নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নেই তো কোন পরিচয়

আহা রুবন

নেই তো কোন পরিচয়

আহা রুবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতীয় দিবসের ছুটি কি ঘুমনোর জন্য, না অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণের জন্য?

০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৯:৩৪



পালিত হয়ে গেল মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার জন্য অঙ্গিকার করলাম নতুন করে। প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালাম। আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ছাড়াও শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হল দেশের বিভিন্ন স্থানে। মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হল। কিন্তু বিস্তৃতি কতটা ছিল, কতটা গভীরে ছিল এর আবেদন? এ প্রশ্ন করাই যায়।

এখনও বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যারা ঠিক মতো জাতীর সঙ্গীত গাওয়ায় না। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে সে আশা করা বোকামি।
জাতীয় দিবসগুলোতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ খোলা রাখতে নির্দেশ দেয়ায়, গত কয়েক বৎসর যাবত খোলা রাখা হয়। উদ্দেশ্য—এদিন শিক্ষার্থীরা জাতীয় দিবস নিয়ে বিভিন্ন খোলামেলা আলোচনা করবে। আয়োজন করা হবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের। যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ তাদের মনে ছড়িয়ে দিতে পারব। ইতিহাস সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দূর হবে। সরকারি নির্দেশ আসার পরে থেকে শিক্ষকগন শিক্ষালয়ে উপস্থিত থাকেন। শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে বা মিলাদ পড়িয়ে তাঁরা বাড়ি ফেরেন। এটি এখন শিক্ষকদের দায় সারার মতো বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু যাদের উদ্দেশ্যে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়, সেই ছাত্ররাই থাকে অনুপস্থিত! হ্যাঁ শুনতে খুব খারাপ লাগলেও বাস্তবতা হচ্ছে, দেশের খুব সামান্য পরিমাণ স্কুলেই শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়। প্রত্যেক অভিভাবক, শিক্ষকদের সচেতন করা না হলে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কঠোর তদারকি না করলে কাজের কাজ কিছুই হবে না।

দেশে ভয়ানকভাবে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সবার মধ্য ছড়াতে পারিনি, স্বাধীনতা অর্জনের এত বছর পরেও রাজাকারের সমর্থকদের দেখি। যাদের মধ্যে অনেকেই জন্মেছে একাত্তর পরবর্তী সময়ে। এ ব্যর্থতা আমাদের, এ লজ্জা সবার! তরুণদের বিরাট অংশ নেশায় বুঁদ হয় আছে—মহামারির মতো ক্রমাগত বাড়ছে। শহর, উপশহর হতে আজ অখ্যাত গ্রামে থাবা বসিয়েছে নেশার বিষবাষ্প। খেলা-ধুলা, যাত্রাপালা, পল্লীগানের আসর, লাঠি খেলা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তরুণেরা ব্যস্ত থাকবে কী নিয়ে! উর্বর ভূমিতে চাষাবাদ না করলে আগাছা জন্মাবেই।

সমাজের এই সমস্ত আগাছা উপড়ে ফেলতে হলে আমাদের মূলে ফিরে যেতে হবে। আমাদের বারবার স্মরণ করতে হবে আমাদের পূর্বতনরা দেশের জন্য কতটা ত্যাগ করেছেন। কতটা ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীন দেশ। চিন্তাকে প্রসারিত করতে হবে, আশা জাগিয়ে তুলতে হবে। এটি অবিরাম প্রক্রিয়া। আমাদের আছে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। যেগুলো আমাদের সঠিক পথে নিয়ে যেতে পারে। প্রত্যেকটি দিবসে ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত হবে, তারা রচনা লেখার প্রতিযোগিতা করবে, ছবি আঁকবে, কবিতা লিখবে, কবিতা আবৃত্তি করবে, গান করবে, নৃত্য করবে, নাটক করবে, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেবে তাঁর বীরত্বের গল্প শুনবে, লাঠি খেলবে, এসবের ভেতর দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরবে। আর এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবে অভিভাবক, ছোট-বড় ভাই-বোন, প্রতিবেশী, মহল্লাবাসী। কেন এমন হতে পারে না? আমাদের সমস্যা কোথায়?

