নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুভূতি গাঁথার সাধনায় মগ্ন।

চঞ্চল হরিণী

এই পৃথিবীর বাইরে কোথাও গিয়ে যদি কিছু লিখা যেতো ; এই অসহ্য মনোবৈকল্য দূর হতো। হে ভাবনা, দয়া করে একটু থামো। আমাকে কিছুটা মুক্তি দাও। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে তোমার অবিরাম পদচারণায়। বিচ্ছেদে যাও তুমি। ফুলে ওঠো পিঙ্গল বিভ্রম বেশে। আমাকে মৃত্যু দাও নয়তো চিৎকার করে ওঠার অপরিসীম ক্ষমতা দাও। আমি ক্লান্ত এই অমানিশায়। শান্তির খোঁজে মৃত্যুদূতের পরোয়া করিনা, পরোয়ানা জারি করো। গভীর, গভীর, গভীর। বোহেমিয়ান মন অভ্যস্ত জীবনের শিকল ভেঙ্গে ফেলো।

চঞ্চল হরিণী › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘টিম বাংলাদেশ’ বলতে এখন থেকে যেন মেয়েদের ক্রিকেট টিমকে বোঝানো হয়। নারী ক্রিকেট দলের আগে ‘নারী’ শব্দটি বসানোর কোন প্রয়োজন নেই, বরং পুরুষদের ক্রিকেট দলের ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট টিম’ লেখা হতে পারে।

