নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভাল আছি ভাল থেকো, আমার ঠিকানায় চিঠি লিখো
"আমি তারেক মাসুদ বলছিলাম, সিনেমা বানাই, আপনাদের সিলেটে নতুন একটা সিনেমা নিয়ে আসলাম-রানওয়ে। আপনাদের ক্যাম্পাসে প্রচারণা চালাতে আসতে চাই।" - উত্তরে আমি বলব। আমি শুধু মন্ত্রমুগ্ধের মতো কথা গুলো শুনছিলাম। মনে পড়ছে সেই দিনটির কথা তারেক মাসুদকে নিয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো ক্লাসরুমে গিয়েছিলাম। তারপর দল বেঁধে রিকাবীবাজারের সিলেট মিলনায়তনে গিয়ে রানওয়ে দেখেছি তারেক মাসুদের সাথে । তারেক মাসুদকে বলেছিলাম- "স্যার আমার স্বপ্ন চলচ্চিত্র বানানো। একটা গল্পও মাথায় আছে"।
তিনি আমার গল্পটা পরে শোনবেন বলেছিলেন। পার্সোনাল মোবাইল নম্বরটাও দিয়েছিলেন। কয়েকবার ফোনে কুশলাদি জিজ্ঞেস করেছিলাম। একবার বললেন "সময় পেলে ঢাকা আসো, তোমার সিনেমা নিয়ে কথা বলা যাবে ।" কথা আর হয় নাই। যখন শুনলাম তারেক মাসুদ, মিশুক মুনিররা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তখন অঝর ধারায় সিলেটে বৃষ্টি হচ্ছিল। একটার পর একটা ফোন আসছিল- তারেক মাসুদ নাকি মারা গেছে? আমি বলি-না না মিথ্যা কথা।
তারেক মাসুদ চলে যাওয়ার পর ঢাকায় গিয়েছিলাম । তিনি ঢাকার তেজগাওয়ের মনিপুড়িপারার যে বাড়িতে থাকতেন সেখানে তার ভাই নাহিদ মাসুদের সাথে আমরা কিছু সময় কাটিয়েছিলাম। তার স্টুডিও, সিনেমা তৈরীর যন্ত্রপাতি ইত্যাদি দেখলাম। নাহিদ মাসুদকে বলেছিলাম: আমরা সিকৃবি ক্যাম্পাসে তারেক মাসুদ চলচ্চিত্র উৎসব করতে চাই। পরে কোন এক কারনে এটি আর করা হয়ে উঠেনাই ।
তারেক মাসুদ- আপনার মাটির ময়নার গানগুলো সময় পেলেই শুনি। বিশেষ করে পাখিটা বন্দি আছে দেহের খাঁচায়। আপনার রানওয়ে সিনেমার শেষ দৃশ্যটার কথা খুব মনে পরে- মা তার ছেলের মলিন মুখ দুধ দিয়ে পরিস্কার করে। জানি না কখনো চলচ্চিত্র পরিচালনা করতে পারবো কি না । তবে এটা ভেবে খুব কস্ট লাগে- কে আর আমাদের শোনাবে মুক্তির গান । অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশী চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ।
©somewhere in net ltd.