এমন কি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের কিছু কিছু বিষয়ে সর্ব সাধারণের অংশ গ্রহণের সুযোগ রাখতে হবে। নাগরিকরা, প্রধানত তরুণরা যেন তার এলাকার বিদ্যালয়ের সঙ্গে, তাদের অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকে তার উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই-না জাতি হিসেবে আমরা সবাই অগ্রসর হতে পারব। আমাদের ধারণাটা বদলাতে হবে, জাতীয় ছুটিগুলো যে বাড়িতে ঘুমনোর জন্য নয়—নাগরিক হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণের জন্য, সন্তানের সঙ্গে তার বিদ্যালয়ে কাটানোর জন্য—এই বোধ তৈরি করতে হবে। এজন্য সচেতনদের এগিয়ে আসতে হবে, রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচারণা চালাতে হবে এবং তদারকি জোরদার করতে হবে।

আমার এ লেখাটি আজকের ইত্তেফাকে ছাপা হয়েছে।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:২০

দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: সরকারি ছুটি!!!ছুটি পেলেই মানুষ চিন্তা করে কাল ভালো করে একটা ঘুম দেবো।আপনার বলা কথাগুলো ১০জন মানুষও মাথায় আনে না। :(

০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৪

আহা রুবন বলেছেন: আমাদের বড়দের এটি মনে হয় ভাবা উচিত। আমরা ছোট বেলায় এ ধরণের অনুষ্ঠানে নিজেরাই দল বেঁধে মজা করতে করতে হাজির হতাম। আজ-কালকার শিশুদের তো আমরা মুরগি টাইপের করে বড় করছি, পিতা-মাতাকে হাত ধরে কোথায় না নিয়ে গেলে যে আর চলছে না। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩০

ধ্রুবক আলো বলেছেন: কঠোর তদারকি না , সহজ বোধ্য করতে হবে ছাত্র ছাত্রীদের কাছে, যেন তারা খুশি হয়ে স্বাধীনতার ইতিহাস গুলো জানতে আগ্রহী হয়ে। সারা সপ্তাহ হোম ওয়ার্ক করে আর বাচ্চারা ছুটির দিন কোথাও উপস্থিত হতে চায় না অন্তত যেখান ভাষণ দেয়া হয়।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৩

আহা রুবন বলেছেন: কঠোর তদারকি বলতে তাদের প্রতি কঠোর হতে হবে সেটি বোঝাতে চাইনি। গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছি। আপনার কথাও ঠিক, শিশুরা কেন আমরা বড়রাই কেই-বা ভাষণ শুনতে চাই। অনুষ্ঠানগুলো হতে হবে উৎসবমুখর, আনন্দময়।

৩| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


বিদ্যালয়গুলোকে এলাকার মানুষের জন্য সাংস্কৃতিক সেন্টারে পরিণত করার দরকার।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৭

আহা রুবন বলেছেন: পড়া-লেখা শেষ তো বিদ্যালয়ের সঙ্গে, বইয়ের, শিক্ষার সঙ্গে সব সম্পর্ক শেষ। এই ধারণাট বদল করতে হবে। বিদ্যালয়গুলোকে এলাকার মানুষের জন্য সাংস্কৃতিক সেন্টারে পরিণত করার দরকার। এক বাক্যে মনের কথাটি বলে দিয়েছেন।

৪| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:০১

টারজান০০০০৭ বলেছেন: লেবু কচ্লাইতে কচলাইতেতো তিতা হইয়া গেছে ! তাতেও হইতাছে না ! এহন কি চিরতা পাতা বানানো লাগবো ? অতি প্রচার অপপ্রচার দুইটাই খারাপ ! সংষ্কৃতি দিয়া সঙই হইবো @ চাঁদগাজী আঙ্কেল ! দরকার হইলো নিরপেক্ষ ইতিহাস চর্চা। চেতনা ব্যাবসায়ীদের দ্বারা উহা হইবোনা। গণমানুষের মনে স্বাধীনতার ইতিহাস বুনিতে হইলে সঠিক ইতিহাসই যথেষ্ট। ব্যাক্তিগত ভাবে আমি জাতীয় দিবসগুলোতে ছুটি না দেওয়ারই পক্ষে। তবে ভণ্ডামি ও মোসাহেবি দেখার চেয়ে ঘুমানোটাকেই সমর্থন করি !

