নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুভূতি গাঁথার সাধনায় মগ্ন।

চঞ্চল হরিণী

এই পৃথিবীর বাইরে কোথাও গিয়ে যদি কিছু লিখা যেতো ; এই অসহ্য মনোবৈকল্য দূর হতো। হে ভাবনা, দয়া করে একটু থামো। আমাকে কিছুটা মুক্তি দাও। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে তোমার অবিরাম পদচারণায়। বিচ্ছেদে যাও তুমি। ফুলে ওঠো পিঙ্গল বিভ্রম বেশে। আমাকে মৃত্যু দাও নয়তো চিৎকার করে ওঠার অপরিসীম ক্ষমতা দাও। আমি ক্লান্ত এই অমানিশায়। শান্তির খোঁজে মৃত্যুদূতের পরোয়া করিনা, পরোয়ানা জারি করো। গভীর, গভীর, গভীর। বোহেমিয়ান মন অভ্যস্ত জীবনের শিকল ভেঙ্গে ফেলো।

চঞ্চল হরিণী › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রয়াণ দিবসে অর্ঘ্যেরও প্রয়াসে

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০২




বিশ্বাস নাকি অবিশ্বাস

মিসির আলি নাস্তিক ছিলেন (মি আ স পৃ ৩৮)। তবে ধর্ম সম্পর্কে যথেষ্টই জ্ঞান রাখতেন। এক জায়গায় তিনি বলছেন, “আমাদের নবীজিও (স.) মাছের গন্ধ সহ্য করতে পারতেন না। তিনি কখনো মাছ খান নি। একবার ইয়েমেনে তাঁকে মাছ খেতে দেয়া হয়েছিল। দুর্গন্ধ বলে তিনি সরিয়ে রেখেছিলেন(মি আ স২ পৃ ৩১)”। আবাবিল পাখি, হুদহুদ ঘোড়া, কুইন অব সেবা ‘বিলকিস’, নবী সোলায়মান ইত্যাদি ধর্ম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর ভাবনা আমরা নানা সময়ে পাই। আবার নাস্তিক হলেও মিসির আলি বিজ্ঞানের গোঁজামিলেও অন্ধভাবে বিশ্বাস করতেন না। তিনি বিজ্ঞান সম্পর্কে দারুণ জ্ঞান রাখতেন। বিশেষত পদার্থ বিজ্ঞান। এর প্রমাণ আমরা পাই যখন এক জায়গায় দেখি মূর্খ রিকশাওয়ালাকে তিনি গতির ফ্রিকশন এবং মোমেন্টাম বোঝানোর চেষ্টা করছেন। আরও জোরালো প্রমাণ মেলে তাঁর বন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক দেওয়ান সাহেবের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের সময়। সেখানেই পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে তাঁর জ্ঞান, পড়াশোনা এবং বিজ্ঞানের যুক্তি খণ্ডন খুব সুস্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। দেওয়ান সাহেবের মত ভীষণ একাডেমিক মানুষ যিনি কোন কিছু পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্রের মধ্যে না পড়লেই আবর্জনার ঝুড়িতে ফেলে দেন তিনি পর্যন্ত কনফিউজড হয়ে যান। এই লেখার শুরুর ভূমিকায় সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে ধর্ম ও বিজ্ঞানের যে সংঘাতের কথা উল্লেখ করেছিলাম তারই বিস্তারিত প্রমাণ মিলবে মিসির আলি সমগ্রের তৃতীয় উপন্যাস ‘নিষাদ’এর ২৪২-২৪৩ পাতায়। এর সমাপ্তিটাও বিজ্ঞানের একটা তাত্ত্বিক রহস্যের মধ্যেই রেখে দেয়া। তিনি জন্মাতরবাদে বিশ্বাসী ছিলেন কি-না এই প্রসঙ্গটাও মাথায় আসে যখন পড়ি তিনি ভাবছেন, ‘মৃত্যুর আগে গত জীবন চোখের সামনে একবার হলেও ভেসে ওঠে, এটা কি সত্য। নয়তো হঠাৎ করে ভুলে যাওয়া শৈশবের এই ছবি চোখে ভাসবে কেন?’ (মি আ স পৃ ১৮৪)। এটা তিনি এই জীবনেরই গত সময় বুঝিয়েছেন না গত জনম তা বোঝা যায় না। কিন্তু সন্দেহ জাগে কারণ তিনি একই ব্যক্তির বিভিন্ন মাত্রায় ভিন্ন ভিন্ন জীবন যাপনের কথা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন, যা নিষাদে পাওয়া যায়।
এই প্রসঙ্গে আমেরিকার অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের আঠারোশ চব্বিশ সালের একটি ঘটনার উল্লেখ আছে, যা স্থানীয় মেথডিস্ট চার্চে নথিভুক্ত (মি আ স পৃ ২৩৮-২৩৯)।

