নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুদ্র রাফি

কিছু ই জানি না

রুদ্র রাফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

এখনো ডুবেনি বেলা

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৫



রাত দুইটা।

আনিস সাহেব বিছানায় বসে আছেন। হাতে পানির গ্লাস নিয়ে। একবার হাতের গ্লাসের দিকে আর একবার মনোয়ারা বেগমের দিকে তাকাচ্ছেন। অস্বস্তি বোধ করছেন কেন যেন। হুট করে বুঝতে পারলেন ঘেমে তার সারা গা চটচট করছে। একচুমুকে পানিটা খেয়ে বিছানা থেকে নেমে বারান্দায় চলে আসলেন। একানে দুটো পুরোনো চেয়ার রাখা থাকে । তার আর মনোয়ারা বেগমের জন্য। না মোটেও বিয়ের পনেরো বছর পরে তারা আর আগের মতো লুতুপুতু নেই। চেয়ার দুটো রাখা সন্ধ্যাবেলা দুজনে বসে পারিবারিক সমস্যাগুলোর সমাধান খোঁজার জন্য। আর বারান্দাটাও বারান্দাই বটে। দুটো ইজিচেয়ার আর কয়েকটা ক্যাকটাস আর পাতাবাহারের টব রাখার পর সেখান দিয়ে নিশ্চয়ই কোন বিড়ালেরও পদব্রজে বেরোতে ভীসন আপত্তি হবে।


আনিস সাহেব তবে এ বারান্দাটার সুবিধাটা হল এটায় কোন গ্রিল নেই। আর একেবারে ছয়তালায় হওয়ার কারণে বহুদিন ধরেও চোরের উৎপাত তেমন একটা না থাকায় বাড়িওয়ালাও মাধা থেকে গ্রিল লাগানোর চিন্তা বাদ দিয়েছেন। আনিস সাহেব আবারো ঘামতে শুরু করেছেন। ছাদের নিচের ফ্লাটে থাকার সুবাদে তার ঘরে গরমের অত্যাচার চিরদিন। মেজাজটাও বেশ বিগড়ে আছে। একটু ঘুমিয়েছেন অমনি কিনা রেশমা এসে ঝগড়া ঝাঁটি শুরু করে দিল । কেন খেয়া তো আর বাচ্চা মেয়েনা। পড়েছে নিজের দোষে ভর দুপুরে কেন অতোবড়ো মেয়ের বারান্দা দিয়ে দৌড়ে যাওয়া লাগবে পাশের বাড়িতে। তিনি নাহয় একটু চেঁচিয়েই বলেছেন ডে যেমন মা তেমন মেয়ে। একেবারে সময় বাঁচিয়ে চলতে চলতে মা মেয়ে যেন বুদ্ধি করেছে বাড়তি জমানো সময় টুকু বেঁচবে। অবস্য মেয়েটা পড়ে যাওয়ায় তার নিজেরো বেশ কষ্ট হচ্চিলো তাই পাশে গিয়ে বললেন মাগো খুব ব্যাথা পেয়েছিস। অমনি মেয়েটা হাসতে হাসতে ছুটে গেল রাগ হবেনা । আসলে আনিস সাহেব ভাবেন যে তার দুই স্ত্রী। রেশমা আর মনোয়ারা। রেশমা তার যুবক বয়সের বেঁচে থাকা এক মৃত স্বপ্ন আর মনোঢারা বেগম তার স্ত্রি। কিন্তু আনিস সাহেব বিশ্বাস করেন যে রেশমা নামে তার আরেকটা স্ত্রী আছে কিন্তু রেশমার সাথে তার কবে বিঢে হলো কীভাবে বিঢে হলো এটা তিনি জানেন না। তিনি যখন একা থাকেন কিংবা ঘুমিয়ে পড়েন তখনই তাঁর রেশমার সাথে দেখা হয়। এবং সেখানে খেয়া তাদের মেয়ে। খেয়া আসলে তার আর মনোয়ারা বেগমের একমাত্র মেয়ে এবার ক্লাস টেনে পড়ছে। রেশমা কথা ভাবতেই তাঁর খেয়ার কথা মনে পড়লো তাইতো মেয়েটা কি ঘুমিয়েছে নাকি এখনো পড়ছে। তিনি বারান্দা থেকে উঠে পাশের ঘরে গিয়ে দেখলেন না খেঢা ঘুমিয়ে পড়েছে। আনিস সাহেব চোখে মুখে পানি দিয়ে আবার বারান্দায় এসে বসলেন। তবে এবার আর একা না সাথে স্টার সিগারেটের প্যাকেট আর লাইটারটা নিয়ে। শখ কিংবা নেশার বলতে দুটো জিনিস তার জীবনে সিগারেট খাওয়া আর নতুন নতুন জায়গাঢ বেড়াতে যাওয়া। প্রথমটা চাকরির স্বল্প মাইনের একটা অংশ দিয়ে যদিবা তিনি মানিয়ে নিয়েছেন কিযবা দ্বীতিয়টা বেশ আগেই উনার সঙ্গ ছেড়ে দিয়েছে। অন্তত বিয়ের বছর খানেক আগে থেকে।

একটা সিগারেট জ্বালিয়ে তিনি বারান্দার দরজাটা হালকা টেনে দিলেন নয়তবা মনোয়ারা টের পেলে আবার চেঁচামেচি করবে।

হুট করে তার মনে পড়লো অনেকদিন আগের এক সন্দ্যা বেলার কথা তখন তিনি শ্যামনগর থানার এক প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলেজের ছাত্র। সেন্কেন্ড ইয়ারে পড়েন। লজিং থাকেন।

আনিস সাহেব আর ভাবতে পারছেন না আবার ঘুমিয়ে পড়েছেন। হাতের জ্বলন্ত সিগারেটটা আস্তে করে গড়িয়ে পড়লো সিমেন্ট দিয়ে প্লাস্টার করা ফৌাকাশে মেঝেতে। ক্লান্ত ঘাড়টা তিনি এলিয়ে দিনের ইজিচেয়ারের একপাশে।

( চলবে )

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.