নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমরা মানুষ, আমরা মানুষ, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়

যাযাবর চিল

i agree to disagree...

যাযাবর চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুরবানির অমানবিকতা এবং কিছু যোক্তিক দিক

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৬

আমি শান্তিকামি। আমি নিরিহ পশুগুলোকে এভাবে নির্মম ভাবে হত্যা বিরোধি। জিব হত্যা মহাপাপ। আমি নিরামিষাসি।
উপরের কথা গুলো শুনতে খুবই ভাল লাগে। তবে, গাছ এবং লতা, পাতারও জিবন আছে। তারা ব্যাথা পায়। হাসি বা কান্নাও করে। একজন বন কর্মকর্তার কাছে শুনেছিলাম, একবার এক বিদেশি বিশেষজ্ঞ তাদের বাগান করার উপর একটি ক্লাসে বলেছিলেন, “বাগান করার সময় বাগানের পাশ দিয়ে হাঁটবেন, গাছ গুলোর মরা পাতা হাত দিয়ে ফেলবেন, গাঁয়ে হাত রাখবেন কারন গাছেরও অনুভূতি আছে। এমন করলে গাছেরা তারাতারি বাড়ে। তাদের এই ব্যাথা, হাসি, কান্না আমাদের শ্রবন ক্ষমতার বাইরে। এখন আপনি শুনতে পান না এজন্য হত্যা করতে পারবেন এটা- কোনভাবেই যোক্তিকও না মানবিকও না। এটা পুরোপুরি অনৈতিক চিন্তা। অর্থাৎ যে নিরামিষাসিগন প্রচার করেন জিব হত্যা মহাপাপ তারা হয় মূর্খ না হলে প্রতারক। মূর্খ বলার কারন তারা জানে না যে গাছ, শাক-সজবিরও জিবন এবং অনুভূতি আছে। আর যদি জেনেও এটা প্রচার করে তারা নিঃসন্দেহে প্রতারক।

এবার শরিরবিতিৃয় দিক থেকে দেখার চেষ্টা করি- মাংসাশি প্রানিদের দাঁত সুচালো এবং পাকস্থলি ও হজম প্রণালি শুধুমাত্র মাংস জাতিয় খাবারই প্রক্রিয়া করতে পারে। অন্যদিকে তৃণভোজির প্রানির দাঁত সমান শুধুমাত্র পাকস্থলি ও হজম প্রণালি শুধুমাত্র শাকসবজি জাতিয় খাবারই প্রক্রিয়া করতে পারে। কিছু বছর আগে অ্যামেরিকাতে গরুকে ভেড়ার মাংস খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়, তার ফলাফল ছিল ভয়াবহ। ম্যাটকাউ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। হাজার হাজার নিরিহ গরু হত্যা করতে হয়। আমাদের মানুষের দাঁত দুই ধরনেরই আছে। সুচালো আবার সমান। আমাদের পাকস্থলি ও হজম প্রণালি শাকসবজি এবং মাংস উভয় খাবারই প্রক্রিয়া করতে পারে। এখন আমাদের সৃষ্টিকর্তা {নাস্তিকরা ভাবুন প্রকৃতি} যদি চাইতেন আমরা শুধু শাকসবজি খাবো তাহলে আমাদের এমন দাঁত বা পাকস্থলি দিবেন কেন?

