নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Our sweetest songs are those that tell of saddest thought (Shelly).

রূপক বিধৌত সাধু

মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইলো পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])

রূপক বিধৌত সাধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

এল আঁধার ঘিরে (৩)

২৭ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১২:২২


আগের পর্বের লিঙ্ক: Click This Link
উত্তর বাড্ডার "হোসেন মার্কেট"। মালিবাগ থেকে তূর্য এসেছে চাকরির পরীক্ষা দিতে। "প্রাণ-আরএফএল" কোম্পানিতে লোক নেওয়া হচ্ছে। সে অপেক্ষা করছে কখন পরীক্ষা নেওয়া শেষ হবে।

বসে আছে হল ঘরে। লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে হল ঘর। একজন বক্তা বক্তব্য রাখছেন। কোম্পানি সম্পর্কে অনেক কথা বলা হচ্ছে। মনোযোগ দিয়ে অনেকেই শুনছে। কেউ কেউ আবার ফিসফিস করছে।

তূর্য'র বুক ধড়ফড় করছে। সে কারও সাথে কথা বলছে না। পরীক্ষা কেমন হয় কে জানে! চাকরি তার খুব দরকার। যে কোনো একটা চাকরি।
বাড়িতে অসুস্থ মা-বাবা। মাস শেষে টাকা দিতে হয়। এ মাসে মাত্র ৩ হাজার টাকা পাঠিয়েছে। সামনের মাসে কিছু দিতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। গত চাকরির যা সঞ্চয় ছিল; এতদিনে শেষ হয়ে গেছে। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। গত ২ মাসে টানা ৩ বেলা পেট পুরে খাবার খেয়েছে বলে মনে পড়ে না। বড়োজোর ১ বেলা ভাত। সেটা দুপুরে। রাতে মাঝেমধ্যে এটাসেটা খায়। সকালে কখনোই খায় না। আজকে অবশ্য মার্কেটের নিচ থেকে একটা বাটার বন খেয়ে এসেছে।

কিছু না খেয়ে ইন্টারভিউতে গেলে মুখ দিয়ে কথা বেরোয় না। তোতলামি শুরু হয়ে যায়। কয়েকদিন আগে "গেটকো"তে গেল। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এক ফোঁটা জলও পান করে নি। ইন্টারভিউতে গিয়ে মুখ দিয়ে কথা বেরোয় না। প্রশ্নকর্তা জিজ্ঞেস করেছিলেন, "আপনি অসুস্থ কি না?"
"একটু মাথাব্যথা।" তূর্য বলেছিল।
ইন্টারভিউ ভালো হয় নি।

পরীক্ষা শুরু হলো। প্রশ্ন সহজই মনে হচ্ছে। যথাসম্ভব উত্তর করল তূর্য। অনুমান করল উত্তীর্ণ হবে। উত্তীর্ণ হলেই ইন্টারভিউতে ডাক পড়বে।

দুপুর দুইটায় ফলাফল দেওয়া হলো। তূর্য উত্তীর্ণ হয়েছে। ইন্টারভিউ দিতে হবে। ইন্টারভিউ শুরু হবে এখনই।

প্রার্থীদের ৩ ভাগে ভাগ করা হলো। একভাগ টেস্টি ট্রিটের, আরেকভাগ মিঠাইয়ের আর অন্যভাগ ডেইলি শপিংয়ের।
তূর্য পছন্দ করল টেস্টি ট্রিট।
যথাসময়ে ইন্টারভিউ হলো। সবাইকে বলা হলো নির্বাচিত সকলের মোবাইলে সন্ধ্যায় মেসেজ যাবে।

রুমমেটের সাথে শুয়ে গল্প করছে তূর্য। অনিশ্চিত পথযাত্রার গল্প। কথা প্রসঙ্গে পরীক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন করল রুমমেট। "মেসেজ আসতে পারে।" তূর্য বলল।
তার একটু অস্বস্তি হচ্ছে। মেসেজ না এলে রুমমেট কী না কী ভাবে!
কয়েকদিন আগে একটা স্কুলে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল সে। "আফতাবনগর"। বেতন কম বলে চলে এসেছিল তূর্য। "প্রাণ" এ পরীক্ষার ব্যাপারে রুমমেটই জোরাজোরি করেছিল। এখন যদি চাকরিটা না হয় ছোটো হয়ে যেতে হবে। অবশ্য এটাও ঠিক ন্যাংটার আবার ইজ্জতের ভয়! কিন্তু কী আর করার! সঙ্কোচ তো উগরে ফেলে দেওয়া যায় না। পকেটে ২ পয়সা না থাকলেও একটু ঠাঁট বজায় রেখে চলতে হয়।