দর্শন

মিসির আলি একজন দার্শনিকও ছিলেন। সময়ে সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নানা ধরণের দার্শনিক সিদ্ধান্ত তিনি মনে মনে নিতেন। কখনওবা কারো সাথে বিশেষ করে রোগীদের সাথে আলাপচারিতায়ও তিনি এমন ধরণের অনেক কথা বলতেন। যেমন এক জায়গায় বলছেন, মানুষের সব শখ মেটা উচিত নয়, একটা অসন্তুষ্টি থাকা দরকার। সব শখ মিটে গেলে বেঁচে থাকার প্রেরণা নষ্ট হয়, যাদের সব শখ মিটে গেছে তারা অসুখী মানুষ (মি আ স পৃ ৪৯)। মিসির আলি শুধু যে রোগীদের মনঃবিশেষণ করতেন না নয়, সময় সময় দেশের মানুষদেরও একটা সামগ্রিক বা গড়পড়তা মনঃবিশ্লেষণ করতেন। যেমন তিনি ভাবছেন, ‘আমাদের দেশের মানুষদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, যে কাজগুলো তাঁরা করতে পারবে না, সেই কাজগুলোর দায়িত্ব তারা সবচেয়ে আগ্রহ করে নেবে’ (মি আ স পৃ ১৪০)। আবার ভাবছেন, ‘এই দেশের বেশীরভাগ লোকই কোন কাজ করতে চায় না।‘ কেন করতে চায় না’- এই নিয়ে ভালো কিছু গবেষণা হওয়া দরকার’(মি আ স পৃ ১৪১)।

*'অনির্ণীত হুমায়ূন' বইতে আমার লেখা 'মিসির আলি পাঠ' প্রবন্ধটি থেকে দুটি অংশ উপরে তুলে দিয়েছি। এবার মিসির আলির উপন্যাসগুলোতে পাওয়া সমস্ত বই এবং তথ্য নিয়ে লেখা প্রবন্ধটির ‘বই ও তথ্য’ অংশ থেকে সামান্য তুলে ধরলাম।

বই ও তথ্য (আংশিক)
১)ইল্যুশন অ্যান্ড হেলুসিনেশন’ ড. জিম ম্যাকার্থি (মি আ স পৃ ১৬০)।
২) ‘সমনোমবলিক প্যাটার্ন’ স্টিভেনশন (মি আ স পৃ ১৬১)।
৩) গণিতজ্ঞ ডেভিড হিলবার্ট ‘হিলবার্ট’ হোটেলের সমস্যা (মি আ স পৃ ২৩৮)।
৪) থার্ড ডিনামিক্সের সূত্র, কুর্ট গডেল এর থিওরি (মি আ স পৃ ১৬০)।

