নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নবীউল করিম

নবীউল করিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

এমনই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছে এই জাতী যে স্বাভাবিক ভাত্রিত্ববোধ টুকুও অবশিষ্ট নেই

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:০৭

সংখ্যালঘুদের উপর হামলা কনও হটাত ঘটে যাওয়া ঘটনা না। এটার প্রস্তুতি অনেক পুরানো, এটা এমন একটা উত্তপ্ত ইস্যু যা সব সম্প্রদায়ের মানুষকেই প্রচণ্ড নাড়া দিয়ে যায়।



সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অধ্যুষিত অঞ্চলে আমার জন্ম এবং বড় হয়ে উঠা। অনেক কিছুই অনেক কাছ থেকে দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। অনেক সংখালুঘু পড়িবারের সাথে অত্যন্ত কাছের সম্পর্ক ছোট বেলা থেকেই। এটা নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা আমার অনেক দিনের, কিন্তু সময়ের অভাবে সম্ভব হয় না। শুধু এতোটুকু আজকে বোলতে চাই যে এটার জন্য যেমন সুবিধাবাদী রাজনীতি দায়ী তেমনি উচ্চ বর্ণের হিন্দুরাও সমান দায়ী!



গত চল্লিশ বছরে আমি এমন একটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার খবর শুনি নাই যেটাতে প্রমাণ হয় ১)কনও উচ্চ বর্ণের হিন্দু এর শিকার ২) অর্থ বা প্রতিপত্তিময় হিন্দুরা নির্যাতিত এবং ৩) শহর বা নগরের হিন্দুরা এর শিকার! সব ঘটনাই ঘটে অজ পাড়াগাঁয় বা অনেক নীরব এলাকায় বা যেখানে অনেক গরীব ও নিম্ন বর্ণের হিন্দুরা থাকে, যারা বস্তুত সব সময়ই অবহেলিত উচ্চ বর্ণের দ্বারা, সমাজপতিদের দ্বারা এবং ক্ষমতাবানদের দ্বারা!



সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটবে যে কনও নির্বাচনের আগে ও পরে,এটা অবধারিত সত্য,এটা সবাই জানে। এটা বুঝার জন্য পি এইচ ডি করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু কনও সরকারই জানে না! যেমন জানে না তথাকথিত উচ্চ বর্ণের হিন্দু এবং উপর তলায় অবস্থানরত হিন্দুরা! এঁরা দুই চারটা কথা বলে আর সামান্য আওয়াজ তুলে চুপ থেকে শক্তি সঞ্চয় করে ঘটনা ঘটার অপেক্ষায়! ঘটনা ঘটার পর শুরু হয় তাঁদের উচ্চ কণ্ঠে গগন বিদারী আর্তনাদ! এই আর্তনাদ করাস ভাবে গাইতে থাকে সুবিধাবাদী দুর্নীতিবাজ, নীতি-বিবর্জিত রাজনীতিবিদ এবং ঐ তথাকথিত উঁচু তলার হিন্দুরা এবং ব্লেন্ডেড প্রগতিশীল চেতনা-ধারিরা! সত্যি কথা হোল এদের কনও জাত নেই, কনও রাজনৈতিক পরিচয় নেই, কনও ধর্ম নেই।



এদের পরিচয় এরা পিশাচ, এরা কাপালিক, এরা মানব সভ্যতার দুষমন।



সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এমন একটা পণ্য যে,একটা কিনলে একটা ফ্রি! যে ঘটায়, সে যদি জয়ী হয় তবে এটাকে ব্যাবহার করার প্রতিক্রিয়া হয় এক রকম আর যদি পরাজিত হয়, তবে তার প্রতিক্রিয়া হয় আর এক রকম! এখন যেমন আওয়ামীলীগ চরম নৈতিকতা বিবর্জিত,অসাংবিধানিক অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের তামাশা করে দুইটা ফায়দা নিচ্ছে। ১) বিরোধীদের ঘাড়ে দোষ দিয়ে হেনস্থা কোরতে ২) জনগণের মনোযোগ নির্বাচন থেকে ঘুরিয়ে দিতে! আলুর মতো! সব তরকারীতেই সুস্বাদু! আজকে যদি আওয়ামীলীগ কনও ভাবে হেরে যেতো, তবে এই ঘটনাকে তারা জঙ্গিবাদের উত্থান হিসাবে ও ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসাবে প্রমাণ করার জন্য উঠে পরে লাগতো!



আর ঐ তথাকথিত উচ্চ বর্ণের হিন্দু এবং উপর তলায় অবস্থানরত হিন্দুরা এটাকে গরম গরম ইস্যু বানিয়ে তাঁদের জাতকে আরও উঁচুতে এবং ক্ষমতায় নিজের পছন্দনুযায়ি দল থাকুক বা না থাকুক সরকারের কাছ থেকে সম্ভাব্য সব রকমের সুযোগ সুবিধা বাগানোর মতলবে ব্যাবহার করে। কিন্তু তাঁরা এটা বুঝতে চায় না যে, এতে তাঁদের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে!



