নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখি, ফিল্ম বানাই, ছবি তুলি। বই প্রকাশিত হয়েছে ৫ টি। উপন্যাস, ছোট গল্প আর (অ)কবিতার বই। প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের নাম \'বোধ\'। ২০১৩ তে জিতেছে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড। স্বপ্নের সবটা জুড়ে গল্প। সেই গল্প বলতে চাই লেখায়, চলচ্চিত্রে, ছবি

সাদাত হোসাইন

লিখি, ফিল্ম বানাই, ছবি তুলি। বই প্রকাশিত হয়েছে ৫ টি। উপন্যাস, ছোট গল্প আর (অ)কবিতার বই। প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের নাম 'বোধ'। ২০১৩ তে জিতেছে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড। স্বপ্নের সবটা জুড়ে গল্প। সেই গল্প বলতে চাই লেখায়, চলচ্চিত্রে, ছবিতে...

সাদাত হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জগতের সবচেয়ে দামী দৃশ্য

২২ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:১২

এই মুহূর্তে জগতের সবচেয়ে দামী দৃশ্যটি দেখবার অপেক্ষায় আছি আমি!
আমার চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য আর করুণ দৃশ্য হল খাচার পাখি আর একুরিয়ামের মাছ!
এর চেয়ে জঘন্য কিংবা নৃশংস দৃশ্য আর হতে পারে না। সেই আমার ঘরে হুট করে গোলাকার এক ছোট্ট একুরিয়াম চলে এল। তাতে দুটা মাছ! এই একুরিয়াম আর মাছ আসার কারণ 'ফেরা' নামে নির্মিতব্য আমার শর্ট ফিল্মটি। শর্টফিল্মটির একটি দৃশ্যের জন্য একুরিয়াম কিনে আনা হয়েছে। সাথে দুটা মাছ। মাছ কিনতে গিয়ে ভাবলাম গোল্ডফিশই কিনি। আমার জানা মতে, গোল্ডফিশের মেমোরি সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী। সে ৩ সেকেন্ডের বেশি আগের স্মৃতি মনে রাখতে পারে না। ফলে একুরিয়ামের এক পাশ থেকে ঘুরে আরেক পাশে যেতে যেতেই সে ভুলে যায় যে সে একুরিয়ামে আছে, সুতরাং ছোট্ট একুরিয়ামে থেকেও তার মনে হতে থাকে সে আছে অসীম জলরাশির কোন সমুদ্রে!
শুটিং শেষ হল। এখন একুরিয়াম আর মাছ কি করা হবে? কি আর করা হবে? আমার ছোট ভাই জামান নিয়ম করে মাছ দুটাকে খাবার দেয়, একুরিয়ামের জলে ওষুধ দেয়। বাইরে থেকে ফিরেই ওর প্রথম কাজ হচ্ছে গভীর মনোযোগে একুরিয়ামের দিকে তাকিয়ে থাকা। তার চোখভর্তি প্রবল আগ্রহ, কৌতূহল, ভালোবাসা, আর অপার বিস্ময়।
আজ অফিস থেকে ফিরে দেখি জামান একুরিয়ামের পাশে পাঁথরের মূর্তির মতন বসে আছে। ওর চোখ জুড়ে নিঃসীম শুন্যতা। আমি বললাম, 'কি রে, কি হয়েছে?'
ও কথা বলল না। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল একুরিয়ামের জলে। আমি আবার বললাম, 'কি রে?'
ও এবারও কোন কথা বলল না। আমি রুমে এসে বাইরের কাপড় ছাড়লাম। হাত মুখ ধুলাম। তারপর জানালার পাশে চেয়ার পেতে বসলাম। জামান হঠাৎ দরজার কাছে এসে দাঁড়াল। তারপর শীতল গলায় বলল, 'ভাইয়া, ছোট মাছটা মারা যাচ্ছে।'
আমি ঘাড় ঘুড়িয়ে ওর চোখের দিকে তাকালাম। ওর চোখ জুড়ে ভয়াবহ বিরান কেঁপে কেঁপে ওঠা এক নিঃসীম শীতল সমুদ্র। আমি বললাম, 'কিভাবে বুঝলি?'
ও বলল, 'মাছটা সাঁতার কাটতে পারছে না, কিছুক্ষণ পর পর ভেসে উঠছে। মাছটা মারা যাচ্ছে ভাইয়া'।
আমি কি বলব জানি না। চুপ করে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। ও আবার গিয়ে সেই একুরিয়ামের পাশে বসে পড়ল। ওর সারা শরীর যেন নিঃসাড়। প্রবল উৎকণ্ঠা আর শংকায় স্থীর। ওর চোখের ভেতর ক্রমশই জমে উঠছে বাস্প। সেই বাষ্পরা জল হবে নিশ্চিত। অপলক চোখে ও তাকিয়ে আছে। তাকিয়ে আছে একটা মৃত্যু দেখবার অপেক্ষায়। একটা গোল্ড ফিশের মৃত্যু!
