নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নেই তো কোন পরিচয়

আহা রুবন

নেই তো কোন পরিচয়

আহা রুবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বড় গল্প: দাগ অথবা কাজল (কিস্তি— ১৫ম)

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১৬




৩৫

বিকেলে পিন্টু দর্জি নিয়ে এল, দিপুর মাপ নিতে। নীলা ওদের বসতে বলে, কিছুক্ষণ পর চা-নাস্তা নিয়ে হাজির হল। লোকটিকে দেখে ‘আস্থা রাখা যায়’ এমন মনে হল নীলার।
‘আপনি কমল ভাইয়ের কাছ থেকে এসেছেন?’
‘হ্যাঁ, আমি আপনাকে চিনি, তিনমাস আগে আপনার গরম জামাটা কিন্তু আমার হাত থেকেই নিয়েছিলেন।’
মুখে ঈষৎ লজ্জার আভা ছড়িয়ে নীলা বলল, ‘আমি মানুষের চেহারা সহজে মনে রাখতে পারি ন।’
‘আমাদের রাখতেই হয়— যাকে বলে শকুনের চোখ। পথে-ঘাটে যদি কোনও কাস্টমারকে না চিনতে পারি, আর যদি সেই কাস্টমার আমায় চিনতে পারে, তবে রক্ষে নেই, মালিকের কাছে কমপ্লেইন করে চাকুরি খাবে। আর একটু ভাল হলে— সে আর দোকানে আসবে না। গরিব মানুষের মেলা দোষ।’
নীলা বিস্কিটের পিরিচ তুলে ধরল লোকটির দিকে।
‘ভাই যদি কিছু মনে না করেন, আমার জন্য একটু কষ্ট করতে পারবেন?’
‘কী, বলেন?’
‘আমার স্বামীকে তো দেখলেন, (স্বামী শব্দটি উচ্চারণ করতে নীলা একটু শিহরিত হল।) আপনি যদি কয়েক পিস কাপড় দেখানোর জন্য নিয়ে আসতেন?’
‘ঠিক আছে, কবে আসতে বলেন?’
‘সন্ধ্যার দিকে হলে, খুব উপকার হয়।’
‘সন্ধ্যা তো প্রায় হয়ে এল।’
‘ভাই যদি একটু কষ্ট করতেন... আজ রাতে আমরা একটু বাবা-মার কাছে যাব, দু-একদিন থাকব, ও বাড়িতে আপনার আসাটা...’
‘ও বুঝতে পেরেছি ভাবি, পিন্টুকে নিয়ে যাই, ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই চলে আসছি। প্রাথমিক পছন্দ পিন্টুই করে আনুক।’
‘আপনার না-ম?’
‘হাবিব।’ খুশি হয়ে জবাব দেয় লোকটি।
‘আসুন তাহলে।’

পিন্টু আর হাবিব একটি ট্রাভেল-ব্যাগের দুই কান ধরে গেটে দাঁড়িয়ে, বেল টিপে অপেক্ষা করতে লাগল। গেট খুলেই চেঁচিয়ে উঠল নীলা, ‘হায় খোদা কতগুলো এনেছেন!’
‘আপনার ভাইকে জিজ্ঞেস করুন, যদি সম্ভব হত পুরো দোকানটাই নিয়ে আসতাম।’
রসিদ কাটার সময় লোকটি জিজ্ঞেস করল, এ্যাডভান্স কত লিখবে। পিন্টু পকেট থেকে টাকা বের করে মৃদু ঝাঁকিয়ে দুজনের মনোযোগ কাড়ল— ‘বাবা এটাই দিয়েছে।’
‘রাখ ওটা, আমি দিচ্ছি। পেমেন্ট পুরোটা আমার কাছ থেকে নেবেন।’
এই নিয়ে পরে বাবার সঙ্গে নীলার মধুর ঝগড়া হয়।
‘বাবা তোমার মেয়ের আবদার তো রেখেছ, এটাও রাখতে হবে। অনেক আগেই আমার স্টাইপেন্ড এর কিছু টাকা রেখেছি, তোমাদের ভাবি-জামাতার জন্য, রাগ কোরো না, প্লিজ। এটা আমাকে করতে দাও।’
‘ওরে বাবা! তলে-তলে এতদূর! রাগ তো হচ্ছেই... সত্যি সত্যি আমার সেই, ছোট্ট মা-টি যে কখন বড় হয়ে গেল, আর এই বুড়ো-হাবড়া কিছুই তার দেখতে পেল না।’
বিষয়টি সেভাবে নীলার মাথায় আসেনি। নীলা বুঝতে পারল, নিজের অজান্তেই সে চলছে। মনে মনে ভাবল— ‘কী দরকার ছিল— জানাজানি করার? তাদেরটা তারা দিত, আমি চুপে চুপে দিলেই তো পারতাম। কী বোকামিটাই না করে ফেললাম, বোকা হয়ে গেলাম।’
মুখটা লাল হয়ে উঠল— চলে গেল বাবার সামনে থেকে।

