতে পারো না। অফিসে কোন কাজটা করো তা-তো বুঝতেই পারি...’
এ-কথাটায় ভেতরে ভেতরে উত্তেজিত হয়ে উঠলেন, তবে প্রকাশ করলেন না।

বিরস বদনে খেয়ে উঠলেন — টেবিলে কোনও বললেন না। অথচ সমস্ত দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে রাতে খাবার টেবিলেই সন্তানদের সঙ্গে মেতে ওঠেন। কথনও কখনও এঁটো হাত, থালা শুকিয়ে কড়কড়ে হয়ে যায় — স্ত্রীর ধমক না খাওয়া পর্যন্ত, চেয়ার-টেবিল ছাড়েন না।




‘গুড় আনতে একদম ভুলে গেছি — আমি চিনি এনেছি, আজকের মতো খেয়ে নাও — কাল এনে দেব।’

ঝামটা দিয়ে স্ত্রী মুখ ঘুড়িয়ে নিল। বসে ছিল খাটের মাথার কাছে। চিনিসহ এক টুকরো রুটি মুখের কাছে ধরে বললেন-খা-ও-না — অমন করে না লক্ষ্মীটি, খাও...’
হাত দিয়ে ঝটকা মারায়, পরে গেল সেটা মেঝেতে।
দবির সাহেব অতি কষ্টে রাগ চাপলেন। বিছানায় থালাটা রেখে, মাথায় হাত বোলাতে লাগলেন। এক ঝটকায় হাত সরিয়ে দিল স্ত্রী।

‘খাও বলছি... চিনি দিয়েই তোমাকে খেতে হবে...’
স্ত্রী অনড়।
পা থেকে স্লিপার খুলে মুখের কাছে ঝাঁকাতে লাগলেন। স্ত্রী বড় বড় চোখে তাকিয়ে ঢোক গিলল।
‘খাচ্ছি খাচ্ছি... খাচ্ছি... ’ গপাগপ গিলতে লাগল। আর বিস্ময়ে স্বামীকে দেখতে লাগল।

ছেলে-মেয়েরা বইয়ের পাতা ওলটাতে লাগল, পড়ার টেবিলে বসে।

১০

‘তুমি আর আগের মতো আমায় ভালবাসো না!’ ঠোঁট ফুলিয়ে বলে স্ত্রী।
দবির সাহেব কোনও জবাব দেন না। খাটে বসে দেয়ালের রঙ দেখতে থাকেন।
‘তুমি বোসো তোমার জন্য চা করে আনছি, কেমন শীত শীত করছে...’
দবির সাহেব মনে মনে বললেন ‘অদ্ভুত সব অদ্ভুত! কিন্তু একেবারে খারাপ নয়...’



আহা রুবন

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


এটা বাংলাদেশ, এখানে তাল মিলাতে হয়, ভালো হওয়া অপরাধা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.