নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
https://www.facebook.com/profile.php?id=100004622567277
কিছুদিন আগের ঘটনা। বাসে ঝুলে ঝুলে বাড়ি ফিরছিলাম (নারী বাহিনীসহ, যাদের মধ্যে কতক ছিলেন স্টুডেন্ট ও চাকরিজীবী); মহিলা সিট অলরেডি লোডেড। তো এক টুপিওয়ালা ভদ্দরনোক এতোগুলো বেপর্দা মেয়েকে দেখে নাক সিটকে বললেন, "মাইয়াগুলার এ্যাতো ঠ্যালতে মন চায়! মাথায়-গায়ে কাপুড় নাই! চারকি(চাকরি) করে!" শুনেই মাথাটা চড়ে গেল। তৎক্ষনাৎ সুযোগ মিস না করে বললাম, "আংকেল মাথায় টুপি দিয়ে এতো ধর্ম ফলাচ্ছেন, কর্মটা তো করছেন না। কই মহিলাদের দেখে সিট তো ছাড়লেন না, ধর্মে এগুলা শিখেন নাই?" এবং সেই সাথে বহু দিনের সাধ মিটিয়ে দিলাম একটা জোর খাকারি "উঠেন!!" খেয়াল করলাম মহিলা বাহিনীও যেন হঠাত সরব হয়ে উঠলো। ভদ্দরনোক আংকেল ছুঁচোর মত মুখ করে উঠে দাড়ালেন। সেই সাথে অন্যান্য সিটের আরও কয়েকজন ভদ্রলোক হয়তো বিবেকের দংশনেই সিট ছেড়ে উঠে দাড়ালো।
.
আমরা চাই না আমাদের কেউ সহানুভূতি দেখাক কিংবা হাঙ্গামা বাঁধুক। চাই মানুষের মধ্যে বিবেক জাগুক। ছোট্ট শিশু কোলে মাকে কিংবা বয়স্ক বুড়ো লোকটাকে যেন আমাদের বিবেক দাড়িয়ে থাকতে না দেয়। টুপিওয়ালার প্রসঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ক্ষোভ নেই। তবে এই শ্রেণীর লোকেরাই ধর্মের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা সম্পর্কে জেনেও নারীদের সন্মান ও শ্রদ্ধা তো করেই না, উল্টো ছুতো পেলেই তিরস্কার ও অসন্মানজনক কথা বলে। এই বিষয়ে অকাট্য প্রমাণ পেতে চাইলে এবং নারী বিষয়ক রগরগে আলোচনা শুনতে চাইলে নিকটস্থ কোনো ওয়াজমাহফিলে চলে যান। আর তাই এ জাতীয় লোক পেলে স্পটে অ্যাকশান নিতে হবে!
বাসে মহিলাদের জন্য বরাদ্দকৃত সিট বলতে ইঞ্জিন লাগোয়া চার জনের বসার জন্য একটা বেঞ্চির মত সিট দেওয়া আছে। এই গরমে ওখানে বসলে জীবদ্দশায় নরকে চলে গেছি মনে হয়। অথচ রমনীগণ ওই স্বল্প জায়খায় গাদাগাদি করে বসার জন্য মোটামুটি হুলস্থুল শুরু করে দেয়। মজার ব্যাপার হল, বাসে প্রায় সময় সিট খালি থাকলেও এবং হেল্পার নারীদেরকে ওই খালি সিটে গিয়ে বসতে বললেও তারা যেতে নারাজ। বরং ইঞ্জিনের ওখানটাতেই নিজেদেরকে বন্দি করে রাখতে পছন্দ করে। কমপক্ষে ১২-১৩ জন মহিলা সেখানে তুমুল সংঘর্ষ করে কোনোমতে নিজের পশ্চাদ্দেশ ঠাই দেয়। হাসি পায় খুব, যখন কিছু উদারমনা পুরুষকেও দেখি মহিলা সিটে উদাসমুখে বসে থাকেন। এক্ষেত্রে অবশ্যি মহিলাদের অধিকার আদায়ের কিছু অসফল তৎপরতা দেখা যায়।
.
