নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ভাল না খারাপ দূর থেকে নয়, কাছে এসে মিশে বন্ধু হয়ে দেখুন৷

খলিলুর রহমান ফয়সাল

ভাল আছি ভাল থেকো, আমার ঠিকানায় চিঠি লিখো

খলিলুর রহমান ফয়সাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাদা চা, লাল চা, হলুদ চা, সবুজ চা, কালো চা, খয়েরী চা – বিভিন্ন ফ্লেভারে বেঁচে থাকুক লালন ও কবিরা

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১৪



চা খেতে গিয়ে ছোটবেলা জিহ্বা পুড়ে গিয়েছিল । এমনিতেই বাসায় চা বানানো হতো না । আম্মা হুজুর পরিবার থেকে এসেছেন । তার মতে চা সিগারেটের মতোই খারাপ অভ্যাস । তাই বাসায় মেহমান ছাড়া চা বানানো বন্ধ । জিহ্বা পুড়ার পরতো চা একটি ভিতিকর পানীয় ছিল আমার কাছে । বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে যখন চায়ের দেশ সিলেট আসি, এটটু আধটু ভদ্রতার খাতিরে বন্ধুদের সাথে চা চু খেতাম । এতটু এটটু খেতে এখন চায়ের সাগরেই ডুবে আছি । হলে থাকতেতো খুবই খারাপ অভ্যাস ছিল । রোদ বৃষ্টি কুয়াশা যাই থাকুক সকাল সন্ধ্যা রাত পালা করে চা খেতে দলবেধে হল থেকে বালুচর আসতাম । চা না খেলে ঘুম ভাঙ্গে না , চা না খেলে ঘুম ধরে না । কোটি টাকার মালিকের সাথে বলেন আর নিম্নবিত্ত নিম্ন মধ্যবিত্ত, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সাহিত্যিক বুড়ো চ্যাংরা সবার সাথেই আড্ডার মাঝে চা থাকতেই হবে । তবে একটু আগের ঘটনাটা অন্যরকম । আমার লালনের সাথে দেখা হয়ে গিয়েছিল । আরে লালনের কথা মনে নেই ? ঐ ঘটনাটা আপনাদের বলেছিলাম তো । দাড়ান আবার স্মরণ করিয়ে দিই । ‘আমার নাম লালন।’ একজন রিকশাওয়ালার নাম লালন শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম আমি। শ্যামলা বরনের মাংশল বাহুগুলো ঘামে চকচক করছিল। লুঙ্গি কাছা মেরে প্যাডেলে জোড়ে জোড়ে চাপ দিয়ে লালন তরতর করে এগিয়ে নিচ্ছে রিকশাটাকে। আজকাল মোটরের রিকশাগুলোর দৌড়াত্বে তার ভাঙ্গাচোরা রিকশায় কেউ উঠতে চায় না। রিকশায় উঠলে রিকশাওয়ালাদের সাথে খাতির জমানোর বদঅভ্যাস আছে আমার। তবে লালন ছেলেটা একদমই ব্যাতিক্রম। পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের যুবক, পৌরষদিপ্ত চেহাড়া, আর গুছিয়ে কথা বলার ভঙ্গি যে কাউকে আকৃষ্ট করবে। জিন্দাবাজার থেকে বালুচর-সবটুকু রাস্তা সে সুন্দর ভাবে রিকশা চালিয়েছিল এবং প্রত্যেকটি কথার পিছে সুন্দর ভাবে উত্তর দিয়েছিল। একসময় বুঝলাম তার মনে অনেক কষ্ট। দিনাজপুরের পার্বতীপুর লালনের বাড়ি। লীনু নামের এক মেয়েকে পাঁচ বছর পর্যন্ত ভালবেসে বিয়ে করেছিল। কিন্তু বাবা-মার চাপে লীনু লালনকে ছেড়ে চলে যায়। লালন কাউকে কোন দোষ দেয় না। বৃদ্ধা মাকে না জানিয়েই সব ছেড়ে সিলেটে চলে আসে সাড়ে তিন বছর হল। লোকমুখে শুনেছে লীনুকে আবার বিয়ে দেয়া হয়েছে। মাকে দেখতে খুব মন চায় লালনের। কত দিন দেহিনা মায়ের মুখ। সেবারের ঈদে বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার, কিন্তু গত রাতে ছিনতাইকারীরা তার সব কেড়ে নিয়েছে। গ্যারেজের মেসে চুরি হতে পারে ভেবে সব টাকা সাথে নিয়ে ঘুরত সে। “ভাই এ টেকা দিয়া, বাড়িত যামু, নিয়েন ভাই, নিয়েন না।” শত আকুতির প্রতিদান হিসেবে পেয়েছিল মাথায় বাড়ি। ফোলা জায়গাটা আমাকে দেখিছিল সে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম-“লীনুর কথা মনে পরে না?” ক্ষোভে ফেটে পরেছিল লালন-“অই মাগীর জন্যই তো মাকে ছাইড়া