নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ভাল না খারাপ দূর থেকে নয়, কাছে এসে মিশে বন্ধু হয়ে দেখুন৷

খলিলুর রহমান ফয়সাল

ভাল আছি ভাল থেকো, আমার ঠিকানায় চিঠি লিখো

খলিলুর রহমান ফয়সাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বঙ্গবন্ধুর চলচ্চিত্রে অভিনয়

১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৫৭


চলচ্চিত্রে একবার অভিনয় করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৩ সাল। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘সংগ্রাম’এর শুটিং চলছে। সিনেমার শেষ দৃশ্যের স্ক্রিপ্টটি এমন - মুক্তিযুদ্ধের পরে সদ্য স্বাধীন দেশের সামরিক বাহিনী বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে স্যালুট করছে। এই দৃশ্য কিভাবে ধারণ করা যায় সে নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন ছবির পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম।

সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন কামরুল আলম খান খসরু ও সুচন্দা। স্বাধীনতার আগে খসরু ছিলেন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। যার হাত ধরেই ১৯৬৯-এ মুসলিম লীগের এনএসএফ গুণ্ডা বাহিনী ঢাকা থেকে উৎখাত হয়েছিল। বীরত্বের সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে এরপর তিনি চলচ্চিত্রে আসেন। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত স্নেহের পাত্র ছিলেন তিনি। সেই স্নেহের সম্পর্কের সুবাদেই সিনেমার শেষ দৃশ্যের একটা ব্যবস্থা করার জন্য পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামকে নিয়ে নায়ক খসরু সোজা গিয়ে হাজির হলেন বঙ্গবন্ধুর কাছে। সেই মুহূর্তের কথোপকথন চাষী নজরুল ইসলাম বর্ণনা করেছেন এভাবে -

খসরু: আপনার কাছে একটা কাজে আইছি।
বঙ্গবন্ধু: কী কাজ? ক?
খসরু: আমরা আর্মির মার্চ পাস্টের একটা দৃশ্য করব। আপনি স্যালুট নিবেন।
বঙ্গবন্ধু: চুপ, আমি ফিল্মে অ্যাক্টিং করব না। (ধমকের সুরে)
খসরু: এটা তো অ্যাক্টিং হইল না।
বঙ্গবন্ধু: অ্যাক্টিং হইল না কী? যা, এখান থেকে। (আবারো ধমকের সুরে)
খসরু: না আপনাকে করতেই হবে। আপনি না হলে সিনেমাটা শেষ করতে পারব না।
বঙ্গবন্ধু: মান্নানরে ডাক দেখি। (তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মান্নান)
(স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মান্নান এসে খসরু ও চাষী নজরুলকে নিজের রুমে নিয়ে গেলেন।)
খসরু: বঙ্গবন্ধুরে অ্যাক্টিং করতে হইব।
আবদুল মান্নান: বঙ্গবন্ধু অ্যাক্টিং করব, এ-ও সম্ভব?
খসরু: সম্ভব না হইলে কিন্তু আপনারে অ্যাক্টিং এ দাঁড় করাইয়া দিমু। আপনি বঙ্গবন্ধুরে উল্টাপাল্টা কিছু বইলেন না। শুধু বলবেন, অ্যাক্টিং করা যায়।
(সবাইকে নিয়ে মন্ত্রী আব্দুল মান্নান আবার ফিরে গেলেন বঙ্গবন্ধুর রুমে)
বঙ্গবন্ধু: কী তাইলে?’
আবদুল মান্নান: ওই ঠিকই আছে। তয় করবেন কবে?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে বঙ্গবন্ধু রাজি হলেন কাজটি করে দিতে। খসরুকে বললেন, “যা, করে দেব।”

সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পিলখানায় শুটিংয়ের ব্যবস্থা হল। মার্চপাস্টের বিশাল আয়োজন। একবার মিস হলে সব শেষ। এক চান্সেই শট ওকে করতে হবে। বঙ্গবন্ধু মঞ্চে গিয়ে দাঁড়ালেন। পেছনে সারি বেঁধে বসলেন জিয়াউর রহমান, কেএম সফিউল্লাহ, খালেদ মোশাররফসহ সেনাবাহিনীর সব শীর্ষ কর্মকর্তারা। মঞ্চের সামনে প্যারেড করে স্যালুট দিয়ে এগিয়ে চলেছে সুসজ্জিত সেনাদল। পরিচালকের কথা মতো স্যালুট গ্রহণের জন্য কপালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন বঙ্গবন্ধু। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর অধৈর্যের সুরে পরিচালকের সাথে কথোপকথন -

বঙ্গবন্ধু: এই, কতক্ষণ হাত তুইলা রাখব রে।
চাষী নজরুল: আর অল্প কিছুক্ষণ।
বঙ্গবন্ধু: আরে কী করস না করস তোরা।

এভাবেই ধারণ হল সংগ্রাম ছবির শেষ দৃশ্য। চাষী নজরুল ইসলামের পরিচালনায় সুচন্দা, খসরু ও বঙ্গবন্ধু অভিনীত মুক্তিযুদ্ধের ছবি সংগ্রাম মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:২৫

স্পর্শহীন আলো বলেছেন: বঙ্গবন্ধু: আরে কী করস না করস তোরা।
=p~
:-B
মজার ছিল।

২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫০

সুমন কর বলেছেন: আজ ফেসবুকেই পাওয়া যাচ্ছে......ফেসবুকের জিনিস ব্লগে না দেয়াই ভালো।

৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫৬

জাহিদ হাসান বলেছেন: অসাধারন মানুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। জাতির পিতাকে স্যালুট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.