০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:১২

আহা রুবন বলেছেন: ইতিহাসের চর্চা করলে একজন সহজেই বুঝতে পারে কোনটা ভুল আর কোনটা সত্য। রাজনৈতিক সালসা গেলানোর প্রয়োজন নেই।

৫| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৫৭

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
অত্যন্ত দরকারী একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন । আমরা কতই না ছুটি পাই ,কতই না ঘুম দেই । স্বাধীনতা দিবসে আমি ঘুমকে কখনোই সমর্থন করি না । একজন বাংলাদেশী হিসাবে ।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৯:০২

আহা রুবন বলেছেন: আমাদের ঘুম যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন সামাজিকভাবে প্রতিবেশী, বন্ধ-বান্ধবদের সঙ্গে মেলামেশা করার। সেখানে ক্রমশ আমরাপরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। জাতিয় দিবসগুলো আমাদের এই অসামাজিক হওয়া থেকে অনেকটাই মুক্তি দিতে পারে।

ধন্যবাদ প্রিয় কবি বন্ধু।

৬| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৫৭

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অসাধারণ আলোচনা করেছেন ভাই।

"দেশে ভয়ানকভাবে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সবার মধ্য ছড়াতে পারিনি, স্বাধীনতা অর্জনের এত বছর পরেও রাজাকারের সমর্থকদের দেখি। যাদের মধ্যে অনেকেই জন্মেছে একাত্তর পরবর্তী সময়ে। এ ব্যর্থতা আমাদের, এ লজ্জা সবার! তরুণদের বিরাট অংশ নেশায় বুঁদ হয় আছে—মহামারির মতো ক্রমাগত বাড়ছে। শহর, উপশহর হতে আজ অখ্যাত গ্রামে থাবা বসিয়েছে নেশার বিষবাষ্প। খেলা-ধুলা, যাত্রাপালা, পল্লীগানের আসর, লাঠি খেলা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তরুণেরা ব্যস্ত থাকবে কী নিয়ে! উর্বর ভূমিতে চাষাবাদ না করলে আগাছা জন্মাবেই।" আসল কথাগুলোই বলেছেন। আমাদের পূর্বপুরুষদের চিন্তা চেতনা আমরা পুরোপুরিভাবে জানতে পারিনি, জানাতে পারেনি। স্বাধীনতার পর ২১ বছরের গ্যাপ আমার না ২১০০ বছর পোড়ায়! এদেশের মাটিতে যখন একাত্তরকে সাধারণ বিষয় বলে শুনি তাও আবার শিক্ষিত মানুষদের মুখেই তখন অবাক বিস্ময় হয়ে জানতে মন চায়, আসলে কি একাত্তর খুব সাধারণ একটা বিষয়?!! তারা কি চায় মূলত। তারা কি কেবল বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে বলতে গিয়েই এমনটা বলে?!! এরা বেঈমান, এদের রক্তে দোষ। যদি তাই না হবে তবে বঙ্গবন্ধুর দিকে আঙুল তুলার স্পর্ধা করতো না। যাঁর জন্ম না হলে স্বাধীনতা পাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠতো না, সেই মহান মানুষটিকে ছোট করতেই রাজাকারের বংশধররা এখনো আমাদের স্বাধীনতাকে ছোট করতে সচেষ্ট! এদের প্রতিহত করতেই আরেকবার একটা বিপ্লবের দরকার পড়বে।