ভীনদেশে পইরা আছি।” আমি আর কিছু বলিনি। ক্যাম্পাসে ফিরে মানিব্যাগ থেকে টাকা খুলে দিলাম। বিদায় নিয়ে যখন এগুচ্ছিলাম দূর থেকে চিৎকার দিয়েছিল লালন-“ভাইজান পকেট থেইক্কা আফনার মানি ব্যাগ পইরা গেছে।” ঘটনার বিস্ময়ে আমি তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলাম। ঈদ শপিং আর বাড়ি ফেরা বাবদ সাত হাজার টাকার মতো ঐ মানি ব্যাগে ছিল। আমার হাতে যখন লালন মানি ব্যাগটা ফেরত দিল, আমি তখন কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। জড়িয়ে ধরে বলেছিলাম-“ঈদ মোবারক লালন। এবার ঈদে না পার, পরের ঈদে অবশ্যই মায়ের কাছে চলে যেও।” লালন কিছু বলেনি, ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। সেই লালনের দেখা পেয়েছিলাম আজ । আমি তাকে চিনতে পারিনি । শিবগঞ্জ হয়ে আরামবাগ আসছিলাম । মাঝ রাস্তায় সে ই আমাকে চিনেছে । ঘটনাটাতে আমি এতই আশ্চর্য হয়েছি আমি কথা বলতে পারছিলাম না । আমার বন্ধু ও কলিগ রাকিবুলকে লালনের কথা বললাম । আমরা লালনকে আমাদের ফ্ল্যাটে নিয়ে আসি । এক কাপ চা বানিয়ে দিই । বিনয়ে গদ গদ হয়ে গেল সে । লালন বিয়ে করেছে । চায়ের কাপে একটা চুমু দেয় আর তার বাড়ির কথা বলে । লজ্জায় লাল হয়ে যায় সিগারেট খাওয়া কালো ঠোট । মাঝে লালন বলে- ভাই চাকরী পাইছেন, এবার বিয়ে করে ফেলেন । আমি কিছু বলি না । লালনের মতো আমার অতো লজ্জা নাই । আমি মোবাইলে দিকে তাকাই আর মিটিমিটি হাসি ।
ছোট ও মায়াবী শহর সিলেট । রাজপথের মাঝে মাঝে চায়ের টং । সেখানে লালন, আমি আপনি চা খাই । কত স্বপ্নের মায়াজাল বুনা হয় প্রতিটি চুমুকে । এ প্রজন্মের লেখকদের মাঝে মিস্টার আখতারুজ্জামান আজাদ আমার প্রিয় একজন লেখক । তার কথা বলার আগে চা নিয়ে তার একটি লিখা পড়ে আসি চলুন ।
প্রিয় দেশবাসী,
আজ এই টিএসসির খোলা চত্বরে দাঁড়িয়ে ধূমায়মান চায়ের কাপ হাতে নিয়ে,
আপনাদেরকে আমি আমার লাগামহীন চা-পানের ইতিবৃত্ত বর্ণনা করব।
আমার হাতে চা-ভর্তি এই যে কাপটি দেখছেন --
এই কাপটি একটি ইতিহাস, টিএসসির টি স্টলের প্রতিটি কাপই একেকটি ইতিহাস!
খানিক আগে এই কাপে চা খেয়ে গেছে ঘামে-নাওয়া এক রিকশাশ্রমিক,
সদ্য-চুমু-খাওয়া রেসকোর্সফেরত এক উদ্বাহু প্রেমিক।
শ্রমিকের নাকের ঘাম,
প্রেমিকের ঠোঁটের কাম --
লেগে আছে এই চায়ের কাপে।
শ্রমিকের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ,
প্রেমিকের ওষ্ঠীভূত লোভ --
গলে আছে এই চায়ের তাপে।
হয়তো এই কাপেই চা খেতে খেতে কোনো খুনি এঁকে গেছে কোনো খুনের নকশা,
কোনো মুনি আবিষ্কার করে গেছে দর্শনের নয়া নয়া ধোঁয়াশা,
প্রেমবঞ্চিত কোনো কবি কারো প্রেমকেলী দেখে ফেলে গেছে দু-ফোঁটা চোখের জল,
সদ্য-অঙ্কুরোদগম-ঘটা কোনো প্রেমিকা লাগিয়ে গেছে ঠোঁটের ছল।
প্রেমিক থেকে শ্রমিক,
খুনি থেকে মুনি,
কবিনেতা থেকে অভিনেতা --
প্রত্যেকের মুখস্থ তপ্ত থুতু লেগে এই চায়ের কাপে!
এই ঐতিহাসিক কাপে ঠোঁট ছুঁইয়ে আমি পাই ইতিহাসের ছোঁয়া,
কেতলির নলে আমি দেখি ইতিহাসের দাউদাউ ধোঁয়া।
প্রিয় ধোঁয়া উড়ছে, উড়ছে তো উড়ছেই;
চোখের জল পুড়ছে, পুড়ছে তো পুড়ছেই!
প্রিয় দেশবাসী,
আমি বিশ্বাস করি --
হাজার বছরের হাজার আয়োজন শেষে,
বহু দূর হতে দ্ব্যর্থক হাসি হেসে,
চায়ের চুলোর ধোঁয়ায় ভেসে ভেসে,
রাবীন্দ্রিক প্রেমিকার বেশে
একদিন সাবালিকা এসে দাঁড়াবে টিএসসির এই টি স্টলে!
এবং বলবে --
"শত বরষের শতেক স্বপন চায়ের কাপে মাখাও;
স্বপ্ন এবার সত্যি তোমার, চা খাও কবি, চা খাও!