আমিও তাকিয়ে আছি। আমি তাকিয়ে আছি টুপ করে ঝরে পরবে এমন একফোঁটা জলের অপেক্ষায়। একটা গোল্ড ফিশের মৃত্যুতে একজন মানুষের কান্নার অপেক্ষায়। আসলে আমি অপেক্ষায় আছি, জগতের সবচেয়ে দামী ও দুর্লভ দৃশ্যটি দেখবার অপেক্ষায়।
ভালবাসাহীন এই ঘৃণার জগতে এর চেয়ে দামী ও দুর্লভ দৃশ্য আর কি হতে পারে!!েেেই মুহূর্তে জগতের সবচেয়ে দামী দৃশ্যটি দেখবার অপেক্ষায় আছি আমি!
আমার চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য আর করুণ দৃশ্য হল খাচার পাখি আর একুরিয়ামের মাছ!
এর চেয়ে জঘন্য কিংবা নৃশংস দৃশ্য আর হতে পারে না। সেই আমার ঘরে হুট করে গোলাকার এক ছোট্ট একুরিয়াম চলে এল। তাতে দুটা মাছ! এই একুরিয়াম আর মাছ আসার কারণ 'ফেরা' নামে নির্মিতব্য আমার শর্ট ফিল্মটি। শর্টফিল্মটির একটি দৃশ্যের জন্য একুরিয়াম কিনে আনা হয়েছে। সাথে দুটা মাছ। মাছ কিনতে গিয়ে ভাবলাম গোল্ডফিশই কিনি। আমার জানা মতে, গোল্ডফিশের মেমোরি সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী। সে ৩ সেকেন্ডের বেশি আগের স্মৃতি মনে রাখতে পারে না। ফলে একুরিয়ামের এক পাশ থেকে ঘুরে আরেক পাশে যেতে যেতেই সে ভুলে যায় যে সে একুরিয়ামে আছে, সুতরাং ছোট্ট একুরিয়ামে থেকেও তার মনে হতে থাকে সে আছে অসীম জলরাশির কোন সমুদ্রে!
শুটিং শেষ হল। এখন একুরিয়াম আর মাছ কি করা হবে? কি আর করা হবে? আমার ছোট ভাই জামান নিয়ম করে মাছ দুটাকে খাবার দেয়, একুরিয়ামের জলে ওষুধ দেয়। বাইরে থেকে ফিরেই ওর প্রথম কাজ হচ্ছে গভীর মনোযোগে একুরিয়ামের দিকে তাকিয়ে থাকা। তার চোখভর্তি প্রবল আগ্রহ, কৌতূহল, ভালোবাসা, আর অপার বিস্ময়।
আজ অফিস থেকে ফিরে দেখি জামান একুরিয়ামের পাশে পাঁথরের মূর্তির মতন বসে আছে। ওর চোখ জুড়ে নিঃসীম শুন্যতা। আমি বললাম, 'কি রে, কি হয়েছে?'
ও কথা বলল না। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল একুরিয়ামের জলে। আমি আবার বললাম, 'কি রে?'
ও এবারও কোন কথা বলল না। আমি রুমে এসে বাইরের কাপড় ছাড়লাম। হাত মুখ ধুলাম। তারপর জানালার পাশে চেয়ার পেতে বসলাম। জামান হঠাৎ দরজার কাছে এসে দাঁড়াল। তারপর শীতল গলায় বলল, 'ভাইয়া, ছোট মাছটা মারা যাচ্ছে।'
আমি ঘাড় ঘুড়িয়ে ওর চোখের দিকে তাকালাম। ওর চোখ জুড়ে ভয়াবহ বিরান কেঁপে কেঁপে ওঠা এক নিঃসীম শীতল সমুদ্র। আমি বললাম, 'কিভাবে বুঝলি?'
ও বলল, 'মাছটা সাঁতার কাটতে পারছে না, কিছুক্ষণ পর পর ভেসে উঠছে। মাছটা মারা যাচ্ছে ভাইয়া'।
আমি কি বলব জানি না। চুপ করে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। ও আবার গিয়ে সেই একুরিয়ামের পাশে বসে পড়ল। ওর সারা শরীর যেন নিঃসাড়। প্রবল উৎকণ্ঠা আর শংকায় স্থীর। ওর চোখের ভেতর ক্রমশই জমে উঠছে বাস্প। সেই বাষ্পরা জল হবে নিশ্চিত। অপলক চোখে ও তাকিয়ে আছে। তাকিয়ে আছে একটা মৃত্যু দেখবার অপেক্ষায়। একটা গোল্ড ফিশের মৃত্যু!
আমিও তাকিয়ে আছি। আমি তাকিয়ে আছি টুপ করে ঝরে পরবে এমন একফোঁটা জলের অপেক্ষায়। একটা গোল্ড ফিশের মৃত্যুতে একজন মানুষের কান্নার অপেক্ষায়। আসলে আমি অপেক্ষায় আছি, জগতের সবচেয়ে দামী ও দুর্লভ দৃশ্যটি দেখবার অপেক্ষায়।
ভালবাসাহীন এই ঘৃণার জগতে এর চেয়ে দামী ও দুর্লভ দৃশ্য আর কি হতে পারে!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.