আপনার আলোচনায় শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা রেখে গেলাম।
শুভকামনা সবসময়।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৯:৩০

আহা রুবন বলেছেন: এসএসসি পাশ করে যখন ঢাকা যাই তখন জানতাম আর কয় দিন পরই শেখ মুজিব দেশে রাজতন্ত্র ঘোষণা করবে, ইন্দিরা গান্ধি এসে মাথায় সোনার মুকুটা পরিয়ে দেবে । নদীতে ভাসানো হবে সোনার নৌকা, সব তৈরি। হাতে সময় কম, দেরি হলে কিছু করার থাকবে না। তাই তড়িঘড়ি করে তাকে হত্যা করা হয়।

ছিলাম গ্রামে অতটা পত্র-পত্রিকা হাতে পেতাম না। ঢাকায় সে সমস্যা দূর হল। কিন্তু বিরাটা ধাক্কা খেলাম যাদের লেখার ধার বেশি, যারা আমার প্রিয় কবি, লেখক, ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠতে লাগলেন তারা দেখি সবাই শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা করেন! মনযোগী হয়ে উঠলাম - আস্তে আস্তে বুঝতে লাগলাম চোখে ঠুলি পরিয়ে গরু বানিয়ে রাখা হয়েছিল।

কিছু মানুষ এখনও তেমনটা করতে চায়, তাই তাদের মক্তিযুদ্ধের বিষয় এলে ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে চায় এক প্যাচাল আর কত! শিল্প, সংস্কৃতির প্রসঙ্গ এলে এদের গায়ে জ্বালা শুরু হয়। আপনার বয়স কত জানি না। ধারণা করি আমার চেয়ে কম হবে। আমাদের সময়টা ছিল অন্ধকারে পথ চলতে শেখানোর মত। এখনকার ছেলে-মেয়েরা ভাগ্যবান তার হাতে সারা পৃথিবী, অবাধ তথ্য প্রবাহ। সব তারা জানতে পারে যদি তার আগ্রহ থাকে।

অনেক ধন্যবাদ।

৭| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৩:৫৬

রিফাত হোসেন বলেছেন: যেসব বিদ্যালয় মাঠ নাই, কিন্তু এরকম ভুরি ভুরি। অনুমতি পায় কিভাবে?
সেুগুলোতেই পালন না হবার সম্ভাবনা বেশী।
তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচারণা চালাতে হবে এবং তদারকি জোরদার করতে হবে। এটা প্রয়োজন নেই।

ফান্ডামেন্টাল ফলো করতে হবে, কোন রকম বিদ্যালয় নামকেওয়াস্তা প্রতিষ্ঠা করা থেকে বিরত থাকতে হবে, অনুমতি দেওয়া যাবে না।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৯:৪২

আহা রুবন বলেছেন: মাঠ নেই এমন বিদ্যালয় তো আছেই, যাদের মাঠ আছে সেখানেও ঠিক মত জাতীয় দিবসগুলো পালিত হয় না। তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচারণা চালাতে হবে এবং তদারকি জোরদার করতে হবে। এটা প্রয়োজন নেই। কিন্তু কেন নেই!? নাম মাত্র অনুষ্ঠান হবে হোক, তবে তা সফলতা লাভ যেন না করে, তাই তো?

৮| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:৫৫

রিফাত হোসেন বলেছেন: রুবন সাহেব আমি যতগুলি এ পর্যন্ত দেখেছি সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলেছি। যেগুলির মাঠ নাই এগুলার দৈনিক শপথ কিংবা জাতীয় সঙ্গীত পর্যন্ত গাওয়া হয় না আর কোরআন শরীফ এর সূরা তো দূরের কথা!
কোরআন শরীফ এর সূরা বললাম এ জন্য যে এটা আমার স্কুলেই হত। অন্য সব স্কুল গুলোতে সম্ভবত নয়।

বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজ্ঞান মেলা, দাবা প্রতিযোগীতা, ধর্মীয় ক্বেরাত প্রতিযোগীতা, বাতসরিক খেলা যেটাতে ম্যারাথনের কাছাকাছি দৈর্ঘের দৌড় হত, বর্শা নিক্ষেপ, ফুটবল+ক্রিকেট+ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগীতা ইত্যাদি।
স্কাউট বা বিএনসিসি বাদ দিলাম। আমার জানামতে স্কাউট এর সদস্য মফস্বলে অভাব নাই, যারা স্কুল থেকে যোগ দিয়েছে।

কিন্তু উপরের সব এক্টিভিটি তখনই হয়েছে যখন মাঠ ছিল।

তাই স্বাধীনতা দিবসে চিত্রাংকন প্রতিযোগীত, কবিতা প্রতিযোগীতা কত হয়েছে।
আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে কচিঁ কাচার আসরে অংশগ্রহন করেছি।
বর্ষা হলে ক্লাসে বসে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হয়েছে!

সুতরাং অ গা ম গা চ গা স্কুলের অনুমতি দিলে এসব গুড়েঁ বালি। আমার শ্বুশুড় বাড়ির আগে পিছে দুইটা স্কুল আছে! আমি ছুটির ঘংটা ও ক্লাসের ঘন্টা পরিষ্কার শুনতে পাই, তবে জাতীয় সঙ্গীত, শপথ কিছুই না।

বলার অপেক্ষা রাখে না তারা নতুন স্কুল এন্ড কলেজ নতুন প্রতিষ্ঠা করেছে!, যদিও কয়েক বছর হয়ে গিয়েছে। তবে এলাকার কাছের মাঠ সহ স্কুল গুলির তুলনায় অনেক অনেক নতুন।

নাম স্কুল এন্ড কলেজ কিন্তু তারা ভর্তি করাচ্ছে প্লে থেকে নবম পর্যন্তই! আরেকটা আবার প্লে থেকে চতুর্থ শ্রেনী পর্যন্ত!!!

তাহলে নাম স্কুল এন্ড কলেজ দিয়ে কিভাবে হয়, আমাকে আপনি কিভাবে বুঝাবেন?
তাও এর মধ্যে ১টা ইংরেজী মাধ্যম বলছে! কিন্তু যদি বিল্ডিং এর পাশ দিয়ে যাই। শোরগোল শুনি বাংলার! মানে শিক্ষিকা বা শিক্ষক বাংলাতেই পড়াচ্ছেন!

এদের কাছে আপনি কিভাবে দেশাত্ববোধের ব্যাপারগুলি আশা করছেন?

রাষ্ট্রের ক্ষমতাবান মানুষরাই তাদের নিম্নমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি দিচ্ছে! বাতসরিক অনুষ্ঠান হয়, তাও আরেক স্কুলের সরকারী মাঠে, বিস্কিট দৌড় ইত্যাদি। সেখানে আবার অতিথিও করেন কোন কোন নেতাকে!
--------------------

তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে চেষ্টা করতে হবে গুনগত মান সম্পন্ন স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়া। তাহলে ইনশাল্লাহ গোড়ায় গলদ থাকবে না অর্থাত সব কিছু মেইনটেইন করা সম্ভব হবে। যার মধ্যে ২৬ ১৬ বলে কথা থাকবে না বরং প্রত্যেকটা স্কুলের দিন হবে শপথ আর স্বাধীনতা বিজয় এর জয়গান।
-------

এটা ঢাকার কথা:
আরেকটা ছোট্ট ব্যাপার যোগ করতে চাই, ঘটনাটা ছোটকালের। বিজয় দিব বা স্বাধীনতা দিবস হলে এলাকার ছেলেরা মিলে মানে অনুষ্ঠান করত। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দাওয়াত দিয়ে শুভেচ্ছা দিত, কনসার্ট করত, তাদের বক্তব্য শুনত বিজয় দিবস বা স্বাধীনতা দিবস উল্লেখ্য করে। এটা ততদিনই ছিল, যতদিন আমাদের এলাকাতে ফাকাঁ মাঠ ছিল!!!