চমৎকার না । তার লেখা ভাল হলেও মানুষ হিসেবে তিনি খুব একটা সুবিধার না । চ্যাট বক্সে মাঝে মাঝে তার সাথে আমি অকারনেই খাতির জমানোর চেষ্টা করি । কিন্তু তিনি খুবই ভাব নেন । মেহজাবিনের ভাষায় বললে এত্তোগুলা ভাব কেন? আমার সাথে ভাব নিলেও, বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার প্রতি তা অগাধ ভাব-ভালবাসা । ভাবুক কবির জন্মদিনের শুভেচ্ছার পাশাপাশি একটি পরামর্শ দিই, লালনের মতো বিয়ে করে ফেলুন । তখন চায়ের কাপে অন্যরকম ঝড় উঠবে । কবিতাগুলো পাবে নতুন মাত্রা । ভাল থাকুন, চায়ের প্রতিটি চুমুকের মতো ভাল । সাদা চা, লাল চা, হলুদ চা, সবুজ চা, কালো চা, খয়েরী চা – বিভিন্ন ফ্লেভারে বেঁচে থাকুক লালন ও কবিরা ।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৬

মামুন রশিদ বলেছেন: চমৎকার অনুভূতির প্রকাশ । ভালো লেগেছে চা কাহিনী, লালনের গল্প আর আক্তারুজ্জামান আজাদের কবিতা ।


প্লাস+

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৯

খলিলুর রহমান ফয়সাল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইজান

২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৭

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: ca somacar valo laglo.

৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪৮

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: আপনার স্মৃতি বিজরিত চমৎকার লেখাটি ভালো লাগলো +

অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা :)

৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৬

সুমন কর বলেছেন: আক্তারুজ্জামান আজাদের কবিতাটি অসাধারণ লাগল। লেখায় ভাল লাগা।

৪+।

৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৫৪

দুরন্ত পলাশ বলেছেন: ভাইজান গতকাল রাতে আমি আপনার লিখাটা পড়েছিলাম !গতরাতে আমি ঘুমের মধ্যে দেখেছি আমি ঝাল :) :) চা খাচ্ছি !!

