নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিচয় নতুন করে লেখার মত কিছুই এখনও হয়ন....

সাইফুল১৩৪০৫

সবার সাথে শিক্ষণীয় পোস্ট শেয়ার করতে চাই। আমার দ্বারা যদি কেউ উপকৃত না হয়, তো ক্ষতির শিকার হবে কেন?

সাইফুল১৩৪০৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্ধদেশ ধ্বংসের পরিকল্পনাকারী এলিয়েনের গল্প

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২০

দূর গ্রহের কোন একপ্রান্তে আমার গল্পের কাল্পনিক এলিয়েনরা বাস করছে। এরা অনেক জ্ঞানের অধিকারী। এলিয়েনরা মানুষের শত্রু না বন্ধু তা জানা না গেলেওআমার এই গল্পের এলিয়েনরা মানুষেরঅনেক বড় শত্রু! তারা চায় আমাদের এই
পৃথিবীর মানুষগুলোকে ধ্বংস করে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করবে। গল্পের সর্দার এলিয়েনের নাম বারাকুয়া। সে চায় পৃথিবীতে অন্ধদেশ নামক একটা দেশকে ধ্বংস করে তাদের মিশন শুরু করবে। তাই বারাকুয়া সেই দেশের উপর নজর রাখা ও তথ্য বিনিময়ের জন্য উন্নত প্রযুক্তির মেশিন সহ বেলিয়েনকেপাঠাল।

দূর গ্রহ থেকে বেলিয়েনের কর্মকান্ডের নজর রাখার ব্যবস্থা ছিল। প্রায় দশদিন যাবৎ কোটি কোটি আলোক বর্ষ দূরত্ব পাড়ি দিয়ে বেলিয়েন যেই মাত্র অন্ধদেশে পৌঁছল সাথে সাথেই বারাকুয়ার সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।।তারা আর কোন তথ্য পাচ্ছিল না।

বারাকুয়ারা মাসের পর মাস জরুরী
বৈঠক করেও খোঁজ পায়নি বেলিয়েনের। তবে তারা বেলিয়েনের খোঁজে সর্বদাই তৎপর থাকত। তারা বিভিন্ন প্রযুক্তি পাঠাতে লাগল।

বারাকুয়াকে সংবাদ পাঠ করে
শোনাত বিট্টি নামক এলিয়েন।
অন্ধদেশের সবগুলো সংবাদপত্রের উপর নজর রাখার নির্দেশ দিল বারাকুয়া। কোথাও বেলিয়েনের সংবাদ।পাওয়া যায় কিনা তাই।

বিট্টি সার্চ দিচ্ছে পৃথিবীর আলো,
কালো কন্ঠ, ভাল কন্ঠ সহ সব ধরনের
পত্রিকা। আর টিভি চ্যানেল হিসেবে শুধু সংযোগ পেল বিশেষ টিভি।

এলিয়েনরা টিভি দেখা খুব পছন্দ করে। তাই তারা বিশেষ টিভির
উপর নজর রাখছিল। কিন্তু এতে তাদের হিংসা আরো বেড়ে যাচ্ছিল। কারন যে দেশকে ধ্বংস করবে তার এত উন্নয়ন কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

তাই তারা দেশটিকে ধ্বংসের সব
প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন সব প্রযুক্তি যার
মাধ্যমে কয়েক মিনিটেই দেশটির
মানুষগুলোকে মেরে শেষ করতে
পারবে!

এদিকে মাস যায় বছর যায় বেলিয়েনের কোন খোঁজ নেই। হয়ত গুম হয়েছে! তাই বারাকুয়া বেলিয়েনের আশা ছেড়ে দিয়ে নতুন
করে পরিকল্পনা করছে কিভাবে
অন্ধদেশে আরো উন্নত যন্ত্রপাতি ও
প্রযুক্তি পাঠানো যায়। ঠিক তখনি
বারাকুয়াদের রাডার সদৃশ্য
মেশিনটিতে বেলিয়েনের সিগনাল
পৌঁছল! সবাই অবাক হয়ে গেল। খুশিতে চিৎকার করে উঠল এলিয়েনরা। খুব দ্রুত তারা বেলিয়েনকে তাদের কাছে নেয়ার জন্য শক্তিশালী যন্ত্র পাঠাল।

বেলিয়েনকে নিয়ে জরুরী আলোচনা
সভা বসল। অন্ধদেশে কিভাবে কাটল
তার এতগুলো বছর এবং কিভাবে ধ্বংস করবে দেশ তা নিয়েই আজকের সভা বসেছে। বেলিয়েন যা শোনাল….

প্রথমদিন সামান্য একটু ভুলের জন্য তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। মাত্র ৩০-৪০ ফুট উচ্চতার জন্য তার মেশিনের অ্যান্টেনায় সিগনাল পায়নি। তাই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উঁচু পাহাড়ে উঠবে। কিন্তু দেশের উত্তরাংশে পড়ে
যাওয়ায় পাহাড়ে যেতে পারছিল না। তবে পাহাড়ে সে যে করে হোক যাবেই। সেখানের পাহাড়গুলোও
নাকি কেটে ফেলছে। বেলিয়েন একটি গাড়িতে উঠে বসে। পাগলের মত কোন কথা বলেনা। বলবে কি, সে তো কোন ভাষা বোঝেনা শুধু তার যন্ত্রের সিগনাল থেকে বুঝে নেয় যাবতীয় তথ্য। তাই চুপ করে থাকল।