সন্ধ্যায় মেসেজটা এল। বলা হলো: আপনাকে প্রাণ-আরএফএলের সেলস এক্সিকিউটিভ হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। আগামীকাল এসে অফার লেটার নিয়ে যাবেন।

পরদিন অফার লেটার নিতে গেল তূর্য। তাকে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হলো রামপুরায় টেস্টি ট্রিট এর আউটলেট ২ তে।
প্রশিক্ষণ চলল ১ সপ্তাহ।

যে আশা নিয়ে এখানে এসেছিল সে আশার গুড়ে বালি। কাজের কাজ কিছুই হয় নি। সহকর্মীদের অসহযোগিতা। ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করা অথচ বেতন মাত্র ১০ হাজার। অসুস্থ হয়ে পড়ল তূর্য। মানসিকভাবেও ভেঙে পড়ল।
তার মনে হলো কোম্পানি তাকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেবে না। কারণ, তার শেখা হয় নি কিছুই। এড়িয়া ম্যানেজার এসে প্রশ্ন করলে কোনো প্রশ্নের উত্তরই দিতে পারবে না।
এখানে এসে প্রথম যে কাজটা ছিল, তা হলো খাবারের নামগুলো মুখস্থ করা। অথচ কিছুই মুখস্থ হচ্ছে না। নাম হালকা মুখস্থ হলেও কোনটা কী দেখে বলতে পারছে না। তৎক্ষনাৎ পণ্য রেডি করে ক্রেতাদের সরবরাহ করতে পারছে না। সহকর্মীরা ছোঁ মেরে তার সামনে থেকে পণ্য নিয়ে কাস্টমারদের সার্ভ করছে। এমন অসহযোগিতাপূর্ণ পরিবেশে দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা।

এতকিছু সত্ত্বেও ধৈর্য ধরতে রাজি ছিল তূর্য। কিন্তু শরীর যেমন কুলাল না, তেমন সে যখন জানতে পারল সেলস থেকে এইচআর এ যাওয়ার সুযোগ নেই তখন মনটা ভেঙে গেল। এইচআর এর ওপর অনার্স-মাস্টার্স তূর্য'র। এই পদে চাকরি পেলে সুবিধে হতো।
চেষ্টাও করল। একদিন মূল অফিসে আবার গেল। সেখান থেকে জানা গেল গত সপ্তাহেই লোক নেওয়া হয়ে গেছে।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১২:৩৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ‌এতো আমার এলার লোক!!
আমিও উত্তর বাড্ডার।

২৭ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১২:৪৪

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ও আচ্ছা।

২| ২৭ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:২৮

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: হতাশার গল্প।

২৭ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:১৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সেটা আর বলতে!

৩| ২৭ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৩১

সোনাগাজী বলেছেন:



ব্লগার রূপককে ঢাকাতে থাকার জন্য যেকোন ধরণের একটা কাজের দরকার; টিউটরিং হলেও চলে।

২৭ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৫৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আপনি যে কিছু করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন; এই বা ক'জন করে? আপনার কথা মনে রাখব আমি।

৪| ২৭ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: প্রান কোম্পানীতে শান্তি নাই। ছেচরা প্রতিষ্ঠান।
বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে একটা কথা বলি- ক্ষমতাবান মামা চাচা না থাকলে চাকরী পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

২৭ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৪:৪৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ক্ষমতাবান মামা চাচা না থাকলে চাকরী পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তাই তো মনে হচ্ছে।

৫| ২৭ শে মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৬

সোনাগাজী বলেছেন:



আপনি রাজিবের পোষ্টে কমেন্ট করে, উনার সাথে দেখা করার ব্যবস্হা করেন।

২৭ শে মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ঠিক আছে।

৬| ২৯ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৪:৩৮

জুল ভার্ন বলেছেন: নির্ঝরের(তুর্য) স্বপ্ন ভংগ!

২৯ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:০৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন:

৭| ০১ লা এপ্রিল, ২০২২ রাত ১:২৭

সোনাগাজী বলেছেন:



কি পড়াতে হবে?

০১ লা এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:৫১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ইংলিশ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.