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন,
"তিনি পশু সৃষ্টি করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য পোশাক, খাদ্য এবং অন্যান্য নানাবিধ উপকারিতাও।তাদের মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য সৌন্দর্য যখন সকালে তোমরা তাদেরকে চারণভূমিতে পাঠাও এবং সন্ধ্যায় তাদেরকে ফিরিয়ে আনো।তারা তোমাদের জন্য বোঝা বহন করে এমন সব জায়গায় নিয়ে যায় যেখানে তোমরা কঠোর প্রাণান্ত পরিশ্রম না করে পৌঁছতে পারো না। আসলে তোমার রব বড়ই স্নেহশীল ও করুণাময়।তোমাদের আরোহণ করার এবং তোমাদের জিবনের শোভা-সৌন্দর্য সৃষ্টির জন্য তিনি ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা সৃষ্টি করেছেন। তিনি (তোমাদের উপকারার্থে) আরো অনেক জিনিস সৃষ্টি করেছেন, যেগুলো তোমরা জানোই না"। [সুরাহ নাহলঃ ৫-৮]
অর্থাৎ ইসলাম শাক-সবজির পাশাপাশি মাংস খাওয়ারও অনুমতি দেয়। তবে জবেহ যথাস্মভব মানবিক করার নির্দেশ দেয়
জবেহ করার নিয়মঃ
জবেহ করার সাধারন নিয়মগুলো হচ্ছে
• একটি ধারালো ছুরি একক একটানা পিছনে গতির সাথে প্রাণীর শ্বাসনালী, অন্ননালী এবং গলার পাশের দুটি রক্তনালীসমূহ কেটে ফেলতে হবে।
• স্পাইনাল কড এ কোন রুপ আঘাত করা যাবে না।
• সমস্ত রক্ত প্রবাহিত হতে দিতে হবে।
এভাবে জবেহ করলে পশুর স্নায়ুতে আঘাত লাগে না এবং বেশি ব্যাথা পায় না। রক্ত বের হওয়ার সময় পশু ছটফট করে কারন রক্ত শরির থেকে বের হয়ে যাচ্ছে এজন্য, ব্যাথার জন্য না। এছাড়া পশুর সামনে ছুরি ধার দেওয়া কিংবা একপশুর সামনে অন্যপশুকে জবেহ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি জানি এই নিয়মটা বাংলাদেশে সেভাবে অনুসরণ করা হয় না। এটা মুসলমানদের সমস্যা। ইসলামের না।

ইসলাম মাংস খাওয়ার অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি পশুপাখির সাথে মানবিক ব্যবহার নির্দেশও দিয়েছে।

প্রাচীন আরবে পশু-পাখিদের প্রতি চরম অমানবিক আচরণ করা হত। জিবিত উটের কুঁজ, মেষের পাছার বাড়তি অংশ কেটে খেয়ে ফেলা হত। কেউ মারা গেলে তার কবরের ওপর জিবিত একটা উট বেঁধে রাখা হত। উটটি সেখানে অনাহারে ধুঁকে ধুঁকে মারা যেত। তাছাড়াও আরবরা কিছু দিন পর পরই উট জবাইয়ের প্রতিযোগিতা দিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসব অমানবিক কুপ্রথা উচ্ছেদ করে বাকশক্তিহিন প্রানির ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করার উপদেশ দেন। জিবনের প্রতি হুমকি না হলে তিনি অকারণে কিট পতঙ্গও হত্যা করতে নিষেধ করেছেন।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন করেন, ‘দয়া ও অনুগ্রহকারিদের প্রতি দয়াময় রহমান অনুগ্রহ করে থাকেন। অতএব তোমরা জমিনবাসির ওপর দয়া কর আসমানবাসিরা তোমাদের ওপর দয়া করবেন।’ (আবু দাউদ)

একদিন মদিনা দিয়ে যাওয়ার সময় মহানবি সাঃ দেখেন একটি উটকে ঠিকমত না খেতে না দেওয়ায় জন্য কষ্ট পাচ্ছে। তখন তিনি বলেন, “আল্লাহকে ভয় করো সে সমস্ত প্রানির সাথে আচরণের সময় যারা কথা বলতে পারে না। যদি তুমি তাদের পরিবহনে লাগাতে চাও তাহলে তাকে সেভাবে লালন করো। যদি মাংস খেতে চাও তাহলেও তাকে সেভাবে লালন করো। (আবু দাউদ)