গাড়িওয়ালারা তাকে পাগল ভেবে
কোন ভাড়া চাইত না। গাড়িতে ওঠার পর দেখল প্রচুর যানজট, একজন লোক কিন্তু চার চাকার গাড়ি তাই জটতো হবেই! ভাঙ্গা রাস্তা। তাই ৬ ঘন্টার পরিবর্তে ১২ ঘন্টায় অন্ধদেশটির রাজধানীতে পৌঁছায়। শুরু হল অবরোধ, হরতাল, ভাঙচুর, জ্বালাও পোড়াও। আর এসব নিয়ে রাজনীতি। কে কাকে দোষারোপ করতে পারে তার কোন ঠিক নেই। কারো জনপ্রিয়তা বাড়লে তাকে গুম করছে। ওদের ওখানে নাকি সাত-আট জন মিলে একটা ৮-১০ তলা
ভবন ঝাঁকুনি দিয়ে ফেলতে পারে!
শুনে মিচকা এলিয়েনরা হাসছিল।
বারাকুয়া একটু রাগ হয়ে বলল হাসিওনা! মানুষের কাছে আজকাল
সবই সম্ভব।

বেলিয়েন বলেই চলেছে….

রাস্তায় পুলিশ ধরে চাঁদা নেয়, পুলিশ
হতে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।
দেশটিতে প্রতিদিন কমপক্ষে তিনজন
মানুষ খুন হয়, ধর্ষিত হয়, এমনকি বাবা-মার সামনে মেয়েকে ধর্ষন করে,
যৌতুকের জন্য নির্যাতন চলে, প্রকাশ্যে হয় লুটপাত, অনেক মানুষকে
দেখলাম প্রচণ্ড শীতের রাতেওথাকছে ফুটপাত।

তারা খুবই আজব। বিশ্ব প্রাণি দিবস,
সুন্দরবন দিবস, বিজ্ঞান দিবস কোনদিন তা জানেনা। সেসব নিয়ে কোন অনুষ্ঠান করতে দেখিনি! তবে
ভ্যালেন্টাইন ডে, থার্টি ফার্স্ট নাইট ইত্যাদি খুব আনন্দের সাথেই পালন করে। প্রাণের উৎসব বলতে আছে
তাদের বর্ষের প্রথমদিন। তারা সেদিন প্রচুর ইলিশ মাছ খায়। যদিও সেই সময় ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ!

ঐদিন আবার তাদের একটি নামকরা
বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি মেয়েদের যৌন হয়রানি করা হয়েছে। পুলিশ দোষীদের ছেড়ে দিয়েছে।

ওখানের বিচার ব্যবস্থা ভাল না। দেশটায় নির্বাচনে কেউ যায় কেউ
যায় না। কেউ আবার ভোট দিতেই
পারে না। তবে সরকার আছে। তাদের
টিভি অনুষ্ঠানে সব একতরফা তথ্য,
তারা সমালোচনাকে খুব ভয় পায়।
সমালোচনা করলে সংশোধন হবে না।
বরং যারা সমালোচনা করবে তাদেরকেই অপদস্ত করবে।

বারাকুয়া জানতে চাইল দেশটির শিক্ষাব্যবস্থার কি অবস্থা?

বেলিয়েন বলল- ফেইজবুকে প্রশ্ন
পাওয়া যায়, শুধুমাত্র জিপিএ ৫
পাওয়ার জন্যই শিক্ষার্থীরা পড়ছে।
প্রচুর পাশ করলেও ভর্তি পরীক্ষায় ভাল করতে পারেনা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলীয় লেজুরভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি আছে। এরাই দেশটির সব থেকে মেধাবী সন্তান। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল এরা মানব কল্যাণের থেকে নিজেদের কল্যাণে ব্যস্ত থাকে। স্বার্থের জন্য সহপাঠীর বুকে গুলি চালাতে পারে। পড়াশোনা না করলেও নাকি চলে। শুধু লিখিত পরীক্ষায় ভাল করলেই চাকুরী মিলে যাবে তাদের। আর চাকুরী নিতে গেলে ঘুষ আর মামা লাগে! আমি দেখেছি পিয়নের চাকুরী নিতেও ওখানের লোকেরা পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা ঘুষ দেয়!

তাদের অন্যায় কর্মকাণ্ডে কেউ
বাঁধা দিতে পারে না। প্রতিটি উচ্চাসনের ব্যাক্তিরাই দূর্নীতির সাথে জড়িত। তারপর একদিন এক অন্যায় কাজে বাঁধা দিতে গেলাম। সাথে সাথে ধরে আমায় উচু ভবনে তুলল। সেখান থেকেই আমি সংযোগ পেলাম। ঠিক তখনি আমার কোমরে
রাখা যন্ত্রটি চালু করে চলে আসলাম।
এসব শুনে বারাকুয়ার ঘাম ঝরতে লাগল!

ধর্ষন, খুন, হরতাল, গলাবাজি, চাঁদাবাজি, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে
মারামারি, যৌন নির্যাতন, যৌন হয়রানি আছে। পাশাপাশি বিচার
ব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা, যাতায়াত
ব্যবস্থা সব ধ্বংস! মেধাবীদের
মেধার অবমূল্যায়ন হচ্ছে! বলতে বলতেই অট্টহাসিতে ফেঁটে পড়ল বারাকুয়া। চিৎকার দিয়ে বলল এলিয়েন সকল আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শোন। আমরা যে দেশটিকে ধ্বংস করতে যাচ্ছিলাম তার কোনই প্রয়োজন নেই। কারন তারা নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করতেছে।

পূর্বে প্রকাশিত আমার লেখার লিংক: Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.