নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাগজপত্র অনুযায়ী বৈধ বেকার ...

নাজমুল ইসলাম সাদ্দাম

কাগজপত্র অনুযায়ী বৈধ বেকার ....

নাজমুল ইসলাম সাদ্দাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

এটা চিন্তা করুন আপনি একজন মানুষকে রক্ত দিচ্ছেন।

১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:০০



রাত ২টা। আপনার পরিবারের কেউ অসুস্থ। জরুরি ভিত্তিতে রক্ত লাগবে। আপনি একজনকে ফোন দিলেন । সাথে সাথেই সে রক্তদাতা হাজির। এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে কোন ঝামেলা ছাড়াই রক্ত ম্যানেজ হয়ে গেল।

উপরের যে লাইনটা পড়লেন সেটা যে কতটা সত্য যারা এই জরুরি অবস্থার মুখোমুখি হয়েছেন শুধু তাঁরাই জানেন। আমার এই ছোট্ট জীবনের কিছু অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করি।

রক্তের প্রয়োজনে আপনি আপনার খুব কাছের বন্ধু অথবা অন্য কাউকে ফোন দিয়েছেন। সর্বপ্রথম যে প্রশ্নের সম্মুখীন আপনি হবেন সেটা হল,
১।রোগী আপনার কে হয় ?
২।খুব কাছের কেউ কি না?
৩।আপনার আপন কেউ তো?
৪।বাবা, মা, বোন বা ভাই কেউ?
৫।তুই নিজে দিতে পারিস না?
৬।নিজে কয়বার রক্ত দিয়েছিস?

এ রকম অভিজ্ঞতাও হয়েছে, আমি হয়ত কারো রক্তের গ্রুপ জেনেই ফোন দিয়েছি, আশ্চর্যজনক ভাবে সে বলে তাঁর রক্তের গ্রুপ এটা না।

এরকম কথাও শুনতে হয়েছে, যার প্রয়োজন সে ব্যবস্থা করুক, তোর এত তাড়া কেন। নাকি অন্য কোন বিষয় আছে।

যদি নেগেটিভ গ্রুপের কোন রক্ত হয় তবে শেষ মুহুর্তে এসে দিতে পারবে না এই রকমটা বেশি হয়।

প্রথমে যে লাইনটা পড়েছিলেন সেটা সত্যিও হয়।
আমার এক ছোট বোনের মায়ের কেমো চলছিল ঢাকাতে। জরুরি ভিত্তিতে রক্ত দরকার। ওই মহুর্তে নিজেদের কেউ কাছে ছিলও না। আমার এক বন্ধুকে নক করেছিলাম। সে শুধু জানতে চেয়েছিল রোগী কোথায় ভর্তি। পরে এক বড় ভাইয়ের নাম্বার দেন। তাঁকে ফোন দেবার পর তিনি শুধু ঠিকানা জানতে চান। এবং রোজায় মধ্যে কোন রকম কোন প্রশ্ন ছাড়াই রক্ত দিয়ে যান।

আমার এক ছোট ভাই কিছুদিন আগে ফোন দিয়ে বলে, ভাইয়া আমার রক্ত দেবার সময় হয়েছে। লাগলে জানাবেন।

বছর তিনেক আগে আম্মু অপারেশন করানোর জন্য রক্তের প্রয়োজন হয়। দুই জনকে ফোন দিয়েছিলাম। পরের আর কাউকেই কিছু বলতে হয় নি। তাঁরা নিজ দায়িত্বেই এসে রক্ত দিয়ে গেছে।

এক বন্ধুকে নিয়ে গিয়েছিলাম আমার এক রোগীকে রক্ত দেবার জন্য। রক্ত দেওয়া শেষ করে বের হচ্ছি, এমন সময় এক বৃদ্ধা এসে জিজ্ঞেস করেন, এখানে সকালে এক ছেলে বসে ছিল, তাঁর সন্তানের রক্ত লাগবে, তিনি দিতে চেয়েছিলেন। ঘড়ির কাটায় তখন ২টা। ওনি ভেবেছিলেন, তিনি হয়ত এখানেই বসে থাকবেন। রক্তটা জরুরি ছিল। আমার গ্রুপের সাথে মিলে যাওয়াই আমি নিজেই দিয়ে আসি।

কলেজ থেকে ফিরছিলাম। এক বয়স্ক মহিলা রক্তের একটা কাগজ সামনে বাড়িয়ে বলল বাবা আমার মেয়ে হসপিটালে ভর্তি, ২ ব্যাগ রক্ত দিয়েছি। আরো এক ব্যাগ লাগবে। আমরা গ্রাম থেকে এসেছি। এখানকার কাউকেই চিনি না। একটু ব্যবস্থা করে দিতে পারবা। কাছের এক ছোট ভাইকে ফোন দিয়েছিলাম। সে শুধু এত টুকুই বলল, ভাই, আপনি ওনাকে নিয়ে ব্লাড ব্যাংকে যান, আমি আসছি।

