নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমরা মানুষ, আমরা মানুষ, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়

যাযাবর চিল

i agree to disagree...

যাযাবর চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

এপ্রিল ফুল ভুলে যান, স্পেনের মুসলিমদের না

০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:০৪

একদম ছোট বেলায়ই এপ্রিল ফুলের গল্প শুনেছিলাম [কম-বেশি সবাই এটা শুনেছে]। গল্পটা এমন খ্রিস্টান সেনাবাহিনি স্পেন জয় করে মুসলিমদের বলে তোমরা মসজিদ গিয়ে আত্নসমর্পণ তাহলে তোমাদের মাফ করে দেবো। সবাই তাই করে। তখন তাদের আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়। দিনটা ছিল এপ্রিলের ১ তারিখ। এখান থেকেই এপ্রিল ফুল পালন শুরু হয়।
ঘটনাটা পুরাটাই মিথ্যা। এমন কোন ঘটনা ঘটে নাই।
তবে, স্পেনে এক সময় প্রচুর মুসলিম বাস করতেন। ৭১১ সালে তারিক বিন যিয়াদ মাত্র ৭০০ সদস্যের একটি বাহিনি নিয়ে গথিক রাজা রাডারিককে পরাজিত করে মুসলিম খিলাফাতের সূচনা করেন। এরপর যা হয় ইতিহাস। মুসলিমরা স্পেনের বুকে ইউরোপ তথা পৃথিবির ইতিহাসের সবচেয়ে সমৃদ্ধতম সভ্যতার একটি গড়ে তোলে। যখন পুরা ইউরোপ নানা অন্ধকারে ডুবে ছিলো। তখন স্পেন ছিল কমপক্ষে ১০০০ বছর এগিয়ে। কর্ডোভা হয়ে উঠে ইউরোপের সবচাইতে সমৃদ্ধ শহর। প্রায় ৫০০০ ফ্যাক্টারি ছিল শুধু কর্ডোভাতেই, যেখানে বাকি গোটা ইউরোপে একটিও ছিল না। ইউরোপের ৯৯ ভাগ লোক যেখানে ছিল নিরক্ষর, জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা ছিল নিষিদ্ধ, গ্যালিলিও সহ শত শত বিজ্ঞানিকে বিজ্ঞান চর্চার অপরাধে হত্যা করা হচ্ছিলো, সেখানে শুধুমাত্র কর্ডোভাতে ছিল ৮০০ সরকারি স্কুল, কয়েকশত বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে দর্শন, বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয় নিয়ে পড়ানো হত। ইউরোপে গোসলকে ঘৃণা করা হতো, [রানি ইসাবেলা জিবনে ৩ বার গোসল করছিলেন], সেই সময়ে কর্ডোভাতে ছিল ৯০০ পাবলিক বাথ। দশম শতকে কর্ডোভাতে ছিল ৭০০ মসজিদ, ৬০,০০০ প্রাসাদ, ৭০ টি লাইব্রেরী যার সবচেয়ে বড়টিতে ছিল ৬ লক্ষ বই। অন্যদিকে সে সময়কার ইউরোপে সবচেয়ে বড় লাইব্রেরীতে ৪০০ এর বেশী ম্যানুস্ক্রিপ্ট ছিল না। ১৪০০ শতকের শেষে ইউরোপের সবচেয়ে বিখ্যাত ইউনিভার্সিটি অব প্যারিসে ছিল মাত্র ২০০০ টি বই। তৎকালিন আন্দালুসিয়ায় প্রতি বছর ৬০ হাজার পুস্তিকা, কবিতা, সংকলন ইত্যাদি প্রকাশিত হত, যেখানে স্পেন এখন প্রতি বছর ৪৬,৩৩০ বই প্রকাশ করে থাকে (১৯৯৬ সাল পর্যন্ত)।
এরপর ১৪৯২ সাল,
পর্তুগালের রানি ইসাবেলা এবং অস্ট্রিয়ার রাজা ফারডিন্যান্ডের সেনাবাহিনির হাতে মুসলিম স্পেনর ঘটে। মসজিদ, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল সবই ধ্বংস করা হয়। হত্যাজজ্ঞ চলে মুসলিমদের উপর প্রথম ক্রুসেডের পর জেরুজালেমে যেভাবে চালানো হয়েছিলো সেভাবে। এর পর যেসব মুসলিম হত্যাজজ্ঞ থেকে বেঁচে যায় তাদের স্পেন থেকে বহিষ্কার করা হয়। জাহাজে উঠিয়ে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। তবে সব শিশুদেরকে মা মেরির সন্তান বলে রেখে দেওয়া হয়। দাস বানানো হয়। জোর করে খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তারিত করানো হয়। এখানেই শেষ না, কিছুদিন পর তারা খ্রিষ্টান বানানো শিশুদের করা হয় দ্বিতিয় শ্রেণির নাগরিক। নাম দেওয়া হয় মরিসকো। যাদের কোনরূপ নাগরিক বা আইনি অধিকার ছিল না। পরে এদের বেশিরভাগ অটোম্যান খিলাফতে আশ্রয় গ্রহণ করে।
...............।।
এভাবেই পৃথিবির ইতিহাসের সবচেয়ে সমৃদ্ধতম একটা সভ্যতার নির্মাতাদের নিশ্চিহ করে ফেলা হয়।
তাই এপ্রিলফুল ভুলে গেলেও মুসলিম স্পেনকে ভুলে যাবেন না......।।।
https://en.wikipedia.org/wiki/Morisc
https://en.wikipedia.org/wiki/Social_and_cultural_exchange_in_Al-Andalus
https://en.wikipedia.org/wiki/Al-Andalus

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৪১

কবীরুল ইসলাম ২৩ বলেছেন: বিষয়টি এতো ভালভাবে জানা ছিলো না জেনে ভালও লাগলো।

২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯

এ আর ১৫ বলেছেন: যে কাহিণী বিশ্বাষ করে অনেক মুসলমান এপ্রিল ফুল পালন করা থেকে বিরত থাকে , এই এই বিশ্বাষ করে বিরত থাকা যে এপ্রিল হওয়ার শামিল সেটা জানতে হোলে নিচের লিংকটা খুলুন । ধন্যবাদ -----
এপ্রিল ফুল নিয়ে মুসলিম কাহিণী-- এপ্রিল ফুল

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৩৬

যাযাবর চিল বলেছেন: ভাই, কেন এমন ঘটনা তৈরি হল?

৩| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৩০

লা-তাহ্‌যান বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.