ঘরের বাইরের কথা বাদ দিলাম। নারীরা কিন্তু ঘরের মাঝেও পুরোটা ঘরে 'রানী' হতে পারছে না। হয় তারা রান্নাঘরে সিংকের মধ্যে মাথা ডুবিয়ে কাটিয়ে দেয় এক জীবন, নয়তো ঘরের দাসী হয়ে কাটায়। এখন অবশ্য আধুনিকতার ছোঁয়ায় ঘরের বাইরে বেরিয়েছে তারা। তবুও কোণা খুঁজে বেড়ায় কেবল। ক্ষুদ্র এক কোণা। নগরীর প্রশস্ততায় এক কোণা, বাসের রাস্তার সংকীর্ণ কোণা, বিশাল জনসমুদ্রে তুচ্ছ এক কোণা, রান্নাঘরের অন্ধকার কোণা, অতঃপর পুরুষের মনের আরাধ্য কোণা!! অনেকটা জায়গা জুড়ে থাকবার অভিলাষ হ্রাস পাচ্ছে ক্রমে। শেষমেষ বেছে বেছে নিজের মনের সবথেকে ক্ষুদ্র এক প্রকোষ্ঠে বন্দি করে ফেলে নিজেকে।
এতো আধুনিকতা, পড়াশুনা, এতো ঘর-বাহির! কিন্তু মানসিক দাসত্বকে যেন তারা ছাপিয়ে উঠতেই পারছে না। সর্বদাই নিজেকে নিষিদ্ধ কিছু ভাবছে, সংকীর্ণতায় ভুগছে। নিজেদের পরিণত করছে 'ট্যাবুতে'। এই ট্যাবু ভেঙে ফেলার সূচনা আমাদের মধ্য থেকেই করতে হবে। পাছে সুযোগ বুঝে ভিড়ের মধ্যে কেউ তোমার গায়ে হাত দেয় সেই ভয়? তবে তো তোমারও দুই হাত আছে, সেই সাথে দুই পা, দাঁত, নখ। দরকার হলে সব একসাথে চালাবে। অনুরোধ, শুধু নিষ্ক্রিয় হয়ে চুপ করে থেকো না। সংকীর্ণতাকে অতিক্রম করে একই সাথে প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। ইঞ্জিনের পাশের ওই 'মহিলা সিট' নামক জায়গাটা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নগরীতে, রাস্তায় কিংবা বাসের যে কোনো জায়গায় তুমি বসতে কিংবা দাড়াতে পারো। এটা তোমার অধিকার। সতর্ক থাকো, সচেতন থাকো। নিজেকে দুর্বল না ভেবে সমর্থ করে গড়ে তুলবে। তার জন্যে অবশ্যই 'মানসিক ট্যাবু' থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং লড়াই করে টিকে থাকতে হবে। দেখবে একদিন ওইসব স্বেচ্ছাচারী পুরুষরাই বলবে "তোমরাও সমান যোগ্য ছিলে, আমাদেরই ভুল হয়েছে।"
১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫৭
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: পুরোটাই আপনার মাথার উপর দিয়ে গেছে। দুঃখিত তার জন্যে আমি দায়ী নই।
২| ১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৪৮
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: তার জন্যে অবশ্যই 'মানসিক ট্যাবু' থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং লড়াই করে টিকে থাকতে হবে। দেখবে একদিন ওইসব স্বেচ্ছাচারী পুরুষরাই বলবে "তোমরাও সমান যোগ্য ছিলে, আমাদেরই ভুল হয়েছে।"
ভালোই বলেছেন।অধিকার কে কাকে দেয়,অধিকার এখন অধিকাংশই কেড়ে নিতে হয়।মানুষের মনোভাবে এখন তেমন উর্বরতা আসেনি।আর ওই উনাদের চিন্তার প্রসারতা কতটুকু তা আর কী বলার!
১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫৮
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: হুম ঠিক ধরেছেন। ধন্যবাদ।
৩| ১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৪৪
নতুন বলেছেন: কেউ যদি নারীর গায়ে হাত না দেয় তবে বাসের কোন সিটেই বসে বা দাড়িয়ে যাওয়া কোন সমস্যা না।
দেশের মানুষ সভ্য না হলে এই রকমের ভন্ডামী চলতেই থাকবে।
মুখে ভালোমানুষি কিন্তু কাজে সুযোগ খুজবে...
শিক্ষার অভাবেই এই গুলি হচ্ছে বেশি। বাড়ী থেকে শিক্ষাটা অনেক বেশি দরকার।
আমার মা আমাকে শিখিয়েছেন নারীদের সন্মান করতে, বড় দের সন্মান করতে। স্কুল, কলেজে এই বিষয়ে খুব একটা শেখানো হয়না। সেই বিষয়েও নজর দেওয়া দরকার।
১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪৪
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: ঠিক বলেছেন। মূল্যবোধের শিক্ষার বড় অভাব।
৪| ১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৪৭
ফাহিম আবু বলেছেন: হুজুর টাইপের কাউকে পেলে কেমন যেন সবার মুখ খোলে !!!! কারন মিথ্যা যুক্তির মারপ্যাচ জানে না, তাই অন্যের আক্রোসটাও তাদের উপর গিয়ে পডে । আর একজন ধর্ম সম্পর্কে না জানা লোকও অনেকদিন সেভ না করলে, আর মাথার উপর টুপি দিলেই হুজুর হই না । ৯৯% অপরাধ হয় সুবেশধারী কোর্ট টাই পরা লোক দ্বারা, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার হেডেম নাই, তাই দোষটা গিয়ে অল্প শিক্ষিত হুজুর টাইপের উপর।
১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪৩
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: আপনার হেডমই আপনার এবং আপনার মাথার পরিচয় দিচ্ছে। এতো কিছু রেখে ওই একটা লাইন খুঁজে বের করছেন।
৫| ১৩ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:১৬
বিপরীত বাক বলেছেন: সাম্প্রদায়িক ও অসুস্থ কথাবার্তা। উস্কানি আছে তো বটেই।
এ ব্যাপারে আমার উল্টো একটা অভিজ্ঞতা আছে। কেউই সাধু বা সাধুনী না। সবার মধ্যেই ভেজাল আছে।
১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:০৮
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: সব জায়গায় বিপরীত কথা যে আপনি বলেন সেটা আপনার নামেই বোঝা যাচ্ছে। যাকগে আঁতে ঘা লেগেছে। উস্কানি দিতে পেরে আমি সার্থক।
৬| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০০
ডাক্তার পোলা বলেছেন: আপনি শুধুমাত্র ভদ্দরনোক বলতে পারতেন।টুপি পরা ভদ্রলোক বললেন কেন? হুজুর দেখলেই চুল্কায়?
১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৭
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: না ডাক্তার পোলা দেখলে চুলকায়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৩২
saeed saeed saeed বলেছেন: আপনার লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে আপনি নিজেই মনের অগোচরে মেয়ে জাতিকে ছোট করলেন।