নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
https://www.facebook.com/profile.php?id=100004622567277
রোকেয়া শাড়ির নিচে ব্লাউজ পরা শুরু করে নি এখনো। গাঁয়ের মেয়ে, বয়সে বাড়ন্ত, তবে গড়নে কলমিলতার মত ছিপছিপে। হালকা স্ফীত বুক, আঁচলের দুই প্যাঁচে সহজেই অবদমিত হয়। তবু আজ সে বুজির ব্লাউজখানা পরে নিয়েছে, ঢ্লঢ্ল করছে ওর গায়ে। তাতেই বারবার আয়না দেখে খুব লজ্জা পাচ্ছে রোকেয়া। নানান কোণা থেকে আয়নায় চোখ রাখছে, ভাবখানা এমন যেন আয়নার ভেতরে কেউ বসে আছে; তার লাজে লাল টুকটুক মুখটি দেখতে চাইছে। একটি পান মুখে পুরে আঙুলের ডগায় বেশ খানিকটা চুন মাখিয়ে একটু পর পর দাঁতে কেটে নিচ্ছে। ঠোঁট রাঙা হল কিনা আয়না ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আরো একবার দেখে নিল ভালো করে।
ওই পারে আজ ভান্ডারিদের বিশাল মাহফিল বসবে। বাবাকে বলে অনুমতি নিয়েছে সে। স্কুল থেকে ফেরার পথে দেখতে যাবে। তাই এতো আয়োজন। নয়তো অন্যান্য দিনে তার চুল বাঁধতেও অনীহা।
রোকেয়া অপূর্ব ভঙ্গিতে কোমর বাঁকিয়ে এক হাত দিয়ে দরজা ধরে দাড়িয়ে আছে। প্রায় চেঁচিয়ে বললো, দুলু বুজি নাইয়া-ধুইয়া তুমিও লও আমার লগে।
দুলেনা উঠোনের মধ্যে একটা দুমুখো মাটির চুলা পেতেছে, তাতেই লেপ দিচ্ছিল। রোকেয়ার গলা শুনে সেদিকে না তাকিয়েই জবাব দিল, কোম্মে যাবি রে রুকি? আমার কামের কি কমি আছে নি? চুলাডা কেমন ওইলো ক দেহি।
বালো ওইছে বুজি। লও না ওই বেলা ভান্ডারি পাড়ায়। বিরাট মাহফিল করতে আছে অরা। গান বাজনা ওইবো।
আল্লা খোদার নাম নাই, হারাদিন বাদ্য বাজনার কতাডা খালি। হুনছস নি, নসিমপুরের মাঝি বাড়ির ফরহাইদ্যা আছিল না? অরে কাইল রাইতে মাইরা হালাইছে কেরা জানি। যেই বাড়ন বাড়ছিল বাহে-পুতেরা। অহন কেমন অইলো? ফাঁস দিয়া তেঁতই গাছের লগে ঝুলায়া থুইছে বলে। জমির মোল্লায় ফজরের ওয়াক্তে নামায পড়তে গিয়া দ্যাকছে সবাইর আগে। হেরপর জানোস নি দারোগারা—
রোকেয়ার মন খারাপ হয়ে গেল। বুজি তার কথা কানেই নিল না। বুজির এই এক দোষ, কোথায় কোন কেলেঙ্কারি ঘটেছে তাতে বুজির বড় আগ্রহ। অথচ সংসারের আনন্দের বিষয়গুলোতে সে একদম নির্লিপ্ত। রোকেয়া সম্পূর্ণই তার উল্টো হয়েছে। সকলে বলে রোকেয়া হয়েছে তার মায়ের মত। রোকেয়া হঠাৎ করে তীব্রভাবে মায়ের শূন্যতা অনুভব করলো। মা থাকলে এখন নিশ্চয়ই ওর সাথে ভান্ডারিদের মাহফিল দেখতে যেতেন। বুজিটা যা হয়েছে না, একদম বেরসিক। রোকেয়া ভাবতে ভাবতে নিঃশব্দে ঘরের ভেতরে চলে গেল। দুলেনা তখনো একমনে কথা বলেই যাচ্ছে আর চুলায় লেপ দিচ্ছে, 'ভোগের দুনিয়া কয় দিন রে, আইজ মরলে কাইল দুই দিন—'
[ আমার অপ্রকাশিত 'খালের ওপার কোলচর' উপন্যাসের ক্ষুদ্রাংশ এটি ]
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৫
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
আমাদের গ্রামে এই নামের একটি ছেলে আছে। তার নামটি সবাই এমন বিকৃত করেই ডাকে। হাহাহ মন খারাপ করবেন না।
২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫১
বিজন রয় বলেছেন: 'খালের ওপার কোলচর...... কবে প্রকাশিত হবে। পুরাটাই কি গ্রামীন পটভূমিতে লেখা? মনে হচ্ছে ভালই লাগবে।
কোথায় কোন কেলেঙ্কারি ঘটেছে তাতে বুজির বড় আগ্রহ। অথচ সংসারের আনন্দের বিষয়গুলোতে সে একদম নির্লিপ্ত।
ভাল লিখেছেন।
+++
শুভকামনা রইল।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৮
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আশা করছি আগামী বছর প্রকাশিত হবে। হুম গ্রামীণ একটি জনপদই মুখ্য থাকবে।
ভালোবাসা জানবেন।
৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০০
নাগরিক কবি বলেছেন: এইটা কি উচিত? আপনি গ্রামবাসী কে বুঝাবেন। আপনি সচেতন নাগরিক না! সম্ভান্ত পরিবারের ছেলেদের নাম এভাবেই ফরহাদ থেকে ফরহাইদ্যা হয়ে যাচ্ছে।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৬
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: তা না হয় বুঝালাম।
কিন্তু যদি কিছু মনে না করেন, আপনার নাম কি ফরহাদ?
৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০১
বিজন রয় বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রকাশিত হলে অবশ্যই জানাবেন।
ভাল থাকুন।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৭
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: অবশ্যই জানাবো।
ভালো থাকুন আপনিও। শুভকামনা।
৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৮
জাহিদ হাসান মিঠু বলেছেন: আশাকরি প্রকাশিত হবার আগেই রোকেয়া শাড়ির নিচে ব্লাউজ পরা শুরু করবে ! Permanently
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪২
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: হাহাহ আশা করা যায়।
এ ও আশা করা যায়, আপনি শুধু প্রথম লাইনেই আটকে যান নি!!
৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫১
জাহিদ হাসান মিঠু বলেছেন: রোকেয়া এবং লেখিকা দুজনের জন্যই শুভ কামনা। প্রকাশিত হলে অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩০
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: অবশ্যই জানাবো। ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন। শুভকামনা।
৭| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৬
লীন প্রহেলিকা বলেছেন: সাধুবাদ জানাচ্ছি। উপন্যাস যদি হয় জাগ্রত অবস্থায় স্বপ্ন দেখার মতোন তাহলে এটি কোনো সহজ কাজ নয় বরং প্রকট কঠিন। যার জন্য প্রয়োজন হয় অসীম সাহসের, পর্যাপ্ত ধৈর্য্য ধারণের। আপনি যখন শুরু করেই ফেলেছেন এখন আর সংশয় নেই। সৃষ্টিটা শিল্পে রূপায়ণ আপনার হাতেই হোক। অভিনন্দন!
বৃহৎ যা কিছু আজ বিদ্যমান সেসবের শুরুটাও এমনই খণ্ডাংশের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল। এই খণ্ডাংশ নিয়েই কথা বলতে গেলে মন্তব্যটা বিশাল হয়ে দাঁড়াবে। তাই সেদিকে আজ নাই'বা গেলাম। একটি চরিত্রকে আপনি যে নিপুণতার কালিতে প্রাণদান করতে পারেন, হলফ করে বলতে পারি লিখনীর এই গুণটাই আপনাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে; অসীমে। আলোচ্য খণ্ডাংশের মাঝে যে বর্ণাত্মক কথাসাহিত্যের সরূপ ফুটিয়ে তুলেছেন এতে করে আমরা আশাবাদী হতে পারি। আলো ফোটবার অপেক্ষায় এখন।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩১
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের ধার সহ্য করতেও খানিকটা সময় লাগলো। আমি লেখায় কতখানি আলো ফোটাতে পারবো, প্রাণ দিতে পারবো জানিনা। তবে আপনার আশার উপর আমিও কিছুটা আশা রাখতেই পারি।
বিশ্লেষণাত্মক মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় কবি।
৮| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৯
নাগরিক কবি বলেছেন: কেন কেন? এই নাম এ কেউ আপনাকে জ্বালাতন করেছে নাকি??
এই নামটি আমার খুব প্রিয়...
তাই এত কথা কইলাম....
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৪১
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: না তেমন কিছু নয়। সুন্দর নামটি।
৯| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:০৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ক্ষুদ্রাংশ চমৎকার! সবটা যদি এভাবে কন্টিনিউ হয় তাহলে নিঃসন্দেহে ভাল কিছু হবে।
এক কপির জন্য বুকিং দিয়ে রাখলাম। 'খালের ওপার কোলচর' প্রকাশ হলে জানাবেন।
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৪২
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ।
ভালো কিছু হবে সেই আশাই রাখি।
প্রকাশ হলে অবশ্যই জানাবো। ভালো থাকুন সবসময়।
১০| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:১৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: সাবরিনা নেওয়াজ ,
বেশ শক্ত হাতের লেখা, পরিণত । আপনার উপন্যাসের যে অংশটুকু এখানে তুলে দিয়েছেন তার বনুনে গ্রামীন বাস্তবতারই ঝিলিক ।
জানিনে , কেন অপ্রকাশিত উপন্যাসের একটুকরো আমাদের চেখে দেখতে দিলেন ! এতে রোকেয়ার প্রথম ব্লাউজ পড়ার মতো
শিহরিত মুগ্ধতা হয়তো থাকবে তবে মাঝে মাঝে এরকম হলেই ব্লাউজ পড়ার এই মজাটা হারিয়ে যেতে পারে ।
ভালো লাগলো ।
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৪৬
সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: তেমনটি ঘটতে দিচ্ছি না। এরপর পুরোটা একসাথে প্রকাশিত হবে সেই আশা করছি।
অনেক ধন্যবাদ সুপ্রিয়, সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
অনেক ভালো থাকুন।
১১| ০১ লা মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৬
ভবঘুরে যাত্রি বলেছেন: খুবই চমৎকার প্রকাশ ভালো লেগেছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৪১
নাগরিক কবি বলেছেন: আপনার লেখায়তো ধার আছে। খুব ভাল।
কিন্তু ফরহাদ এত সুন্দর নামটারে কি বানাইলেন? এই জন্য কিঞ্চিৎ মন খারাপ হইয়্যাছে।