নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন চাকুরীজীবির ডায়েরীতে লিখা হাজারও বায়না, সীমাবদ্ধতায় তা আর কখনই পূরন করা হয়নি । আমি সে ডায়েরীর খোঁজে ।

সাগর সাখাওয়াত

পাগল, শিউলী তলয়া কুঁড়িয়ে পাওয়া পুতুলের জন্য গারদের বাসিন্দা ।

সাগর সাখাওয়াত › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাতে বীণা পায়ে পদ্ম নাম বিলাসী ।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৮



কবিতা আর দেবতা সুন্দরের প্রকাশ
সুন্দর কে স্বীকার করতে হয় সুন্দর দিয়ে
তবু বলছি আমি সুন্দরের হাতে বীণা
পায়ে পদ্মফুল দেখিনি,তার চোখে চোখ
ভরা জলও দেখেছি

বিলাসী নামটি আমার পছন্দের । সে নামেই তার নামকরন হতে পারে । বয়স সাত থেকে গল্পের শুরু করা যাক । মায়ের ছোট মেয়ে বিলাসী । দু বোন এক মায়ের সাথে তার বসবাসের শুরু । বাবা থেকেও নেই । বাবা মায়ের বিয়ে হয়েছিল প্রেম করে । দীর্ঘ সময়ের প্রেমের পর তারা বিয়ে করেন । জন্ম হয় বিলাসীর বড় বুবুর । বড় বুবুর জন্মের আট বছর পর তার জন্ম হয় । বিলাসীর মা ছিলেন আধুনিক শহরে বেড়ে উঠা সুশিক্ষিত নারী, শিক্ষাপর্ব শেষ করেছেন মাস্টার্স । পেশায় ছিলেন টিউটর । বিলাসীর মায়ের ইচ্ছে ছিল বড় মেয়েকে ডাক্তার বানাবেন । যার জন্য দীর্ঘ সময়/গুরুত্ব/সব ব্যয় করে অতপর বড় মেয়েকে ডাক্তার বানান ।

।। কাক ডাকা ভোর, পত্রিকা নিয়ে হকারের ডাকা ডাকি । রিক্সার বেল। সব্জিওয়ালা, যানবাহন, ধূলোজমাট ঘনবসতি নিয়ে গড়ে উঠা শহর । সে শহরটিতে বিলাসীর বসবাস । বিলাসী বাড়ির ছোট মেয়ে । ছোট মেয়েরা আদরে দস্যি হয়ে যায় । কিন্তু তার বেলাত সেটি হয় নি । দু চোখে দু সমুদ্র । স্কুলের ভ্যানে নিয়ে যেত মেয়েটিকে । মা চলে যেতেন টিউশনিতে । বড় বুবু হোস্টেলে । ওর স্কুল ছুটি হতো বিকেল ৫:০০ টা নাগাদ । স্কুলটি ছিল বাসার থেকে একটু অদূরে । স্কুল ছুটি শেষে হেঁটে,হেঁটে বাসায় পৌঁছুতেন । গিয়ে দেখতো অন্যদিনের মতন মা এখনও বাসায় ফেরেন নি । অনেকক্ষন কলিং বেল বাজিয়ে দরজা না খোলায় সে কথার জানান দিচ্ছেন । আবার ফিরে যেতেন স্কুলে । সেখানে অন্য সহপাঠীদের সাথে খেলেদুলে সন্ধ্যায় ফিরতেন । এসে দেখেন ততক্ষণেও মা আসেন নি।

। । পাশের ফ্ল্যাটের আন্টি
বাসায় গেলেন। মা ফেরত না আসা পর্যন্ত বিলাসীকে সেখানে অপেক্ষা করতে হত । প্রায়ই সে সেখানে ঠাঁই নেন । মাঝে মাঝে আন্টিরা তাকে ভেতরে রেখে তালা মেরে বাইরে চলে যেতেন । মেয়েটি হয়ত সাথে নিয়ে যাবার জন্য বায়না করতেন কিন্তু বায়না না ধরে ভেতরেই থেকে যেতেন । কারন তার নিজের মা যেখানে ব্যস্ত সেখানে অন্যকে বলা অনেকটা বোকামীই হবে ।