১৪) ১৯৯৫ সালে নাসার জনসন স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের বিজ্ঞানীরা এন্টার্কটিকা মহাদেশে পতিত একটি উল্কা পরীক্ষা করেন। উল্কার নম্বর হচ্ছে ALIT84001। যেটার অর্গানিক অনু ছিল levorotatory অর্থাৎ অণুগুলো পৃথিবীর বাইরের (মি আ স পৃ ১১২)।
* উল্লেখ্য সত্যি নাসার বিজ্ঞানীরা ১৯৮৪ সালে এন্টার্কটিকায় একটি উল্কা পান যেটার নাম ALH84001। এটি পরীক্ষা করে বিশেষায়িত করা হয় ১৯৯৪ সালে এবং ১৯৯৫ সালে Treiman [Treiman A. H. (1995) A petrographic history of martian meteorite ALH84001: Two shocks and an ancient age. Meteoritics, 30, 294-302] এটির ব্যাপারে লেখেন। বলা হচ্ছে এটি মঙ্গল থেকে আগত এবং এতে পাওয়া অণুগুলি পৃথিবীর অনু নয়। আরও তথ্য Click This Link

১৫) পারস্যের হাসান সাব্বা পাহাড় ঘেরা এক সমতল ভূমিতে গোপন বেহেশত তৈরি করেছিল। সেখানে নির্বাচিত শিষ্যদের হেলুসিনেজেটিং ড্রাগ হাশিশ অর্থাৎ ভাং এর শরবত খাওয়ানো হত। তারপর তারা ভ্রান্তির জগতে চলে গেলে তদের দিয়ে গোপন হত্যাকাণ্ড ঘটানো হত। মঙ্গোল নেতা হালাকু খাঁ তাদের ধ্বংস করে। হাশিশ যা আরবি হালাশিন সেখান থেকেই ইংরেজি Assassin এসেছে (মি আ স২ পৃ ৭৫)।




রহস্য গল্প আমাদের অনেকেরই ভীষণ প্রিয় গল্প। পাঠের তালিকায় রহস্য গল্প সবার শীর্ষে থাকে, তেমন পাঠক সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। কিন্তু বাংলাদেশি পাঠক সমাজে, বিশেষ করে একটু সমঝদার পাঠকরা রহস্য গল্পমাত্রই গোয়েন্দা রহস্য বা বস্তুগত রহস্য বোঝেন।‌ অথচ পৃথিবীতে সবচেয়ে রহস্যময় হচ্ছে মানুষের মন। তো এই বোঝাটাই এদেশের অনেক বিজ্ঞ পাঠককে ‘মিসির আলি’ বিমুখ করেছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে ‘হুমায়ূন আহমেদ’ পছন্দ না করার বিষয়টা। কিন্তু অপছন্দ করলেও; প্রকৃত বিচার হয় লেখা পড়ার পরেই অপছন্দ করাটা। যাঁরা পড়ে অপছন্দ করেছেন, নিঃসন্দেহে সেটা তাঁদের ভালো-লাগা না লাগার ব্যাপার।
‘মিসির আলি’ এদেশের অল্পবয়সী তরুণদের মধ্যে অনেক জনপ্রিয়। কিন্তু তরুণ বয়সের পাঠকরা লেখার অন্তর্নিহিত গভীর দর্শন সহজে ধরতে পারে না, যা জীবনবোধে অভিজ্ঞ পাঠকরা পারেন। অল্পবয়সীরা কাহিনীর প্রবাহেই বিমোহিত হন, চিন্তার কোন অবকাশ তাদের থাকে না বা পায় না। বস্তুত জীবনের বেশ অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে আসা মানুষেরাই তেমন লেখা পেলে চিন্তায় ডুবতে পারেন বা ভাবনার খোরাক পেয়ে যান। বলছি মনের রহস্যের কথা, তাহলে বস্তু জীবনের এত ভাবনা আসলো কোথা থেকে! এটাই ‘মিসির আলি’ পড়ার মজা। তিনি যেমন ভীষণভাবে বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করে বিমূর্ত মনের অনেক রহস্যের সমাধান করেন, ঠিক তেমনি উপন্যাসগুলোর পরতে পরতে বিভিন্ন জায়গায় বস্তু জীবনের অনেক দর্শন তাত্ত্বিক ভাবনা, বিশ্বাস এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পায়। বিজ্ঞান এবং ধর্মের বৈরিতার মত সত্যানুসন্ধানের এক ভাবনা অবধারিতভাবেই পাঠকের মনে চলে আসে।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:১৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