৩৬

সকাল সকাল বিছানা ছাড়ল নীলা। গত রাতের বেচে যাওয়া খাবার খেয়ে, মঙ্গলের কাঁধে বাড়িটাকে রেখে এসেছে দুদিনের জন্য। আসার সময় মঙ্গল রসিকতা করে বলেছে— ‘যাবে যাও, আমি কিন্তু রাঁধতে পারব না। ক্ষুধা লাগলেই চলে আসব।’
‘থালা নিয়ে আসবেন, আপনার থালা কেনা হয়নি।’ নীলা হেসে জবাব দেয়।
ঘুম থেকে উঠতে দিপুর আটটা বেজে গেল। মঙ্গল বসে টিভি দেখছে।
‘দিদি তোকে ডাকছে তো...’
‘দাঁড়া...’
‘দেখা করে আয়, উনি থালা নিয়ে বসে আছেন।’
‘কী! থালা নিয়ে মানে!?’
‘থালা নিয়ে মানে, থালা নিয়ে...’
নীলা হন্তদন্ত হয়ে ড্রয়িং-রুমে পৌঁছে দেখে, মঙ্গল বিরাট এক থালা হাতে সোফায় বসে।
‘মঙ্গল ভাই! এটা কী! তাই বলে এত বড় থালা? এ জিনিস পেলেন কোথায়?’
‘ভাই কিছু মনে কোরো না, বুঝতে পারছি না, থালা তিনটি এনেছি। পান-সুপারি কীভাবে সাজাব— শেষ- মেষ পাঁজা বেঁধে নিয়ে এলাম। তুমি একটু সাজিয়ে দাও।’
নীলা ফিক করে হেসে ফেলল। বাম হাতে হাসি আড়াল করে বলল, ‘এসব কী করেছেন?’
‘করব না-!? আর এ-স-ব?’ সোফার পাশের কিছু প্যাকেট দেখিয়ে ইঙ্গিত করল, ‘কার কাছে দেব?’
নীলা থালাটা ধরে হাসতে হাসতে, ঘার বাঁকিয়ে ওর রুমের দিকে তাকিয়ে (যদিও দিপুকে দেখা যাওয়ার কথা নয়, ওখান থেকে।) জিজ্ঞেস করল, ‘ও এসব কখন করতে বলল?’
‘আমরা বহুদিন হয় একত্রে আছি— হা করলেই বুঝতে পারি, কী বলতে চায়। তোমার সামনেই খাবার টেবিলে আমায় বলেছে।’
নীলা ভ্রু কপালে তুলে বলল, ‘ভাল, খুব ভাল।’
রান্নাঘরের দিকে মুখ করে, নীলা চিৎকার করল, ‘ও-মা- দেখো; একটু এসো এখানে...’
ডাক শুনে মা হাসি মুখে বেরিয়ে এলেন।
‘বেশ তো, যখন শখ হয়েছে... চল তো, জামাইকে তৈরি করে নিয়ে আয়। মঙ্গলের হয়ত ক্ষুধা লেগে গেছে।’