১১ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১৫


ঘরোয়া ক্রিকেটে মাত্র ৬০০ টাকা ম্যাচ ফি পায় বাংলাদেশের মেয়েরা !! আশা করি সেটা এখন থেকে ‘পেতো’ হবে ‘পায়’ নয়।
১৯৯৭ সালে কুয়ালামপুরে যখন বাংলাদেশ দল কেনিয়ার সাথে খেলছিল তখন আমি প্রাইমারীতে পড়ি। থাকতাম মফস্বলে। আমাদের বাসার পাশে এনজিও ‘আশা অফিস’ ছিল। সময়টা দুপুর পেরিয়ে মাত্র বিকেলের শুরু, আম্মু আমাকে কি একটা কাজে যেন অফিসে পাঠাল (কোন একটা কাগজ দিতে, কিসের কাগজ মনে নেই)। দেখলাম অফিসের একজন হান্নান আঙ্কেল দরোজায় দাঁড়িয়ে এক হাতে পানির জগ, আরেক হাতে দাঁতন দিয়ে দাঁত মাজছেন আর তার ফাঁকে সমানে দোয়া দুরুদ পড়ছেন। ভেতরে জোরে রেডিও বাজছে। আঙ্কেল এভাবে দোয়া পড়ছেন কেন আমি একটু অবাক হলাম। ভেতরে গিয়ে সবার কথায় একটু বুঝতে পারলাম বাংলাদেশের কোন একটা খেলায় জয়ের জন্য সবাই দোয়া করছে। আমি কাগজটা ভেতরে দিয়ে দ্রুত বাসায় চলে এলাম। এসে আম্মুকে বললাম, ‘আম্মু বাংলাদশের কোন একটা খেলায় জয়ের জন্য সবাই খুব দোয়া দুরুদ পড়ছেন দেখে এলাম’। আম্মুর চোখে কৌতূহল এবং খুশীর ঝিলিক দেখেছিলাম, কিন্তু কি উত্তর দিয়েছিলেন তা মনে নেই। সন্ধ্যার সময় আমাদের বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমি ভাবছিলাম, আঙ্কেল যে দোয়া করছিলেন খেলার তার কি হল কে জানে। আমি এই ভেবে আরও অবাক হয়েছিলাম যে, হান্নান আঙ্কেলও খেলা পছন্দ করেন এবং সেটা নিয়ে উৎফুল্ল হন! কারণ তিনি ছিলেন অফিসের মধ্যে তুলনামূলক বয়োজ্যেষ্ঠ এবং কিছুটা গম্ভীর। আমার ওই বয়সের ধারণায়- খেলাধুলা পছন্দ করে কম বয়সীরা এবং চঞ্চল প্রকৃতির মানুষেরা। ভুল যেমন তখন ভেঙ্গেছে; আজ এত বছর পর দ্বিতীয় দফায় ভুল ভাঙ্গল বাংলাদেশের নারীদের এশিয়া কাপ জয়ের পর আমার নিজের ব্যাঙ্গের মত কয়েকবার লাফানোর কারণে। আমি ভাবতেই পারিনি এতটা খুশী, এতটা আনন্দিত হব যে অজান্তেই এভাবে কয়েকবার লাফাবো। তারপরেও আরও বেশি উৎফুল্লতা দেখানো থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে আমাকে বেগ পেতে হয়েছে। ভেতর থেকে ভীষণ জোরে কি যেন বেরিয়ে আসতে চাইছিল।
ইন্ডিয়ার ব্যাটিং এর তখন পাঁচ কি ছয় ওভার গিয়েছে আমি খেলা দেখতে বসেছি। জানতাম না যে খেলা চলছে, টিভির রিমোট ঘোরাতেই চোখে পড়ে আর বাংলাদেশ জার্সি দেখে থেমে যাই। দেখলাম মহিলা এশিয়া কাপ ফাইনাল। এর একটু আগেই কোন চ্যানেলে যেন খেলার খবরে বাংলাদেশের সামনে ইতিহাস জয়ের হাতছানি এমন সংবাদ দেখেছিলাম। এবার বুঝলাম এই খেলার কথাই বলা হয়েছে।প্রতিপক্ষ ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন মাইটি ভারত। এত অল্পতেই এতগুলো উইকেট পড়ে যেতে দেখে খুব উদ্দীপনা নিয়েই দেখতে লাগলাম। সাধারণত যা হয় মেয়েদের খেলায়, চারপাশের গ্যালারীতে খুব বেশি দর্শক এমন নেই এবং অনেক বেশি হইচইও নেই। একপাশেই দর্শকরা জড়ো হয়ে বসেছেন এবং উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। আমি আম্মুকে বললাম, আচ্ছা আম্মু ছেলেদের ক্রিকেট খেলা দেখলে যতটা ভালো লাগে; মেয়েদের ক্রিকেট খেলা, ফুটবল খেলা দেখলে চোখে ততটা আরাম লাগেনা কেন ? মেয়েদের টেনিস আর ব্যাডমিন্টন দেখতে ভাল্লাগে। আম্মু কোন উত্তর দিলো না। ভাবছি আমি নিজে ব্যাডমিন্টন খেলতে খুব পছন্দ করি বলেই কি-না কে জানে। কিছুক্ষণ পরে বুঝলাম, আসলে মেয়েদের ক্রিকেট আমি খুব কম দেখেছি, এত কম দেখেছি যে যার কারণে অনভ্যস্ত চোখে খেলার বদলে তাদের শারীরিক গঠনের দিকেই চোখ চলে যায় এবং অবচেতনেই অ-আরামদায়ক অনুভূতি হয়। হারমানপ্রীত ভারতের ক্যাপ্টেন জানতাম না, দেখছি মেয়েটা বেশ ভালো খেলেছে এবং দেখতেও সুশ্রী। ভালো লাগছে ওর ব্যাটিং দেখতে।



বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন সালমা-কে দেখে কেমন যেন একটু বয়স বেশি বা বুড়ি হয়ে গেছে এমন লাগছে। জুলিয়ান গোস্বামী-কে দেখে বললাম, ‘আম্মু ছেলেরাও তো অরে দেইখা ভয় পাইবো’। খুব দ্রুত উইকেট পড়ছে আর বাংলাদেশ দল আনন্দে লাফিয়ে উঠছে। আমারও খুব আনন্দ হতে লাগলো এবং এরপর খেলায় মজে গেলাম। মনে মনে বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিং এর খুব প্রশংসা করছি, সাথে সালমার ক্যাপ্টেন্সি বুদ্ধিমত্তারও। এবার হঠাতই ভাবলাম, ধুর মেয়েদের মত হওয়া লাগবে এমন কোন কথাই নাই, সব ফালতু। ওরা যে নিজের আনন্দে মনের মত খেলতে পারছে, নিজের সবচেয়ে ভালো লাগার কাজ করতে পারছে, আনন্দের কাজ করতে পারছে এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। এটাই জীবন। আর কিছুর পরোয়া না করলেও চলবে, ওদের জীবন থেমে থাকবে না। ছেলেদের ক্রিকেট খেলায় উইকেট পড়লে সাথে সাথে তুমুল ড্রামের সাউন্ড তথা আনন্দ বাজনা বাজে, চিয়ার গার্লসরা নাচে, কমেন্ট্রি বক্সে শোরগোল ওঠে। বাংলাদেশের খেলা হলে তো বাসার আশেপাশেই লোকজন চেঁচিয়ে ওঠে। এখানে এসব কিছু নেই। কমেন্ট্রি বক্সে যদিও একটু উত্তেজিত গলা শোনা যায়, গ্যালারির স্বল্প দর্শকরা হইচই করে ওঠে, বাকি আর কিছু নেই। আমাদের বাসায় একেবারে ক্রিকেট জ্বরে আক্রান্ত আমার ছোট বোন, এমনকি তারও কোন মাথাব্যাথা নেই, ঘুমুচ্ছে। আমি একাই দেখছি আর মায়ের সাথে বকবক করে যাচ্ছি। আমাকে দেখার সুযোগ দিয়ে মা-ও তাঁর নির্ধারিত সিরিয়াল দেখা বন্ধ রেখেছেন। বাংলেদেশের সাপোর্টারদের মধ্যে কিছু দাড়িওয়ালা, টুপি-পাঞ্জাবী পরা হুজুরও দেখলাম, যারা খুব আনন্দ করছেন এবং বাংলাদেশের পতাকাও ওড়াচ্ছেন। আমার ভালো লাগলো এই কারণে যে ওরা বাংলাদেশের মেয়েদের খেলাকে সমর্থন দিচ্ছেন। আবছা একটা প্রশ্নও মনে জাগল যে, ওদের কারো আমাদের মেয়েদের খেলার পোশাক নিয়ে আপত্তি নেই কেন। সৌদি আরবের মেয়েদের অস্বস্তিকর খেলার পোশাক চকিতে চোখে ভেসে উঠেছিল। যাইহোক, বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং শুরু হবার পর আমি আরেকদফা খেলায় মনোযোগ থেকে কিছুটা বিচ্যুত হয়ে গিয়েছিলাম। কারণটা হল অপেনার আয়েশা-কে দেখে। সে চোখে বেশ মোটা করে কাজল দিয়ে খেলতে নেমেছে। আকর্ষণীয় লাগছে। তাঁর শারীরিক গঠনও আকর্ষণীয়। আমার কেন জানি মনে হল সে বেশি ভালো খেলবে না, তাঁর খেলা থেকে মনোযোগ বেশি চলে গেছে মেয়েলীপনার দিকে। হয়তো প্রেম-ভালবাসায় আটকে গেছে, অনেক সময় এখন সেখানেই দেয় ( নিজের হাবিজাবি ভাবনা নিজেরই ফালতু লাগে মাঝে মাঝে, দাঁত কেলিয়ে নির্লজ্জের মত হাসি)। কিন্তু একটু পরেই ভুল ভাঙ্গল আয়েশার খেলার ম্যাচুরিটি দেখে। যথেষ্ট শারীরিক সামর্থ্য এবং মানসিক ধীরস্থিরতার পরিচয় দিয়ে খেলেছে সে।


