নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রুদ্র রাফি

কিছু ই জানি না

রুদ্র রাফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার সবটুকু কিংবা আজ কিছুটা

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৮

কথাটা সত্যি ছিল।
"দেখা হয়নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হইতে দুইপা ফেলিয়া একটি ঘাসের ডগার উপর একটি শিশির বিন্দু "

সুখী হবার উপকরণ কি? খুব বেশি কিছু কি! আমি ঠিক হিসেবটা জানি না। আমি হৃদয়স্পর্শি করে সুখের গল্প লিখতে পারিনা। তবুও আমি সুখী মানুষ।

রোজ শেষ দুপুরে যখন রোদের তেজ মরে যেতে থাকে তখন আমি কলেজের পুকুরটার দিকে যাই। হাতে তিনটে পুরোনো খবরের কাগজ। পুকুরের পাড়ের একদম কিনারায় গিয়ে কাগজ তিনটে লম্বালম্বি করে বিছিয়ে ঢুপ করে শুয়ে পড়ি রোদের দিকে পিঠ দিয়ে। জল পাড়ের কাছাকাছি। আমি সমান্তরালর তাকিয়ে রোজ দুপুরে দুটো দুটো করে কয়েক জোড়া হাঁস ভেসে বেড়াতে দেখি কিংবা কখসো একসাথে। মনে হয় আমি শান্ত জলে শুয়ে জলের খেরা দেখছি ঢেউগুলো ছোটে আনমনে আলগোছে হাঁসেদের পিছু। ওদের মধ্যদুপুর দেখি। রোদের আলো গাছগুলোকে ঝলসে দেয়না। চুপ কর দাঁড়িয়ে থাকে, প্রতিক্ষায় থাকি, যখন পাতাগুলো দূরে হালকা দুলবে। জানি মিষ্টি এক লিলুয়া হাওয়া আসছে।আমি চোখ বুজি ঘাস মাটির গন্ধ নিয়ে ছুটে আসে একটু হাওয়া আমার শৈশব।

অনেকদিন পর বাপি বাড়ি আসছে, আমি ভোরবেলা লাইট জলা কলম দেখছি, ফসফরাস দেওয়া ব্যান্ডগুলো মুচড়ে মুচড়ে জ্বালাচ্ছি। আরেকটা ভোরে বাপি আমি খেজুরের ডাল দিরে বানানো ছিপ দিয়ে মাছ ধরছি বিলের গলাসমান উঁচু ধানগাছের ফাঁক দিয়ে শোল কৈ ধরছি। দুপুরগুলোতে আমি আপুনি দুজনে খেয়ে উঠে একটা কোলবালিশ দুজসে জড়িয়ে পাড়ি দিতাম স্বপ্নে। আমাদের স্বপ্ন ছিলো আমাদের অনেক অনেক নৌকা হবে, আমরা ভাগ করে নেবো, সব এক সাথে বাঁধা। আমরা ভেসে যাব অনেক দূরে সবাইকে নিয়ে। পড়তে বসা সলতে জলা কেরোসিনের হারিকেনে। কি মিষ্টি ঘুম ঘুম আলো। বড্ড ঘুম আসতো, আরো বেশি আসতো ধানের গন্ধ আর হারিকেন চুইয়ে পড়া কেরোসিনের মিশ্রণে। রাত্রে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমোতে যাওয়া বাপি চলে যাওয়ার পর বাপির শার্ট নিয়ে।আবার কাল আসবে হয়তবা। এখনকার মত মোবাইল ছিলোনা হাতে হাতে। সপ্তাহে একদিন ফোন আসতো। ছুটে যেতাম হাটে। হা হা হা সেই দিনগুল ^_^

রাত জেগে দুভাইবোন বারান্দাটার দখল নিতাম। একের পর এক নাক ডুবিয়ে শেষ করতাম চেনা অচেনা বইগুলো..সাতকাহন,ত্রয়ী,অন্য জীবনের স্বাদ,প্রথম আলো, নীল ঘূর্ণি, তেতুল বনে জোছনা কিংবা এই আমি। আচমকা প্রেম আসল, আমি ভাসলাম, একটা নৌকার স্বপ্ন তখন।

রাত জেগে চিঠি লেখা, ভূতের ভয়ে ভীতু ছেলেটা তখন যেতে শুরু করলো পোড়ো গোডাউনে মেয়েটার সাথে নীরবে দেখা করতে। অভিমান, ছুটে বেড়ানো বৃষ্টির মধ্যে। আচ্ছা নৈশব্দবতী কখন গার্লসস্কুলের ছুটি হবে।

হুট করে হারিয়েও গেলো। আমি বড় হতে থাকলাম। রাত দুপুরে দুবাইবোন যাই পেছনের দরজা খুলে নদীর পাড়ে। জোছনা স্নান কীভাবে করে!

এখন নির্বাসনে। দুপুরগুলোতে আমি রোজ যাই ওখানে। জানি মাটি ঘাসের গন্ধ নিয়ে আসবে শৈশব। আমায় একটু স্বস্তি দেবে।

সুখ অনুভবে বাঁচুক। আমি ছোট ছোট গল্প বলে যাব আনমনে।একবারে কি আর সব গল্প বলা যায় :-)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.