'অনির্ণীত হুমায়ুন' কি ধরণের বই, কখন প্রকাশিত হয়েছে?

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৯

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: প্রথমেই প্রথম মন্তব্য ও পাঠের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই চাঁদগাজী ভাই। 'অনির্ণীত হুমায়ূন' স্যার হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে লেখা প্রথম গবেষণামূলক বই। এখানে ভিন্ন ভিন্ন বিষয় নিয়ে দশ জন লেখকের দশটি আলাদা প্রবন্ধ আছে। যেমন, তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্প উপন্যাস, ছোট গল্প সমগ্র, মধ্যবিত্ত বাঙ্গালী নাগরিক জীবন, হিমু সমগ্র, মিসির আলির উপন্যাসগুলো ইত্যাদি বিভিন্ন আঙ্গিকের বিষয়। বইটি গতবছর ১৩ নভেম্বর হুমায়ূন আহমেদ'র জন্মবার্ষিকীতে প্রকাশিত হয়েছে 'ক্রিয়েটিভ ঢাকা' প্রকাশনী থেকে। তখন পোস্ট দিয়েছিলাম হয়তো আপনার চোখ এড়িয়ে গেছে। আপনার এমন আগ্রহী মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ, চাঁদগাজী ভাই।

২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:২০

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।
সামু যদি আজ ব্যানার টা হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে করতো খুব খুশি হতাম।

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫১

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ রাজীব ভাই। ভীষণ ভালো লাগলো আপনার ছোট্ট দুটি কথা।
"সামু যদি আজ ব্যানার টা হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে করতো খুব খুশি হতাম।" আমিও খুশী হতাম :)

৩| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:২৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:


হুমায়ুন আহমদের তৈরি চরিত্রগুলো মানুষের মনে এতটাই বাস্তব হয়ে ওঠে যে, অনেক কিশোর বয়সী পাঠক মানতেই চায় না, এ স্রেফ লেখকের কল্পনায় বোনা মানুষ। হুমায়ূন আহমেদের চরিত্রগুলো পাঠক মহলে ব্যাপক আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়েছে। তেমন কয়েকটি চরিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- হিমু, মিসির আলী, রূপা, শুভ্র ও বাকের ভাই। বাংলা সাহিত্যে কুবের আছে, দেবদাস আছে, আছে কবি নিতাই। বহু কবি-সাহিত্যিক এমনকি নাট্যকারের সৃষ্টি করা এসব চরিত্র আমাদের মনে স্থান দখল করে আছে। সে সব চরিত্রের ভিতর থেকে হিমু ব্যাপক জনপ্রিয়। সেই কাল্পনিক হিমুতেই মজে আছে এই বাংলার অসংখ্য তরুণ। হিমুর আদলে হলুদ পাঞ্জাবিতে নিজেকে সাজিয়ে ঘুরে বেড়ায় শহর-বন্দরে। কাল্পনিক হিমু তরুণদের মনে এতটাই দাগ কেটেছে যে, হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর খবর শুনে একদল হিমুর দল যাত্রা করেছিল নুহাশ পল্লীর দিকে।