রক্ত দিলে অন্য রকম একটা অনুভুতি হয়। যারা রক্ত দিয়েছেন বা নিয়মিত দেন তাঁরা সেই অনুভূতিটা বুঝবেন। আরও বেশি অনুভব করা যায় যখন প্রথম বার রক্ত দেওয়া হয়।

আপনি এভাবেও চিন্তা করতে পারেন, আপনার শরীরের রক্তে আরেক জনের জীবন সঞ্চালন ত্বরান্বিত হচ্ছে, একজন অসুস্থ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছে, একজন মায়ের মুখে হাঁসি ফুটছে, একজন বৃদ্ধার মুখে হাঁসি ফুটছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ চার মাস পর পর নিয়মিত রক্ত দিতে পারে। আপনি নিজে রক্ত দিন। আপনার বন্ধু, ছোট ভাই, কাছের মানুষদের রক্ত দিতে উৎসাহিত করুন।

রক্ত গ্রহীতা আপনার কাছের কেউ কিনা সেটা না ভেবে এটা চিন্তা করুন আপনি একজন মানুষের রক্ত দিচ্ছেন, একজনের জীবন বাঁচানোর যুদ্ধের নিজকে সমর্পন করছেন।

আপনি আমি কেউই কিন্তু জানি না কখন বিপদে পড়বো। আজকে আপনি যদি অন্য বিপদে এগিয়ে আসেন, নিশ্চয় কাল আপনার বিপদে ( আল্লাহতালা কাউকে যেন বিপদে না দেন।) কেউ না কেউ হাজির হয়ে যাবে।

১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সের মধ্যে শারীরিকভাবে সুস্থ নারী ও পুরুষ নিয়মিত রক্ত দিতে সক্ষম।( বি বি সি’র একটা আর্টিকেল থেকে)
রক্ত দেয়ার উপকারিতা: ( বিবিসি)
১. এতে একজন মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব।

২. নিয়মিত রক্তদাতাদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।

৩. বছরে তিনবার রক্ত দিলে শরীরে নতুন লোহিত কণিকা তৈরির হার বেড়ে যায়। এতে অস্থিমজ্জা সক্রিয় থাকে। দ্রুত রক্ত স্বল্পতা পূরণ হয়।

৪. রক্তে কোলেস্টরেলের মাত্রা কমে যায়, এতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

৫. রক্ত দিলে যে ক্যালোরি খরচ হয়, তা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৬. শরীরে হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, জন্ডিস, ম্যালেরিয়া, সিফিলিস, এইচআইভি বা এইডসের মতো বড় কোন রোগ আছে কি না, সেটি বিনা খরচে জানা যায়।

৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

Nazmul Islam Saddam
June 14,2020

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:১১

বিজন রয় বলেছেন: খুব ভাল পোস্ট!

আমার একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করি।
বেশ কয়েক বছর আগে কেউ একজন জিজ্ঞেস করাতে আমি রক্ত দিতে চাইলাম, কিন্তু যাদের রক্ত প্রয়োজন ছিল তাদের অবিভাবক জানতে চাইলেন আমি মুসলিম কিনা।

হা হা হা .......
এমন ভাল পোস্ট দিন নিয়মিত, সচেতনমূলক।

১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:২৬

নাজমুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন: ঐ যারা প্রশ্ন করে কাছের কেউ কি না , নাহলে রক্ত দিবে না, তাঁদের কাছে এই প্রশ্ন আশাও করা যায় । তবে মজার বিষয় হল, আমি এ পর্যন্ত ১০ বারের বেশি রক্ত দিয়ে। তাঁর মধ্যে ৫ বারই অন্য ধর্মের কাউকে। ভাই, আমরা হয়ত মানুষ হয়েছি, কিন্তু মনটাকে হয়ত মানুষ করতে পারি নি বা চাই নি।
ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।

২| ১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:১৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো লাগলো পড়ে

১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:২৭

নাজমুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই।

৩| ১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:১২

রাজীব নুর বলেছেন: রক্ত দেওয়া মহৎ কাজ।

৪| ১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৩৪

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: যখন আমার বাইপাস সার্জারী হয়(ভারতে)।তখন আমার জন্য রক্তের প্রয়োজন হয়।আমার মেয়ে আমার গ্রুপের রক্তের জন্য মাইকে ঘোষণা দিলে কয়েক জন হিন্দু ও কয়েক জন মুসলমান ছাত্র রক্ত দেয়ার জন্য এগিয়ে আসে।তার পর থেকে আমার ছেলে মেয়েরা নিয়মিত রক্ত দান করে আসছে। যাদের দৈহিক সামর্থ আছে তাদের রক্ত দান করা উচিত।

৫| ১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:০৭

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: ++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.