নাশতার টেবিলে দিপু এল, সাদার মধ্যে নীল চেকের টি-সার্ট আর নীল জিন্স পরে। এই পোশাকে ওকে দারুণ লাগছে, হয়ত শারীরিক দুর্বলতা ঢাকতেই আরামদায়ক পোশাক না পরে, এটা পরেছে। মুখটা সন্তুষ্টিতে ভরা আর বেশ আত্মবিশ্বাসী। ছোটবেলা থেকেই ডান থেকে বামে পাট করার অভ্যাস। তবু সাইকেলের স্পোকের মতো চুল বাগে আসতে চায় না। নীলা তাতে একটু জেল লাগিয়ে লাগাম টানতে চেষ্টা করেছে। দাড়ি কাটতে নীলা বারণ করেছিল। দিপু হেসে বলেছিল, তাতে পিন্টু আরও আশকরা পাবে— তার দুলাভাই মনে হবে না। বাবা যথেষ্ট উৎফুল্ল আজ, হাঁটতে গিয়ে এই সাত-সকালে তরমুজ কিনে ফিরেছেন। আর পিন্টু তো বলেই রেখেছে আজ সারাদিন দাবা খেলবে।
‘কী ব্যাপার নীলা, মা আপনিও বসুন-না? যে দু-তিনজন মানুষ, বাকি থাকার দরকার কী?’
‘তোমরা বোসো, আমাদের কাজ আছে, পরে বসি।’
মা-মেয়েতে খাবার সাজিয়ে দিয়েছে। চিতই-পিঠে, ঝোলসহ গরুর মাংস, ধনেপাতার চাটনি, ঝোলা খেজুর-গুড়, তরমুজ, ঠাণ্ডা পায়েস।
‘শুধু ঝোল দাও, মাংস দিও না।’
‘ছোট ছোট দু-টুকরো দিলাম।’
পিঠের এক পাশ ভেঙ্গে ঝোলে ডুবিয়ে, নীলার দিকে মুখ ফিরে বলল, ‘আমার পছন্দের খাবারের খবর পেলে কোথায়?’
‘ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। জেনে নিয়েছি।’
‘আর কিসের?...’
‘সেটা তোমাকে কেন বলব, সময় হলে দেখতে পাবে।’
‘দিদি পেঁয়াজ তো দিসনি।’
নীলা এক দৌড়ে রান্নাঘরে চলে গেল।

এই বিয়েতে বাবার মত ছিল না, যদিও শেষে পরিবর্তন করেন। দিপু ছেলেটা কম কিসে, ভদ্র, সুশিক্ষিত, সুদর্শন, ভাল চাকুরি করে, চেনা-জানা, সবচেয়ে বড় কথা মেয়ে পছন্দ করে। কেবল বিবাহিত, এই একটি কারণে ওকে কিছুতেই অযোগ্য বলা যায় না। পণ্ডিত নেহরুর জীবনী থেকে এভাবে হিসেব কষা শিখেছিলেন। ইন্দিরার বিয়ের আগে, ফিরোজ গান্ধী সম্পর্কে বিপক্ষ-মত ছিল— ছেলেটি পারসি ও গরিব। আর পক্ষে মত ছিল— উচ্চশিক্ষিত, চেনা-জানা, মেয়ে তাকে পছন্দ করে। ফিরোজ গান্ধীর পক্ষে, এই একটি কারণ বেশি থাকায়, বিয়েতে মত দেন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছেন যখনই এভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ওদের দুজনকে দেখে বিশেষত নীলার চেহারার ভাষা পড়তে পেরে, তার বুকের মধ্যে শিরশির করে উঠল। মনে হল বুকের পাঁজর ভেঙ্গে শিরশিরে নদীটা হয়ত এক্ষুনি তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।

‘মা এত কিছু কখন করলেন?’
‘রাতেই এগিয়ে রেখেছি, মা-মেয়েতে। পিন্টুও সাথে ছিল। রাতেরটাও এগিয়ে রেখেছি।’
মঙ্গল চাটনির দিকে হাত বাড়িয়ে বলল, ‘তবে আমি এলাম কী করতে?’
‘কাজ করতে পারবেন, অ-নে-ক আছে। শুধু পিন্টুর কাজ শেষ, ও আগেভাগে শেষ করে রেখেছে।’
‘তাই পিন্টু?’
‘কেন শেষ করেছে জিজ্ঞেস ক-র-ও।’
পিন্টু কিছু না বলে, শুধু লাজুক হাসি দিল। পিঠের একটু ভেঙ্গে মুখে পুড়ে মাথা নিচু করল। দিপু নীলার মুখের দিকে তাকাল।
‘অনেক রাত হয়েছে দেখে, বললাম শুতে যা। ও বলল, “আমার কাজ শেষ করে যাই, কাল কিছু করব না, সারাদিন শুধু বাবুর সাথে দাবা খেলব।”
মা ধমকে উঠে বললেন, ‘বাড়িতে মেহমান— কোথাও যাওয়া চলবে না!’
‘যাব না তো... বাবু হল দিদির সোয়ামি।’ পিন্টু হাসতে লাগল।
বাবা পিন্টুর দিকে তাকালেন, কিছু সময় তাকিয়ে থেকে ভাবলেন— ‘কদিন আগে ছেলেটার গালে চড় মেরেছিলাম!’