মহানবি সাঃ অন্য এক প্রসঙ্গে বলেন, ‘এক মহিলাকে একটি বিড়ালের কারণে আজাব দেয়া হয়েছিল। কারণ কোনো প্রকার খাবার না দিয়ে মহিলা বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছিল। তাকে সে কোনো খাবার এমনকি পানিও দেয়নি। ছেড়ে দিলে সে জমিনে পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকতে পারত। কিন্তু বিড়ালটি মারা গেল। এই জন্যই মহিলা জাহান্নামে যায়। (বুখারি) পক্ষান্তরে জৈনক ব্যভিচারিনি একটি পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে জান্নাতে যায়।

‘আল্লাহর অভিশাপ সেই ব্যক্তির উপর, যে (অকারণে) পশুর অঙ্গহানি ঘটায় [নাসাঈ/৪৪৪২ ; ইবনে হিব্বান ,বাইহাকি]।

'সেই ব্যক্তির উপর অভিশাপ করেছেন, যে কোন এমন জিনিসকে (তার তির খেলার) লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে, যার মধ্যে প্রাণ আছে’ [বুখারি মুসলিম]

‘আল্লাহর নিকট সব চাইতে বড় পাপিষ্ট ব্যক্তির একজন হল সেই ব্যক্তি, যে বিনাকারনে পশুহত্যা করে’ [দ্রঃ হাকেম, বাইহাকি,সহিহুল জামে’/১৫৬৭]।

‘যে ব্যক্তি অধিকার ছাড়া (অযথা) একটি বা তার বেশি চড়ুই হত্যা করবে, কিয়ামাতের দিন আল্লাহ সেই চডুই সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন’। বলা হল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! অধিকারটা কি (যে অধিকারে তাকে হত্যা করা বৈধ হবে)?’ তিনি বললেন, ‘অধিকার হল এই যে, তা জবাই করে খাওয়া হবে এবং মাথা কেটে (হত্যা করে) ফেলে দেওয়া হবেনা’ [নাসাঈ; তারগিব/২২৬৬]। এই হাদিস থেকে বোঝা যায় শুধু মাত্র খাওয়ার উদ্দেশ্যেই হত্যা করা যাবে।

একবার একটি গাছের নিচে একজন নবিকে পিঁপড়ে কামড়ে দিলে তিনি গর্তসহ পিঁপড়ের দল পুড়িয়ে ফেললেন। আল্লাহ তাঁকে অহি করে বললেন, ‘তোমাকে একটি পিঁপড়ে কামড়ে দিলে তুমি এমন একটি জাতিকে পুড়িয়ে মারলে, যে(আমার) তসবিহ পাঠ করত? তুমি মারলেতো একটিই মারলে না কেন, (যে তোমাকে কামড়ে দিয়েছিল)?’ [বুখারী মুসলিম/২২৪১]।

অর্থাৎ, ইসলাম শুধু পশু পাখি নয়, একটা পিপড়ারও অধিকার নিশ্চিত করেছে।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে গাছ-লতাপাতারও জিবন আছে, ব্যাথা পায়। এ ব্যাপারে ইসলাম কি বলে?
“তোমরা প্রয়োজনে গাছ কাটো তবে বিনাপ্রায়োজনে গাছের একটি পাতাও ছিঁড়বে না”। [আল হাদিস]

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৫

ফরিদ আলম বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা। ইসলামে পশু পাখিদের অধিকার নিয়ে আমিও একটি লেখা পোষ্ট করেছিলাম আজ। সম্ভবত আপনি পড়েছেন।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৬

যাযাবর চিল বলেছেন: না ভাইয়া পড়ি নাই। আমি ব্লগ লিখি। অন্যের গুলো পড়া হয় না বললেই চলে।

২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৪

এম হেলাল আহমদ বলেছেন: হিন্দু ও তাদের অনুসারী যারা , কোরবানি তে যাদের চুলকায় তাদের জন্য
ইসলাম ধর্মে আছে নিজের গায়ের চামড়া দিয়ে মাকে জুতা বানিয়ে দিলেও মায়ের ঋণ শোধ হবেনা। সব ধর্মেই মা-কে বিশেষ সম্মানের স্থান দেয়া হয়েছে। কিন্তু গরু তো হিন্দুদের মা, অর্থাৎ গো-মাতা।
এশিয়ায় ৯০% জুতা তৈরী হয় গরুর চামড়া দিয়ে। কুরবানীর সময় ভারতীয় চামড়া ব্যবসায়ীদের চামড়া নেয়ার জন্য কুত্তা পাগল হওয়াই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। তাহলে হিন্দুরা চামড়ার জুতা পায়ে দেয় কিভাবে? মায়ের চামড়ার জুতা পায়ে দিতে তাদের বিবেকে কি একটুও বাঁধেনা?