এদিকে বরং ইন্ডিয়ার শিখা পান্ডের ইনজুরিটা নিয়ে আমার সন্দেহ জেগেছে এটা আদৌ তেমন ইনজুরি কিনা। তাকে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা পেটাচ্ছিল, তাই মনে হয়েছে সে আর পিটুনি খেতে না চেয়ে ভেগে গেছে ( আমার ভুল হলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি)। খেলা শেষ হওয়ার একটু আগে থেকে আম্মু আমাকে গোসলের জন্য তাড়া দিচ্ছিল; শপিং এ যেতে হবে, আমি নানারকম কথা বলে সময় নিচ্ছিলাম, ‘আম্মু আর দশ মিনিট মাত্র, আমি দরকার হলে এই বাথরুমে যাব; ওই বাথরুমে যাব না’। দুই বল বাকি থাকতে একটা উইকেট পড়ে গেলে আম্মুর দিকে তাকিয়ে ঠাণ্ডাভাবে বললাম,’আর মাত্র দুই বল বাকি’। আমার ভেতরের চরম উত্তেজনার সাথে উইকেট পড়ে গিয়ে আমাকে ভীষণভাবে স্তব্ধ করে দিয়েছে। ২০১২ ছেলেদের এশিয়া কাপ ফাইনালের স্মৃতি চোখে ভেসে উঠেছে। সাথে সাথে মনকে প্রবোধ দিয়েছি, নাহ; মেয়েরা পারবে, তারা ছেলেদের মত অত নার্ভাস নয়। ভাবতে ভাবতে রুমানার উইকেটও পড়লো। সালমা নামলো আর আমি বললাম, এখন সমস্ত কিছু তোমার হাতে সালমা, উইকেট নেয়ার যে আনন্দ তুমি করেছিলে এখনও যেন সেই মানসিক শক্তি এবং দৃঢ়তার পরিচয় থাকে। ক্রিজ ছেড়ে যাওয়ার সময় রুমানাও বোধহয় এমন কিছুই সালমার কাঁধে হাত রেখে বলেছিল।চশমাপরা রুমানাকে আমার বেশ ভালো লেগেছে।


হ্যাঁ, সালমারা পেরেছে (শেষ বলে ব্যাট করেছে জাহানার)। তুমুল আনন্দে আমি কয়েকবার, কয়েকবার লাফিয়ে উঠলাম। আমার চোখে পানি চলে এসেছিল। আমাদের ফেসবুক ছেলেদের ক্রিকেট খেলা চলার সময় ক্রিকেটীয় স্ট্যাটাসে সয়লাব হয়ে যায়। তাই তখন আমি আনন্দিত হলেও এই সংক্রান্ত স্ট্যাটাস দেই না। কিন্তু এবার এত দারুণ এবং ঐতিহাসিক এক বিজয় প্রায় নিষ্প্রাণই হয়ে রইল ফেসবুকে। থাকুক, তাতে সত্য মুছে যাবে না এবং অর্জন এতটুকু ম্লান হবে না।
বাংলাদেশের ছেলেরা এর আগে একবারই মাত্র কোন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট জিতেছে। ১৯৯৭, আইসিসি ট্রফি। কিন্তু সেই খেলায় অনেক ভিনদেশিরা বিশেষ করে ভারতীয়রা বলে, ডার্ক-লুইস পদ্ধতিতে রান কমানো হয়েছিলো যা জেতারা পক্ষে খুব সহায়ক হয় এবং কেনিয়া মোটেই খুব শক্তিশালী দেশ ছিল না। কিন্তু এবার কিছু বলার কোন সুযোগই তাদের নেই, কারোরই নেই। পরিপূর্ণ যোগ্যতা বলে এবং শক্তির পরিচয় দিয়েই আমাদের মেয়েরা আমাদের জন্য এই অসাধারণ সম্মান নিয়ে এসেছে। ছয়শ টাকা ম্যাচ ফির মত এতটা অবহেলিত থেকেও ওরা শিখরে উঠেছে। তাই এখন সময় ওদের প্রাপ্য সবকিছু ওদের বুঝে নেয়ার, দেশের মানুষের নিখাদ ভালোবাসা এবং সম্মান পাওয়ার।অনেক অনেক অভিনন্দন বাঘিনীরা।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২২

বিজন রয় বলেছেন: আপনি কোন দেশে বাস করেন?
যে আপনার এই কথা শুনবে তারা?

