নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মিসেস শাহানা নয়টা থেকে পাঁচটার চাকুরী করেন। ভোর ছয়টায় উঠে রাত বারোটা অব্ধি অফিস- ঘর, বাচ্চাকাচ্চা সব কাজ করতে করতে পুরো হাঁপিয়ে উঠেন। শুক্রবার ছুটি, দিনটায় বাসায় জমানো ছুটির কাজ গুলো করতে হয় অথবা বাচ্চাদের কাউকে না কাউকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হয়। কর্মব্যস্ত শাহানার কপালে ছুটির দিন আর ছুটির দিন থাকে না।
শাহানার স্বামী ইতালী থাকেন, দুইটা বাচ্চা নিয়ে শাহানা ঢাকায় থাকে। শাহানা একটি এনজিও অফিসে ক্যাশিয়ারের দায়িত্বে আছেন। ছুটিছাটা তেমন পান না। আর ইদানিং তো অন্যান্য ছুটিগুলোও বেশিরভাগ সরকারি ছুটির দিনে পড়ে। এবারের পহেলা বৈশাখ পড়বে শনিবার। শাহানা মনে মনে খুশি হচ্ছে, যাক শুক্রবার ঘরের পেন্ডিং থাকা কাজ শেষ করবে আর শনিবার ইচ্ছামতো ঘুম দিবে। বাচ্চা দুইটাকে সারাদিনের জন্য তাদের মামাবাড়ী বেড়াতে পাঠিয়ে দিবে। আবার সন্ধায় গিয়ে নিয়ে আসবে।
তা শনিবারে শাহানা তার ভাইকে ফোন করে এনে, বাচ্চাদের পাঠিয়ে দিলো তাদের মামা বাড়ি। মনে-মনে ভাবছে ভাইয়ের বাড়ী কাছে হওয়ায় ভালই হলো। শাহানা খুব খুশী, আজ ছুটির দিনটা সারাদিন ঘুমিয়ে কাটাবে। ঘুমুতে যাবে তখনই গ্রামের বাড়ী থেকে শ্বাশুড়ির ফোন আসলো। "তোমরা কেমন আছো? বাচ্চারা কেমন আছে? কি কি রান্না করলা?" উনি একবার ফোন করলে আধঘন্টায়ও কথা শেষ করেন না।
কথা শেষ করেই শাহানা মোবাইল ভাইব্রেট করে দিয়েছে। যাক এবার নিশ্চিন্তে ঘুমাবে।
চোখটা লাগতেই, "আম্মাগো দুইলা ভিক্ষা দেন না।" শাহানা ভাবলো মটকা মেরে পড়ে থাকলে, ভিক্ষুক ডাকাডাকি করে চলে যাবে। কিন্তু না... হাতের কি জানি দিয়ে গ্রিলে অনবরত ট্যাং ট্যাং শব্দ করেই যাচ্ছে.....
শাহানা বাধ্য হয়ে চাল নিয়ে গেলো ভিক্ষুককে দিতে। এবার আবদার ধরলো,"আম্মাগো দুইলা ভাত দেন না"। "ভাত নেই" বলেই শাহানা আবার ঘুমাতে গেলো। কিছুক্ষণ বাদেই পাশের বাসার ভাবি বারান্দায় দাঁড়িয়ে সেকি ডাকাডাকি, "ভাবি, ও ভাবি পহেলা বৈশাখের শাড়ীটা দেখে যান।" নাছোড়বান্দা উঠিয়েই ছাড়লো, "ভাবি আপনার ভাইয়ার আনা পহেলা বৈশাখের শাড়ীটা আমাকে কেমন মানিয়েছে?" ভাবির মন রক্ষার্থে শাহানা ঘুম ঘুম চোখে ভালোভাবে না দেখেই বললো, "ভাবি আপনাকেতো দারুন লাগছে, একদম মডেলদের মতো...!" ভাবির সেকি হাসি, খুশিতে একদম মাখনের মত গলে পড়া হাসি।
শাহানা মনে মনে ভাবির চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করে ঘুমাতে গেলো।
টিং টং.......কলিংবেলের শব্দে আবারও উঠতে হলো শাহানাকে, দরজা খুলে দেখে, ডিশ-ক্যাবল ঠিক করার লোক। ডিশের ক্যাবলে ডিস্টার্ব ছিলো, তিন দিন আগে ফোন করেছে আজই সময় হলো আসার। শাহানা ঘুম ঘুম চোখ নিয়েই লাইন ঠিক করালো।
এবার শাহানা ভেবে নিয়েছে কেয়ামত না হলে, আর উঠবে না...!!
