নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাগজপত্র অনুযায়ী বৈধ বেকার ...

নাজমুল ইসলাম সাদ্দাম

কাগজপত্র অনুযায়ী বৈধ বেকার ....

নাজমুল ইসলাম সাদ্দাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবাদের গল্প

১৩ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:৩২


বিজয় । বয়স ৪৪ । বিজয় এবং বাংলাদেশ , দুই জনই সৌভাগ্যবান । একই সাথে দুই জনের জন্ম ।রত্নগর্ভা সেই মহিলা শখ করে ছেলের নাম রেখেছেন বিজয় । যুদ্ধবিদ্ধস্ত কোন দেশ যখন স্বাধীনতা লাভ করে , স্বাধীনতার সেই খুশিতে সমসাময়িক সমস্যাগুলো ভেসে যায় । কিছু কিছু সমস্যা থকে যায়, যেগুলো স্বাধীনতার খুশি ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে না । সেগুলোর জন্য হয়ত কোন কিছুই থেমে থাকে না । শরীরে টিউমার থাকার মত । বিজয় আর পাঁচটা মানুষের মতই । দুইটা চোখ, দুইটা হাত , পা । একজন স্বাভাবিক মানুষের যা যা থাকা দরকার সবই ছিল বিজয়ের । বিজয়ের মায়ের স্বপ্ন ছিল ছেলে হাটা শিখলেই বাঁশি ওয়ালা জুতা কিনে দেবে । বিধাতা মাঝে মাঝে সবকিছু দিয়েও , ছোট কোন কিছু রেখে দেন , যেটা না পাওয়াটা সকল পাওয়াকে ছাপিয়ে যায় । বিজয়ের মায়ের শুধু এই একটা স্বপ্নই পূরন হয় নি ।

২.
শিহাব ব্যাংকে যাবে । জরুরি কাজ পড়েছে । তাড়াহুড়ো করে রুম থেকে বের হয় । আকাশের অবস্থা ভাল না । জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষের দিক । এ সময়টাই নিয়ম করেই আকাশের অবস্থা খারাপ থাকে । মেডিক্যাল কলেজের গেট থেকে রিক্সা নেয় । রিক্সার চাকা গড়ানোর সাথে সাথেই আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি আসে ।
--চাচা, ছাতা থাকলে মাথায় দেন ?
--না বাবা , ছাতা নেই ।
--পলিথিন বা অন্য কিছু থাকলে মাথায় দেন ।
--পলিথিনও নাই ।
শিহাব , পকেট থেকে রুমাল বের করে দেয় । আপাতত মাথায় দেন ।
শিহাব , বৃষ্টি দেখে রিক্সা থামিয়ে কোথাও দাড়াতে বলেছিল । ওনি দাড়ান নি । কারন বৃষ্টির মাঝে ভাড়া ভাল হয় । সামনে ঈদ । ছোট ছেলেকে নতুন জামা কিনে দিতে হবে । বড় মেয়েটার মেয়ে হয়েছে । জামাই,মেয়ে, নাতিন সবাইকে কিছু না কিছু দিতে হবে । সাথে নিজের চিকিৎসার খরচ আছে । নিজের লুঙিটার বেশ কয়েক জায়গাই সেলাই করা । একটা ভাল লুঙ্গি আছে । সেটাতে একটা মাত্র সেলাই । বছর দুয়েক আগে কেনা । সেটা পরে রিক্সা চালানো যাবে না । সামনে ঈদ । বাসায় মেহমান আসবে । তখন পরবে ।

৩.
ব্যাংকের কাজ শেষ করে শিহাব হাটছে । বৃষ্টি থেমে গেছে । আকাশটা এখনো মেঘলা । কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমের পর বৃষ্টি হল । শিহাবের হাটতে ভাল লাগছে । শিহাব যখন রিক্সায় করে যায় , খেয়াল করে , রিক্সা চালক চাচার পায়ের পাতা গুলো স্বাভাবিক নয় । রিক্সা চালানোর জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি দুই হাত এবং পা ঠিক থাকা । এত বড় রকমের প্রতিবন্ধকতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জীবনটা খুব বেশি স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়েছে শুধু নামটা বিজয় হবার কারনে । ছেলের একটা জামা,মেয়ের একটা থ্রি পিস, মেয়ে জামাইয়ের একটা প্যান্ট পিস, নাতনীর একটা ফ্রক এর জন্য তার এই অক্লান্ত পরিশ্রম । এদের মুখের একটু হাসির জন্য তার এই স্বাভাবিকতা । শিহাব জিঙ্গাসা করেছিল ,চাচা আপনি কিছু নিবেন না ঈদে । বিজয়, বিজয়ের হাসি দিয়ে বলেছিল, বাবা ,ওদের মুখের হাঁসি দেখলেই প্রাণটা ভরে যায় । শিহাবের মনে পড়ে তার বাবাকেও সে কোন ঈদে কোন কিছু নিতে দেখে নি । বাবাদের আচরণের বড় একটা মিল এখানে । তার একটা কথায় মনে হয় , বাবাদের গল্পে কোন সাসপেন্স থাকে না ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৩৪

সুমন কর বলেছেন: আরো ভালো পাবার আশা ছিল। +।

২| ১৩ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:২৪

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: পড়ে ভাল লাগল। বাবারা সব সময়ই মনে হয় সেক্রিফাইস করে যান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.