১১ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৩১

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: কোন দেশে বাস করলে কর্তৃপক্ষ কথা শোনে আমার জানা নেই। বাস করছি জন্মভূমিতে যেখানে ক্ষমতার গদি ফালতু কথা বললেও শোনে কেউ কেউ। আমি জানি, শুধু আওয়াজ তুলতে হয়, একজন হলেও শুরু করতে হয়।

২| ১১ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৫

বিজন রয় বলেছেন: আপনি একটি ভুল দেশে বাস করেন, যে দেশ ভুল মানুষেরা চালায়, চালিয়েছে, চালাবে। আর আপনার উত্তরটিও ভুল।
তাই আপনার চাওয়া কখনো পূরণ হবে না।

আশাকরি বোঝাতে পেরেছি.......
আর বলতে হলে অনেক বলতে হবে, ধরুন হেফাজত দিয়ে শুরু করতে হবে.......

১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:২০

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আপনার মন্তব্যের কিয়দংশের সাথে আমি একমত। বাকিটাতে জোরালো আপত্তি। 'চালাবে' শব্দটা হতাশাবাদী শব্দ। যদি ক্ষোভ থেকে বলে থাকেন তাহলে ভিন্ন কথা, আর যদি এমন ভবিষ্যতই দেখতে পান তাহলে সেটা অবশ্যই বর্জনীয়। কারণ মানুষকে আশায় বাঁচতে হয়। আমাদের জীবনকালে অনেক কিছুই হয়তো আমরা দেখে যেতে পারবো না, কিন্তু সেটা একদিন ঘটবে এই আশাবাদ মনে রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে। কারণ আশা একটি পরোক্ষ শক্তি যা মানুষকে জীবনের যাপনে গতি সঞ্চার করে। যতদিনই বাঁচি, আশাহীন বিমর্ষ হয়ে বাঁচার কোন মানে নেই। আমার আয়ুষ্কালেই আমার চাওয়া পূরণ হবে এমন প্রত্যাশা আমি করিনা। কিন্তু ইতিহাস বলে চেষ্টা চলতে থাকলে অনেক রক্ত, শ্রম, ঘাম এবং কাল অতিবাহিত হওয়ার পর একদিন ফল পাওয়া যায়ই। আর চেষ্টাই যদি থেমে যায় তাহলে তো সেই ফল আসার প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘতর হয়ে যাবে। তাই আমি আমার চাওয়া কতটুকু পূরণ হবে না জানলেও জীবনের শেষ পর্যন্ত আশাবাদী হয়ে আওয়াজ তুলে যেতে চাই। ধন্যবাদ।

৩| ১১ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমকে অর্ভ্যথনা জানাতে আজ বিমানবন্দরে বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট টিমের সকল সদস্যের উপস্হিতি প্রত্যাশা করি।

১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:২৩

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: যতক্ষণে প্রতিউত্তর দিচ্ছি ততক্ষণে কি ঘটে গেছে আমি জানি না। তবে আমিও আপনার মত একই প্রত্যাশা করেছি। ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই।

৪| ১১ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৫

আখেনাটেন বলেছেন: হ্যাঁ, সালমারা পেরেছে (শেষ বলে ব্যাট করেছে জাহানার)। তুমুল আনন্দে আমি কয়েকবার, কয়েকবার লাফিয়ে উঠলাম। --আমারও একই দশা।

আমাদের ফেসবুক ছেলেদের ক্রিকেট খেলা চলার সময় ক্রিকেটীয় স্ট্যাটাসে সয়লাব হয়ে যায়। -- ফেসবুক যেহেতু ব্যবহার করি না, তাই জানি না ওখানে কি হয়েছে। তবে ব্লগে কিন্তু অনেকেই পোস্ট দিয়েছে। প্রথম অালো সহ অন্য পত্রিকাগুলোও কিন্তু কাভার করেছে ভালোই। পরিবর্তন আসছে যদিও ধীর গতিতে।

আপনার শেষের কথাগুলোর সাথে একমত। এবং প্রাণঢালা অভিনন্দন বাঘিনীদের।

১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:২৭

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: ব্লগে অনেকেই পোস্ট দিয়েছে, তবে কয়জন দিয়েছে তা হাতেই গোনা যাবে। অথচ আজ ছেলেরা জিতলে ব্লগ পোস্টে ক্রিকেটীয় ফ্লাড চলতো। যাক, আপনিও লাফিয়ে উঠেছেন শুনে আমি মজা পেলাম। ধীরে হলেও পরিবর্তন যেন আসেই সেটাই কামনা। ধন্যবাদ ভাই।

৫| ১১ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৩

বিজন রয় বলেছেন: অভিনন্দন বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল, রুখো প্রগতিবিরোধী শক্তিকে

এই পোস্টের প্রথম ছবিটি নিয়ে কিছু বলবেন?