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৯

খলিলুর রহমান ফয়সাল বলেছেন: নাম মনে পড়ছে না। খুব সম্ভবত হুমায়ুন আহমেদের কোন একটা নাটকে ঝাল চায়ের কনসেপ্ট টা দেখেছিলাম।

৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২২

ক্রন্দসী বলেছেন: সাস্টের?এরকম অনূভুতি কেবল তাদেরি মানায়

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৬

খলিলুর রহমান ফয়সাল বলেছেন: সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা।

৭| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩২

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: বলতে পারি অনবদ্য কিছু লিখেছেন। অনেক ভাললাগল।
লালনের কথা।
এই কবিতাটি আগে পড়া হয়নি তাই কোট করলাম।

প্রিয় দেশবাসী,
আজ এই টিএসসির খোলা চত্বরে দাঁড়িয়ে ধূমায়মান চায়ের কাপ হাতে নিয়ে,
আপনাদেরকে আমি আমার লাগামহীন চা-পানের ইতিবৃত্ত বর্ণনা করব।
আমার হাতে চা-ভর্তি এই যে কাপটি দেখছেন --
এই কাপটি একটি ইতিহাস, টিএসসির টি স্টলের প্রতিটি কাপই একেকটি ইতিহাস!
খানিক আগে এই কাপে চা খেয়ে গেছে ঘামে-নাওয়া এক রিকশাশ্রমিক,
সদ্য-চুমু-খাওয়া রেসকোর্সফেরত এক উদ্বাহু প্রেমিক।
শ্রমিকের নাকের ঘাম,
প্রেমিকের ঠোঁটের কাম --
লেগে আছে এই চায়ের কাপে।
শ্রমিকের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ,
প্রেমিকের ওষ্ঠীভূত লোভ --
গলে আছে এই চায়ের তাপে।
হয়তো এই কাপেই চা খেতে খেতে কোনো খুনি এঁকে গেছে কোনো খুনের নকশা,
কোনো মুনি আবিষ্কার করে গেছে দর্শনের নয়া নয়া ধোঁয়াশা,
প্রেমবঞ্চিত কোনো কবি কারো প্রেমকেলী দেখে ফেলে গেছে দু-ফোঁটা চোখের জল,
সদ্য-অঙ্কুরোদগম-ঘটা কোনো প্রেমিকা লাগিয়ে গেছে ঠোঁটের ছল।
প্রেমিক থেকে শ্রমিক,
খুনি থেকে মুনি,
কবিনেতা থেকে অভিনেতা --
প্রত্যেকের মুখস্থ তপ্ত থুতু লেগে এই চায়ের কাপে!
এই ঐতিহাসিক কাপে ঠোঁট ছুঁইয়ে আমি পাই ইতিহাসের ছোঁয়া,
কেতলির নলে আমি দেখি ইতিহাসের দাউদাউ ধোঁয়া।
প্রিয় ধোঁয়া উড়ছে, উড়ছে তো উড়ছেই;
চোখের জল পুড়ছে, পুড়ছে তো পুড়ছেই!
প্রিয় দেশবাসী,
আমি বিশ্বাস করি --
হাজার বছরের হাজার আয়োজন শেষে,
বহু দূর হতে দ্ব্যর্থক হাসি হেসে,
চায়ের চুলোর ধোঁয়ায় ভেসে ভেসে,
রাবীন্দ্রিক প্রেমিকার বেশে
একদিন সাবালিকা এসে দাঁড়াবে টিএসসির এই টি স্টলে!
এবং বলবে --
"শত বরষের শতেক স্বপন চায়ের কাপে মাখাও;
স্বপ্ন এবার সত্যি তোমার, চা খাও কবি, চা খাও!


তবে নামকরণ দেখে প্রবন্ধ টাইপ কিছু ভেবেছিলাম।
শুভকামনা।

৮| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪০

পার্থ তালুকদার বলেছেন: লালনের জন্য শুভকামনা ----

আর আমার অফিসে আপনার চায়ের নিমন্ত্রণ !!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০১

খলিলুর রহমান ফয়সাল বলেছেন: নিমন্ত্রণ গৃহীত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.