যখন ধীরে জায়গাগুলি বসত গড়ে উঠল। তা বন্ধ হয়ে গেল, কালের বিবর্তনে আমি বড় হয়ে এসব কিছুই পেলাম না! পেলাম রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে ছেলেদের মোবাইল টিপাটিপি। এটা খারাপ বলছি না, বলছি অবস্থাটা। অন্তত আমার শৈশব এ মাঠ পেয়েছিলাম ক্রিকেট, ফুটবল, গোল্লাছুট খেলার। পরিণত বয়সে এগুলো সব বিলুপ্ত হয়েছে মাঠের অভাবে তাই বুঝতে পারলাম না।

দেশের সরকার একটা এলাকা ভিত্তিক পার্ক এর ব্যবস্থা করতে পারল না! একটা খালি ময়দান! এতে অন্তত যুবকদের এক্টিভিটি বজায় থাকত। ব্যডমিন্টন টুর্নামেন্ট এ যোগ দিতে বা স্বাধীনতা দিবসে কে প্রধান বা বিশেষ অতিথিকে ফুলের তোড়া দিবে, কে কোন কবিতা আগে বলবে এই নিয়ে লংকা কান্ড। আফসোস তখনকার সময় ফেবু ছিল না, ক্যামেরা মোবাইল ছিল না, তাহলে ব্যাপার গুলি সময়ের সাথে ফ্রেমে থেকে যেত।

এগুলো আমি আমার ভাতিজা,ভাগ্নেকে বললে এদের কাছে স্কুলের অনুষ্ঠান মনে হবে বা বানিয়ে বলছি মনে হবে।

আমার নিজের, ভাতিজা,ভাগ্নের স্কুল কলেজে এই দিবস এতটাই ধুম ধাম পালিত হয়ে আসছে বলার অপেক্ষা রাখে না বসার জায়গা থাকত না!
এটা সেই রকম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়েছে বলেই সম্ভব হয়েছে।

লম্বা করে ফেললাম মন্তব্য।
সবাই শপথে প্রথম বলে সদা সত্য কথা বলিব, তবে কতজনকে এই বিশ্বাসে ঢুকিয়ে রাখা যায়, যদি না নিজে থেকে বুঝে!
তেমনি নাম মাত্র না, অনুষ্ঠান করার মত যোগ্য প্রতিষ্ঠান বা এলাকার মানুষের সুযোগ করে দিলে ৫০% সফলতা ১০০% সফলতার সমান।
যে পরিবেশে যা হবার না, তা জোর করে ভাল কিছু হয় না।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৩৯

আহা রুবন বলেছেন: প্রিয় ব্লগার আপনার দীর্ঘ মন্তব্য পড়লাম। আপনার মতামতকে আমি অগ্রাহ্য করছি না। আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের খুব অপরিচিত কিছু নয়। কম-বেশি আমরাও তেমনটাই দেখে থাকি। আমার উদ্দেশ্য ছিল আমরা যেভাবে সব কিছু বিদ্যালয়ের ওপর ছেড়ে দিয়ে বসে থাকি এটি বাদ দিতে হবে। আমাদের তরুণরা যেন স্কুলের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ না করে। আচ্ছা ভাবুন তো যে গ্রামে ওয়াজ মাহফিলের জন্য তরুণরা নানা কর্মে জড়িত হতে পারে, সেই গ্রামের স্কুলের কোনও অনুষ্ঠানে সে কেন হাত গুটিয়ে দূরে থাকবে। এরা এ-ধরণের সামাজিক বিভিন্ন কর্ম-কাণ্ডে জড়িত হলে এদের বখাটেপনা, নেশা করা এমনিতেই অনেক কমে যাবে। অনেক ধন্যবাদ।

৯| ২৮ শে জুন, ২০১৯ রাত ১:৫৩

রিফাত হোসেন বলেছেন: আপনার প্রতি মন্তব্য ভাল লেগেছে। :) আমরা সুদিনের অপেক্ষায় আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.