১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৩৩

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: প্রথম ছবিটি দেখলাম। নতুন কিছু নয়, এই অবস্থার মধ্যে অনেক বছর ধরেই আমরা আছি এবং এর মধ্য দিয়েই মেয়েরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিজয় অর্জন করেছে। লড়াই তো এখানেই। কলসুন্দর এলাকায় মেয়েদের ফুটবলে এখন আর কেউ কোন বাধাই দেয় না। অথচ তারাও একসময় বন্ধুর পথ অতিক্রম করে এসেছে। শুধু কিছু সাহসী, পরিশ্রমী, আশাবাদী এবং দৃঢ়চেতা মনোবলের মানুষ প্রয়োজন লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য।

৬| ১১ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৯

অচেনা হৃদি বলেছেন: বেতন বাড়ানোর কথা বলছেন ? আমি ভাবছি এবার মহিলা কৃকেটের নামে "বেহায়াপনার" বিরুদ্ধে হয়ত একটা বিশেষ গ্রুপ আন্দোলন শুরু করে দেবে । /:)

১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৩৬

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: হাহা আপনার ভাবনাটা অমূলক নয়। চারপাশে হিংসুক মানুষে ভর্তি। তারা সেটা করতেও পারে। তবে যেন না হয়, আর হলে আমরা যেন তীব্র প্রতিবাদ করতে পারি সেই কামনা করি।

৭| ১১ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৫

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: পতনের শুরু হয়ে গেল...

১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৩৭

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: ঠিক তাই। ন্যায় দাঁড়াতে হলে অন্যায়ের পতন হতেই হয়।

৮| ১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ৮:৪৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: চঞ্চল হরিণী ,




হরিণীর মতোই চঞ্চলা থেকেছেন সারাটা লেখা জুড়ে । যেন কারো মনের উল্লাসের একটা রানিং কমেন্ট্রি শুনলুম ।

আমাদের এই নির্লিপ্ততাই বুঝিয়ে দিচ্ছে আসলে আমাদের মেয়েরা কতো অবহেলিত । একটু যত্ন , একটু বাহবা পেলে এই সব মেয়েরাই আরো আরো দক্ষতা দেখাতে পারতো স্ব-স্ব ক্ষেত্রে ।

লিখেছেন - কিন্তু এবার এত দারুণ এবং ঐতিহাসিক এক বিজয় প্রায় নিষ্প্রাণই হয়ে রইল ফেসবুকে। থাকুক, তাতে সত্য মুছে যাবে না এবং অর্জন এতটুকু ম্লান হবে না।
মেয়েদের এই ঐতিহাসিক বিজয়ে ঢোল-নাকাড়া বাজেনি , পাড়ার ছেলেদের উল্লাসধ্বনি কানে ভেসে আসেনি, তো কি হয়েছে ?
তাতে সত্য মুছে যাবে না এবং অর্জন এতটুকু ম্লান হবে না।

ভালো লেগেছে পুরো লেখাটিই ।

১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৪১

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: হতে পারে, যেই উৎফুল্লতা নিয়ে লিখেছি- চঞ্চল হরিণী হয়ে যেন মাঠে দৌড়ে বেরিয়েছি :P । আপনার মন্তব্যটা খুব ভালো লাগলো আহমেদ জী এস ভাই। ধন্যবাদ।

৯| ১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:১০

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: আয়েশার কাজল পড়া একটি ছবি আশা করছিলাম! না পেয়ে শেষে ই, এস, পি, এন থেকে নিজেই একটি ছবি বের করলাম-



তবে, সবচেয়ে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে জাহানারা আলমকে-


আর, আমি এটা মনে করি যে, বাংলাদেশের উভয় পুরুষ ক্রিকেট টিমের আগে পুরুষ, আর, নারী ক্রিকেট টিমের আগে 'নারী' শব্দ প্রয়োগ করা যেতে পারে।

