নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নবীউল করিম

নবীউল করিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

এটা ১৮+ না, তবে যারা মানসিকতায় ১৮+ না, তাঁদের জন্য না!

১২ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৪১

হ্যাপি এখন কোণঠাসা পুঁচকে ইদুর হয়ে গিয়েছে। যে অভিযোগ সে করেছিলো তাঁর থেকে মুক্ত হয়ে রুবেল এখন জাতীয় হিরো! সাধ্য কার যে রুবেলের ধর্ষণ নিয়ে টু শব্দ করে? হায় সেলুকাস! এই হচ্ছে আমাদের বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের চেতনা! যার বিরুদ্ধে এতো বড় একটা অন্যায়ের বোঝা এখন সে সমস্ত জাতীর গর্ব( এটা হতেই পারে)! হ্যপি বুঝে গেছে,হতে পারে হ্যাপিকে মোটা করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে “ তুমি বাপু সড়ে পরো”। সে সরেই পড়েছে। ধর্ষণ তো শুধু সে একজনের কাছেই হয়েছিল(সে সুযোগ দিয়েছিলো বোলেই রুবেল ব্যাবহার করেছে,ধরে নিতে অসুবিধা আছে?)। যদি এখন সড়ে না আসে তবে তো সব জাতীয়তাবাদের চেতনাবাজদের দ্বারা সে শারীরিক ভাবে ধর্ষিত হবে এর পর! কথায়, আড্ডায় সে তো এখন ধর্ষণ হচ্ছেই! সবার কাছে হ্যাপি এখন বিনোদনের খোঁড়াক!ফেসবুকে বা আড্ডায় হ্যাপিকে অপমান আর তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ব্যাপক কৌতুক রচনা হচ্ছে! সত্যিকারের কি মানসিকতা আমরা বহন করছি ও প্রজন্মকে শিক্ষা দিচ্ছি তা এই ঘটনায় দিনে সূর্যের আলোর মতো পরিষ্কার।আমরা আবার গর্ব করি আমাদের বাঙ্গালী জাতীয়তার চেতনা নিয়ে! সবুজ পাসপোর্টধারীদের বিদেশের এয়ারপোর্টে এবং যত্রতত্র বিদেশীরা কেন পশুর থেকেও খারাপ মনে করে,এটা বুঝতে কি পিএইচডি করার দড়কার আছে? একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায়,আমাদের প্রায় সব হিরোগুলো কেউ ব্যভিচারে ওস্তাদ,কেউ হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করার ডাকাত। প্রতিনিয়ত আমরা যাদেরকে গুরু মানছি বা হিরো ভাবছি বা আদর্শ বানাচ্ছি, সি আই পি বানিয়ে উচ্চ সুবিধা দিচ্ছি, তাঁরা সবাই বিশাল বিশাল অন্যায়ের সাথে যুক্ত! কারও খবর পেপারে আসছে, কারও নীল ছবি নেটে সয়লাব! ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হলে তাঁদের সবারই দীর্ঘ জেল সুনিশ্চিত।

বিদেশী পত্রিকায় ধর্ষক বলাতে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার ঝাণ্ডাবাহীদের খুব আঘাত লেগেছে।খুব অপমানিত হলেন তারা। ফেইসবুকময় গালির ছোটাছুটি।টিভিতে চলে আসলেন প্রমুখ দেশ প্রেমিকেরা। রুবেলে আপনার কী? অনেক কিছু? আচ্ছা ধরেই নিলাম, সে আপনার অনেক কিছু।তাই বলে কি তার জন্য আইন নাই? সে কি আইনের উরদ্ধে? যে অন্যায় সে করেছে সেই অন্যায়ের বিচার কি আপনারা চেয়েছেন এখন পর্যন্ত? সাড়া বছর নারী স্বাধীনতার নাম করে যারা মুখে ফেনা তুলে ফেলে,আজকে তাদের টিকিটাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!হয়তো তাঁরা ড্রয়িং রুমে হ্যপিকে নিয়ে তামাশাই করছে।

সম্ভবত ৮২ এর ফুটবল বিশ্ব কাপে ইটালির পাওলো রসি ছিল একজন জেল খাটা আসামী!অপরাধটা তার খুব একটা ছোট ছিল না? রীতিমতো মানুষ খুনের( যতদুর মনে পড়ে)। তো সেই রসির অপরাধ ও জেল খাটা নিয়ে তো গোটা বিশ্বই তখন হইচই করেছিলো,আমরাও করেছি!তবে কি তখন ইতালি আমাদের মতো এই রকম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল?ওঁদের কি চেতনার অভাব ছিল?ওঁরা যেমন আমাদের মতো প্রতিক্রিয়া দেখায় নাই তেমনি ওঁদের চেতনাবাজেরও অভাব ছিল না।অভাব ছিল অসভ্যতা এবং হিপক্রেটিক চেতনা বাজদের। সেই রসিই কিন্তু সেইবার সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলো এবং রেহাই পায় নাই আইনের কাছে!খেলা শেষে তাঁকে ঠিকই জেলে যেতে হয়েছিলো!