হিমু চরিত্রটিকে অনেকেই বাংলা সাহিত্যে প্রথা ভাঙা চরিত্র বলে মানেন। তার বয়সের তরুণ যখন নিজ ভবিষ্যৎ আর করপোরেট স্বপ্নে বিভোর, হিমু তখন পকেটবিহীন হলুদ পাঞ্জাবি গায়ে, খালি পায়ে হাঁটা এক পথিক। ‘হিমু’ উপন্যাসে সে নিজেকে একজন নিতান্তই পথিক হিসেবে পরিচয় দেয়। হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা চরিত্রের একটি এটি। অনেক চরিত্র মিসির আলী। তিনি মোটা ফ্রেমের ভারী চশমা পরিহিত, কিছুতেই বিশ্বাস করেন না অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা।

যত রহস্যময় ঘটনাই ঘটুক যুক্তি দিয়ে তার সমাধান খুঁজে নেন। এই যুক্তিবাদী মানুষটির নাম ‘মিসির আলী’। ‘হিমু’কে যদি অগোছালো আর যুক্তিতর্কবিরোধী চরিত্রের প্রতীক বলা হয়; মিসির আলী হচ্ছে সম্পূর্ণ তার বিপরীত। মানুষের মন, আচরণ, স্বপ্ন এবং সংকট যুক্তির আলোকে ব্যাখ্যা করাই হলো মিসির আলীর একমাত্র কাজ। ‘শুভ্র’ চরিত্রটি তার নামের অর্থের মতোই শুদ্ধতম এক মানবের প্রতিচ্ছবি। শুভ্র নিজেকে পৃথিবীর যাবতীয় জটিলতা থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে। নাটকের চরিত্র হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয় বাকের ভাই। কোনো গল্প, উপন্যাস কিংবা নাটকের চরিত্র যে বাস্তব জীবনে এভাবে দৃশ্যমান হয় তা বোধ হয় আগে কেউ দেখেনি। হুমায়ূন আহমেদই সেই বিস্ময়কর ইতিহাস সৃষ্টি করেন ‘বাকের ভাই’ চরিত্রের মাধ্যমে। হুমায়ূন আহমেদের ‘কোথাও কেউ নেই’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয় নাটক। এ নাটকে ‘বাকের ভাই’র চরিত্রে অভিনয় করেন আসাদুজ্জামান নূর। হুমায়ূন আহমেদের আরেকটি সৃষ্টি ‘রূপা’। ‘হিমু’র মতো এক বাউণ্ডুলেকে ভালোবাসে এই অসম্ভব রূপবতী মেয়েটি।

B-) আপনার চমৎকার লেখায় ভাল লাগা রইলো। B-)

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: "হুমায়ুন আহমদের তৈরি চরিত্রগুলো মানুষের মনে এতটাই বাস্তব হয়ে ওঠে যে, অনেক কিশোর বয়সী পাঠক মানতেই চায় না, এ স্রেফ লেখকের কল্পনায় বোনা মানুষ" । খুবই সত্য বলেছেন ভাই। কিন্তু এই সত্যটার প্রভাব ছিল চরম। এমন সত্য একদিকে যেমন একজন লেখকের জন্য আরাধ্য পাওয়া তেমনি তরুণ পাঠকদের জন্য ছিল অশনি সংকেতের বার্তা। ৫ নং মন্তব্যে ঠাকুরমাহমুদ ভাইয়ের বক্তব্যে তার কিছুটা আঁচ পাওয়া যায়। আর এই প্রভাবের জন্যই "বাংলা সাহিত্যে কুবের আছে, দেবদাস আছে, আছে কবি নিতাই" এইরকম অনেক গুরুত্বপূর্ণ কালজয়ী সাহিত্যিক চরিত্রকে বর্তমান পাঠক মহলের একটি বিরাট অংশই চেনে না। কিভাবে এমন প্রভাবের তীব্রতা কমানো যেত তা নিয়ে আরও বিস্তারিত আলচনার অবকাশ আছে। তাই এখানে আর এটা বাড়ালাম না।