ধন্যবাদ।


১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৫৩

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আমিও আয়েশার এমন ছবি খুঁজেছিলাম কিন্তু পাইনি। আপনার এই কষ্টটুকুর জন্য অনেক ধন্যবাদ সত্যপথিক শাইয়্যান।

"আর, আমি এটা মনে করি যে, বাংলাদেশের উভয় পুরুষ ক্রিকেট টিমের আগে পুরুষ, আর, নারী ক্রিকেট টিমের আগে 'নারী' শব্দ প্রয়োগ করা যেতে পারে। " আমিও মনে করি এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু এতদিন এটা হয়নি, বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম বলতে পুরুষ ক্রিকেট টিমকেই বোঝানো হয়েছে কারণ ছেলেরা ভালো খেলত এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তারা বাংলাদেশের পরিচিতি এনে দিয়েছে। কিন্তু এবার মেয়েরা শুধু পরিচিতিই এনে দেয়নি; ট্রফি এনে দিয়েছে। তাহলে টিম বাংলাদেশ বলতে তাদেরকে বোঝানোর দাবী তো অনেক জোরালো হয়েছে- যদি ভালো খেলাই মানদণ্ড হয়, তাই নয় কি ? যাইহোক, অযথা তর্ক বৃথা। হ্যাঁ, লিখলে নারী,পুরুষ উভয় শব্দ দিয়ে লিখবে; আর যদি না লিখে তাহলে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম বলতে যেন নারী ক্রিকেট দলকেই বোঝানো হয়, বলতে চেয়েছি এবং দাবী জানিয়েছি সেটাই।

১০| ১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৪৯

নাজিম সৌরভ বলেছেন: এক্ষত্রে 'নারী' শব্দটি দিয়ে তো নেতিবাচক কোন ইঙ্গিত দেয়া হয়না । মেয়েদের টিম বোঝানর জন্য শব্দটি প্রয়োজন আছে । যতদূর জানি অন্যান্য দেশেও নারী টিম হিসেবে উল্লেখ করা হয় ।

১১ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:০০

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ নাজিম সৌরভ। কেন আমি 'নারী' শব্দটি বাদ দিতে চেয়েছি তা মাত্রই আগের প্রতিমন্তব্যে লিখেছি। অন্যান্য দেশেও চিত্রটা কমবেশি এমনই। তবে উন্নত দেশ যেমন আমেরিকার উদাহরণ দেখুন, তাদের প্রত্যকে খেলার মধ্যেই পুরুষ টিম এবং নারী টিম উল্লেখ থাকে। টিম আমেরিকা বলতেই পুরুষ দল এমন কোন কিছু তারা কখনো বোঝায় না।

১১| ১২ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:৫৫

হাঙ্গামা বলেছেন: ক্যাচাল পোষ্ট।

১২ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:৫৪

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: হুম। এবার হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দেন।

১২| ১৩ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:৩৭

প্রামানিক বলেছেন: আমাদের দেশের মেয়েদেরকে ভালো করে খেলা শিখালে এরা আরো ভালো করবে অথচ তাদেরকে অবহেলা করা হয়, যেমন ফুটবলে কাল সিন্দুরের মেয়েদের অর্জন অনুযায়ী সম্মান দেয়া হয় নাই।

১৩ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:২৩

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: ঠিক বলেছেন প্রামানিক ভাই। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখবেন ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খেলায় আমাদের মেয়েদের অর্জন ছেলেদের চেয়ে অনেক বেশি। তারপরেও কর্তৃপক্ষ এদিকে উদাসীন। আশা করি দ্রুতই তাদের বোধোদয় হবে। ধন্যবাদ।