এই দেশের উপর তলায় অবস্থানরত হিন্দুরা এবং ভারতের উপর তলায় অবস্থানরত মুসলমানরা একই ভুল বারবারই করে যাচ্ছে গত প্রায় ৭০ বছর ধরে! যদিয় ভারতের মুসলমানরা ইদানীং তাঁদের ভুল বুঝতে পেরে ঠিক পথে আগানর চেষ্টা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুরা ৪২ বছর আগে যেই কূলে বিশ্বাস করে নৌকা ভিড়িয়ে ছিল, এখনো সেই কূলেই আছে! যার পরিনতি কি, তার একটু বুঝা যাবে লিঙ্কের লেখাটা পড়লে(Click This Link) অবশ্য যদি তাঁরা তা বুঝতে চায়! “মা কখনো ভাগ হয় না,ঘটনা চক্রে ভাগ হয়েছে, আবার মা এক হবে” এই ভুল আদর্শ থেকে তাঁদের সড়ে আসতে হবে।



আর ব্লেন্ডেড প্রগতিশীল চেতনা-ধারিদের কথা যতো কম আলোচনায় আনা যায় ততোই কম দুর্গন্ধ ছড়ায়।



বিরোধীদল সব সময়ই ব্যাক ফুটে থাকে, প্রায় ঐ হতভাগা নির্যাতিত শিকারের মতো! এর অর্থ এই না যে বিরোধীদলের কনও দায়বদ্ধতা নেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিরোধী পক্ষ কেন এই গরম অতি পয়মন্ত ইস্যু থেকে নিজেকে দূরে রাখবে!তারাও তো ক্ষমতায় আসতে পারে? ক্ষমতায় আসার জন্য আতঙ্কিত করে, নির্যাতন করে ফায়দা নেয় আর ক্ষমতা পেলে বিরোধী দলকে দমন কাজের গরম ইস্যু বানিয়ে নেয়!



জনগণের দায়বদ্ধতা এখানে সব থেকে বেশী,কাড়ন জনগণের এই দাঙ্গা থেকে বস্তুগত ও আর্থিক কিছুই পাওয়ার বা হারানোর না থাকায়,আমোদ গ্রহণকারী ভুয়া সাধু সেজে হাবা গবা দর্শকের ভূমিকা পালন করে! আমি অবশ্যই মুসলমান নামধারীদের কথা বলছি। এরাই তো এই দেশে অন্তত ৮০ শতাংশ। এঁরা চাইলেই এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রতিরোধ কোরতে পারে। কিন্তু কি লাভ তাতে?



এমনই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছে এই জাতী যে স্বাভাবিক ভাত্রিত্ববোধ টুকুও অবশিষ্ট নেই! ধার্মিক তো তারা কক্ষনই ছিল না! মুসলমানের কনও অভাব এই দেশে নেই,যতো অভাব ইসলামের!



আম জনতাকেই এগিয়ে আসতে হবে সব রকমের অন্যায় আর অপরাধের প্রতিরোধ করার জন্য। হাজার হাজার বছর ধরেই জনগণ এই দায়িত্তটা পালন করে আসছে। কখনো হিংস্র হয়ে( ফরাসী বিপ্লব, জাড় বিপ্লব ইত্যাদি),কখনো আন্দোলনের সাথে অল্প হিংস্রতা দিয়ে(ব্রিটিশ খেদাও, ৭১’ ইত্যাদি), কখনো শুধুই আন্দলন করে( এরশাদ খেদাও), কখনো ভালো এবং মন্দের পার্থক্য চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে।



সবারই একটাই প্রশ্ন “এই অবস্থার কি কনও পরিবর্তন হবে না” বা এটা থেকে উত্তরণের উপায় কি”? না......... এটার কনও পরিবর্তন হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না জনগণ সু শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভালো-মন্দের পার্থক্য কোরতে শিখবে,যতক্ষণ পর্যন্ত না এই জাতী আমিত্ব ছেরে বহুত্ব তে প্রবেশ না করবে।



আজকে আমি আমার হিন্দু বন্ধুদের তিন বছর আগে আজকের অবস্থার জন্য যে ভাবে সাবধান করেছিলাম, সেই ভাবে আবারও সাবধান করছি। কেউই আপনাদের প্রথমেই সাহায্য করবে না, আপনাদেরই আপনাদেরকে সাহায্যের জন্য প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে! যদিয়ো আমার সব হিন্দু বন্ধু উপর তলার! তাঁদের কনও ক্ষতি গত ৪০ বছরে হয় নাই, এখনো হবে বলে আশা করি না! তারপরও সাবধানের মার নেই...............

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.