এদিকে কলিংবেলের শব্দ আর আফা- আফা ডাকে ছুটাবুয়া রহিমার মার গলায় এলাকা মুখরিত হয়ে যাচ্ছে........
শাহানা ধড়মড়িয়ে উঠে বসলো। রহিমার মা যাদের বাসায় কাজে যায়, দরজা খুলতে দেরী হলেই ডাকতে ডাকতে কেয়ামত করে ফেলে। দরজা খুলতে আর একটু দেরী হলেই এখন পুরো মহল্লা এসে জড়ো হবে, সবাই ভাববে শাহানা সুইসাইড করেছে.......
বাচ্চাদের বাবার বাড়ী পাঠিয়ে শাহানা এবারের বৈশাখী মেলাটাও মিস করেছে। এবারে ছুটিরদিন আর ঘুমের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করে বাবার বাড়ী রওয়ানা দিলো বাচ্চাদের আনতে।
রাস্তায় দ্রুত বেগে রিকশা ছুটে চলেছে আর রিকশায় বসে শাহানা ভাবছে, "হায়রে ছুটির ঘুম.......!!!"
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:২৮
সালমা রুহী বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: ঘুম খুব প্রয়োজনীয়।
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:২৯
সালমা রুহী বলেছেন: ঠিক বলেছেন ।
৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৬
আবু আফিয়া বলেছেন: আসলেই ছুটির জন্য অপেক্ষায় থাকি,
ভাল লাগল
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৩২
সালমা রুহী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ।
৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২১
মৌরি হক দোলা বলেছেন: হায়রে ছুটির ঘুম!!
ভালোলাগল........
০১ লা মে, ২০১৮ দুপুর ২:২০
সালমা রুহী বলেছেন: ধন্যবাদ ।
৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩০
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সাহানার ছুটিবাসরীয়টা বেশ ভাল লাগলো।
০১ লা মে, ২০১৮ দুপুর ২:২৬
সালমা রুহী বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ ।
৬| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৪
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: তবে কর্মব্যস্ত পুরুষরা যেভাবে ছুটির ঘুম উপভোগ করেন, নারীরা তা পারেন না। বিশেষ করে বিবাহিত নারীরা। কারণ, স্বামী-সন্তান ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উনার উপর অনেকটা নির্ভরশীল। যদিও আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এ কৃতিত্ব অনেক সময় দিতে চায় না।
লেখাটি ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ @সালমা রুহী
০১ লা মে, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯
সালমা রুহী বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ।
৭| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩
সৈয়দ তাজুল বলেছেন: সামনে আরেকটা ছোটি আছে, প্লান নিয়ে ঘুমানো যাবে। শাহানা মিসকে বলুন আগ থেকেই একটু প্লান নিয়ে ঘুমানোর জন্য!
৮| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কপালে যার নাই ঘি
ঠক ঠক করলে হবে কি?
০২ রা মে, ২০১৮ রাত ৯:৫০
সালমা রুহী বলেছেন: ঠিক
৯| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫২
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: ঘুম কথা শুনেই ঘুম পেয়ে গেল
১০| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৫
কাছের-মানুষ বলেছেন: ঘুমের সময় না ঘুমাতে পারলে খুবই খারাপ লাগে।
কর্মজিবি নারীর একটা বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে।
১১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:০১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এই দেশে আসলে ছুটির ঘুম সেভাবে পাওয়া যায় না। কোন না কোন ব্যস্ততা চলে আসে...
১২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৩৩
লর্ড অফ দ্য ফ্লাইস বলেছেন: আমরা পুরুষরাও ছুটির দিন সকালে ঘুমাতে পারি না। শুক্র-শনি সকাল সকাল বাজারে না গেলে মহল্লার বড়লোকেরা বাজার থেকে সব ভালো জিনিস নিয়ে যান। তবে বিকালে বকেয়া ঘুম সুদেআসলে উশুল করতে পারি।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪১
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: কর্মব্যস্ত নারীর একটি ছুটির দিনকে ভালই ফুটিয়ে তুলেছেন।