একজন ধর্ষক ভালো খেলোয়াড় হতে পারে কিন্তু কখনোই জাতীর গর্ব করার মতো উদাহরনীয় ব্যাক্তিত্ত হতে পারে না, শিশু কিশোর যুবকদের আদর্শ হতে পারে না।

আমার কাছে এবং শত কোটি মুসলমানের কাছে ‘অনেক কিছু’ হচ্ছেন আল্লাহ্‌ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। বিশ্বের ১৫০ কোটি মানুষের দুর্বলতম জায়গা যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর ব্যাপারে ‘বিজ্ঞানমনস্ক’ ‘প্রগতিশীল’ অভিজিৎ রায়েরা যখন বলে ‘মুহাম্মাদ প্রতি রাতে ১৩ জন স্ত্রীর সাথে সহবাস করতেন’, ‘সাফিয়ার সৌন্দর্য দেখে মুহাম্মাদ পাগল হয়ে যান’, মা আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহাকে বিয়ে করার কারনে যার গায়ে paedophile এর তকমা জুড়ে দেয়া হয়েছিল, হাদিসের নামে মিথ্যা হাদিস বানীয়ে, মনগড়া ব্যাখ্যা করে ইসলামকে গালাগালি করছিলো তখন কোথায় ছিল আপনাদের এবং আপনাদের মতানুসারীদের এই প্রতিবাদ?

আমি, আপনিও পাপী, রুবেলও পাপী। পাপীর গায়ে কলঙ্কের অভিযোগ লাগানোর কারনে যেই জামসেদের মুন্ডুপাত করছেন, আল্লাহ্‌ এবং রাসুলের গায়ে মিথ্যে অপবাদ আরোপ করার সময়, ক্যারিকেচার আকার সময় চুপ করে রয়েছিলেন কার প্রতি দায়িত্ববোধের কারনে? ‘আমি অভিজিৎ’ ‘Je Suis Charile’ বলে হ্যাশ ট্যাগ দিয়েছিলেন বিজ্ঞানের কোন যুক্তির কারনে? গেংগ্রিন হয়ে পচন ধরা আগুল আপনি কেটে ফেলে দিবেন না কি রেখে দিয়ে সমস্ত শরীরটাতেই পচন ধরাবেন?

কোটি মানুষের অন্তরে ছুরিঘাত করা হচ্ছে তাতে কোন বিকার নেই, পায়ের একটা নখকে কেন সমালোচনা(যেটা ভুল না) করা হল তার জন্য মামলা আদালতে।

এ হচ্ছে জাতীয়তাবাদ – পঁচে যাওয়া, গলে যাওয়া কাঁটাযুক্ত দুর্গন্ধময় একটা বিষাক্ত ফল।

ইসলাম কি রক্তপাত সমর্থন করে কি না, বা জঙ্গিদের অমুক অমুক কাজ সমর্থন করে কি না, এই প্রশ্ন তোলার আগে যে প্রশ্ন চলে আসে, ইসলাম কী সমর্থন করে আর কী সমর্থন করে না সেটা কি সত্যিই আপনার জন্য ম্যাটার করে কি না। আপনি গার্লফ্রেন্ড নিয়ে মজে আছেন, সেটা কি ইসলাম সমর্থন করে? আপনার সুদী ব্যাংকের সাথে ব্যবসা, উঠাবসা, আপনার ঘুষ খাওয়া ও নেওয়া, ঘুষ খোর সুদ খোর টাকা ওয়ালা আপাদমস্তক দুর্নীতিবাজ লোকের সাথে বোনকে বিয়ে দিয়ে সেই বোনকে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা, ইউটিলিটি বিল গুলো পরিশোধ না করা, অন্য মানুষের অধিকারকে অস্বীকার করা বঞ্চিত করা ইত্যাদি, লেখে শেষ করা যাবে না! আপনার সিগারেট, আপনার গণতন্ত্র, আপনার সালাত না পড়া, আপনার মিথ্যা, আপনার গীবত-কোনটাকে ইসলাম সমর্থন করে? আপনি এই ব্যাপারগুলোতে ইসলামের বিধিনিষেধকে এক লাথিতে উড়িয়ে দেন, সেই আপনিই কেন ইসলামের সমর্থনের প্রশ্ন তোলেন, যেটা আসলেই আপনি জীবনের সাথে রিলেট করতে পারেন না?

নিজেদেরর চরিত্র দেখার জন্য বিবেকের/মনের আয়নার প্রয়োজন।একটু বিবেক খাটান,দেখবেন কি কুৎসিত আমরা!আর এই কুৎসিত শিক্ষাই আমরা দিয়ে চলেছি আমাদের প্রজন্মকে।থামতে জানতে হয়,যদি তা না জানি তবে, শুরু কোরতে নেই। এবার থামেন আপনারা.................. খেলা শেষে রুবেল এবং হ্যাপির ঘটনা নিয়ে প্রক্রিয়াধীন বিচার যেন সঠিক ভাবে হয় তার জন্য বলুন।

পুনশ্চঃ আমার সাথে হয়তো কেউ একমত হবেন না। তাতে কিছু যায় আসে না। বিবেকের তাড়না থেকে লেখলাম। এই দুর্গন্ধ আর নিতে পারছি না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:১১

ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: আমাদের গালাগালপ্রিয় জাতীয়তাবাদ খুবই বিরক্তিকর, এটি অশিক্ষা ও হীনমন্যতার ফলাফল.

১২ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৩৬

নবীউল করিম বলেছেন: তা যা বলেছেন। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.