মিসিল আলি অত্যত্ন যৌক্তিক মানুষ ছিলেন। তাই খুব হালকা চালে কথাসাহিত্যের আদলে লেখা হলেও এই চরিত্র সংক্রান্ত উপন্যাসগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। জানার মত, ভাবার মত, উপলব্ধির মত অনেক বিষয় এই উপন্যাসগুলোতে আছে। শুধু বোঝার মত পাঠকের সেই দৃষ্টিকোণ প্রয়োজন। সবশেষে একটা কথা যত যাই হোক সত্যকে মেনে নিয়েই সভ্যতা এগিয়ে যায়।

আপনার পাঠ, মন্তব্য ও লাইকে অনেক ধন্যবাদ নিবেন কাওসার ভাই। শুভকামনা জানাই।

৪| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৫

কাইকর বলেছেন: খুব প্রিয় একজন মানুষ ও লেখক

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১২

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ কাইকর।
প্রিয় একজন লেখকে নিয়ে লেখা বইটি চাইলে কিনতে পারেন অনির্ণীত হুমায়ূন :)

৫| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: হুমায়ুন আহেমেদের অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন আমাদের কতোটা ক্ষতি করে দিয়েছে তা শুধু মাত্র হুমায়ুন আহমেদের বই পাঠকরাই জানেন । এখন আরেকটা হুমায়ুন আহমেদ আর এই দেশে জন্ম হবে না - শেষ ।।

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২১

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: "হুমায়ুন আহমদের তৈরি চরিত্রগুলো মানুষের মনে এতটাই বাস্তব হয়ে ওঠে যে, অনেক কিশোর বয়সী পাঠক মানতেই চায় না, এ স্রেফ লেখকের কল্পনায় বোনা মানুষ" । খুবই সত্য বলেছেন ভাই। কিন্তু এই সত্যটার প্রভাব ছিল চরম। এমন সত্য একদিকে যেমন একজন লেখকের জন্য আরাধ্য পাওয়া তেমনি তরুণ পাঠকদের জন্য ছিল অশনি সংকেতের বার্তা। ৫ নং মন্তব্যে ঠাকুরমাহমুদ ভাইয়ের বক্তব্যে তার কিছুটা আঁচ পাওয়া যায়। আর এই প্রভাবের জন্যই "বাংলা সাহিত্যে কুবের আছে, দেবদাস আছে, আছে কবি নিতাই" এইরকম অনেক গুরুত্বপূর্ণ কালজয়ী সাহিত্যিক চরিত্রকে বর্তমান পাঠক মহলের একটি বিরাট অংশই চেনে না। কিভাবে এমন প্রভাবের তীব্রতা কমানো যেত তা নিয়ে আরও বিস্তারিত আলচনার অবকাশ আছে। তাই এখানে আর এটা বাড়ালাম না।

মিসিল আলি অত্যত্ন যৌক্তিক মানুষ ছিলেন। তাই খুব হালকা চালে কথাসাহিত্যের আদলে লেখা হলেও এই চরিত্র সংক্রান্ত উপন্যাসগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। জানার মত, ভাবার মত, উপলব্ধির মত অনেক বিষয় এই উপন্যাসগুলোতে আছে। শুধু বোঝার মত পাঠকের সেই দৃষ্টিকোণ প্রয়োজন। সবশেষে একটা কথা যত যাই হোক সত্যকে মেনে নিয়েই সভ্যতা এগিয়ে যায়।

আপনার মন্তব্যের উত্তরে তিন নাম্বার উত্তরটা রিপিট করলাম ভাই। আমিও তো হুমায়ূন আহমেদ'র পাঠক। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় আমি নেই যদিও আমার পরিচিত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত একজন আছেন। মানসিকভাবে এমন নিদারুণ প্রভাবিত হওয়ার পেছনে শুধু লেখককে দোষ দিলে সেটা একপাক্ষিক আচরণ হবে। কারণ আরও অনেকগুলো আছে। আর এক 'হিমু' প্রভাবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আরও অসংখ্য লেখাকে কোনভাবেই বাদ দেয়া যায় না।
পাঠ ও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা, ঠাকুরমাহমুদ ভাই :)