৩৭

দুপুরের খাবার শেষে দিবা-নিদ্রার জন্য নীলা ঘরে গেল। দিপু শুয়ে— ঘুমোয়নি। নীলা পরদিন ক্লাসে যাবে বলে জানাল। দিপু শুনে বলল, ‘আমাকে একা ফেলে... সেটা কেমন হবে।’
নীলা চোখ পাকিয়ে উত্তর দিল, ‘কোনও দুষ্টুমি করবে না, তোমাকে কেউ বকাও দেবে না।’
দিপু হাসল; পোষা বেড়ালকে বকা দিলে যেমন করে চোখ বন্ধ করে, দিপুও তাই করল।
‘কাল না গেলে হয় না?’
‘না-গো-, কয়েকদিন কামাই করলাম... তাড়াতাড়িই ফিরব।’
‘কয়েকদিন কোথায়? দুদিন— আর দুদিন তো ছুটি ছিল।’
‘তোমাকে ছুটির কথা কখন বললাম?’ নীলা মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করল।
‘ভুলে গেছ— যাক তাড়াতাড়িই ফিরো।’
‘তাড়াতাড়িই...’

খাটের পাশে দাঁড়িয়ে নীলা দুহাতে খোঁপা করছিল। দিপুর কাছে অসাধারণ লাগছিল, এই ভঙ্গিটি। ‘হয়ত সব মেয়েদেরই এমন লাগে, কিন্তু আমার নীলা সবার চেয়ে সেরা।’ ভাবছিল আর নীলাকে দেখছিল— স্থির মাছরাঙা হয়ে, যেভাবে নদীর জলে ঝলসে ওঠে সূর্যের আলোয় চিকচিকে মাছের পিঠ।

‘ভয় লাগছে যে, মারবে না কি?’
‘হ্যাঁ তোমার ঘুম মারব।’
নীলা একটা বালিশ দিপুর মাথার পাশে ছুঁড়ে দিয়ে হাসল।
‘শুলে যে? লাঠি কোথায়?’
‘আমার চোখে তাকাও, দেখতে পাবে।’ নীলা চোখ বড় করল।
‘তাই তো, যত রাজ্যের শয়তানি কিলবিল করছে।’ দিপু আলস্যভরে বলল।
‘কী বললে? ভাল হবে না কিন্তু... আমি এখন গান শুনব।’ বিছানায় উঠে বসল নীলা।
‘জানতাম— তোমার চোখ তাই বলছে।’
নীলা দিপুর চুলের মধ্যে হাত চালিয়ে প্রশ্ন করল, ‘আর কী বলছে?’
‘আ-র? আর বলছে, চোখের গভীরে ঝাঁপ দাও— ঝাঁপ দিলেই তুমি মরবে!’
নীলা ঠোঁট কুঞ্চিত করে মুখে হাসি নিয়ে, হাত বোলাতে লাগল দিপুর মাথায়।
নাক-ডাকার শব্দ করল দুবার— বাম হাত দিয়ে নীলার হাতের কবজি ধরে, ‘লক্ষ্মীসোনা একটু ঘু-মো-ই?’ দিপু বলল।
নীলা দুচোখের পাতায় আঙ্গুল ছোঁয়াল— দিপু চোখ বুজল।

কিস্তি - ১৪তম

কিস্তি - ১৬তম

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


গল্পের প্লট ঠিক আছে, গতি কম। আপনার কি প্ল্যান, প্রকাশ করবেন?

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪১

আহা রুবন বলেছেন: মানুষ নিজেকেই পুরোপুরি চেনে না। সাধারণভাবে যতটা উদার মনে করে সে তা নয়। অথবা বিশেষ পরিস্থতিতে পড়লে উঁচু স্তরের মনে করা লোকটিও ছোট মনের পরিচয় দেয়। 'নীলা' যাকে আমরা বেশ প্রগতিশীল মেয়ে হিসেবে দেখছি এবং সেটা নিজেও সে বিশ্বাস করে কিন্তু এক সময় অতি সাধারণ মনে হবে। বুঝতে পারবে যখন, এটা তার কাছে হবে একটা আবিষ্কারের মত। আর কিছু এলোমেলো ভাবনা আসবে তার মনে। যা তার চরিত্রের সঙ্গে ঠিক যায়না। মানুষ সে মানুষই, সব মানুষের মতই। এইতো এই সব...

২| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫৯

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
যত রাজ্যের শয়তানি কিলবিল করছে। B-) B-) আমি হাসতে হাসতে শেষ B-) =p~

গল্প পড়ে ভালো লেগেছে ভাই।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪৯

আহা রুবন বলেছেন: হা হা হা =p~ |-) :-B

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.