তার ক্ষুধা লাগলেও মা না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে । মা আসলেও অনেক সময় ক্ষুধা বেড়েই চলে । মা রান্না করতে ভুলে যেতেন । রান্না হলে খেতেন । শিশু বয়সে মানুষ অনেক আবদার করেন । খেলনা,চকলেট,পুতুল,নতুন জামা আরও বিবিদ । তার বেলায় সে গুলো অনেকটা অমাবস্যার চাঁদ । যতদূর মনে পড়ে কারো পুরোন পুতুল তাকে খেলতো হত । কিছু আবদার করলেই মা বলতেন টাকা নেই । কোন মা না চায় যে তার আদরের খুকী কে পুতুলের মত সাজিয়ে রাখতে । বাবাহীন সংসারে হয়ত মায়ের না বলাটা তাকে বোঝার ক্ষমতা দিয়েছিল যে মায়ের প্রতিবন্ধকতা ।

। । একবার মামা বাড়ি বেড়াতে গিয়ে সে বেজায় খুশী । কারন সে একটি খেলনা পুতুল পেয়েছিল । পুতুলটি মামা বাড়ির পেছনের অংশে শিউলী তলায় পড়েছিল । সচারাচর আমাদের খেলনা বায়না করলে কিনে দেওয়া হত । তার বেলায় তেমনটি ঘটে নি । সবাই সবার পুতুল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন । কিনে দিতে ভুলে গেছেন ইচ্ছাকৃত । আমিও বলেছি আমার মত তাকে । সবার মধ্যমনি হতে হলে ফার্স্ট গার্ল হতে হয় আমার তো মনেই হয়নি । মনুষ্যত্ব বিকাশ কিংবা দ্বায়িত্বহীন আমড়া গাছের ঢেঁকি ।

এর মাঝে দেখল কখন সে বেড়ে উঠে গেছে । অনেকটা ডোমেস্টিক ভায়েলেন্সের শীকার । কিছু চাওয়ার আগে পাওয়ার পরিবর্তে সে না শুনেছে ।বুঝ হবার পর থেকে মা কে আর বলতো না । মায়ের সীমাবদ্ধতার কথা চিন্তা করতো । ছাত্রী হিসেবে ভালো ছিল না বিলাসী । কিন্তু তার লক্ষ্য ছিল ভালো রেজাল্ট করার তাইতো লেগে থাকতেন বইয়ের পেছনে । সারাদিন পড়তে হতো তাকে । পড়াকে সে হয়তবা বিনোদন হিসেবে নিয়েছেন । করতে করতে একটি সময় দেখলেন সে শিশু বিলাসী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে ।

সে বয়সেও তার না পিছু যায় নি । পড়ার ইচ্ছে ছিল ভালো ইউনিভার্সিটি তে । সাবজেক্ট নিয়েছিলেন হিউম্যান বিহ্যাভিয়ার এন্ড কমিকেশন্ । সে টাকা জোগাড় করতে গিয়ে মা বলেছেন টিউশন ফি দিতে পারবো । কিন্তু মেইন্টেনে্স দিতে পারবেন না । লোনের টাকায় পড়তে হবে । বিলাসীর বড় বোন খাতা কলম কিনে দিতেন । এমনও সময় তাকে পোহাত হয়েছে যে এক সেলোয়ারে ক্লাস করেছেন দীর্ঘ চার মাস । কনভোকেশনে গিয়েও সেই একই ড্রেস পরে তাকে যেতে হয়েছে । ব্যস্ততম দিন থেকে অর্থহীন সংসার.

এর মাঝেই প্রেমে পড়েন একজন প্রগতীশীল পুরুষের । যিনি মেড মেন শিল্প । শিল্পের চর্চা করতে গিয়ে তিনি যা করেছেন তাহার প্রকাশ সুখের বেলায় আমি উপভোগ্য, অথচ বসবাস ব্যস্ততম রাস্তায়, বহুতল ভবন/ফ্লাইওভারের শহরে শিশু মূল্যহীন । আমি ছিলাম মীরাবাঈ । উচ্চ শ্রেনীর সৌন্দর্য্য বিশ্লেষিত । আমি একজন নই যে প্রগতীশীলের রাস্তায় এ রাস্তায় আরও অনেকেই আছেন । সেখানে তার প্রেম প্রদীপ নিভিয়ে হাবিয়া কয়েদ বানিয়ে দেওয়া হয়েছেন । কাটে নি সে বেলাতে । যার হয় না নয় তার কি করে হয় নব্বই তে । ভালোবাসায় আদখানা ছিল তাও সারে নি । কারন প্রতিপ্রক্ষ আচ্ছন তাকে ছাড়ে নি।