৬| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক হুমায়ুন আহমেদের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৫

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: পাঠপূর্বক মন্তব্যে প্রিয় লেখককে নিয়ে আরেকটি লেখার লিঙ্ক দেয়ার জন্য ধন্যবাদ নূর মোহাম্মদ নূরু ভাই। শিরোনামের সাথে একমত না হলেও অবশ্যই পড়বো লেখাটি।

৭| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৭

সিগন্যাস বলেছেন: ওয়াও আপু অসাধারণ লিখেছেন । আমি মিসির আলির সিব বই পড়েছি । এখন আপনার লেখা পড়ে মনে হলো বইগুলো আবার পড়া দরকার । আমি আবার এইসব রহস্য আবার বেশি পছন্দ করি B-)

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩২

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: ওয়াও! তুমি সব বই পড়েছ, তাহলে তো তুমিই হবে আমার প্রবন্ধটির খুব ভালো সমঝদার। তোমার যদি আবারও পড়ার ইচ্ছে জাগে তাহলে আমি সার্থক। ইচ্ছে হলেই মিসির আলির উপন্যাসগুলো পড়বে। কিন্তু এখন আগে আমার প্রবন্ধটি সম্পূর্ণ পড়ে দেখো দেখি কেমন লাগে। Click This Link :)
রকমারিতে বইয়ের লেখক লেখা আছে 'মুম রহমান'। কিন্তু আসলে ভেতরে লেখক দশজন।

৮| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩১

লাবণ্য ২ বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন আপু।

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৬

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যে অনেক ভালোলাগা জানবেন লাবণ্য ২। আসলে এই বইটির সবগুলো প্রবন্ধই মোটামুটি ভালো। আশা করি ইচ্ছে হলে পড়বেন Click This Link শুভকামনা :)

৯| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:১৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: মিসির আলী পিডিয়া পড়লাম মনে হয় যেন। আচ্ছা মিসির আলী'র গল্প গুলো কি মৌলিক বলে মনে হয় আপনার?

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৪২

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: প্রবন্ধটির মাত্র দুটি অনুচ্ছেদ এখানে তুলে ধরেছি বিচার মানি ভাই, মূল প্রবন্ধতে আরো অনেকগুলো অনুচ্ছেদ। আপনার পিডিয়া মনে হওয়া মন্তব্য আমার খুব ভালো লাগলো এবং আমাকে অনুপ্রেরণা দিলো :)

শুধু বাংলা ভাষার সাহিত্য বিবেচনা করলে অবশ্যই মৌলিক। কিন্তু যদি সাহিত্য না বলে শুধু গল্প মৌলিক কি-না প্রশ্ন হয় সেক্ষেত্রে উত্তর দেয়া কঠিন। কারণ বিদেশী ভাষায় এমন বিষয়ের গল্প আমার পড়া নেই। তবে উপন্যাসগুলোতে বিভিন্ন সময় অনেক বিদেশী কেইস হিস্ট্রি সম্বলিত বইয়ের উল্লেখ আছে। সেসব বইতে হয়তো বা এই ধরণের গল্পের ছায়া থাকতেও পারে।
একটা বিষয় উপলব্ধি করার অনুরোধ, "পৃথিবীতে সব ফুল ফুটে গেছে, শুধু দেখার বিষয় সেসব ফুল দিয়ে কে কিভাবে মালা গাঁথে", কথাটা আমার একজন স্যারের। এক হিসেবে পৃথিবীর কোন গল্পই চূড়ান্তভাবে মৌলিক না।
ধন্যবাদ, বিচার মানি তালগাছ আপনার ভাই।

১০| ১৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৩৮

নাজিম সৌরভ বলেছেন: বেশ বিশ্লেষণ! হুমায়ুন আহমেদ আপনার প্রিয় লেখক হয়ত। এমনভাবে মিসির আলীকে চিত্রিত করলেন যেন মিসির আলী কোন কাল্পনিক বা ফিকশনাল ক্যারেক্টার নয়! যেন রক্ত মাংসে গড়া মানুষ!