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৬

যাযাবর চিল বলেছেন: ভাই আমি হিন্দু না। তাই জানি না। জানার ইচ্চাও জাগে নাই। এটা ওদের ব্যাপার। আমি তাদের কারো কাছে জিজ্ঞেস করেন।

৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


"আরবরা কিছু দিন পর পরই উট জবাইয়ের প্রতিযোগিতা দিত। "

তেল পাবার আগ পর্যন্ত আরবেরা ভয়ানক দরিদ্র ছিল, জবাইয়ের প্রতিযোগীতা নয়, উটকে ওরা নিজের মায়ের মত যত্ন করতো।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৭

যাযাবর চিল বলেছেন: এটা ঐতিহাসিক সত্য ঘটনা। ইসলামের কথা বাদ দেন। প্রচিন আরবি সাহিত্য পড়ে দেখেন।

৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২৮

ফরিদ আলম বলেছেন: ‘আল্লাহর অভিশাপ সেই ব্যক্তির উপর, যে (অকারণে) পশুর অঙ্গহানি ঘটায় [নাসাঈ/৪৪৪২ ; ইবনে হিব্বান ,বাইহাকি]।

'সেই ব্যক্তির উপর অভিশাপ করেছেন, যে কোন এমন জিনিসকে (তার তির খেলার) লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে, যার মধ্যে প্রাণ আছে’ [বুখারি মুসলিম]

‘আল্লাহর নিকট সব চাইতে বড় পাপিষ্ট ব্যক্তির একজন হল সেই ব্যক্তি, যে বিনাকারনে পশুহত্যা করে’ [দ্রঃ হাকেম, বাইহাকি,সহিহুল জামে’/১৫৬৭]।

‘যে ব্যক্তি অধিকার ছাড়া (অযথা) একটি বা তার বেশি চড়ুই হত্যা করবে, কিয়ামাতের দিন আল্লাহ সেই চডুই সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন’। বলা হল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! অধিকারটা কি (যে অধিকারে তাকে হত্যা করা বৈধ হবে)?’ তিনি বললেন, ‘অধিকার হল এই যে, তা জবাই করে খাওয়া হবে এবং মাথা কেটে (হত্যা করে) ফেলে দেওয়া হবেনা’ [নাসাঈ; তারগিব/২২৬৬]। এই হাদিস থেকে বোঝা যায় শুধু মাত্র খাওয়ার উদ্দেশ্যেই হত্যা করা যাবে।

একবার একটি গাছের নিচে একজন নবিকে পিঁপড়ে কামড়ে দিলে তিনি গর্তসহ পিঁপড়ের দল পুড়িয়ে ফেললেন। আল্লাহ তাঁকে অহি করে বললেন, ‘তোমাকে একটি পিঁপড়ে কামড়ে দিলে তুমি এমন একটি জাতিকে পুড়িয়ে মারলে, যে(আমার) তসবিহ পাঠ করত? তুমি মারলেতো একটিই মারলে না কেন, (যে তোমাকে কামড়ে দিয়েছিল)?’ [বুখারী মুসলিম/২২৪১]
---------------------------------------------------------------------------

এইটুকু আমারই টাইপ করা। আপনি আমার লেখা থেকেই নিয়েছেন। হয়ত অন্য সাইট বা ফেসবুক থেকে। যাক, জাযাক'আল্লাহ।
ঈদ মুবারাক। আল্লাহ আপনাদের এবং আমাদের ভালো কাজ গুলোকে কবুল করুন। আমীন!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.