১৩| ২৫ শে জুন, ২০১৮ রাত ৩:৪৮

রাকু হাসান বলেছেন: সময় এসেছি নারীদের নিয়ে বাড়তি মনোযোগ দেওয়ার । নার্ভের দিক দিয়েও তারা এগিয়ে । ২ কোটি দিয়ে দিলেই হবে না । আশাকরি কতৃপক্ষ সঠিক সিদ্ধান্তই নিবেন । শিরোনাম চমৎকার .সত্যিই তো টিম বাংলাদেশ বলাটাই ভাল মনে হয় । আইসিসি ট্রপি যে জিতলো সে খেলায় যে বাংলাদেশ ডার্ক-লুইস পদ্ধতির রানের হিসাব টা জানতাম না । জানলাম । কৃতজ্ঞ আপনার প্রতি ।

২৫ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৫

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: ঠিক বলেছেন রাকু হাসান। শুধু দুই কোটি দিলেই শেষ নয়, তাদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ, আবাসন, স্বাস্থ্য সর্বোপরি সবদিকেই পূর্ণ মনোযোগ দেয়া আবশ্যক এবং সময়ের দাবী। সুন্দর এই মন্তব্যটির জন্য ধন্যবাদ রাকু হাসান। শুভেচ্ছা।

১৪| ১৪ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৩:৩৬

অপ্রচলিত বলেছেন: 'চালাবে' শব্দটা হতাশাবাদী শব্দ। যদি ক্ষোভ থেকে বলে থাকেন তাহলে ভিন্ন কথা, আর যদি এমন ভবিষ্যতই দেখতে পান তাহলে সেটা অবশ্যই বর্জনীয়। কারণ মানুষকে আশায় বাঁচতে হয়। আমাদের জীবনকালে অনেক কিছুই হয়তো আমরা দেখে যেতে পারবো না, কিন্তু সেটা একদিন ঘটবে এই আশাবাদ মনে রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে। কারণ আশা একটি পরোক্ষ শক্তি যা মানুষকে জীবনের যাপনে গতি সঞ্চার করে। যতদিনই বাঁচি, আশাহীন বিমর্ষ হয়ে বাঁচার কোন মানে নেই। আমার আয়ুষ্কালেই আমার চাওয়া পূরণ হবে এমন প্রত্যাশা আমি করিনা। কিন্তু ইতিহাস বলে চেষ্টা চলতে থাকলে অনেক রক্ত, শ্রম, ঘাম এবং কাল অতিবাহিত হওয়ার পর একদিন ফল পাওয়া যায়ই। আর চেষ্টাই যদি থেমে যায় তাহলে তো সেই ফল আসার প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘতর হয়ে যাবে। তাই আমি আমার চাওয়া কতটুকু পূরণ হবে না জানলেও জীবনের শেষ পর্যন্ত আশাবাদী হয়ে আওয়াজ তুলে যেতে চাই।[/si

অসাধারণ পোস্ট এবং প্রতিউত্তরে অসংখ্য ভালোলাগা। চার বছরে আমার প্রথম মন্তব্য, মাঝে মাঝে ব্লগে এলেও লগইন করতাম না। অসম্ভব মন ছুঁয়ে যাওয়া কথাগুলোয় ভালোলাগা না লাগিয়ে যেতে পারলাম না।

চঞ্চল হরিণী, শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আপনার মনের এই আশা এবং প্রাণবন্ততা হারিয়ে ফেলবেন না যেন। ভালো থাকুন সর্বদাই।

১৪ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:৩৬

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: আপনি তো আমাকে ঋণী করে দিয়ে গেলেন ভাই/আপু। আমি আপ্লুত হয়ে গেলাম আপনার ভালোলাগায় এবং মন্তব্যে। চার বছরে প্রথম মন্তব্য ! সত্যি আমি খুব....খুবই সম্মানিত বোধ করছ।

"চঞ্চল হরিণী, শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আপনার মনের এই আশা এবং প্রাণবন্ততা হারিয়ে ফেলবেন না যেন। ভালো থাকুন সর্বদাই"।
না,আমি কখনো আশাহত হলেও আশা হারাবো না। আপনার এই মন্তব্য আমার আশাকে আরেকদফা শক্তি দিয়ে গেলো। ভালো থাকুন আপনিও সর্বদা। নিপীড়িত, পিছিয়ে পড়া, অবহেলিত মানুষের জন্য কণ্ঠের আওয়াজ যেন কখনো বন্ধ না হয়। ধন্যবাদ অসংখ্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.