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:০৩

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: হাহা তাহলে এমনই মনে হচ্ছে যেমনটা পাঠকদের মনে হয়। হুমায়ূন আহমেদ তো চরিত্রটি তৈরিও করেছিলেন সেভাবেই। না, আসলে তিনি আমার প্রিয় লেখক নন। আমি তাঁর সব লেখা পছন্দ করি না। কিন্তু আবার অনেক লেখাই খুব পছন্দ করি। মিসির আলি সিরিজ আমার খুব পছন্দ ছিল। লেখককে তাঁর লেখার মধ্য দিয়ে চেনা যায়। হুমায়ূন আহমেদ স্যারকে যখন প্রশ্ন করা হত, আপনি হিমু নাকি মিসির আলি ? তিনি সারাজীবন উত্তর দিয়েছেন তিনি কেউ নন। কিন্তু এমন সুস্পষ্ট এবং আইকনিক ক্যারেক্টার যখন কোন লেখক তৈরি করেন সেখানে অবশ্যই তাঁর নিজস্ব মূল্যবোধেরই প্রকাশ ঘটে। দুটি সত্ত্বা নিয়ে তিনি সমানতালে এগিয়ে গেছেন। আর মিসির আলি চরিত্রটির গুরুত্ব বোঝাতে, তাঁকে পাঠের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতেই আমি এভাবে লিখেছি। একবার ভাবুন কতটা রক্তমাংসের মত বাস্তবিক করে চরিত্র এবং ঘটনা বুনন করলে একটা চরিত্র এতো জনপ্রিয় হতে পারে। তাছাড়া এমন বিষয় নিয়ে সাহিত্যও বাংলা ভাষায় আর নেই।
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ নাজিম সৌরভ ভাই। শুভেচ্ছা :)

১১| ২২ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:২২

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: হরিণ আপু, হরিণ আপু!!
তুমি ব্লগে হিরো হয়ে গেলে!!!:D
চলো, এই খুশিতে দুজনে মিলে ঘাস খাই!:P



পুনশ্চঃ
আনন্দ গল্পটা সেদিন পড়লুম। দারুন গল্প।:)

২২ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:৫৪

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: হাহাহা, হরিণ ঠিক আছি, হিরো থেকে আবার হিরন (বক) হয়ে গেলে সমস্যা আছে :P
আমি নাহয় ঘাস খাই, তাই বলে আলাউদ্দিনও বুঝি ঘাস খাবে :-/
অপেক্ষা করছিলাম নিজাম ভাই এই পোস্টে কেন আসে না, ক্যান আসে না। কারণ আমি জানিয়াছিলাম আপনি মিসির আলি সবচেয়ে বেশি লাইক করেন, আমার মত সেম সেম :-B

আহ! আজ কি খুশীর দিন, তা ধিন ধিন :> । অনেক অনেক ধন্যবাদ, ধনেপাতা, শুভকামনা, শুভেচ্ছা সব দিলাম ;)

১২| ২২ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৩৭

রাকু হাসান বলেছেন: বিশ্লেষণধর্মী লেখা পড়তে খুবই ভাল লেখা আমার ,জানলাম ,বইটি পড়ি নি ,নাম যেহেতু দিয়েছো তাহলে ওরেঁ খাইছি এবার ;)

২২ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৪৭

চঞ্চল হরিণী বলেছেন: হাহাহা B-)) । খাও, ওঁরে খাইয়া হজম কইরা জানাইও =p~ । আমার প্রিয় তালিকায় দেখো একটা লেখা আছে, 'হাতি-খাসী-হাঁসি'। ওইটাও পড়িও, আমার লেখা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.