পরিবারে বাবা চলে যাবার মা আর সে মিলে পরিবার । বিলাসীর বড় বুবু বিয়ে করে পাড়ি জমান বিদেশে । বাবা ও নেই । তার মায়ের ছেলে মেয়ে দুটোই সে । মেয়েটিপ ছায়া তার সাহসিকতা/ হ্যাঁ আমি পারবো, অধ্যাবসায় তাকে তার যোগ্যতার প্রমান দিয়েছে । টাকা দিয়ে হয়তবা আমি শিল্পপতি হতে পারবো কিন্তু যোগ্যতা নিজে তৈরী করা সেটি হয়ে উঠে না । সে অনেক গোছানো ।কষ্ট তাকে স্ট্যাচু বানিয়ে দেয়, আর জানেন স্ট্যাচু বিখ্যাত লোকদের থাক । সে কাতারে বড় বড় সভা হবে । তোর সামনে দর্শক । অনেক সময় সমাজে অসভ্য সমাজ অধিপতির সামনে গিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে হত এ সমাজে মা মেয়ে একা কেন ? এরা সেই সমাজপতি যারা ধূলা আর অসভ্য,কীট,নোংরা ড্রেন্রের পোকা । সে কাতারে সাত বছরের সংসার ওয়ালাকেও সে মনে রেখেছে ।

এত প্রতিকূলতার মাঝে সে নিজেকে লুঁকিয়ে রাখে নি । বরং সামনের সারীতে এসেছেন । নিজের যোগ্যতা দিয়ে তৈরী হয়েছেন সবার কাছে সমাদৃত । চাকুরী করছেন বেসরকারী ফার্মে । সাথে একটি স্কুলের জন্য ফান্ড রেজ করেন । পথশিশু/ হিজড়া বাচ্চাদের সংগ্রহ করে তাদের মাথার নিচে চাঁদের ব্যাবস্থা করেছেন । আমি প্রতিদিন কাজে যেতে কোন বেগ পেলে ফেরত চলে আসি । লোকাল বাসে চড়ে অফিস করেন । সাদামাটা জীবনে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছেন সে । সবার অগোচরে ।

জাঁকজমকে অভ্যস্থ হয়ে পড়ার মানুষ সে নহে । চাইলেই পরিচিতদের বলে কয়ে গাড়ী'র ব্যাবস্থাও করতে পারতেন অনায়েসে । কিন্তু করেন নি । পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থায় প্রতিদিন তাকে নানান প্রতিকূলতার ভীড় ঠেলে এগিয়ে যেতে হয় । মাঝে মাঝে গায়ে পড়ে ঝগড়া করার মানুষের ও অভাব হয় না । চাকুরীর জায়গায় জব করতে গিয়ে। বসদের মুরগীর খোরাক বনে যেতে হয় । কিন্তু সুবিদাবাদী তৈলমর্দন বা ব্যাবহারে সে রীতিমত প্রতিবাদী হয়ে পড়েন । অস্বচ্ছ রাস্তায় না হাঁটা মানুষগুলো আমার সকল সময়ের লোভনীয় । এমন মেয়েটি কারো জীবনে রাখা ভাগ্যের বেপার

কথার চলে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে সে কি হতে চায় । তার গন্তব্য কি ? ফেব্রুয়ারীতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন । পিএইচডি প্রপোজাল পেয়েছেন , এখন সময় সুযোগ করে যাওয়া । সে আমাকে জানিয়েছিল সে যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ে চাকুরী একে বারে সঠিক করে বললে রাজনীতি করতে চায় । সে মন্ত্রী হতে চায় । আমার বিশ্বাস নিখুঁত গাঁথুনীয় তৈরী মজবুত মানুষগুলো ঠিকই একটি সময় তার গন্তব্য থেকে সুদূরে চলে যায় । আমি মনে প্রানে বিশ্বাস করি বিলাসী একদিন তার গন্তব্যে পৌঁছুবে । আজ তার জন্মদিন । আমি সিক্ত অভিনত

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪১

তপোবণ বলেছেন: গল্পটি পড়লাম। ভাল লাগল। আরেকটু গুছালো হলে আরো ভালো হতে পারত। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.