নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছিন্নপত্র

আশরাফুল ইসলাম রাসেল

প্রভাষক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ। শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি(সম্মান) কলেজ, হবিগঞ্জ(নিয়োগ আছে দুই বছর ধরে। তদবিরের অভাবে কাজ নেই, ভাতাও নেই। গভর্নিং বডির সভাপতির সাথে দেখা করার জন্য অধ্যক্ষ পরামর্শ দিলেও এ ব্যাপারে আমি অদক্ষ) )। সম্মান শ্রেণির শিক্ষক আমরা একবেলা খাই- শিরোনামে ইত্তেফাক-এ একটি লেখা প্রকাশ করায় প্রভাষকের(সৈয়দ সঈদ উদ্দীন কলেজ, মাধবপুর, হবিগঞ্জ) দায়িত্ব হতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত।

আশরাফুল ইসলাম রাসেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা সংস্কৃতি করি, কিন্তু সংস্কৃতি আমাদের করে না

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৫৫

আমার এক বন্ধু, স্থানীয় একটি সাংস্কৃতিক(নামধারী) সংগঠনের বিরাট ইম্পরট্যান্ট লোক। একদিন বন্ধুটি আক্ষেপ করে বলছে- ১৫ বছর ধরে সাহিত্য-সংস্কৃতি করে কি পাইলাম? আক্ষেপে বুঝা যায়- এখানে চাওয়া-পাওয়ার হিসাব আছে এবং অন্যরা পেয়েছে এবং পাচ্ছে। বন্ধুটির বয়স প্রায় ৪০, আর ১৫ বছর ধরে সে সংস্কৃতি ছাড়া আর কিছুই করে না। এছাড়া, বন্ধুটি আপাদমস্তক জ্ঞানের ঢেকি। বহুনির্বাচনী উত্তর প্রদানের যুগে একটি মাদ্রাসা থেকে ৩য় বিভাগে এসএসসি পাশ করার পর অন্তত ৮বার এইচএসসি দিয়ে বোর্ড’র পরীক্ষায় পাশ না করলেও ধৈর্য’র পরীক্ষায় পাশ করেছিল। তারপর থেকে সম্পূর্ন বেকার। একসময় এলাকার ধান্ধাবাজ বড়ভাইদের করুনায় সংস্কৃতি করার সুযোগ আসার পর থেকে তিনি সংস্কৃতিকে করে আসছেন। তার বা তার মতদের প্রধান কাজগুলো- অনুষ্ঠানের চাঁদা তোলা, পোষ্টার লাগানো, চা-পানি বহন করা, আগত মেহমান-শিল্পিদের বিশ্রামখানা-টয়লেটের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেওয়া, বিশেষ সময়ে সংস্কৃতি করতে আসা মেয়েছেলে-মহিলাদের বাড়ি থেকে আনা-নেওয়া করা। এদের বিভিন্ন রকম অপ্রকাশিত পদও দেয়া হয়, যেমন- মাইক বিষয়ক সম্পাদক, বাথরুম-টয়লেট বিষয়ক সম্পাদক, বহন-পরিবহন সম্পাদক, চেয়ার খালিও পূরন করা সম্পাদক, অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ার-টেবিল বিষয়ক সম্পাদক, ভাইভাই করে ডাকা বিষয়ক, তোষামোদ বিষয়ক সম্পাদক। তারা যাদের সাথে সংস্কৃতি করে, তাদের নিকট সংস্কৃতি মানে- অনুষ্ঠানের সাথে মানানসই ড্রেস পরা, শ-স-ষ ইত্যাদির উপর এমনভাবে বাতাস প্রয়োগ করা যাতে করে অক্ষরগুলোকে সো-সো-এর মত শুনায়, র-কে ড়-র মত উচ্চারন করা, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে ছবি তুলে বাড়িতে ঝুলিয়ে রাখা(এখন সেলফি তুলে ফেসবুক ওয়ালে ঝুলিয়ে রাখা), কিছু শুনে বুঝার আগেই উচ্ছ্বসিত হওয়া, চিৎ-কাইত হয়ে বিভিন্ন এঙ্গেলে ছবি তোলার জোকারী চেষ্টা ও কিছুক্ষন পর পর ক্লান্ত হয়ে পড়া, এমন ভাব প্রকাশ করা যে- আমি সংস্কৃতি করে করে কাহিল হয়ে গেছি, ইত্যাদি রকমের অস্বাভাবিক আচরন। অবশ্য, তারা অগ্রগামী সংস্কৃতি-করাদের অনুসরন করেই সব করতে চায়। অন্যকে অনুকরন করাও সংস্কৃতিকে করা বুঝায়। ১৯৯৭ সালে চট্রগাম বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাত্রশিবির মুক্ত করতে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়, তখন মাত্র ২০/৫০ জন ছাত্রলীগকর্মী জীবনের তোয়াক্কা না করেই শিবিরের নৃশংসতাকে মোকাবেলা করে এবং একসময় ছাত্রশিবির ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র ছাত্রলগের দাপট। ‘কি করেন?’- ঐ সময় কোন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তর আসত- ছাত্রলীগ করি। যদি কুশল বিনিময়ে জানতে চাই কি কর, বা কেমন আছ-এর জবাবে আসে- ভাল আছি, এই তো চলছে। কিন্তু, তখন ভাল থাকা মানেই- ছাত্রলীগ করা। তখন আমরা বুঝতাম- যুদ্ধের পর সকলেই মুক্তিযোদ্ধা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.